রাজউকের দুর্নীতি, পূর্বাচল এবং মুহম্মদ জাফর ইকবাল

তানভীর এর ছবি
লিখেছেন তানভীর (তারিখ: মঙ্গল, ১৪/০৯/২০১০ - ১০:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

'আমরা সবাই মিলে আমাদের দেশটাকে নিজের মাকে খন্ডবিখন্ড করে বিক্রি করার মতো বেচে দিচ্ছি'- এরকম কিছু হা-হুতাশ করে শ্রদ্ধেয় মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রথম আলোয় একটা কলাম লিখেছিলেন। সম্প্রতি ড্যাপ ও ডেভেলপারদের ভূমিদস্যুতা প্রসঙ্গে আনিসুল হক তার ‘একটি নিষ্ঠুর কল্পকাহিনী এবং...’ নিবন্ধে সে গল্পটি আবার আমাদের শুনিয়েছিলেন (২৯ শে জুন, প্রথম আলো)। সেখান থেকেই কিছুটা উদ্ধৃত করি-

ঢাকা শহরের জমিজমাগুলো ভরাট করে বিক্রি করার ব্যাপারটা— শুধু ঢাকা শহরেরই বা বলি কেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে, চট্টগ্রামে, সিলেটে, কক্সবাজারে, কুয়াকাটায়, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোয়—আমরা যেভাবে জমি দখল করছি, প্লট বানাচ্ছি, ভরাট করছি, বিক্রি করছি, সেটা নিজের মাকে খণ্ডবিখণ্ড করে বিক্রি করার মতোই নিষ্ঠুর এবং মাতৃঘাতী, পরিণামে আত্মঘাতী। ...
প্রসঙ্গটা সামনে এসেছে ঢাকা শহরের ডিটেইল এরিয়া প্লান বা ড্যাপ নিয়ে। এই পরিকল্পনায় দেখানো হয়েছে, ঢাকা শহরের কোন অঞ্চলটা জলাধার, কোন অংশটা বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল, কোন এলাকাটা উদ্যান, কোনটা অতিফলনশীল কৃষিজমি। কোনটা আবাসিক এলাকা হতে পারে, কোথায় হতে পারে শিল্পকারখানা। এটা শিপন রিপন নিপনরা মেনে নিতে পারছে না। কারণ তাতে তাদের টাকার নেশা নিবৃত্ত হয় না।

আনিসুল হক বা জাফর ইকবাল শিপন, রিপন, নিপনদের গল্প বলেছেন। কিন্তু তার চেয়েও ভয়ংকর যেটি তা হলো ড্যাপ যারা প্রণয়ন করেছেন সেই শিপন-রিপনদের রক্ষকরাও নিচু জমি ভরাট করে বন্যাপ্রবাহ অঞ্চলে প্লট বানিয়ে জমি ভাগ-বাটোয়ারা, বিক্রি করছেন!

আমি এখানে মূলত রাজউকের ‘পূর্বাচল’ প্রজেক্টের কথাই বলছি (রাজউকের ‘ঝিলমিল’ প্রজেক্টও একই দোষে দুষ্ট)। রাজউক দীর্ঘদিন ধরে এখানে বন্যা প্রবাহ অঞ্চলে প্লট ডেভেলপ করছে (চিত্র দ্রষ্টব্য)।
চিত্রঃ ঢাকার বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ও পূর্বাচলের অবস্থান (ছবি কৃতজ্ঞতাঃ সচল জাহিদ)

এই দস্যুতাকে যৌক্তিকতা দিতে তারা ‘পূর্বাচল’কে ‘ওভারলে জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাদের যুক্তি হলো পূর্বাচলের কাজ নাকি রাজউকের ‘ডিএমডিপি প্ল্যান’ প্রণয়ন বা বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল নির্ধারণের আগেই শুরু করা হয়েছে; তাই পূর্বাচল (এবং ঝিলমিল প্রথম প্রকল্পকে) ড্যাপে ‘ওভারলে’ হিসেবে দেখিয়ে এর কাজ সচল রাখা হয়েছে। যেন ওভারলে হিসেবে মাফ করে দিলেই এই বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল বন্যামুক্ত অঞ্চল হয়ে যাবে! সাধারণত এসব অঞ্চলে ‘ওভারলে’ হিসেবে দেখানো হয় কোনো ঐতিহাসিক বা গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, কবরস্থান ইত্যাদি যেগুলো সংরক্ষণ করা জরুরী। ‘পূর্বাচল’ বা ‘ঝিলমিল’ কি আমাদের জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে ঢাকার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে বন্যাপ্রবাহ অঞ্চলে এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে?

আহ! ছোটো মুখে কী বড় কথা বলছি আমি! অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যে দেশে সাংসদরা করমুক্ত বিদেশি গাড়ি, বেতনের বিল পাশ করায়, সেখানে তাদেরকে এবং তাদের গুণমুগ্ধদের নামমাত্র মূল্যে জমি ভাগ-বাটোয়ারা করে দেয়া হবে- এ বিষয়টা তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। না হয় সেটা বন্যাপ্রবাহ অঞ্চলেই হলো। ঢাকা তো এমনিতেই মারা যাচ্ছে, এটুকুতে আর কী আসে যায়!

পূর্বাচল নিয়ে প্রথম আলোসহ কোনো পত্রিকায় লেখা ছাপা হচ্ছে না। সচলায়তনে সচল জাহিদ ড্যাপ ও পূর্বাচল নিয়ে বেশ কিছু পোস্ট দিয়েছেন। সেগুলো তিনি পত্রিকায় পাঠিয়েও ছিলেন। তারা ছাপায় নি। এমনকি জেনেছি যে প্রথম আলোয় খবরের নিচে যেখানে অহরহ ছাগু মন্তব্য দেখা যায়, সেখানে মন্তব্য আকারে তিনি ড্যাপ/পূর্বাচলের অংশবিশেষ পোস্ট করেছিলেন- তাও আসে নি!

পূর্বাচল নিয়ে খবর আসবে না। কারণ প্লট প্রাপ্তদের তালিকা ঘেঁটে দেখতে পাচ্ছি সেখানে সাংবাদিকসহ দেশের সব রথী-মহারথী এবং তাদের পোষ্য, পুত্র-কন্যারা প্লট পেয়েছেন। যাদের জায়গা-জমি আছে তারাও আরো জমি পেয়েছেন। এই প্লট লটারি করে যেমন দেয়া হয়েছে, আমি নিশ্চিত লটারির বাইরে ‘ঈশ্বরের হাত’ দিয়েও দেয়া হয়েছে, কারণ ‘শিল্পী’ কোটা বা ‘খেলোয়াড়’ কোটায় যাদের প্লট দেয়া হয়েছে তাদের অনেকের নামও আমি কোনোদিন শুনি নি! ২০০৯-এর আগেও ২০০৩-০৪ সালে অনেককে প্লট দেয়া হয়েছে।

‘পূর্বাচল’ প্রজেক্টে বুয়েটের অনেক শিক্ষক কনসালটেন্সি করেছেন। আমি তালিকায় বুয়েটের শিক্ষকদের নাম খুঁজছিলাম যারা জেনেশুনে রাজউকের এ দুর্নীতিতে শামিল হয়েছেন। প্রচুর নাম আছে! এদের মধ্যে অনেকে হয়তো জেনে আবার অনেকে না জেনে আবেদন করছেন। মুফতে যদি ঢাকা শহরে প্লট পাওয়া যায় যেখানে জমির দাম কোটি টাকা, ক্ষতি কী? কিন্তু সবচেয়ে বিস্মিত হয়েছি তালিকায় অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম দেখে! তিনি পূর্বাচলে ১০ কাঠার প্লট পেয়েছেন। জাফর ইকবাল তাঁর যোগ্যতা ও দেশের প্রতি অবদানের জন্যই সরকারের কাছ থেকে প্লট পেতে পারেন। কিন্তু দুর্নীতিযুক্ত ও দেশের জন্য আত্মঘাতী এ প্রকল্পে তাঁর নাম আমরা দেখতে চাই না। আমি ধরে নিচ্ছি আরো অনেক আবেদনকারীর মতোই তিনি পূর্বাচল সম্পর্কে সম্যক অবহিত না হয়েই প্লটের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তিনি চাইলে এখনো শিপন-রিপন-নিপনদের মতো দেশ বিক্রির এ মচ্ছব থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন। নিজের দশ কাঠা প্লট ফিরিয়ে দিয়ে তাঁর ‘সাদাসিধে কলামে’ রাজউককে এ প্রকল্প বন্ধের আহবান জানাতে পারেন। স্যার, আমরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।


মন্তব্য

বিপ্লব কুমার কর্মকার এর ছবি

ভালো প্রসংগ তুলে ধরেছেন।তবে ভাইজান কেউ না জেনে আবেদন করেনি।

টিউলিপ এর ছবি

তালিকাটা দেখে এবং পূর্বাচলের ইতিহাস জেনে অসহায় লাগছে কেমন যেন। তালিকায় যাদের নাম আছে, তাদের অনেককেই আমি চিনি, খুব ভালোভাবে এবং ভালো মানুষ হিসেবে। তারা জেনেশুনে এখানে আবেদন করেছেন বলে মনে হলো না। কিন্তু কথা হলো, এখন জানলেও ঢাকা শহরে এক টুকরো জমির আশা কয়জন ছেড়ে দেবেন? আমি জাফর ইকবাল স্যারের কথা বলছি না খালি, তিনি অনেক হাই প্রোফাইল-এ। কিন্তু অপেক্ষাকৃত লো প্রোফাইলের ভালো মানুষদের মানবিকতার কাছেও আবেদন জানানো দরকার।
___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

স্বাধীন এর ছবি

আপনার মূল বক্তব্যের সাথে সহমত । যারা নৈতিকতার বাণী ছড়ান তাঁদের উচিত সেই নৈতিকতাকে ধারণ করে তারপর সেটা বলা এই ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।

তবে পূর্বাচল বা ঝিলিমিল প্রজেক্টের বাস্তবতাকেও আমাদের স্বীকার করতে হবে। আমাদের পুরো দেশটাই একপ্রকার প্লাবন ভুমি। মানুষ উচু উচু স্থান দেখে বা কোথাও নীচু স্থানকে উচু করে বাড়ী বানিয়েছে বসবাসের জন্য। চল্লিশ বছর আগে যেখানে জনসংখ্যা ৭ কোটি ছিল এখন মনে হয় ১৬ কোটিরও বেশি। খোদ ঢাকাতেই মনে হয় দু'কোটির উপর। এই বিপুল জনসংখ্যাকে ধারণ করতে গিয়ে জলাশয় দখল ছাড়া গতি কি? আসমানের দিকে বাড়তে না পারলে ভুমির দিকে তো বাড়বেই।

সমস্যা সেটা নয় সমস্যা আমার মতে পরিকল্পনার অভাব। যদি অনিয়ন্ত্রিত ভাবে সব জলাশয় দখল না করে অন্তত উত্তর/দক্ষিনে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা রাখা যায়, কিছু খাল এবং রাস্তার নীচে কালভার্ট করে দেওয়া যায় তবে বন্যার পানি সহজেই চলে যেতে পারবে। বন্যা আমাদের হবে, অতি বৃষ্টি হবে এগুলো আমাদের ভৌগলিক বাস্তবতা। এগুলোকে ম্যানেজ করেই চলতে হবে। আবার অধিক জনসংখ্যার জন্য, ঢাকা থেকে মানুষকে ছড়ানোর জন্য ঢাকাকে বাড়াতেও হবে। তাই সব এলাকাকে ফ্লাড জোন হিসেবে ঘোষনা দিয়ে বেশিদিন দমিয়ে রাখা যাবে না। বরং বন্যা প্রবাহের জন্য উত্তর/দক্ষিন বরাবর দিকে নানান খালের ব্যবস্থা করে বাকি এলাকাগুলোকে সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়াই ভাল। নিজেরা ফ্লাড জোনে প্লট বানিয়ে অন্যদের ফ্লাড জোনের জুজু দেখিয়ে পার পেতে পারবে না সরকার। ডেভেলপাররা আদালতে গেলে সরকারই হেরে যাবে।

