যে আগুন ছড়িয়ে গেলো সবখানে ...

রাগিব এর ছবি
লিখেছেন রাগিব (তারিখ: বিষ্যুদ, ২১/০২/২০০৮ - ৪:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শহীদ মিনার। ছবি - কার্ল রোহেল, (উইকিপিডিয়া থেকে)শহীদ মিনার। ছবি - কার্ল রোহেল, (উইকিপিডিয়া থেকে)

২০০৪ সালের ৪ঠা নভেম্বর, ন্যাশনাল সেন্টার ফর সুপারকম্পিউটিং অ্যাপ্লিকেশন্সে এক মহাকাশ বিজ্ঞানীর অধীনে গবেষণা সহযোগী হিসাবে কাজ করছিলাম। কাজের চেয়ে খই ভাজাতে মনোযোগ আমার সবচেয়ে বেশি। তাই কাজের ফাঁকে সময় পেলেই অনলাইনে থাকা হতো।

এভাবে অনলাইনে ঘুরতে ঘুরতে একসময় ভাষা আন্দোলন নিয়ে খোঁজার ইচ্ছে হলো। কিন্তু গুগলে হাজার খোঁজাখুজি করেও ভাষা আন্দোলনের উপরে বিস্তারিত বিশদ তথ্য পেলাম না। আমি নিজেই পাচ্ছিনা, আর বিদেশীদের তো জানার প্রশ্নই আসে না। আমেরিকায় তখন আমার বসবাস বছর খানেক মাত্র, মানুষের কাছে দেশের কথা বলতে গেলেই টের পাই, বন্যা আর রাজনীতির কারনেই আমার এ সোনার দেশ তাদের কাছে পরিচিত। ভদ্রতা করে হয়তো মুখের উপরে কেউ বলেনি, কিন্তু চোখের চাহনীতে ঠিকই টের পেয়েছি। ভাষা আন্দোলনের সেই মহান ইতিহাসের কথা তাই গড় গড় করে বলতাম তাদের। কিন্তু ইন্টারনেটে এই তথ্যের উপস্থিতি না থাকায় তারা কি আদৌ জানতে পারবে এর কথা?

সদ্য তখন একটা ওয়েবসাইটের খোঁজ পেয়েছি, তার নাম উইকিপিডিয়া। বেশ মজার সাইট ... ওয়েবপেইজ গুলো এডিট করা যায়। এটা ওটা নিয়ে অনেক কিছুর উপরে এন্ট্রি রয়েছে, ভাবলাম ওখানে একটু ঢুঁ মেরে দেখা যাক। কিন্তু হায়, সেখানেও বাংলাদেশ সম্পর্কে আদৌ কিছু নেই। রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের উপরে একটা ভুক্তি আছে, কিন্তু হাবিজাবি সব তথ্যে তা ভর্তি। তখনো উইকিপিডিয়ার নিয়মকানুন কিছুই জানি না, একাউন্টও নেই। কিন্তু স্মৃতি থেকে যা মনে পড়লো, শুরু করে দিলাম ভাষা আন্দোলনের উপরে একটা ভুক্তি। আর সেই সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপরেও একটা ভুক্তির সূচনা করে দিলাম।

কিছুদিন নিবন্ধটা দেখা হয়নি, বছর পেরিয়ে গেলো, ২০০৬ এর শুরুর দিকে দেখলাম আস্তে আস্তে কিছু লেখা যোগ হচ্ছে ভুক্তিটাতে। কিন্তু শহীদ মিনারের ছবি না থাকাতে কেমন যেন খালি খালি লাগছিলো। উইকিপিডিয়াতে আবার কেবল মুক্ত-লাইসেন্সে (যেমন GFDL, Creative Commons) দেয়া মুক্তভাবে ব্যবহার্য ছবিই যোগ করা যায়। তাই অনুমতি ছাড়া কোনো ছবি তো আর লাগানো যাবেনা। ভাবলাম, দেশে ফটোগ্রাফার তো আছেন বিস্তর, যোগাযোগ করে দেখি। এশিয়াটিক সোসাইটির কাছেও ইমেইল করলাম ... যদি বাংলাপিডিয়াতে ব্যবহার করা শহীদ মিনারের ছবিটা তাঁরা উইকিপিডিয়াতে ব্যবহারের অনুমতি দেন।

