এখন ভোটের আগের এজেন্ডা এবং পুরাতন ওয়াদা অনুযায়ী বৃহত্তর হিন্দু সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুত গতিতে অগ্রসর হইতেছে। সাম্রাজ্যের হোতা শ্রীমান নারুজী সব ধরণের কন্ট্রোল নিজের হস্তেই রাখিয়াছেন। হিন্দুদের এই স্তান প্রতিষ্ঠার জন্য উনি অনেক কিছুই করিয়াছেন। এবং বহু সময় বাদে তার দলের হস্তে ক্ষমতা আসিবার ফলে দেশবাসী বড্ড উৎফুল্ল। হিন্দুদের এই পবিত্র ভূমিতে বিধর্মীদের যাবতীয় কু-জিনিষগুলি উৎখাত করিতে হইবে ইহাই স্থির হইয়াছে এবং বলিতে গেলে ইহা আগেই স্থির হইয়াছিল। এখন শুধু সেগুলির বাস্তবায়ন হওয়া বাকি। রাম লালার পুণ্যভূমিকে উদ্ধারের মধ্যে দিয়াই এই পবিত্র যাত্রার সূচনা হইয়াছে। ধীরে ধীরে এইভাবে গোটা দেশেই বিধর্মীদের সমস্ত ভ্রষ্ট জিনিষগুলি মুছিয়া দিলেই ভগবানের আশীর্বাদ লাভ হইবে এবং হিন্দুধর্মরাজ পুনঃস্থাপিত হইবে
সেই ধরণের নানা অনুভূতির হদিশ পাইতে পাইতে আমাদের বোকাচাঁদ মিশ্র একদিন ধর্মকর্তাদিগের সহিত বার্তালাপে লিপ্ত হইলেন
বোকাচাঁদ একজন হিন্দু ধর্মগুরুকে জিজ্ঞাসিলেন - বাবাজী, ধর্ম কি বস্তু?
বাবাজী অম্লান বদনে রিপ্লাইলেন - ধর্ম মানে ভগবান
বোকাচাঁদ আবার জিজ্ঞাসিলেন - ভগবান কোথায় অবস্থান করিয়া থাকেন?
বাবাজী কিঞ্চিত ভ্রু কুঁচকাইয়া উত্তর দিলেন - উনি হজ্ঞলখানে বিরাজমান। তিনি সর্বশক্তিমান অদৃশ্য
বোকাচাঁদ মাথা চুলকাইয়া আবারও প্রশ্ন করিলেন - কিন্তু অদৃশ্য বস্তু আমাদিগের সব বিধান দিয়া থাকেন তাহা কি করিয়া হয়?
বাবাজী রুষ্ট হইয়া ভয়ানক চিক্কুর পাড়িয়া উত্তর দিলেন - তুই ভগবানেত্তে বেশী জানস? হারামজাদা
বোকাচাঁদ গুরুজীর এই অকস্মাৎ পরিবর্তনে কিঞ্চিৎ অপ্রতিভেত হইয়া কহিলেন - আমি তো তাহা বলি নাই বাবাজী। আমি শুধু বলিলাম, এই যে আপনারা ভগবানের নানা লীলাকাহিনী বলিয়া বলিয়া ধর্মব্যাবসা চালাইতেছেন সেই অনাদিকাল থেকে, তাহার কোন প্রমান কিন্তু আপনারা দিতে পারেন না। এই যে ঈশ্বরের মহিমা বলিয়া নানা কথা বলিয়া লোকের উপার্জন লুন্ঠন করেন আপনারা, মগজ ধোলাই করেন, বাক স্বাধীনতা হরণ করেন, ইহকাল তো ঠিকাছে পরকালের ভয় দেখাইয়া পর্যন্ত আপনারা মানুষকে লুট করিয়া থাকেন,... কিঞ্চিৎ তাহার প্রমান চাহিয়াছি শুধু আমি। আপনার ঈশ্বর কি সেই কোন মান্ধাতা আমলেই তাহার মহিমা দেখাইয়াছে? আমাদের সময়েও কিছু একজাম্পল দেখাক তিনি। তাহলে মানিব আমি
গুরুজি হুঙ্কারিলেন - অসভ্য, ফাত্রা, কুলাঙ্গার
বোকাচাঁদ আস্তে আস্তে কহিলেন - এমন কি করিয়াছি বাবাজী? আপনার ঈশ্বর তার ফিঙ্গার হইতে নানা অবতার প্রেরণ করিয়া থাকেন, উনি বরাহ অবতার পর্যন্ত নিয়া থাকেন দুষ্টের সংহারে। ... আর আমার একটা সাধারণ প্রশ্নের জবাব দিবার হেতু তিনি একটা চমৎকার দেখাইতে পারেন না ?