তার চেয়ে সরকারের উচিত পরিকল্পিত ভাবেই যা কিছু করার। এমনকি এইসব এলাকায় পুরো এলাকা শহর না করে শহরের মাঝ দিয়ে কয়েকটি খাল খননের ব্যবস্থা প্ল্যানের মাঝেই রাখতে পারে। একই স্ট্যান্ডার্ড অন্য ডেপেলপারদের জন্যেও বাধ্যতামূলক করে দেওয়া যেতে পারে। যে কেউ পুরো শতভাগ এড়িয়ার মাঝে রাস্তা ছাড়ার মত করে শতকরা ত্রিশ ভাগ অথবা পঞ্চাশ ভাগ এলাকা উত্তর/দক্ষিন বরার খালি রাখবে এবং সেদিক দিয়ে বন্যার পানি যাবে। এবং এই খাল খননের কাজ ডেভেলপারদেরই বহন করতে হবে, পক্ষান্তরে যারা সেখানে প্লট করতে ইচ্ছুক তাঁদেরকেই বহন করতে হবে। এখন তাঁদেরকে বাড়ি করার সময় মাথায় রাখতে হবে যে পানি সর্বোচ্চ কত উচ্চতায় যেতে পারে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই পুরো এলাকা বাঁধ দিয়ে শহর করা যাবে না এইসব জোনে। পানি তো আর বসে থাকবে না। তার কাজ সাগর মুখে চলা। প্রয়োজনে বাঁধ/ভেঙ্গে শহর উপচিয়ে হলেও যাবে। তাই বাঁধ দিয়ে তারপর একটি শহর করার চেয়ে আমার সাজেশন হচ্ছে বন্যা প্রবাহের পথ রেখে তারপর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শহর গড়ে তোলা।

তানভীর এর ছবি

একমত নই। আমার ধারণা, প্লাবনভূমি এলাকায় সর্বোচ্চ যে পরিমাণ ডেভেলপমেন্ট করা যায়, ঢাকা তার লিমিট অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। এগুলো হচ্ছে একেবারে মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট। আর ঢাকা শহরের মতো একটা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সবাইকে জমির মালিক হতে হবে কেন?

স্বাধীন এর ছবি

এগুলো হচ্ছে একেবারে মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট।

আপনি যত সহজে বলে ফেললেন এগুলো মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট, আমি বলে ফেলতে পারছি না। কারণ সেরকম মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট বলে কিছু আছে কিনা সেটা এখনো শিখিনি। তবে কথা সত্য সেগুলো প্লাবন ভুমি। দুই নদীর মাঝখানের জায়গা আসলে নদীরই অংশবিশেষ। বর্ষাকালে যখন নদীর প্রবাহ বেড়ে যায়, মূল নদী যখন সে পানি নিতে পারে না তখন এই অংশ দিয়ে পানি যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নদীর নাব্যতা বাড়িয়ে কিংবা আরো শাখা খাল দিয়ে এই বর্ষাকালিন প্রবাহ নেওয়া যায় কিনা। থিওরেটিকালি নেওয়া যায়। কিন্তু কতটুকু খাল লাগবে, নাকি পুরো এলাকাই লাগবে সেগুলো নির্ধারণ করা যায় 2D hydraulic model দিয়ে। এবং সে কাজ করার মত ইনিস্টিটিউট রয়েছে আমাদের দেশে। IWM (Institute of water modeling) কে দিয়ে রকম স্টাডি করিয়ে তারপর যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর তা না হলে যদি দু'নদীর মাঝ দিয়ে পুর্বাচল করা হয় তবে পানি বাধা পেয়ে নদীর পানির লেভেল আরো বেড়ে যাবে, আশেপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা আরো বেশি হবে।

তানভীর এর ছবি

কারণ সেরকম মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট বলে কিছু আছে কিনা সেটা এখনো শিখিনি।

একটা শহর কতটুকু ডেভেলপ করা যায়, কতটুকু যায় না, সেখানে বিল্ট এনভায়রনমেন্ট কতটুকু থাকতে হয়, না হয়- তার একটা মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট তো অবশ্যই আছে। সবকিছু আপনি শিখে ফেলবেন এমন তো কোনো কথা নাই হাসি

বইখাতা এর ছবি

বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল, পূর্বাচল প্রজেক্টের সাথে এর সম্পর্ক নিয়ে তেমন কিছু জানতাম না। কূপমন্ডুকের মতো এসব নিয়ে তেমন পড়িওনি। এখন কিছুটা জানলাম। তবে মানুষ যেভাবে বাড়ছে সেভাবে ভূমি তো বাড়ছেনা। মানুষ বাড়ি বানাবে কোথায়? বন্যাপ্রবাহের পথ বন্ধ না করেই নিশ্চয় আবাসন বানানো যায়, আমাদের পরিকল্পনাবিদেরা এ নিয়ে কী কাজ করছেন জানিনা। তবে সবার আগে দরকার সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া, সরকারের তেমন ইচ্ছা আছে বলে তো মনে হয়না।

এটা নিশ্চিত হয়ে জানার জন্য অপেক্ষা করছি যে জাফর ইকবাল স্যার পূর্বাচল সম্পর্কে ঠিকমত না জেনেই প্লটের জন্য আবেদন করেছিলেন। নিজের দশ কাঠা প্লট ফিরিয়ে দিয়েই তিনি এ কাজটা করতে পারেন। ভরসা করার মতো, বিশ্বাস করার মত কাউকে না কাউকে তো থাকতে হবে............ মন খারাপ

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট! সচল জাহিদের লেখাগুলো প্রথম আলোর প্রকাশ না করা কিন্তু সিরিয়াস অভিযোগ। জাহিদ খোলাশা করবেন ব্যাপারটা?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সচল জাহিদ এর ছবি

মুর্শেদ নিচে মন্তব্যে বিশদ লিখেছি।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতিথি লেখক এর ছবি

লটারীর কাজটা সিএসই, বুয়েট করেছে, এবং তারা কাজটা করেছে কম্পিউটার প্রগ্রামিং এর সাহায্যে। তাই ঈশ্বরের হাতের ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছিনা, তালিকায় ও কিন্তু দেখবেন "Processed@CSE.BUET [119b6df12305d834f0d9e28477ef71a1] This rank list has been computed based on age (57 points) and basic pay (43 points) according to the approved guideline provided by Rajuk" লিখা আছে। আমার বন্ধুদের অনেকেই এই প্রজেক্টে ছিল, তাই একটু মানতে কষ্ট হচ্ছে।

সজল

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বয়স আর পেমেন্টের ব্যাপারটা প্রায়োরিটি পাবে তাইতো? বয়স বা পেমেন্টের এমাউন্ট কত ইনপুট দেয়া হল সেটা কতখানি নির্ভরযোগ্য সেটার যাচাই কে করবে?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা হতে পারে, এই গাইডলাইন দিয়ে গোলমুখের দিকে বাতাস বইয়ে দেয়া হয়েছে। গোল স্কোরিং টা পা দিয়েই হয়েছে, তবে ঈশ্বরের বাতাসের অনুকূলে। আর আমি কোট করেছি তানভীর ভাইয়ের লিস্ট থেকে কপি করে, সুতরাং নীতিমালা টা যে কী ছিল, সে ব্যাপারে আমার কোন ধারণাই নেই।

সজল

তানভীর এর ছবি

লটারি তো মনে হয় হয়েছে পরে। এর আগে যে শিল্পী, খেলোয়াড়, সাংবাদিক ইত্যাদি কোটায় সবাইকে ভাগ করা হয়েছে তারা যে আসলেই শিল্পী, খেলোয়াড় কিংবা সাংবাদিক- এ ব্যাপারে কি আপনি নিশ্চিত? চোখ টিপি

আমি নিশ্চিত নই।

অতিথি লেখক এর ছবি

না, আমি নিশ্চিত না। এমন হতেই পারে সিএসই, বুয়েট যে ডাটার উপরে র‍্যান্ডম সিলেকশন চালিয়েছে, সে ডাটাতেই 'বায়াস' মেশানো ছিল।

সজল

নাশতারান এর ছবি

মুহম্মদ জাফর ইকবালের নামে কুৎসা রটনার চেষ্টা বেশ কিছুদিন ধরে চোখে পড়ছে। তালিকায় তাঁর উপস্থিতি এহেন কোনো প্রচেষ্টার অংশ হলে অবাক হবো না। তবু তাঁর কাছ থেকে ব্যাখ্যা আশা করছি।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

হিমু এর ছবি

সাংসদরা সব দশ কাঠা করে। এইখানে আবার সকল দলমতের ঊর্ধ্বে বরাদ্দ হয়েছে। জামাতের হামিদুর রহমান আযাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, ড্যাপের কট্টর বিরোধী নসরুল হামিদ ... সকলেই হালুয়ারুটির ভাগ পেয়েছে।

এদের কাতারে জাফর ইকবালকে দেখতে পেয়ে একটু বিপন্ন বোধ করছি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

তাসনীম এর ছবি

এদের কাতারে জাফর ইকবালকে দেখতে পেয়ে একটু বিপন্ন বোধ করছি।

আমিও।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

জাহামজেদ এর ছবি

রাজউকের প্লট দেওয়ার ব্যাপারে কিছু নিয়ম কানুন আছে সম্ববত। যতটুকু জানি ঢাকা শহরে যাদের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই তাদেরকেই শুধু রাজউকের কোনো প্রকল্পে নতুন প্লট দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হয়। সেই হিসেবে জাফর ইকবাল স্যারের এই প্রকল্পে প্লট বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা, কারণ, পল্লবীতে তার নিজের বাড়ি আছে, তবে সেটা ইয়াসমিন ম্যাডাম না জাফর ইকবাল স্যারের নামে সেটা জানা নেই। যেসব সাংসদ আর সাংবাদিকদের কথা বলা হয়েছে, খুঁজলে দেখা যাবে ঢাকা শহরে এদের অনেকেরই নিজের বাড়ি আছে।

পূর্বাচলের প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তদের তালিকায় ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম দেখে আমিও বিপন্ন বোধ করছি।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

জাফর ইকবাল স্যারের কাছে এতটুকু অন্তত চাই। শুধু প্রিয় লেখকই নন, মানুষ হিসেবেও তাঁকে যথেষ্ট পছন্দ করি আমি। তাঁর নামটা তালিকায় থাকাটা তাঁর অবস্থান বিরোধী এবং আত্মঘাতী হয়ে যায়। তাই পোস্টের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই,

স্যার, আমরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।

তিথীডোর এর ছবি

"জাফর ইকবাল তাঁর যোগ্যতা ও দেশের প্রতি অবদানের জন্যই সরকারের কাছ থেকে প্লট পেতে পারেন।
কিন্তু দুর্নীতিযুক্ত ও দেশের জন্য আত্মঘাতী এ প্রকল্পে তাঁর নাম আমরা দেখতে চাই না।"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাইরে,

ব্লগ আর কলাম লেখা তো সহজ। বর্তমান বাজার দরে দেড় কোটি টাকার জমি ছেড়ে দেয়া চাট্টিখানি কথা? তার উপর দাম তো হুহু করে বেড়েই চলেছে।

অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম

তানভীর এর ছবি

হ। চিন্তা করে দেখলাম সারাজীবন বিদেশে বসে টাকা কামালেও কখনো কোটি টাকা জমার সম্ভাবনা নাই। তারচেয়ে এসব কোটায় কোটি টাকার জমি বাগিয়ে কোটিপতি হওয়া অনেক সহজ। পুরাই ঠগের মুল্লুক!