কিন্তু হা হুতোষ্মি। সপ্তাহ খানেক পরেও কারো জবাব আর এলোনা। রোখ চেপে যাওয়াতে ইন্টারনেট চষে ফেলে বের করলাম, কার্ল রোহেল নামে এক জার্মান ভদ্রলোকের তোলা ছবি। কার্ল কোনো এক এনজিওর সাথে জড়িত থাকাতে বাংলাদেশে কয়েকবার এসেছিলো, অনেক জায়গার ছবি তুলে নিজের ওয়েবসাইটে রেখেছে। আমি ইমেইল করে ব্যবহারের অনুমতি চাইতেই সানন্দে রাজি হয়ে গেলো। সেই ছবিটা যোগ করলাম ২০০৬ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি

দিন যায়, আস্তে আস্তে উইকিপিডিয়ার ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়ে। প্রথম আলোর বিজ্ঞান প্রজন্ম বিভাগের মুনির হাসান ভাই দেশে এই ব্যাপারে পাবলিসিটির একটা চমৎকার উদ্যোগ নিলেন... বাংলা উইকিপিডিয়ার প্রসারণ তর তর করে আগাতে থাকলো। এমন সময় ২০০৬ এর জুলাই মাসে তারিফ এজাজ নামের একজনের কাছ থেকে একটা ইমেইল পেলাম। কলেজ পড়ুয়া এই ছেলেটা জানালো, ভাষা আন্দোলনের নিবন্ধটিকে সে প্রসারিত করে চমৎকার নিবন্ধ বা ইংরেজি উইকির সর্বসেরা মান featured article এ উন্নীত করতে চায়। ওর সাথে যোগাযোগ চালু থাকলো, আর কীভাবে নিবন্ধটার মানোন্নয়ন করা যায়, সে চেষ্টা চলতে থাকলো আমাদের। এসময়ে নিবন্ধটার চেহারা ছিলো এরকম

দিন গড়াতে থাকে, দেশে যাই ২০০৬ এর ডিসেম্বরে, সামনাসামনি দেখা হয় তারিফের সাথে। মাস চারেক ধরে একাই খাটাখাটুনি করে নিবন্ধের ব্যাপক উন্নতি করেছে, ২০০৭ এর জানুয়ারীর প্রথম দিকে যখন তারিফের সাথে কথা হয়, তখন নিবন্ধটার চেহারা বদলে গেছে। যুক্ত হয়েছে অনেক অনেক তথ্য। মানের দিক থেকে রীতিমত প্রথম শ্রেণীর দিকে আগাচ্ছে, কিন্তু ফীচার্ড নিবন্ধ হতে অনেক পথ বাকি। বেশ পাকা হাতের সম্পাদনা, প্রুফ-রিডিং আর সাবলীল লেখার দরকার। তারিফ আর আমি শরণাপন্ন হলাম আমার উইকি-বন্ধু নীরব মৌর্যের সাথে। ভারতীয় নীরব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছে, উইকিপিডিয়াতে সুলেখক হিসাবে বেশ নাম কামিয়েছে। বাংলাদেশের অনেকগুলো নিবন্ধকে পাকা লেখনীতে ফীচার্ড নিবন্ধে ও একাই নিয়ে গেছে। ওকে বলতেই সানন্দে রাজী হয়ে গেলো। দুই মাস ধরে চললো তথ্য যোগাড় করা আর ছবি সংগ্রহ করার পালা। সৌভাগ্য ক্রমে পাকিস্তানের আইনে কপিরাইট থাকে ৫০ বছর, তাই ভাষা আন্দোলনের ছবিগুলো পাবলিক ডোমেইনে এসে গেছে। নীরব অনেক পথ ঘুরে বেশ কিছু দুর্লভ ছবি যোগ করলো। আর দেশ থেকে তারিফ এইচএসসি পরীক্ষার মাঝেও বেশ কিছু বই পত্র যোগাড় করে ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপঞ্জী যোগ করে চললো। এভাবে ২০০৭ সালের ১৬ই জুন নীরব নিবন্ধটাকে নির্বাচিত নিবন্ধের পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য যখন প্রস্তাব করলো, মানের দিক থেকে নিবন্ধটা হয়ে দাঁড়িয়েছে চমৎকার

