[justify]
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমার কোন স্মৃতি নেই। আমার স্মৃতি জমাট বাঁধার বয়েস হওয়ার অনেক অনেক আগেই তিনি নিহত হয়েছেন। নিজ বাসভবনের সিঁড়িতে তাঁর বুলেটবিদ্ধ দেহ পড়ে ছিল। আশেপাশে স্বজন, সন্তানদের লাশ। সেই লাশের মিছিলে তাঁর ১০ বছর বয়েসি পুত্রও ছিল। তিনি নিহত হয়েছিলেন সেনাবাহিনির একাংশের হাতে। আমি সারাজীবন ধরে সেই রকমই শুনে এসেছি। সেনাবাহিনির অন্য অংশ তখন কি করছিল সেই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করাটা মনে হয় মহাপাপ। পরদিন সকালের খবরের কাগজ (যেটা এখন অনলাইনে পাওয়া যায়) একদম "বিজনেস অ্যাজ ইউসুয়াল" - দৈনিক বাংলার পেছনের পাতায় দেশে চোখের রোগ বেড়ে যাচ্ছে বলে অনেক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। খবরে জানা যায় - ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে নতুন সরকার শপথ নিয়েছে। কোথাও কোন প্রকাশ্য শোক নেই।
[justify]"Time, you old gipsy man,
Will you not stay,
Put up your caravan
Just for one day?"
শহরের বাইরে গিয়েছিলাম। ফিরতি পথে এক বিমানবন্দরে লম্বা বিরতি। লাঞ্চ সারলাম, অনেক সময় ধরে বাথরুম সারলাম, দুই-একটা কাজের ফোন সারলাম, মেয়েদের সাথে ডু-ইউ-সি-হোয়াট-আই-সি খেললাম, এরপরও দেখি স্টপওভারের সময়টা শেষ হচ্ছে না। এর মধ্যে ফ্লাইটও ডিলেইড হয়েছে। শেষমেষ একটা ম্যাগাজিন স্টলে হানা দিলাম। হালকা কিছু কিনে বাকি সময়টা কাটিয়ে দেব।
[justify]
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন ভালোবাসা দিবস বলে কিছু ছিল না - মানে বাংলাদেশে পালন হতো না এই দিবস। আমরা কেউ কোনদিন অনুভব করি নি যে ভালোবাসার জন্য একটা দিবস লাগবে। কিন্তু আমি এই দিবসের বিরুদ্ধে না। সত্যি কথা বলতে বর্তমান পৃথিবীর অবস্থা দেখে আমার মনে হয় ভালোবাসার জন্য একটা দিবস বরাদ্দ রাখাটা খুবই জরুরী।
[justify]
-১-
হিসেব করে দেখলাম শেষ দিনলিপি লিখেছিলাম দুই বছর আগে। প্রতি দুই বছরে একটা দিনলিপি লিখলেই আমার চলে যায়। আমার দিনগুলি মোটামুটি একই রকমের, একদিন ডায়েরি লিখে কন্ট্রোল-সি দিয়ে কপি করে বাকি ৩৬৪ এর পাতায় পেস্ট করে দেওয়া যায়। সুতরাং প্রতি দুই বছরে একবার করে দিনলিপি লেখার অপরাধ অবশ্যই ক্ষমার যোগ্য।
[justify]
পৃথিবীর পাঠশালাঃ
"ক্যান উই গো টু ডিজনিল্যান্ড ফর মাই বার্থডে?"
"নারে মা...হাতে টাকা নেই একদম..."
"আব্বু ক্যান আই গেট অ্যান আইপ্যাড?"
"নাহ...ওই টাকার সমস্যা..."
"হাও অ্যাবাউট অ্যান আইপড টাচ?"