অনিকেত এর ছবি

আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে চাই যে, জাফর স্যার বিষয়টার গভীরে না গিয়েই আবেদন করেছিলেন। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে চাই যে, জাফর স্যার খবরটা জেনে তার নামে বরাদ্দকৃত জমিটুকু শুধু প্রত্যাখ্যান করবেন, তা নয়, বাকীদেরকেও আহবান জানাবেন তার সাথে যোগ দেবার জন্য।

স্যার, সারা দেশের মানুষ আপনার দিকে চেয়ে থাকে দুঃসময়ে অসময়ে বিবেকের কন্ঠ শুনবে বলে। আমাদের দুর্নীতিক্লিষ্ট জাতীয় জীবনে অল্প যে ক'জন মানুষ সততা আর বিবেকের ধ্বজা তুলে রাখেন---আপনি তাদের একজন বলেই জানি।

স্যার, আমরা অপেক্ষা করে আছি--

হাসিব এর ছবি

প্রথম আলো ও অন্যান্য পত্রিকায় পছন্দমাফিক কমেন্ট না হলে সেটা আসে না। এই মন্তব্য হাপিসের একটা বিহীত করা দরকার। পরেরবার সম্ভব হলে ভিডিও করে রেখে সেটা সেইভ করে রাখবেন। প্রকাশ না পেলে সেই ভিডিও সচলে তুলে দেবেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতায় ওরা কতটা বিশ্বাস করে সেটার কিছু প্রামান্য দলিল তৈরী করা দরকার।

স্কৃনের ভিডিও করতে ক্যামস্টুডিও সফটওয়্যার [লিংক]ব্যবহার করতে পারেন।

________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ তানভীর ভাই গুরুত্ত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য।

ড্যাপ নিয়ে যখন আলোচনা শুরু হয় সারা দেশে তখনই আমি রাজউকের ওয়েবসাইট থেকে ড্যাপের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে পানিসম্পদ সম্পর্কিত তথ্যগুলি বের করি। তার সাথে নিজের অভিজ্ঞতা যোগ করে আমি ১২ জুলাই ২০১০ সচলায়তনে ড্যাপ "(DAP) ও ঢাকার পানিসমস্যা" শীর্ষক একটি পোষ্ট লিখি। লেখাটি ভাল সাড়া পায়। সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ন ছিল লেখাটিতে ড্যাপ এর রিভিউ কমিটির একজন সদস্য স্থপতি ইকবাল হাবিব এর মন্তব্য ( মন্তব্য ৭) । তিনি সেখানে হাস্যকর কিছু যুক্তি উপস্থাপন করেন যার ভিত্তিতে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পকে হালাল ঘোষণা করা হয়েছে। আমি সেই মন্তব্যের প্রতিমন্তব্যেই ( মন্তব্য ৭.৩) তার যুক্তি খন্ডন করি তথ্য প্রমাণ সহ। যাই হোক তিনি আর কোন মন্তব্য সেখানে করেননি। পরবর্তীতে সচল গৌতম ও সচল নজরুল ইসলাম উৎসাহে সচলায়তনের পোষ্টটিকে আরেকটু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী করে একটি লেখা দাঁড় করাই। লেখাটি প্রথম আলো, কালের কন্ঠ, সমকাল, যুগান্তর এ প্রকাশের চেষ্টা করা হয় একে একে। গৌতম দা, নজু এবং আরিফ জেবতিক ভাই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন লেখাটি প্রকাশের জন্য, সেই সাথে আমিও, কিন্তু কোন পত্রিকাই লেখাটি প্রকাশ করেনি। তাদের ভাষ্যমতে ভাল লেখা কিন্তু তাদের হাত বাঁধা।

প্রথম আলোর সম্পাদকীয় কলামে ১৬ জুলাই ২০১০ তারিখে

"স্বার্থান্বেষী মহলের কাছে নতিস্বীকার নয় ড্যাপ দ্রুত বাস্তবায়নই কাম্য" লেখাটি প্রকাশ হবার পরে আমি আমার পত্রিকা প্রকাশের উপযোগী লেখাটির একটি অংশ (নিচে দিলাম) সেখানে মন্তব্য আকারে দেইঃ


বালু নদী আর শীতলক্ষার ঠিক মাঝখানে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্প। বালু আর শীতলক্ষা এই দুই নদীর প্লাবনভূমি মিলে এদের মধ্যবর্তী প্রায় পুরো এলাকাই আসলে প্লাবনভুমি এবং ড্যাপের নীতিমালা অনুযায়ী প্লাবনভূমিতে কোন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা যাবেনা বিধায়। সমস্যা হলো স্ট্রাকচার প্ল্যান করার পূর্বেই যেহেতু পূর্বাচল প্রকল্প শুরু হয়েছিল তাই এই প্রকল্পকে বৈধতা দেবার জন্য এই প্রকল্পকে প্লাবনভূমি হিসেবে চিহ্নিতই করা হলোনা বরং একে ওভারলে অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করে বহাত তবিয়তে রেখে দেয়া হলো। ড্যাপের রিপোর্টে 'ওভারলে' র সংজ্ঞা প্রণিত হয়েছে এইভাবে, “যে জায়গাগুলো তার আশেপাশের চিহ্নিত জোনের সাথে সংগতিপূর্ণ নয় তবে তাদেরকে ব্যাতিক্রম হিসেবে স্বঅবস্থানে সংরক্ষণ করা হবে তাই হচ্ছে ওভারল জোন (পৃষ্টা IV 42, গ্রুপ A রিপোর্ট, ড্যাপ)। এখন দেখা যাক কি কি গুরুত্ত্বপূর্ণ স্থানকে ওভারলে হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে। ড্যাপের রিপোর্টে স্পষ্ট লেখা আছে, “ ওভারলে জোন যেকোন ধরনের হেরিটেজ সাইট থেকে কবরস্থান পর্যন্ত যেকোন ধরনের জায়গা হতে পারে। কিছু নমুনা হচ্ছেঃ ঐতিহাসিক স্থান, জলাভূমি সংরক্ষণ স্থান, কবরস্থান, খেলাধুলা ও বিনোদন স্থান এবং বিশেষ ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত স্থান (পৃষ্টা IV 12, গ্রুপ A রিপোর্ট)। বিশেষ ব্যবহারের স্থান সমুহেরও কিছু নমুনা দেয়া আছে। যেমনঃ মেলা, হাট বাজারের জন্য নির্ধারিত স্থান (পৃষ্টা IV 44, গ্রুপ A রিপোর্ট)। অর্থাৎ কোন সংগাতেই 'পূর্বাচলকে' ওভারলে হিসেবে চিহ্নিত করণ বৈধ নয়। একই ভাবে ঝিলমিল প্রকল্পকে এক্ষেত্রে ওভারলে হিসেবে চিহ্নিত করন করা যাবেনা। ফ্লাড ফ্লো জোন একটি প্রাকৃতিক জোন যা কোন ভাবেই নিজের ইচ্ছেমত পরিবর্তন করা যাবেনা। সঠিক ভাবে সেটি চিহ্নিত করার জন্য ঢাকার হাইড্রোলজিকাল সার্ভে প্রয়োজন এবং অবশ্যই তা ‘আরবান হাইড্রোলজিকাল মডেল স্টাডি করে'। রাজউক নিজেই তার প্রকল্পকে বিশেষ নিয়মে ছাড় দিলে বেসরকারী উদ্দোক্তরা সেই একই সুবিধা চাইবে যা কোন মতেই যৌক্তিক নয়। আশা রাখি চুড়ান্ত বাস্তবায়নের আগে রাজউক এই জিনিসগুলো আবার পূনর্বিবেচনা করবে এবং ঢাকার যথাযথ হাইড্রোলজিকাল সার্ভে করেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

দুঃখজনক হলেও সত্যি সেই মন্তব্য মডারেশন পার হয়নি (একটি ভুল করেছিলাম , আসলে মন্তব্য মডারেশনে জমা হবার পরে একটি স্ক্রীণ শট রেখে দেয়া উচিৎ ছিল)। অথচ তেল মারা মন্তব্য ঠিকই ছাপা হয়েছে ( প্রথম আলোর লেখাটির নিচে পাবেন) ।

যাই হোক কোথাও প্রকাশ করতে ব্যার্থ হয়ে সেটি "সংশোধিত ড্যাপ আবশ্যক" শিরোনামে সচলায়তনে নিজের ব্লগেই রেখে দেই ( যেহেতু লেখাটি আংশিক পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত তাই প্রথম পাতায় প্রকাশ করিনি)। সেই সাথে আরো কিছু ব্লগে ( আমরা বন্ধু, নাগরিক, বকলম) প্রকাশ করি যেন সেটি ছড়িয়ে যায়। সচলায়তনের মডারেটর বৃন্দ অনুমোদন করলে লেখাটি প্রথম পাতায় পূনঃ প্রকাশ করা যেতে পারে।


----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তানভীর এর ছবি

বিস্তারিত মন্তব্য এবং ড্যাপ সম্পর্কিত পোস্টগুলোর জন্য অনেক ধন্যবাদ জাহিদ।

গৌতম দা, নজু এবং আরিফ জেবতিক ভাই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন লেখাটি প্রকাশের জন্য, সেই সাথে আমিও, কিন্তু কোন পত্রিকাই লেখাটি প্রকাশ করেনি। তাদের ভাষ্যমতে ভাল লেখা কিন্তু তাদের হাত বাঁধা।

পরিস্থিতি যেমন ভেবেছিলাম তার চেয়েও সাংঘাতিক মনে হচ্ছে। এটা তো একটা বিশাল সিন্ডিকেটের মতো- পরিকল্পনা প্রণয়ন, আইন-কানুন পরিমার্জন, প্লট বিতরণ থেকে শুরু করে একেবারে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত! ভাগ-বাটোয়ারা সবার মধ্যে ভালোই হচ্ছে।

শ্রাবন্তি এর ছবি

বাংলাদেশের সাংবাদিক মহল পূর্বাচল প্রকল্পের ভাগ পাওয়াটাই সচেতন পাঠকের মন্তব্য না ছাপার একমাত্র কারণ তা নয়।
সংবাদপত্র এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া হাউজগুলো এখন দুঃসময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।এদের পৃষ্ঠপোষকদের দুর্নীতি অনিয়ম আর লুটে পুটে খাওয়ার মানসিকতা, অতীত ইতিহাস আর একের সঙ্গে অন্যের অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে সবাই কিছুটা ব্যাকফুটে আছে, সরকারের কঠোর পদক্ষেপের ভয়ে আছে এবং সরকার এবং মিডিয়া হাউজগুলো ইতিমধ্যে একে অপরকে ব্যালান্স করে চলতে শিখে ফেলেছে।বাংলাদেশে মিডিয়া হাউজগুলোর দ্বন্দ্বের কারণে সংবাদপত্রের হাত থেকে এই মূহুর্তে যে কোন ধরনের দুর্নীতি আজ অনেকটাই নিরাপদ। নিজ স্বার্থ উদ্ধার এবং সরকারের গুডবুকে থাকার জন্য 'ভেঁপু-থামুন-বাজান' এবং '১০০ হাত দূরে থাকুন' নির্দেশনাসমূহ মেনে চলছে।

যতটুকু না ছাপলেই নয়এবং নিজেদের স্বার্থের খাতিরে প্রকাশ করা অপরিহার্য। শুধু সেগুলোই পত্রিকায় এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় আসছে।

সচল জাহিদ এবং গং এর মন্তব্য না ছাপানোয় বোঝা যায়, এই ব্যাপারটিতে তারা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল এবং মডুদেরকে 'ডুস এন্ড ডোন্টস' এর তালিকা ধরিয়ে দেয়া হয়েছে সম্পাদকীয় নীতিমালার অংশ হিসেবে।।সত্যি সত্যিই অনেক ছাগু মন্তব্য আমাদের চোখে পড়ে, কিন্তু বস্তুনিষ্ঠ এবং তথ্যপ্রমাণ সংবলিত লেখাগুলো রিসাইকেল বিন এ চলে যায়।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সারছে! জাতীয় পত্রিকার হাত পা যদি একটা বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে বাঁধা তাহলে তো আমাদের সামনে দুর্দিন ছাড়া আর কিছু দেখি না!