উইকিপিডিয়াতে ফীচার্ড নিবন্ধ হতে হলে বিশাল এক সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। ফীচার্ড আর্টিকেল ক্যান্ডিডেট হিসাবে বাংলা ভাষা আন্দোলনের নিবন্ধটাকেও সবার ম্যাগনিফাইং গ্লাসের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, অভিজ্ঞ সব সম্পাদকেরা খুঁত ধরেছে, অভিমত দিয়েছে। এসব অভিমত অনুযায়ী আবার অল্প সময়ের মধ্যেই নিবন্ধকে সংশোধন করতে হয়, নইলে নির্বাচিত নিবন্ধ হওয়ার প্রার্থিতা অকৃতকার্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গুগলে কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমি বিভিন্ন বইপত্র আর গবেষণাপত্রের রেফারেন্স ঘেঁটে দিচ্ছি ... দেশ থেকে তারিফ আর আদিত্য কবীর ভাই কাজ করছেন, আর ভারতের আরেক বাঙালি উইকিপিডিয়ান দ্বৈপায়ন লেগে আছে। হঠাৎ হলো বিপর্যয়, নীরবের সাথে ঝগড়া লেগে গেলো ভারতের হিন্দু মৌলবাদী উইকিপিডিয়ানদের। চরম হিন্দুত্ববাদের অনুসারী এই মৌলবাদী গোষ্ঠীর একটা ষড়যন্ত্র (নাটকীয়তার জন্য বলছি না, আসলেই চরম ষড়যন্ত্র!) ধরে ফেলে নীরব এটা নিয়ে একটা শালিশি মামলা শুরু করেছিলো উইকিপিডিয়ার শালিশি কাউন্সিলে, কিন্তু ওর নিজের কিছু ভুলের কারণে কয়েকজনের গোপনীয় ইমেইল প্রকাশ করার দায়ে উলটা ওই নিন্দিত হয়ে পড়ে। আর মৌলবাদী সেই উইকিপিডিয়ানেরা ওকে নাজেহাল করতে শুরু করে, যার দরুন এক সময় রাগ করে উইকিপিডিয়া ছেড়ে চলে যায় নীরব। অবশ্য নিবন্ধটার উপরে কাজ করা অন্যরা ছেড়ে দেয়নি, অব্যাহত রেখেছে এর মানোন্নয়নের কাজ।

১৭ই জুলাই, ২০০৭, ক্যালিফোর্নিয়ার এক রৌদ্রস্নাত সকালে উঠে গুগলে যাওয়ার আগে এক ফাঁকে ইন্টারনেটে ঢুকতেই দেখলাম, আমাদের ঐ প্রস্তাবনা পাশ হয়েছে, নিবন্ধের এই সংস্করণ উইকিপিডিয়ার ফীচার্ড নিবন্ধে উন্নীত হয়েছে। ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তম বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়াতে নিজের ভাষার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের এই অনন্য ইতিহাস রচিত হলো, শহীদ মিনারের রক্তিম সূর্যের ছবি প্রকাশ হলো দুনিয়ার সব মানুষের কাছে, সেটা ভাবতেই আড়াই বছরের এই পথচলাটাকে মনে হলো পুরোপুরি সার্থক।

উইকিপিডিয়াতে প্রতিদিন প্রথম পাতায় একটা ফীচার্ড নিবন্ধকে "আজকের নির্বাচিত নিবন্ধ" - এই হিসাবে রাখা হয়। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ উইকিপিডিয়াতে আসে, তাই প্রথম পাতায় অবস্থান পাওয়া নিবন্ধ পৌছে যায় এই সব মানুষের কাছে। ভাষা আন্দোলনের এই নিবন্ধটি প্রথম পাতায় আনা দরকার, এই প্রয়োজনীয়তাটা উপলব্ধি করে দিন গুনছিলাম। মনে হলো, ২১শে ফেব্রুয়ারির চাইতে আর কোনো দিন কি আর যথাযথ হবে? ২০০৮ এর জানুয়ারীর ২৭ তারিখে জানালাম এজন্য আবেদন। এই আবেদন নিয়েও চললো অনেক আলোচনা, কিন্তু সবাই সম্মতি জানালো, এই দিনটাতে ভাষা আন্দোলনের নিবন্ধটির মতো যথাযথ আর কোনো নিবন্ধ হতে পারে না, সবাই এক মত হলো। তার পরিপ্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারীর ১৩ তারিখে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো, ২১শে ফেব্রুয়ারী ইংরেজি উইকিপিডিয়ার প্রথম পাতায় স্থান পাবে আমাদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের এই নিবন্ধটি।