গুরুজি বজ্রমুষ্টি তুলিয়া হুঙ্কার ছাড়িলেন - শালা নাস্তিক
এবং যাহা ঘটিবার তাহাই ঘটিল, আমাদের বোকাচাঁদ মিশ্রকে উক্তস্থান হইতে ছুঁড়িয়া ফেলিয়া দিলেন বাবাজীর সাঙ্গপাঙ্গরা। এবং বাটি পৌঁছাইতে পৌঁছাইতেই বোকাচাঁদ দেখিলেন তাহার বাড়ির মধ্যে আসিয়া উপস্থিত হইলেন কিছু লাল গেরোয়াধারী সেমি-বাবার দল এবং সাথে কিছু চ্যালাচামুন্ডা। সেমি-বাবারা হস্ত উত্থিত করিয়া কি জানি আদেশ দিলেন চ্যালাদের উদ্দেশে এবং উহারা বুস্ট পাইয়া প্রবল গর্জনে 'জয় রাম' বলিয়া বোকাচাঁদ মিশ্রের উপর লাঠি-দা নিয়া ঝাঁপাইয়া পড়িলেল। সেই যাত্রায় বোকাচাঁদ দৌড়ে গোয়ালঘরে আশ্রয় নেয়ায় রক্ষা পাইয়াছিলেন
পরের দিন বাবাসংঘ হইতে ঘোষণা আসিল - রাষ্ট্রের কোন ব্যাক্তির দ্বারা যদি হিন্দুধর্মকারীরদের হিন্দুনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাহলে এর পরিণাম ভয়ংকর হইবে। অবশেষে সকলের সম্মতিক্রমে সরকার বাহাদুরও তাহাতে সিলমোহর লাগাইল
কিন্তু বোকাচাঁদ তাহার নিরীহ প্রশ্নের প্রশ্নের উত্তর পাইল না
১৩.০৭.০৮.
মন্তব্য
বিবর্তনীয় এই জগতটায় ধর্মীয় উগ্রবাদীরাই প্রতিষ্ঠা পাইবে, বোকাচাঁদ মিশ্রেরা বোকাচোদা হয়েই থাকবে।উহাদের দা, কুড়ুল হস্তে নেবার সাধ্য নাই, সাহসও নাই।অদ্যবধি কেবল পুস্তক ও সহজিয়া চেতনায় এই ভারতবর্ষে কেহই প্রভাব বিস্তার করিতে পারেনাই, বোকাচাঁদেরাও নরেন্দ্রীয়, হেফাজতীয় আগ্রাসনে ধীরে ধীরে অমাবস্যার চাঁদ হইয়া যাইবে।
--মদন--
মোদী ক্রমে আসিতেছে .....
অজ্ঞাতবাস
মোদী ক্রমে আসিতেছে .....
বিহার দিয়ে বৌদ্ধ’দের উপর আক্রমন শুরু হয়েছে। প্রাক্তন ভারতীয় উপমহাদেশে ধর্ম ধরে বিভক্তি এবং শাসণ আবার জোরদার!
@সুমন চৌধুরী,
উঁহুঃ অত সোজা নয়। সেক্টোরিয়ান পলিটিকস থেকে সুবিধেটুকু নিতে অনেকেই অনেকদূর যাবে। মোদি যতই পাবলিকে ইমেজ বাড়ানোর জন্য দুহাতে খরচা করুক আর গন্ডা গন্ডা এজেন্সি নিয়োগ করুক দিল্লী আভি ভি বহোৎ দূর হ্যায়
দেখে নেবেন ।।।।।
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হায় অনুভূতি
শর্মাজী - উপমহাদেশ কি ভুতের রাজ্য হয়ে যাচ্ছে নাকি? ১ পা আগে চলে তো ২ পা পেছনে - সামনের ৫ বছর কেমন যেন অশনি সঙ্কেত দিচ্ছে এখুনি! তবে এরকম লেখার একটা ভাল দিক হল হতাশা, ভয় শঙ্কা নয় বরং বিপদ নিয়ে নিজেদের জানাগুলো অন্যদেরো জানা হয়ে যায় ----
আমি পরিচিত একটা নাচতিককে চিনি অবশ্য। সে পেল্লায় স্বাস্থ্য দশাসই বপুখানা নিয়ে যখন এসব আজেবাজেটাজে প্রশ্ন মানুষকে শুধিয়েই ফ্যালে, মানুষ তখন হাতা গোটাতে গিয়ে আবার নিরস্ত হয়ে যায়। তাপ্পর আপনমনে বিড়বিড় করতে করতে রাস্তা মাপে! যত যাই হোক, প্রশ্নের উত্তর আর মেলে না।
মোটো- স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
তাপসদা,
আপনার এই লেখার স্টাইলটা খুব ভাল লাগল। কিন্তু শেষটা খুব জোরাল লাগেনি।
'ধর্মানুভূতির আঘাত' বিষয়টার নির্বাচন সময়োপযোগী হয়েছে। ধর্মানুভূতি বড় আশ্চর্য বিষয়; ধর্মগ্রন্থ, মসজিদ, জায়নামায পোড়ালে তা আহত হয় না। কিন্তু পত্রিকায় ছাপা লেখা পড়ে সেই ধর্মানুভূতি এতই পীড়িত হয় যে মেরে কেটে ফেলতে হয় মানুষ, রক্ষা পায় না নীরিহ বৃক্ষ! হায়রে অনুভূতি!!!!!
নতুন মন্তব্য করুন