আপনি আপনার পোস্টের মধ্যে এই বিষয় গুলো যুক্ত করে রিপোস্ট করেন প্লিজ। তবে পরবর্তী কনসিকোয়েন্সের কথাটা মাথায় রাইখেন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

মাহবুবা এর ছবি

বুঝলাম না- রাজুক থেকে প্লট দিচ্ছে দেখে অনেক প্রবাসির মত আমিও আবেদন করেছিলাম- প্লট পেলে অবশ্যই নিতাম- আপনার কথা মত সেটা খারাপ কাজ হত মন খারাপ

জাহামজেদ এর ছবি

সবার সাথে আপনার প্লট নেওয়াটা হয়তো খারাপ হতো না। কিন্তু পূর্বাচল ঢাকার পানি প্রবাহ অঞ্চলে হওয়ার কারণে এখানে প্লট নেওয়াটা ঢাকার সব মানুষের ভবিষ্যতের জন্যই খারাপ। না জেনে যারা এখানে প্লট নিচ্ছেন তাদের দোষের কিছু দেখি না, এ বিষয়ে কাউকে দোষী করা হলে সেটা রাজউক।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

হিমু এর ছবি

আমজনতা এইভাবেই পার পেয়ে যেতে চায়। আমি কিছু জানি না, কর্তৃপক্ষ কিছু বলে নাই, ইত্যাদি যুক্তি দেয়। কিন্তু এটা জানা কথা যে ঢাকার কাছে এখন কোনো আবাসন প্রকল্প হলে সেটা কমবেশি বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ভরাট করেই হবে। বিনিয়োগের পেছনে না জানাটা যত বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে, তারচে বড় শক্তি লোভ। এই লোভের মূল্য দেয় গোটা শহর, যখন এক ঘন্টা বৃষ্টি হলে রাস্তায় হাঁটু পানি জমে যায়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমার মতে অভিযোগের অঙ্গুলি আমজনতার দিক থেকে সরিয়ে উদ্যোক্তাদের দিকে তাক করা দরকার। কারণ প্রবাসীরা তাদের বিনিয়োগের পেছনে না-জানার তুলনায় লোভটা কাজ করালেও যারা এই উদ্যোগ নিয়েছে তারা জেনে শুনেই লোভের বশে এটা করছে। এটা এক নম্বর।

দুই নম্বর হলো, এইসব প্রবাসী/আমজনতা পূর্বাচলে প্লট না কিনলেও সেখানে কোনো প্লট খালি থাকতো না। অমুক হাউজিং সোসাইটি, তমুক হাউজিং ভ্যালি আর সমুক টাওয়ারে বসবাসকারী অধিবাসীরা আর কয়েকপ্রকার ডিওএইচএস এর বাসিন্দারা মিলে পূর্বাচল, পশ্চিমাচল সব প্রজেক্টেরই সানডে-মানডে কোলোজ করে দিতো। অর্থাৎ, কোনো আবাসিক প্রকল্পই কুমারী থাকতো না। কেউ না কেউ তাতে হাত দিতোই। আর ঢাকা কেন্দ্রিক সারা দেশের অভিপ্রায়ণকে ঠাঁই দিতে এই উদ্যোগ এখন বা পাঁচ বছর পর, নিতেই হতো আবাসিক উদ্যোক্তাদের। হয় সেটা হতো দারুণ পরিকল্পনামাফিক অথবা এখনকারমতো নুন-চূন-আর আমের কষের লাবড়া। উভয়ক্ষেত্রেই সিংহভাগ দায় উদ্যোক্তাদের।

এই দায় সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে ঢাকাকে পাবলিক ইন্টারেস্টের কেন্দ্র থেকে সরাতে হবে। ঢাকাকে কেন্দ্রে রেখে কোনো সমস্যারই সমাধান সম্ভব হবে না। এভাবে চলতে থাকলে এক ঘন্টা বৃষ্টি তো পরের কথা, আকাশে মেঘ করতে শুরু করার আগেই ঢাকায় টাইটানিকে করে চলাচল করতে হবে সামনে।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অতিথি লেখক এর ছবি

এটাই আসলে মূল কারণ। ঢাকাকে যতদিন আগ্রহের কেন্দ্রে রাখা হবে ততদিন এর আশে পাশে সব নিচু জমি ভরাট হবেই, তা বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই হোক না কেন। ঢাকার বাহিরে দৃষ্টি দিতে না পারলে কোনো সমাধান নেই।

অনন্ত

ধুসর গোধূলি এর ছবি

সবাই নানা কোটায় প্লট পেলো, হাদুমপাদুম কোটায় প্লট পাওয়ার কোনো সিস্টেম নাই? থাকলে আমিও নাহয় একটা কোটি টাকার প্লটের মালিক হতে পাত্তেম! আপ্সুস। মন খারাপ



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালোই বলেছেন। আমিও মনে হয় সেই পাট্টির লোক.... খাইছে
সাজ্জাদ বিন কামাল

নৈষাদ এর ছবি

যেহেতু আমি নিজেও পূর্বাচলের প্লটের জন্য আবেদন করেছিলাম, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করা দরকার। মজার ব্যাপার আমাকে এই পূর্বাচলের প্লটের জন্য আবেদন করার জন্য যিনি বার বার বলেছিলেন তিনি নিজেও একজন সরকারি কর্মকর্তা (এবং বুয়েট থেকে পাশ করা প্রকৌশলী)। তিনি যে ব্যাপারটা উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন তা হল অ্যালোকেশন নিয়ে অস্বস্তি থাকতে পারে, কিন্তু প্লটগুলি অবশ্যই জেনুইন হবে।

প্রাথমিক ভাবে পূর্বাচলের প্লটের জন্য আবেদন করার শেষ সময় ছিল, যতদূর মনে হয় মধ্য-ডিসেম্বর ২০০৮ (তখনও তত্ত্ববধয়ায়কের আমল) এবং কথা ছিল তত্ত্ববধয়ায়ক সরকারের সময়ই এটা চুড়ান্ত করা হবে।

ড্যাপ গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করা হয় এর অনেক পরে এবং এ নিয়ে মিডিয়াতে কথাবার্তা শুরু হয়। এর আগে সরকার যে সব প্লট বরাদ্দ দিয়েছিল, সেখানে পরিবেশ নিয়ে কোন বিতর্ক হয়েছিল এমন কথা মনে করতে পারলাম না। যেটা নিয়ে বিতর্ক হত সেটা ছিল স্বজনপ্রীতি/বা পার্টিপ্রীতি (বা সেই প্রকৌশলী সরকারি কর্মকর্তার ভাষায় ‘অনুরোধের আসর’।) অ্যালোকেশন প্রসেসটা নিয়ে মানুষের মধ্যে অস্বস্তি ছিল কিন্তু রাজউক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লট বরাদ্দ দেবে সেটা কেউ চিন্তা করেনি।

এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে যেহেতু চুড়ান্ত করার কথা হয় এবং এর সাথে বুয়েটকে যুক্ত করা হয়, প্রবাসী এবং দেশের লোকজন প্রচুর পরিমানে আবেদন করেছে এই বিশ্বাসে যে প্রসেসটা ফেয়ার হবে। কোন মিডিয়াতে কিন্তু তখন এই ব্যাপারটা আসেনি যে এই প্রকল্পটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। মিডিয়াতে যেটা এসেছিল/অথবা একটা রিউমার ছিল যে আর্মি হয়ত কিছুটা বেনিফিট পাবে – পরে নির্বাচিত সরকার এসে প্রসেসটাকে পিছিয়ে দেয় (এবং আমরা ভাবি আবার অনুরোধের আসর হয়ত শুরু হবে এবং ইন্টারেস্ট হারিয়ে ফেলি)।

আমার পরিচিত যারা আবেদন করেছিল, কেউই কিন্তু প্লট দেখার জন্য সেখানে যায় নাই, কারণ এধরণের সরকারি প্লটের প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা আছে (পূর্বের প্লট বরাদ্দের ইতিহাস)। কেউ কেউ (আমি নিজেও) গুগল আর্থে গিয়ে জাস্ট বুঝতে চেষ্টা করেছি লোকেশনটা কোথায়।

এই প্রেক্ষিতে জাফর ইকবাল স্যার আবেদন করেছেন, তাতে তো কোন সমস্যা দেখি না। বুঝতে চেষ্টা করুন ড্যাপ যতই আগে তৈরী হোক, গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করা এবং এ নিয়ে মিডিয়াতে কথাবার্তা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত সবাই এটা জানবে এটা ভেবে নেয়াটা ফেয়ার না। দ্বিতীয়ত, সাধারন নাগরিক হিসাবে আমি যদি আবুল এন্ড কো এর কাছ থেকে প্লট কিনতে যাই, তবে রাজউকের অনুমোদন আছে কিনা দেখব, কিন্তু রাজউক যখন প্লট দিচচছে তখনতো টেকেন ফর গ্রান্টেড সব ঠিক আছে। রাজউক তো অথোরিটি। (আমি প্লট পাই নাই কিন্তু।)

তবে এটা স্বীকার করি যেহেতু এখন ব্যাপারটা বিতর্কিত হয়ে গেছে, সেখানেই অস্বস্তি হচ্ছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

এর সাথে বুয়েটকে যুক্ত করা হয়, প্রবাসী এবং দেশের লোকজন প্রচুর পরিমানে আবেদন করেছে এই বিশ্বাসে যে প্রসেসটা ফেয়ার হবে।

তা সেই বিশ্বাসে কি এখন ফাটল ধরেছে? লোকে বলে,

ন্যাড়া দুই বার বেল তলায় যায় না

বাঙ্গালী এতোবার বেল তলায় গিয়েছে, যে এখন আর যেতে ভয় হয় না। ন্যাড়ার তালু শক্ত হয়ে গেছে।

বুয়েটের প্রফেসরদের কেরামতি, জগৎ না হোক, দেশ বিখ্যাত। Seventh Sense Software এর কর্ণধার ড. সাব্বির রহমান, ব্যর্থ হয়ে দেশ ত্যাগের আগে যে লম্বা পত্র লিখেছিলেন, তার একটা অভিযোগ ছিলো, Bengali Speech Recognition Software তৈরীর কাজ তাঁর পাবার কথা থাকলেও পেয়েছিলেন, বুয়েটের একজন অধ্যাপক। কেউ কি মনে করেন যে সেই অধ্যাপক মহাশয় আসলেই কাজটি পারবেন? উত্তর, 'না'। তাহলে তাকে দেয়া হলো কেন? কারন, তিনি বুয়েটের অধ্যাপক।

আশা করছি, বাংলাদেশ গৎবাঁধা অপবিশ্বাস এবং কুপ্রথা থেকে বেরিয়ে আসবে। এবং প্রতিটি মানুষকে একমাত্র তার কর্ম এবং আচার-ব্যবহারের মাধ্যমে মুল্যায়ন করা হবে। ধর্ম, অঞ্চল, বর্ণ এবং ব্যানার দিয়ে নয়।

সাজ্জাদ বিন কামাল

ekhono balok এর ছবি

সবইতো বুঝলাম। কিন্তু এই সদ্য পয়সাওয়ালারা যারা ডুবাই কিংবা কুয়ালালামপুরে কিনতে পারবে না, তারা যাবে কোথায়?
ভেতরের কথাটা বুঝাতে পারলাম কি?