----

জানিনা, ২১শে ফেব্রুয়ারীতে বিশ্বের গণমাধ্যমে বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস কতটা স্থান পাবে। হিলারি-ওবামার নির্বাচনে মত্ত্ব সিএনএন জানাবেনা এই দিনটার কথা। বিবিসিতেও অল্প কিছু হয়তোবা ছোট্ট করে প্রকাশ পাবে। কিন্তু ২০০৮ এর ২১শে ফেব্রুয়ারী, এই একটা দিনের জন্য হলেও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষের আনাগোনার একটি সাইট উইকিপিডিয়ার প্রথম পাতায় সুগৌরবে স্থান পাবে শহীদ মিনারের রক্তিম সূর্যটা, বর্ণিত হবে সালাম-বরকত-রফিক আর জব্বারের কথা -- আর দুনিয়ার লাখো মানুষ জানবে বাংলা ভাষার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনার ইতিকথা।

ভাষা আন্দোলনের চেতনার, স্মৃতির, ভালোবাসার এই আগুন ছড়িয়ে যাবে, সবখানে।

** লিংক **
ইংরেজি উইকিপিডিয়ার প্রথম পাতা

ভাষা আন্দোলনের নিবন্ধ


মন্তব্য

রাগিব এর ছবি

ভাষা আন্দোলনের এই ঘটনাপ্রবাহের নিবন্ধটি উইকিপিডিয়ার প্রথম পাতায় আসবে, এটা আমার অনেক দিনের একটা স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটতে যাচ্ছে আজ, তাই মনটা খুব ভালো লাগছে। উইকিপিডিয়াতে এই নিবন্ধটার ইতিহাসটা ঘাঁটতে গিয়ে গত তিন বছরের বিবর্তন আর মানোন্নয়নের ধারাটা চোখে পড়লো, তাই এই পোস্টটা দিলাম। তারিফকে নিয়ে আগে একটা পোস্ট দিয়েছি, তাতে এই পোস্টের কিছু কিছু প্রকাশ পেয়েছিলো, একই ঘটনার কিছু অংশের পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে ক্ষমাপ্রার্থী।

তবু, শহীদ মিনারের রক্তিম সূর্যটা দেখলেই মনটা আনন্দে আবেগে নাচছে সারা দিন ধরেই।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

(বিপ্লব)

সুজন চৌধুরী এর ছবি

জবর খবর।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

হিমেল এর ছবি

রাগিব ভাই,
আমরা কোনোদিন মাথা নিচু করিনি, আর কোনোদিন করবো ও না।
ব্যপারটা বারবার প্রমান করতে হয় আর কি?
অভিনন্দন আপনাকে, যারা এর সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত তাদেরকে আর অভিনন্দন সবাইকে।
আমরা আরেকবার জাতি হিসাবে গর্বিত হতে পারলাম।
এবারের ২১ আসলেই অন্যরকম কাঁটবে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বাংলার সংরক্ষণের জন্য আপনার ও অন্যান্যদের কাজগুলো মুগ্ধ হয়ে অনুসরণ করে যাচ্ছি। জীবনান্তে যেদিন একুশে পদক পাবেন, তখন এই অধমের বাড়ি এক বেলা পদধূলি দিয়ে যেয়েন। উত্তম জাঝা!

রাগিব এর ছবি

নিবন্ধটার পেছনে সবচেয়ে বেশি খেটেছে যে, সেই তারিফ এজাজ তার ব্লগে বিস্তারিত লিখেছে - কীভাবে ভাষা আন্দোলনের নিবন্ধের উপরে কাজ করার ইচ্ছা ওর মাথায় আসলো। পড়ে দেখুন
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দারুণ খবর!



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

কনফুসিয়াস এর ছবি

গ্রেট!

-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

কোলাকুলি
(বিপ্লব)
জাঝা
গুরু গুরু
গুল্লি

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

হযবরল এর ছবি

অভিনন্দন রাগীব এবং বাংলা উইকি টিম।

দ্রোহী এর ছবি

অভিনন্দন ! আপনার সাথে কখনো দেখা হলে নিজ হাতে এক কাপ চা/কফি বানিয়ে খাওয়াবো।


কি মাঝি? ডরাইলা?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এই লেখাটা পড়তে পড়তে আনন্দে গর্বে বুক ভরে উঠলো। অথচ কে জানে কেন চোখ আর্দ্র হয়ে যায়!