"টাকা বড় ইয়ে..." মিনমিন করে আমাকে জানাতেই হয়।
[justify]
আজ আমার বাংলাদেশ ছাড়ার ১৮ বছর পূর্ণ হল। বলা যায় আমার প্রবাস জীবন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেল।
১৯৯৬ সালের অগাস্ট মাসের পাঁচ তারিখ - সকালবেলাতে ফ্লাইট। যাচ্ছি আমেরিকা। দেশ কি জিনিস সেই বিষয়ে কোন ধারণা নেই, শুধু আছে, উত্তেজনা, শংকা আর কিছুটা দুঃখ। পার্থিব বলতে যা কিছু আছে সব কিছু এঁটে গেছে দুটো সুটকেসে - বঙ্গবাজারের কাপড়-চোপড়, কিছু পড়ার বই, শামসুর রাহমান আর জীবনানন্দের দুটো কবিতার বই। আর বাকিসব বইপত্র মানুষ নিয়ে আর ফেরৎ দেয় নি কিন্তু কবিতার বইয়ের মার্কেট নিশ্চিতভাবেই কম, আর সব কিছু হারিয়ে ফেললে ওই দুটো কবিতার বই এখনও রয়ে গেছে।
[justify]
বাবাকে বড় ভয় পায় মুকুল। তবে অবশ্য ভয় পাওয়ার কারণও আছে। মুকুলের বাবা মতিউল্লাহ সাহেব ঝিগাতলা হাই স্কুলের জাঁদরেল অঙ্কের শিক্ষক। চেনা পরিচিত প্রায় সবাই তাঁকে ভয় পায়। টকটকে গায়ের রঙ, চোখে মোটা কাচের গোল চশমা, মাথায় কাঁচাপাকা চুল। একটু নাকি সুরে চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলেন তিনি। রাশভারি গম্ভীর লোক, দেখলে মনে হয় এখনই গর্জে উঠবেন।
[justify]
।।১।।
দেশে যেতে আমার খুব ভালো লাগে।
যখন বাংলাদেশে থাকতাম তখন দেশের বাড়ি বলতে চাঁদপুরের গ্রামের বাড়িটাকে বুঝাতাম। আমাদের বন্ধুদের একেক জনের দেশের বাড়ি ছিল একেক জায়গাতে। কারও বাড়ি বরিশালে, কেউ সিলেটের, কেউ ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে, মনে হতো যেন বাংলাদেশটা এক বিশাল জায়গা, কত হাজার হাজার চেনা - অচেনা নাম। বিদেশে গমনের পরে সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, এইখানে সব বাংলাদেশির একটাই দেশ। কেউ যখন বলে যে সে দেশে যাচ্ছে - তখন বুঝতে হয় সে বাংলাদেশে যাচ্ছে, সেটা ঝালকাঠি না-কি মানিকগঞ্জ সেই প্রশ্ন পুরোই অবান্তর। আমরা যেই দিন মঙ্গলগ্রহে বসত গড়ব সেই দিন হয়ত দেশে যাওয়ার মানে হবে পৃথিবীর কোন এক জায়গা, সেটা সাংহাইও হতে পারে আবার রোমও হতে পারে।
[justify]
।।১।।
এই গল্পের সাথে দুটো ছবি আছে। প্রথমটি প্রায় কিশোরী একজন মেয়ের, ১৮/১৯ বছর বয়েসি। পঞ্চাশের দশকের। সেই সময়ে সম্ভবত এই বয়েসি মেয়েদের স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তুলতে হতো। কারণটা অনুমান করা খুব কঠিন কিছু না। স্টুডিওর লোকজনকে হয়ত কিছুই বলতে হতো না। ওরা হয়ত এই বয়েসি মেয়েদেরকে দেখলেই জানতো কিভাবে ছবি তুলতে হবে। এই একই ভঙ্গিমাতে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো অনেকের ছবি আমি দেখেছি - এটা প্রায় সবারই সংগ্রহে থাকা বিয়ের আগে তোলা একমাত্র ছবি।
[justify]
বাংলা সিনেমার ইংরেজি নাম নিয়ে অনেক দিক ধরেই আলোচনা হয়। সেই আমাদের আমল থেকে শুরু করে এই জলিলীয় প্রজন্ম পর্যন্ত এই রীতি ধারণ করে আসছে। সম্ভবত এটা আমাদের সংস্কৃতির একটা অংশ হয়ে গেছে। সত্যি কথা বলতে আমি এইটার বিরুদ্ধে না। ইংরেজি নাম বাংলা নামের অনুবাদ হতে হবে - এই নিয়মে আমি বিশ্বাসী নই। আমাদের বাংলা এবং ইংরেজি উভয় বিষয়ের পণ্ডিত শিক্ষক জোবেদ আলী স্যার আমাদের ভাষার নয় বরং ভাবের অনুবাদ করতে বলেছিলেন। মূল ব্যাপারটা হচ্ছে ভাবটা বুঝতে হবে।