নোবেল [অতিথি] এর ছবি

নৈষাদ ভাই ঠিক ই বলেছেন। আমিও তাই মনে করি

রাজিব মোস্তাফিজ [অতিথি] এর ছবি

আমার জানা আরেকটি তথ্য এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক হলেও হতে পারে যদিও আমি নিশ্চিত নই। জাফর ইকবা্ল স্যার এবং ইয়াসমিন ম্যাডাম সম্ভবত ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করবেন (যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ ৬০ বছর হয়) ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর জাফর স্যার, ইয়াসমিন ম্যাডাম এবং (সম্ভবত) সুশান্ত স্যারের পরিকল্পনা হচ্ছে একটা স্কুল করা যার জন্য তাঁরা অনেকদিন ধরেই একটা জমি কেনার চেষ্টা করছিলেন ।

আমি অবশ্য নিশ্চিত নই এই ঘটনার সাথে এটার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা ।

সম্রাট [অতিথি] এর ছবি

হাস্যকর !!! যে লোকটা বেল কমিউনিকেশানস রিসার্চ এর মতো জায়গা ছেড়ে শাবিপ্রবি তে শিক্ষকতা করছেন, বিদেশের হাজার সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারের লোভ সামলে দেশের জন্য কাজ করছেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী কন্ঠ, তাকে আমরা কত সহজে একটা প্লটের জন্য সন্দেহের কাতারে ফেলে দিচ্ছি। অন্ততপক্ষে স্যার সরকারী প্লট কিনেছেন (যদি আসলেই কিনে থাকেন)... অসহায় মানুষের রক্ত মাখানো বসুন্ধরার প্লট কেনেন নাই। (যদিও আমি জানিনা বসুন্ধরায় স্যার এর প্লট আছে কিনা, যদি থাকে আমার এই যুক্তি বাতিল।) এই ব্যাপারে নৈষাদ ভাইয়ের মন্তব্যটা দেখেন প্লীজ। অনেকেরই অবস্থা এমন।
এর মানে এই নয় যে আমি রাজউকের কাজ জাস্টিফাই করছি। রাজউককে আমরা বলি “পাবলিক ডেভেলপার” (!!!)। একজন নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে আমার ড্যাপ এ কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি এটুকুই বলব ড্যাপ কোন বেদবাক্য নয়। যদিও ঢাকাকে রক্ষা করার জন্য ড্যাপ একটি আদর্শ প্রস্তাবনা, কিন্তু ড্যাপ অনেকটাই থিওরিটিক্যাল। বাস্তব সমস্যা সমাধানে ড্যাপ যে কতটুকু কার্যকর তাতে আমার ব্যাপক সন্দেহ আছে। ডিটেইল্ড ট্যাকনিক্যাল বিষয়ে গেলাম না। এই লেখাটির মূল বিষয় ড্যাপ নয় আমার ধারনা, মূল বিষয়টা ঘুরেফিরে প্লট বন্টন।
ড্যাপের পক্ষে বিপক্ষে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আমি এই বিষয়ে যাচ্ছিনা। শুধু স্যার এর ব্যাপারে করা মন্তব্যগুলোর বিরোধিতা করছি।

====================
বালক ভুল করে নেমেছিল জলে

সম্রাট

তানভীর এর ছবি

সম্রাট সাহেব,

“পাবলিক ডেভেলপার” এবং প্রাইভেট ডেভেলপারদের জন্য এক দেশে দুই রকম আইন/সুবিধা থাকা কি অন্যায় নয়? লেখার মূল বিষয় তো এটাই ছিলো- রাজউকের দুর্নীতি।

সম্রাট [অতিথি] এর ছবি

তানভীর সাহেব,

অবশ্যই অন্যায়। আপনি মনে হয় বুঝতে পারেন নাই রাজউকের এই নামকরন করা হয়েছে একে উপহাস করে। এভাবে আবাসন প্রকল্প করা তো রাজউকের কাজই না।
আমি লেখায় বলেছি রাজউকের কাজ আমি জাস্টিফাই করছি না কোনভাবেই। জবাবের জন্য ধন্যবাদ।

====================
বালক ভুল করে নেমেছিল জলে

সম্রাট

ক্কেহেরমান এর ছবি

ইদানিং জাফর সাহেবকে গালি দেয়া মনে হয় ফ্যাশন এর পর্যায়ে পড়ে যাচ্ছে।

ড্যাপ এর প্রজেক্ট নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে রাজউক এর প্লট বরাদ্দ দেয়ার অনেক পরে। যেহেতু রাজউক প্লট দিচ্ছে সেহেতু কেউ নিশ্চই খোজ নিতে যায়নি প্লট এর ব্যাপারে। সেটা জলাভূমি, না মরুভূমি সে ব্যাপার নিশ্চই সরকার জানত। সাধারন মানুষের বিশ্বাসের জায়গাটাই ছিল সরকার।

আপনি দাবি করলেন যে, এখন তো সবাই জানে, এখন ছেড়ে দিলেই পারে। হাস্যকর কথা বলছেন আপনি। যারা যারা প্লট পেয়েছেন সবাই কি ছেড়ে দিবেন? আপনি হলে ছেড়ে দিতেন? নিজে পাননি বলেই গাত্রদাহ? সরকারের দোষত্রুটি সাধারন মানুষের উপর চাপাচ্ছেন কেন?

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

আপনি হলে ছেড়ে দিতেন? নিজে পাননি বলেই গাত্রদাহ?

ব্যক্তিআক্রমনের দরুন মন্তব্যটি আপত্তিকর অভিযুক্ত করছি।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

তানভীর এর ছবি

নিজে পাননি বলেই গাত্রদাহ?

হা হা। আমি যে ভাই এপ্লিকেশনই করি নি। পাওয়া না পাওয়ার প্রশ্নই তাই আসে না। তবে তালিকা দেখে গাত্রদাহ হয়েছে তো বটেই। কারণ, এমন অনেক নাম আছে যাদের জায়গা-জমি আছে তারপরও প্লট পেয়েছেন।

আর আমরা কাউকে প্লট ছেড়ে দিতে বলছি না। সরকার/রাজউককেই এই অন্যায় প্রকল্প বাতিল করতে বলছি। যেহেতু প্লটের ভাগ পেয়ে এটা নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করছে না, তাই অধ্যাপক জাফর ইকবালের মতো মানুষদের এগিয়ে আসতে বলেছি।

সম্রাট [অতিথি] এর ছবি

তানভীর সাহেব,

এতো বড় একটা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়ে গেলে সেটা বাতিল করা এক কথায় অসম্ভব। তাছাড়া এই প্রকল্প বাতিল করলে যে পরিমান অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে তা "Cost- Benefit" হিসাব করলে যুক্তিযুক্ত হয়না। আমরা যারা এই বিষয়ে কাজ করছি তাদের অনুরোধ ছিল প্রকল্পটি চলবে, কিন্তু রাজউককে প্রকল্পটি "Non- Conforming Land Use" (অনুপযুক্ত ভূমি ব্যবহার) হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। রাজউক তা মানতে নারাজ। ফলশ্রুতিতে ভূমি দস্যুরা এখন এই প্রকল্পকে পুঁজি করে তাদের অন্যায় প্রকল্পও অনুমোদনের আন্দোলন করছে।

====================
বালক ভুল করে নেমেছিল জলে

সম্রাট

অতিথি লেখক এর ছবি

সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

অনাবাসীরা কেন ঢাকায় প্লট চান জানিনা,গ্রামের বাড়ীটা বরং ইউরোপের আদলে তৈরী করলেই পারে সবাই, যাতায়াত ব্যবস্থাতো ভালো(গাড়ী থাকলে)।নিমতলীর অগ্নিকান্ডের পর ঈশরদির এক আম রিক্সাওয়ালা ভয় পেয়ে ঢাকা যাওয়া বাতিল করেছেন, বললেন,কম উপার্জন করি,কিন্তু বেঁচে তো আছি।

ঢাকা এখন মৃত্যুর শহর। কাজেই দোজখের ওম নিতে কারা যাচ্ছে?হয়তো ওইখানেই দুর্নীতিগ্রস্তরা মহাপ্রস্থানের পথ খুঁজছেন।

জাফর ইকবাল স্যার সিলেটে আর একটু থিতু হলেও পারতেন। এখন ইউটিউবে ঘরে বসে বক্তৃতা দিয়ে উনি আপলোড করলেও আমরা উপকৃত হবো।
স্যার রাজউকের প্লটের জন্য এপ্লাই করতেই পারেন,যদি ঢাকায় উনার আর জমি না থেকে থাকে। লটারীতে উনার নাম আসতেই পারে। উনি তদবির করে জমি নেয়া লোক নন। যারা উনার সঙ্গে কথা বলার সীমানায় আছেন তারা সামনা সামনি কথা বলে নিলেই ভালো। স্যার কখনো আমাদের হতাশ করেন নি,

খুব ভালো পোস্ট আলোচিত অন্য জরুরি ইস্যুতে সহমত।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

রাজিব মোস্তাফিজ [অতিথি] এর ছবি


জাফর ইকবাল স্যার সিলেটে আর একটু থিতু হলেও পারতেন।

বস, এটা দিয়ে কী বোঝাতে চাইলেন বুঝলাম না ।

স্যার রাজউকের প্লটের জন্য এপ্লাই করতেই পারেন,যদি ঢাকায় উনার আর জমি না থেকে থাকে। লটারীতে উনার নাম আসতেই পারে। উনি তদবির করে জমি নেয়া লোক নন। যারা উনার সঙ্গে কথা বলার সীমানায় আছেন তারা সামনা সামনি কথা বলে নিলেই ভালো। স্যার কখনো আমাদের হতাশ করেন নি

আমি এখন স্যারের সাথে কথা বলার সীমানায় নেই-- তবে এ বিষয়ে নিশ্চিন্ত না থাকার কোনো কারণ দেখছি না । আর যারা কথা বলার সীমানায় আছে তারা যেন এটা স্যারের নজরে আনতে পারে এ জন্য লেখাটা আমার ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছি ।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

ঢাকার চেয়ে সিলেট অনেক আরাম দায়ক বসবাসের জন্য,সেই অর্থে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

রাজিব মোস্তাফিজ [অতিথি] এর ছবি

সহমত

দুর্দান্ত এর ছবি

যেহেতু আমি পূর্বাচলে আবেদন করেও প্লট পাইনি, তাই এই প্রকল্প খারাপ।
----
কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিঃ

১ ) শাহাবাগ-ইস্কাটনের টিলা এলাকা ছাড়া ঢাকা শহরের কোন জায়গাটা নদীপ্লাবন এলাকা ভরাট করে তৈরী হয়নি? ধানমন্ডি-মীরপুর-গুলশান-উত্তরা এর কোনটিতে বোরো ধানের ক্ষেত ছিলনা? এমন কি হতে পারে যে পূর্বাচলে আশু নির্মান এর চাইতে মিরপুর (আমি বাতাস থেকে একটা উদাহরন টেনে নিলাম) এখনকার বাড়ীঘরগুলো ঢাকার পরিবেশের জন্য বেশী ক্ষতিকর। যেসব কাঠামো এখন দাড়িয়ে আছে, সেগুলো ঢাকার/পরিবেশের কতটুকু ক্ষতি করছে তার পর্যালোচনা করবে কে? কেউ কেউ বলবে, আগামীকে বদলানো সহজ, দাঁড়িয়ে থাকা কাঠামো ভাঙা কঠিন। কিন্তু সহজ বলেই দাঁড়িয়ে থাকা মহা ক্ষতিকর কাঠামো (যদি থাকে) নিয়ে কিছু বলবো না, শুধুই (ড্যাপে চিহ্নিত) ক্ষতিকর আগামীকেই রুখবো। এটা কি সামনে দিয়ে উড়ে যাওয়া মচ্ছর পিটিয়ে তুলো ধুনে পেছন দিয়ে হাতিকে চম্পট মারতে দেবার মত হলনা?