নেপথ্যের গল্প জানানোর জন্যে অনেক ধন্যবাদ, রাগিব।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

রাগিব এর ছবি

জুবায়ের ভাই, ধন্যবাদ।

আজকের প্রথম আলোর প্রথম পাতা দেখুন, এই নিবন্ধের উপরে মুনির হাসান ভাইয়ের একটা লেখা বেরিয়েছে।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

যেদিন বেরিয়েছে সেদিনই পড়েছিলাম। আপনার মন্তব্য দেখলাম দেরিতে।

ভালো কথা, খবরের একটা পিডিএফ কপি এখানে জুড়ে দিলে ভালো হবে। কারণ একটু পুরনো হলে ওটা ওদের আর্কাইভে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। কেন যে আর্কাইভ বলে কে জানে! সবগুলো কাগজের ইন্টারনেট সংস্করণে একই অবস্থা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

রাগিব এর ছবি

প্রথম আলোর খবরের লিংক
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

রাগিব এর ছবি

ধন্যবাদ অরূপ।

গত এক বছর ধরে এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। আজ বিশ্বের সব গণমাধ্যমে (সিএনএন বিবিসি) হয়তো শেষের কোনো পাতায় ছোট্ট করে স্থান পাবে একুশের কথা, কিন্তু লাখো মানুষের দেখা সাইট উইকিপিডিয়ার প্রথম পাতায় থাকছে আমাদের ভাষা আন্দোলনের কথা। এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু নেই আজ আমার কাছে।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

খুব খুব এবং খুব ভালো লাগছে। গর্বে বুকের ভেতরটা ভরে উঠছে। এর সাথে জড়িত সবাইকে সশ্রদ্ধ সালাম।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

কাল রাত থেকেই অপেক্ষায় ছিলাম, কখন প্রধান পাতায় এই নিবন্ধটি আসবে। দেখে যেতে পারিনি। সকালে ঘুম ভেঙেছে ১১টায়। ঘুম থেকে উঠে প্রথম কাজটাই ছিল, ইংরেজি উইকিপিডিয়ার প্রধান পাতা দেখা। কেমন লেগেছে ঠিক বলে বোঝাতে পারবো না।

বাংলা উইকিপিডিয়াতেও এই নিবন্ধটি সম্পূর্ণ হওয়ার পথে।

-----------------
মুহাম্মদ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

অভিবাদন। অভিনন্দন। জয় বাংলা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

প্রবন্ধটি দেখে অনেক আরাম পেলাম। নিজের লেখা পত্রিকায় প্রকাশিত হলে এইরকমের অনুভূতি হতো!

সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন।

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

তানভীর এর ছবি

গতকাল থেকেই ইংরেজী উইকিপিডিয়াতে একটু পরপর ঢুকছিলাম, কখন আসে। সেটা আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলাম। ২০শে ফেব্রুয়ারীটা কেন জানি খুব দীর্ঘ মনে হলো!

=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"

রাগিব এর ছবি

এটার প্রভাব (impact)-টা চিন্তা করে দেখুন ... কয়েক লাখ লোক হলেও এটা আজকে পড়বে। ছোট বেলা হতেই আমরা একুশের কথা কিছুটা হলেও জানি, কিন্তু দুনিয়ার মানুষ তো আর এই ইতিহাসটা জানেনা। আজকের এই নিবন্ধের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও জানবে, এটাই প্রত্যাশা।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

রাগিব এর ছবি

ইংরেজি উইকিপিডিয়াতে বাংলাদেশ সংক্রান্ত ফীচার্ড নিবন্ধ অনেকগুলো, এর মধ্যে রয়েছে -

[*] Bangladesh
[*] Dhaka
[*] Rajshahi University
[*] Biman Bangladesh Airlines
[*] Sheikh Mujibur Rahman
[*] Ziaur Rahman
[*] Rabindranath Tagore
[*] Kazi Nazrul Islam
[*] Bengali language
[*] Bengali language movement
[*] Shahbag

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- সগৌরবে মাথা উঁচু করে ধরার প্রয়াসে রাগিব ভাই, আপনাকে অভিনন্দন।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অনিকেত এর ছবি

রাগিব ভাই,

আপনার এবং আপনাদের এই অনবদ্য প্রচেষ্টার প্রশংসা করার মত যোগ্যতা আমার নেই। শুধু মাত্র এইটুকু বলতে চাই, ভাষা আন্দোলন আমাদের ৫২ তে শেষ হয়নি। আজকের ২০০৮ এর এই ২১ তারিখে আমরা আরেক ভাষা আন্দোলনের খবর শুনতে পেলাম।