২) ড্যাপ এর বিশ্বাসযোগ্যতার প্রমান কি? আমরা যদি ড্যাপ এর কিছু অংশ (পূর্বাচল এর গ্রহনযোগ্যতা) কে প্রশ্ন করি, তাহলে এর অন্যান্য বিষয়গুলোরও যে বাস্তবের সাথে সামঞ্জস্য আছে, সেটা কেন মনে করছি? আমার তো মনে হয় এর চাইতে ভাল কিছু নেই, তাই সবাই ড্যাপ কে মানদন্ড মানছে। কালকে আমাদের জাহিদ ভাই ও তার বন্ধুরা যদি একটি 'রাম-ড্যাপ' বাজারে ছাড়েন, তাহলে সেটাতেও কি পূর্বাচল কোশার হয় না?

৩) শেষমেশ বেক্কল পাবলিকেরি ভোগান্তি হবে। আমি জানিনা পুরো পূর্বাচলের প্লটের কত শতাংশ জায়গা সাংসদ/আমলা/রাজনৈতিকদের পেটে গেছে। যদি উত্তরার মত কিছু হয়, তাহলে সেটা ৫% এর নিচেই হবে। তাহলে বাকীপ্লটগুলো তো আমার-আপনার ভাই-বেরাদর খালু-শ্বশুরেরাই পেয়েছে। পূর্বাচলের অবকাঠামোতে এখনই কি কি ধরনের পরিবর্তন আনলে পরে প্রকৃতির ন্যুনতম ক্ষতিসাধন করে এই লোকগুলো সেখানে বাড়ী তুলে বসবাস করতে পারে?

সচল জাহিদ এর ছবি

দূর্দান্ত ভাই,

প্রাসংগিক বলে ( যদি আপনার মন্তব্যে উল্লেখিত জাহিদ ভাই আমি হই !!!) কিছুটা উত্তর দেবার চেষ্টা করা যেতে পারেঃ

১) এভাবে বলতে গেলে পুরো বাংলাদেশের সিংহভাগ এলাকা প্লাবনভূমি। অধিকাংশ শহরই আগে একসময় বুরো ধানের ক্ষেত বা জলাভূমি ছিল। মিরপুর বা উত্তরার সুবিধা হচ্ছে তুরাগ নদীর পূর্ব দিক ঘিরে রয়েছে কৃত্রিম ঢাকা রক্ষা বাঁধ। সুতরাং বাঁধের পূর্ব পাশে ( উত্তরা, মিরপুর) উন্নয়ন প্রকল্প করা জায়েজ। কারন তার ফলে বাঁধের পশ্চিম তুরাগ নদীতে বন্যার পানি বাঁধের পশ্চিম পাশে ছড়িয়ে পড়বে আর সেদিকে সবই জলাভূমি। আর পূর্বাচলের সমস্যা হচ্ছে এটি পড়েছে শীতলক্ষা আর বালু এই দুই নদীর সাধারণ প্লাবন ভূমিতে। এবং পুরো প্লাবন ভূমিকে অবরুদ্ধ করে এটি দাঁড়িয়ে আছে। ফলে বন্যার পানি এই অবরোধে বাঁধা পাবে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে আশে পাশে।

২) ড্যাপের পানিসম্পদগত সমস্যা হচ্ছেঃ

প্রথমত এখানে সাধারণ কোন মানদন্ড নেই। একেক ক্ষেত্রে একেক রকম নীতিমালা করা হয়েছে। এই বলা হলো বন্য প্রবণ এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড অবৈধ আবার একই নিয়মে পূর্বাচন বা ঝিলমিলকে বৈধ ঘোষণা করা হলো।

দ্বিতীয়তঃ আসলে কোন এলাকা বন্যা প্রবণ তা ম্যাপ দেখে না চিহ্নিত করে বরং পানিসম্পদগত গানিতিক ও তত্ত্বীয় জ্ঞান দিয়ে বের করা উচিৎ যেটাকে আমি বলেছিলাম হাইড্রোলজিকাল সার্ভে। ড্যাপ তখনি বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে যখন এটি একটি সাধারণ নিয়ম মেনে চলবে।

৩) পূর্বাচলকে বৈধ করতে গেলে কিছু সম্ভাব্য উপায় হতে পারেঃ
-পূর্বাচলের মাঝ খান দিয়ে একটি ফ্লাড ওয়ে করা
-ঢাকার পূর্বদিকে ( বালু নদীর পশ্চিমে) কৃত্রিম বাঁধ নির্মান করা যাতে বালু ও শীতলক্ষার বন্যার পানি ঢাকাতে প্রবেশ করতে না পারে। এতে খিলগাঁও, বাসাবো ও সবুজবাগ এলাকা বন্যা প্রকোপ মুক্ত হবে।

তবে আমার প্রস্তাব হচ্ছে এর জন্য সরকারের যা খরচ হবে তার একটি অংশ পূর্বাচলে যারা প্লট পেয়েছে তাদের কাছ থেকে নেয়া হোক।

বিদ্রঃ ভুলে জবাবে না লিখে মন্তব্যে লিখে ফেলেছি !!!
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দুর্দান্ত এর ছবি

আমার প্রশ্ন ঠিক জাহিদ ভাইকেই খুজে পেয়েছে।

আসলে কোন এলাকা বন্যা প্রবণ তা ম্যাপ দেখে না চিহ্নিত করে বরং পানিসম্পদগত গানিতিক ও তত্ত্বীয় জ্ঞান দিয়ে বের করা উচিৎ যেটাকে আমি বলেছিলাম হাইড্রোলজিকাল সার্ভে।

এই কাজটি কে করবে? মানলাম সরকারের একটা দায়িত্ব থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের প্রকৌশলীমহল কি কর্পোরেটের গাট থেকে দুটো পয়সা খসিয়ে নিজেরাই একটি 'দ্বিতীয়-মত' করে দিতে পারে না? সরকারের নীতিমালা ড্যাপ নির্ভর, সুতরাং সরকারের নীতির সমালোচনার যেমন প্রয়োজন আছে, ঠিক তেমনি সে সমালোচনার একটি কাঠামোগত আদর্শের প্রয়োজন রয়ে গেছে। এরকম একটা ড্যাপ-খন্ডন নথি না থাকলে ড্যাপ দিয়ে নেপো দই খেয়ে নেবে।

পূর্বাচলের মাঝ খান দিয়ে একটি ফ্লাড ওয়ে করা
ঢাকার পূর্বদিকে ( বালু নদীর পশ্চিমে) কৃত্রিম বাঁধ নির্মান করা
এর জন্য সরকারের যা খরচ হবে তার একটি অংশ পূর্বাচলে যারা প্লট পেয়েছে তাদের কাছ থেকে নেয়া হোক।

এ কাজগুলো করতে মনে হয়না আলাদা করে টাকা নেবার প্রয়োজন আছে। শুধু পূর্বাচলের লটারিতে যে পরিমান টাকা জমা পড়েছে (কবে ফেরত দেবে কে জানে?) সে টাকার সুদেই কাজ চলে যাবার কথা।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

পোস্টের সঙ্গে একমত নই।
রাজউক যখন পূর্বাচল প্রজেক্ট ঘোষনা করে তখন তারা ড্যাপের কথা বলে নি। সুতরাং
যদু মধু কদু এবং জাফর ইকবাল, কারোই জানার কথা না যে পূর্বাচল ফ্লাডো ফ্লো জোন এ হচ্ছে নাকি পাহাড় জোনে হচ্ছে।

রাজউক এখন ড্যাপ তৈরী করেছে এবং বেসরকারী ভূমি ডেভেলপরদের জায়গাগুলোর সঙ্গে তাঁদের জায়গাও (পূর্বাচলের পুরোটা নয়, যতদূর জানি কিছু অংশ) ড্যাপের ফ্লাড ফ্লো জোনে পড়েছে। এখানে ড্যাপ প্রণেতারা ফতোয়া দিয়েছেন যে, রাজউক যে অংশ ইতিমধ্যেই ভরাট করে ফেলেছে সেই অংশগুলো ওভারলে হিসেবে গন্য হবে, অর্থাৎ এই অংশগুলো থেকে যাবে। সুতরাং পূর্বাচলের বেশির ভাগই আসলে থেকে যাবে।

যদি প্রজেক্টটি থেকে যায়, তাহলে সেখান মুহম্মদ জাফর ইকবার কিংবা তানভীরের প্লট নেয়া না নেয়ায় ইতর বিশেষ কিছু দেখি না। আপনি প্লট ছাড়লে আরেকজন নিবে কিন্তু ।

অফটপিক : ড্যাপ নিয়ে হাঙ্গামা কম নয়। এটিকে রিভিউ না করে বাইবেল মনে করাটাও সঠিক হবে না। আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকাকে ফ্লাড ফ্লো জোন দেখানো হয়েছে, কিন্তু সেখানে পুকুর কাটলেও পানি উঠে না, এমন খটখটে মাটি সবসময়। আমি জানি না ড্যাপ প্রনেতারা ম্যাপে ছবি একে একে পানির জায়গা নির্ধারন করে দিয়েছেন কি না। কিন্তু তাদের কথামতো তো নরসিংহপুরে পানি যাবে না, সেক্ষেত্রে কী করা ? ঐ জায়গা কি উন্নয়ন করা হবে ( ইতিমধ্যে সেখানে অনেক বাড়ি ঘর হয়েই আছে) নাকি অপেক্ষা করা হবে কোনো এক কালে সেখানে যদি বন্যার পানি আসে ...।

হিমু এর ছবি

অ.ট. ফ্লাড ফ্লো জোনের সাথে পুকুর কাটলে পানি আসার সম্পর্ক কী?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

আরিফ জেবতিক এর ছবি

তাই তো! এখন খেয়াল করে দেখলাম, তেমন কোনো সম্পর্ক নাই।

তবে আমার ধারণা ফ্লাড ফ্লো জোন বলতে এমন এলাকা বুঝাচ্ছে, যেখান দিয়ে বন্যার সময় অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হবে। আমি একটা উদাহরন টানলাম যে ঐ এলাকা সারাবছরই খটখটে থাকে, পানির প্রাচুর্য নাই। বেশ দূরে অবস্থিত হচ্ছে আশুলিয়ার নিচু অংশটুকু, যেখান দিয়ে পানি সরাসরি তুরাগ নদীতে চলে যায়, যে এলাকা ভরাট করার প্রতিবাদে আন্দোলন চলছে। কিন্তু নরসিংহপুর এলাকাটি উঁচু এবং শুকনো অঞ্চল, এবং উত্তরে তুরাগ নদী থাকায় এবং তুরাগের দিকে আশুলিয়া মৌজার বেশ কয়েকটি বড় খাল থাকায়, পানি ৩ কিলোমিটার দূরে পশ্চিমে প্রবাহিত এখনও হয় না, ভবিষ্যতেও হওয়ার কোনো সরল কারন দেখছি না। অথচ এলাকাটিকে ফ্লাড ফ্লো জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ড্যাপে।

হিমু এর ছবি
তানভীর এর ছবি

পূর্বাচল প্রজেক্ট ঘোষণার সময় যদু মধু কদু এবং জাফর ইকবাল জানতো না পোস্টে এ সত্য কোথায় অস্বীকার করা হয়েছে? ড্যাপ নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের পর এখন নিশ্চয়ই রাজউকের এই ভায়োলেশন নিয়ে মোটামুটি সবাই অবগত। তাই আগে জানতো না শুধু এই অজুহাতে কি এই প্রজেক্টকে সবার বৈধতা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত যেখানে এখন মাটি ছাড়া কিছু নেই? কোনো ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলতে হলে বা জনবসতি উচ্ছেদ করতে হলে অন্য কথা ছিলো।

আপনি প্লট ছাড়লে আরেকজন নিবে কিন্তু ।

হা হা। তা অবশ্য ঠিকই বলেছেন। আমি ঘুষ না খেলে আরেকজন খাবে, আমি চুরি না করলে আরেকজন চুরি করে বড়লোক হয়ে যাবে, আমি জমি দখল না করলে আরেকজন করবে- এই করেই তো আমরা দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমি নিজে অ্যাপ্লাই করি নি, অ্যাপ্লাই করতে চাওয়া দুই-তিন ভাই-বেরাদরকেও বিরত রাখতে সক্ষম হয়েছি। একজনকে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে এখানেই বাড়ি কিনতে উৎসাহ দিয়েছি। যদিও এখন সে সুযোগ পেলেই হা-হুতাশ করে তথাপি এই হা-হুতাশ পূর্বাচল প্রজেক্ট অপেক্ষা অনেক সুখের।

তো যা বলছিলাম। আমরা কেউ-ই অ্যাপ্লাই করি নি। এর কারণ পূর্বাচলের আগুপিছু জানা-না জানা না। এর পেছনে কারণ ছিলো পুরো প্রসেসটা। শুরু থেকেই ব্যাপারটা ঘাপলা মনে হচ্ছিলো আমার কাছে। ধরলাম লটারিতে নাম উঠেই গেলো, প্লট পেয়েই গেলাম। কিন্তু যদি নাম না ওঠে, যদি প্লট না পাই- তাহলে জমা দেয়া টাকাটা ফেরত পাবো ক্যামনে!

এরকম একজন দুজন হলে কথা ছিলো। ফেরত পাওয়া যেতো হয়তো সঙ্গে সঙ্গেই। কিন্তু এখানে মনে হয় আবেদনকারীর সংখ্যা কোটির কাছাকাছি হবে। আর দেশটাও মাশাল্লা ভীষণ নিয়মতান্ত্রিক। সরকারী এক টেবিল থেকে ফাইল আরেক টেবিলে যেতে পুরো একটা জেনারেশন লেগে যায়, সেখানে আবেদনের সাথে প্রদত্ত টাকা কোটি আবেদনকারীর কাছে ফেরত পাঠাতে ঠিক কতো জেনারেশন লাগতে পারে!

সমস্যাটা এখানেই তানভীর ভাই। ধরলাম রাজউক এই পূর্বাচল প্রজেক্ট বাতিল ঘোষণা করলো, যেটা ঢাকার স্বার্থে, দেশের স্বার্থেই করতে হবে- তারপর যাদের টাকা রাজউকের কাছে আটকে থাকবে তাদের কী হবে? তারা কি সেই টাকা ফেরত পাবে আদৌ?

আমার মনে তো ময়লায় ভরা। খালি কুচিন্তা আসে সবার আগে। কেনো জানি মনে হয় এইটা একটা সাজানো খেলা। রাজউক খুব ভালো মতোই জানতো পূর্বাচল প্রজেক্ট নিয়ে একটা হাউকাউ হবে আগে আর পরে। এবং তখন রাজউক বাধ্য হয়েই এই প্রজেক্ট বাতিল করবে। মাঝখান থেকে গোয়ামারা খাবে প্রবাসী পাবলিকেরা যারা টাকা দিয়েছে রাজউকের প্লট পাওয়ার সোনার হরিণের আশায়। দেশের হাই প্রোফাইল অমুক-তমুকের টাকা নিয়ে ভাবছি না। কারণ রাজউকের হজম কারখানা এতো শক্তিশালী এখনও হয় নি যে তাদের টাকা হজম করতে পারবে।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ধুগো, প্রবাসীদের টাকার ওপর একটা হক্ব দেশের সবারই আছে। দেশের ট্যাক্সে পড়াশোনা করে বিদেশে আসার পরে সবাই দেশকে ভুলে যায়। সুতরাং পূর্বাচলে যেসব প্রবাসী অতি লোভে টাকা দিয়েছে, তাদের তাঁতী নষ্ট করে টাকা অফেরতযোগ্য ঘোষণা করা হোক।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আপনার মতামত ঠিকাছে বলাই'দা। আবার প্রবাসী বলতে যে দেশের টাকায় পড়াশুনা করে, দেশ ভুলে বিদেশে পড়ে থাকা জনগোষ্ঠীর বাইরেও বেশ বড় একটা জনসংখ্যা আছে, সেটাও ঠিক।

দেশের টাকায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে সেইসব বঞ্চিতদের টাকায়ও কি দেশের সবার হক আছে? তাঁদের টাকাও অফেরতযোগ্য হওয়া উচিৎ? এই এদের কথাই বলছিলাম, মার খেলে এরাই খাবে। দেশকে ভুলে থাকা, ভালো থাকা জনগোষ্ঠী নয়।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

ফরিদ এর ছবি

টাকা ফেরত নিয়ে রাজউকের অবস্থান আশ্চর্যরকমের ভাল মনে হল। এপ্লাই করেছিলাম পাইনাই, সে্টা ভিন্ন প্রসঙ্গ। তবে, কাগজপাতি নিয়ে রাজউকে গেলাম, একটা ফর্ম ফিলাপ করে রিসিট নিয়ে ছেড়ে দিল, একমাস পরে যেতে বলল। মাসখানেক পরে যাবার পরে আরো এক সপ্তাহ টাইম নিল। হফতা পরে গিয়ে দেখি আমার নামে চেক রেডী।ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে ফেরত নিয়ে নিলাম। পাসপোর্ট অফিসের পরে এই আরেক সরকারী যায়গায় 'অতিরিক্ত' কোন খরচ করতে হয়নি।

না পাওয়াইন্নাদের অধিকাংশই ফেরত পেয়ে গেছেন বলে জানি, তবে সম্ভবত ডবল ডিজিট বিলিয়ন ডলারের ডিপোজিট দিব্যি বছর দেড়েক আটকে ছিল

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখকের মুল বক্তব্যের সাথে একমত। তবে,

- বাংলাদেশের সিস্টেমের যে বাস্তবতা তাতে এই প্রজেক্ট বাতিল হবে বলে মনে হয় না। বিশেষ করে যখন এটি প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। এছাড়া এখানে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে।

- প্রজেক্টটি এখন যে অবস্থায় আছে তাতে এটিকে আর বন্যা প্রবাহ অঞ্চল বলা যাচ্ছে না। তা করতে গেলে পুনরায় খাল খনন করতে হবে। এক্ষেত্রে দখলদার রাজউক নিজেই।

- আর সাধারণ মানুষের যে মনস্তত্ব তাতে যারা প্লট পেয়েছেন তারা সাধারণত সেটি ছাড়তে চাইবেন না। (এটা আমার অভিজ্ঞতা ভিত্তিক অনুমান। এটা নিয়ে কোনো পরিসংখ্যানগত পর্যবেক্ষণ হয়েছে কিনা জানা নাই। তাই আমার অনুমান ভুল প্রমাণিত হতেই পারে) এখানে উল্লেখ্য যে, প্লট যারা পেয়েছেন তাদের অধিকাংশই সাধারণ মানুষ। হোমড়া চোমড়ারা স্যাম্পল পপুলেশনের বাইরে।

তাহলে এখন বাস্তবতা কী? বাস্তবতা হল এক হালাল করা। মানে এই প্রজেক্টকে পরিবেশ উপোযোগি করা। কিভাবে করতে হবে তার কিছু বর্ণনা জাহিদ ভাই দিয়েছেন উপরের একটি মন্তব্যে। আমি এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই। তাই জাহিদ ভাইয়ের মত বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে ভাল বলতে পারবেন। এতে বন্যার পানি যাওয়ার জায়গা পাবে, একই সাথে "ঢাকা শহর"ও রক্ষা পাবে। কিন্তু ওইযে ওইটারে হালাল করতে হবে। এখানে মনে হতে পারে আমি জোর করে একে হালাল করতে চাচ্ছি। আসলে আমি বাস্তবে কি হতে পারে তার প্রেক্ষিতে আমাদের কি সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

আর ঢাকা শহর রক্ষা করার ব্যাপারটি যত সহজে বলা গেল তা এত সহজ নয়। যতদিন পর্যন্ত আমরা ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন করব ততদিন ধরে ঢাকার আশে পাশে সব প্লাবন ভুমিই দখল হয়ে যাবে। বুড়িগঙ্গা নদীও হয়ে যাবে বুড়িগঙ্গা খাল। শেষ ফলাফল ঢাকার মৃত্যু। তাই ঢাকাকে বাঁচাতেই ঢাকার বিকেন্দ্রিকরণ করতে হবে। এখন এটা নিয়েই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে।

অনন্ত

মুহাম্মদ এর ছবি

পূর্বাচল প্রকল্প ঢাকা নগরীর বাইরে,একজন গনপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তার মুখেই আমি শুনেছি।