ভাষা আন্দোলনে যারা প্রান দিয়েছিলেন, তাদের অবিনশ্বর আত্মা আপনাদের কর্মস্পৃহায় নবজন্ম পেয়েছে।

আপনাদের কে প্রানখোলা ভালবাসা আর শ্রদ্ধা।

আমাদের এই একবিংশ শতকের ভাষা সাগ্নিক আপনারা। এই নুতুন শতকে আপনারাই আমাদের সালাম,রফিক,বরকত।

অকুন্ঠ ভালবাসা।

রাগিব এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ।

দুঃখ একটাই, থাকি আমি গোঁড়া-পাড়ায়। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালিরা একুশে উদযাপনে নিতান্তই অনাগ্রহী। উইকিপিডিয়াতে প্রথম পাতায় শোভা পেলো ভাষা আন্দোলনের খবর, কিন্তু আদৌ আমার এলাকার বাঙালিরাই কেউ সেটা পড়েছে কি না, সন্দেহ আছে। হয়তোবা সপ্তাহান্তে বিশিষ্ট কোনো ইসলামী চিন্তাবিদের মহার্ঘ কথা নিয়ে আলোচনা হবে, কিন্তু একুশ নিয়ে আলোচনা করবে না কেউ। অনেকের আবার প্রিয় হলো "আল-মাহমুদ"-এর কবিতা ও মতাদর্শ।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ওটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই। সারা পৃথিবী এখনো মোল্লা হয়ে যায়নি। হবেও না কোনোকালে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অতিথি লেখক এর ছবি

রাগীব, আপনার মাধ্যমে সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের অবদানের জন্যই আমরা কালকে মহান একুশকে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের এই মহান দিনটিকে দের ভালভাবে উপস্থাপন করতে পারব বলে আশা করছি।

আবারও ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে।

তানভীর এর ছবি

দুঃখ একটাই, থাকি আমি গোঁড়া-পাড়ায়। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালিরা একুশে উদযাপনে নিতান্তই অনাগ্রহী।

আরবানায় তো শুনছি অনেক বাংলাদেশী/বুয়েটের স্টুডেন্ট আছে। ভাল স্কুলে মনে হয় সব পড়ুয়া ছাত্ররা গেছে। ভালো ছাত্রদের সময় নষ্ট করার মত সময় কোথায়?

আমাদের ইউনিতে বাংলাদেশী ছাত্রসংখ্যা খুব কম, যারা আছে তাও বেশীরভাগ এখানকার। তবু ২-৩ জন খেটে আমরা ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরীতে একটা শহীদ মিনার (তথ্য, ছবিসহ) দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলাম ২০০৫-এর একুশে ফেব্রুয়ারীতে। এক সপ্তাহ ওটা লাইব্রেরীর প্রবেশ পথের পাশে সগৌরবে দাঁড়িয়ে ছিল। ইউনিভার্সিটির পত্রিকাতেও একটা বড় আর্টিকেল এসেছিল একুশে ফেব্রুয়ারী নিয়ে।

আমাদের বানানো শহীদ মিনার

লিংক

=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"

রাগিব এর ছবি

চমৎকার।

আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, ভালো ছাত্ররা বরং দেশের জন্য অনেকাংশে ক্ষতিকর। দেশের টাকায় খেয়ে দেয়ে পড়ে টড়ে পরে বিদেশে কেটে পড়বে, আর গাড়ি-বাড়ি নিয়ে দর্প করবে। দেশের ভালো করবে ভালো মানুষেরা ... দুঃখজনক হলেও সত্য, ভালো ছাত্রদের মধ্যে সেই ভালো মানুষদের সংখ্যা বেশ কম।
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অতিথি লেখক এর ছবি

তারিফ ভাই এবং রাগিব ভাই আপনাদের অনেক অভিন্দন। আপাদের মতন মানুষ আরো দরকার বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। বাংলাদেশ সরকারের বড় বড় কর্তারা যেটা বুঝতে পারলো না সেটা বুঝতে পারলো এইচএসসি পরীক্ষার্থী তারিফ । আমরা শ্রদ্বা রইল যারা এর সাথে জড়িত সকলকে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।