তানভীর এর ছবি

হ। কর্মকর্তাদের মুখে শুনেই তো এই অবস্থা! নিজের চোখ দিয়া ম্যাপেই দেখেন। এই ম্যাপ আবার আমি বানাই নাই কিন্তু চোখ টিপি

auto

তানভীর এর ছবি

পাশে আবার দেখি একটা পূর্বাচল আম্রিকান সিটিও দেখা যায় খাইছে

masud এর ছবি

ঝিলমিলের জমিতে সাংসদ বিপুর আবাসন প্রকল্প

সরকারী প্রকল্প আটকিয়ে সরকারী দলের সাংসদের আবাসন ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণেই রাজধানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্প আবারো অনিশ্চয়তায় পড়েছে বলে জানা গেছে। এ কারণেই ঝিলমিল প্রকল্পের নীতিমালা মন্ত্রনালয়ে আটকা পড়ায় ঘোষিত জুলাইয়ে প্রকল্পের প্রথম ফেজের দরখাস্ত আহবান হচ্ছেনা। গনপূর্ত ও গৃহসংস্থান বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রিহ্যাব সভাপতির বিরুদ্ধেই উঠেছে এ অভিযোগ। সাংসদ নাসরুর হামিদ বিপুর প্রতিষ্ঠান ঝিলমিলের দ্বিতীয় ফেজের জায়গা দখল করে আবাসন প্রকল্প করায় এ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারনা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ওই সদস্যর চাপে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারছেনা পূর্ত মন্ত্রনালয়।
১৯৯৮-য় বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর পাড়ে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে ৩৮১ একর জমির ওপর স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসিক প্রকল্প হাতে নেয় রাজউক। কিন্তু নানা জটিলতা ও মামলার কারণে প্রকল্প শুরু হয় ২০০১। কিন্তু ১০ বছর পার হয়ে গেলেও প্রকল্পের ৫০ ভাগ কাজ এখনো শেষ হয়নি। মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৭৫ ভাগ। বর্তমানে কিছু আভ্যান্তরিন সড়ক নির্মাানের জন্য দরপত্র আহবানের প্রক্রিয়া চলছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রথম ফেজের ১৬৭৪ টি প্লট বরাদ্দের জন্য দরখাস্ত আহবানের কথা দিয়েছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান প্রোকৌশলি মুহাম্মদ নুরুল হুদা। গত জানুয়ারীতে দেয়া রাজউক চেয়ারম্যানের ওই ঘোষনা যথা সময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক আনোয়ার হোসেন। ৩৩৫ কোটি টাকার রাজউকের এ প্রকল্পে আড়াই কাঠার প্লট রয়েছে ১৭৭টি, ৩ কাঠার প্লট থাকবে ১২৩৪ টি, ৫ কাঠার প্লট ১৪৪টি, সাড়ে ৭ কাঠার প্লট রয়েছে ১০৮টি ও অন্যান্য মাপের প্লট রয়েছে ৯টি। এছাড়াও প্রকল্পে ৬০ একর জমি বরাদ্দ রাখা আছে ফাট বানানোর জন্য। এ জমিতে ২০ হাজার ফাট বানিয়ে নিন্মবিত্তের মধ্যে বরাদ্দের কথা রয়েছে।
ঝিলমিল প্রকল্পের পরিচালক বলেন, দরখাস্ত আহবানের কাজ করে রাজউকের সম্পত্তি বিভাগ। কিন্তু পূর্বাচল এবং উত্তরা তৃতীয় প্রকল্পের আবেদনকারীদের টাকা ফেরত দিতে সম্পত্তি বিভাগ ব্যস্ত থাকায় জুলাইয়ে ঝিলমিলের আবেনগ্রহনের কাজ শুরু হচ্ছে না। এ বছরের শেষ নাগাদ তা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করেন।
এদিকে রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলি মুহাম্মদ নুরুল হুদা জানান, দরখাস্ত আহবানের জন্য একটি নীতিমালা প্রস্তুত করে মন্ত্রনালয়ে জমা দিয়েছে রাজউক। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও তা এখনো পাশ হয়নি। রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, নীতিমালা অনুমোদন হলেই ঝিলমিলের দরখাস্ত আহবান করা হবে। এজন্য আরো দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে রাজউকসূত্র জানায়, কেবলমাত্র ঝিলমিল প্রকল্পের প্রথম ফেজই নয়, দ্বিতীয় ফেজের প্রকল্প প্রস্তাবনাও মন্ত্রনালয়ে আটকা পড়েছে সরকারদলীয় এক সংসদ সদস্যর কারণে। সূত্র জানায়, আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের বর্তমান চেয়ারম্যান ও পূর্ত মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য নাসরুল হামিদ বিপুর ইশারায় মন্ত্রনালয়ে রাজউকের ফাইল আটকে আছে। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, দিপুর আবাসন প্রতিষ্ঠান প্রিয়প্রাঙ্গন ঝিলমিল প্রকল্পের চারপাশের হাজার হাজার একর জমি দখল করে আবাসন প্রকল্প শুরু করেছে। প্রিয়প্রাঙ্গনের কারণে রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্প অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিলমিল প্রকল্পের দ্বিতীয় কিস্তির প্রস্তাবিত জমিতেই গড়ে উঠেছে প্রিয় প্রিয়াঙ্গন। এ প্রকল্পের জন্য রাজউক ১১০০ একর জমি অধিগ্রহনের জন্য মন্ত্রনালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। এ প্রকল্পে সাড়ে তিন হাজার প্লট ও ৩০ হাজার ফাট নির্মাানের কথা রাজউকের। এ জন্য দেড় হাজার কোটি লাগবে বলে রাজউক সূত্র জানায়।
কিন্তু দ্বিতীয় প্রকল্পের জমিতে প্রিয়-প্রাঙ্গন আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠা সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলি আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। সরকার আশা করলে যে কোনো জমি অধিগ্রহন করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাজউকের অন্য এক সদস্য নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, বেসরকারী আবাসন কোম্পানীর জমি রাজউক অধিগ্রহন করলে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বিপদে পড়বে। তিনি বলেন, আজ যারা প্রিয় প্রিয়াঙ্গনের বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিনিয়োগ করছে তাদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা কি হবে তা ভাবার সময় যে সংসদীয় কমিটির, তারাই দখল বানিজ্যে নেমেছে। তিনি বলেন, অনুমোদনহীন এসব প্রকল্পের বিরুদ্ধে রাজউক কোন ব্যবস্থা না নিয়ে দন্তহীন বাঘে পরিনত হয়েছে।
এ সম্পর্কে রাজউক চেয়ারম্যান জানান, মাননীয় সাংসদ যখন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসেছেন, তখন নিশ্চয়ই তিনি ব্যাক্তি স্বার্থ দেখবেন না। তিনি বলেন, আমাদের সবারই জনগনের স্বার্থের কথা ভাবতে হবে।
এদিকে এ সম্পর্কে রিহ্যাব চেয়ারম্যান ও পূর্ত মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংদীয় কমিটির সদস্য এবং প্রিয় প্রিয়াঙ্গনের মালিক নাসরুর হামিদ বিপু ডেসটিনি কে বলেন, ঝিলমিলের দ্বিতীয় ফেজের প্রতস্তাবনা যে জমিকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে, প্রিয়প্রাঙ্গনে সে সব দাগের জমি নেয়া হয়নি। এছাড়া রাজউক এ প্রকল্পের জন্য জমি ওতো অধিগ্রহন করেনি। তিনি আরো বলেন, জমি দখলের কোনো ইতিহাস আমার নেই। বিপক্ষ দলের কেউও এ ধরনের অভিযোগ করতে পারবেনা। সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তানভীর এর ছবি

গনপূর্ত ও গৃহসংস্থান বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবার রিহ্যাব সভাপতি হয় কী করে!!! বাংলাদেশের আইন প্রণেতাদের জন্য কি 'কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট' বলে কিছু থাকতে নাই! আর সর্ষের মধ্যেই তো ভূত দেখতে পাচ্ছি। রিহ্যাব সভাপতি যিনি জমিজমার ব্যবসা করেন পূর্বাচলে তিনিও প্লটপ্রাপ্ত-

Serial number: 188055
Applicat's Name: NASRUL HAMID
S\W\D of: LATE HAMIDUR RAHMAN
Receipt Number: 168698
Plot Size: 10

তানভীর এর ছবি

অবশেষে বিডিনিউজ২৪-এর প্রতিবেদন

বন্যাপ্রবণ এলাকায় রাজউকের প্রকল্প
Sat, Nov 20th, 2010 4:55 pm BdST Dial 2000 from your GP mobile for latest news

আবদুল্লাহ আল মুয়ীদ
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক

ঢাকা, নভেম্বর ২০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ঢাকার ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) বন্যাপ্রবণ হিসেবে যে এলাকাগুলো চিহ্নিত, তার মধ্যেই গড়ে উঠছে রাজউকের পূর্বাচল নিউ টাউন ও ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প।

ড্যাপ এর পরামর্শক খন্দকার আনসার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, "পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্প ও ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প বন্যাপ্রবণ এলাকার মধ্যে রয়েছে। এসবের বাস্তবায়ন হলে ঢাকায় বসবাসের পরিবেশের আরো অবনতি ঘটবে।"

ঢাকা মহানগরীর ৫৯০ বর্গ মাইল এলাকার ভূমি উন্নয়নকে গোছালো করাই ড্যাপ প্রণয়নের উদ্দেশ্য। এর আওতায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আবাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সড়ক যোগাযোগ, পার্ক ও জলাশয়সহ নানা উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য ভূমি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ড্যাপের আওতায় উত্তর অংশ গাজীপুর পৌরসভার উত্তর অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত, দক্ষিণে ধলেশ্বরী নদীর তীর পর্যন্ত, পূর্বে রয়েছে শীতলক্ষ্যা নদী ও তারাব পৌরসভাসহ কেরানীগঞ্জের বিশাল একটি এলাকা।

আনসার হোসেন বলেন, "মধুপুর ও ঢাকার উঁচু এলাকার পানি ওই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয় তাই এসব এলাকায় ভূমির উন্নয়ন হলে নগরীর জলাবদ্ধতা আরো বাড়বে।"

তিনি অভিযোগ করেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অপরিকল্পিতভাবে আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলছে।

প্রকল্প পরিচিতি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ৬ হাজার ১৫০ একর (১ একর = ১০০ শতাংশ) জমি নিয়ে রয়েছে প্রস্তাবিত 'পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্প'। এই এলাকাটিকে ৩০টি ভাগ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০০ একর জমিতে উন্নয়ন কাজ চলছে। ২০০৯ সাল থেকে প্লট বরাদ্দও শুরু হয়েছে।

ঝিলমিল প্রকল্পের অধীনে রয়েছে ৩৮১ একর জমি। এই প্রকল্পে পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ১৫০ একর জমি নেওয়া হবে। এর বিস্তৃতি হবে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের সুভাড্ডা, চুনকাটিয়া ও কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া মৌজার নিচু জমি নিয়ে।

আনসার হোসেন বলেন, "বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে হওয়ায় দুটি প্রকল্পই বর্ষাকালে পানি নেমে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করবে।"

"বৃষ্টির পানি আটকে বাড্ডার মতো নিুাঞ্চলের মানুষ আরো বেশি দুর্ভোগে পড়বে," বলেন তিনি।

অবশ্য রাজউক কর্মকর্তারা বলছেন, ড্যাপ ও ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (১৯৯৫-২০১৫) করার কয়েক বছর আগে ওই দুটি প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়।

রাজউকের পরিচালক (পরিকল্পনা) জহুরুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সরকারের এসব প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে ১৯৮০ এর দশকে, তখন থেকেই এসবের কাজ চলছে। তাৎক্ষণিকভাবে এর উল্টো কিছু করা সম্ভব নয়।"

"ড্যাপ ও ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান ওই দুটি প্রকল্প শুরু করার পর হয়েছে," বলেন তিনি।

কাজ চললেও এখন ওইসব অঞ্চলে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শিগগিরই থামানো উচিত বলে মনে করেন ড্যাপ এর পরামর্শক আনসার।

তিনি বলেন, "ওইসব এলাকায় উন্নয়ন কাজ বন্ধ করার এখনো সময় রয়েছে। ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে কেবল মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজউক সেটা এখনি বন্ধ করতে পারে।"

আনসার হোসেন বলেন, "ঢাকাকে রক্ষা করতে হলে এটা থামাতে হবে।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএএম/পিকেএস/এএম/জেবি/এমআই/১৬৫০ ঘ.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।