থমথমে শহর

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি
লিখেছেন সুবিনয় মুস্তফী (তারিখ: বুধ, ০১/০৪/২০০৯ - ৩:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

G20 উপলক্ষ্যে লন্ডনে যে ঝামেলা হবে তার প্রথম আভাস পাই গত সপ্তাহে, অফিসের সিকিউরিটি প্রধাণের থেকে এক ইমেইলের মাধ্যমে। তিনি জানান যে এপ্রিলের ১ তারিখ বুধবার এই বিল্ডিং বন্ধ রাখা হবে, কারো অফিসে আসা চলবে না। কিছুটা অবাক হয়েছিলাম সেই ইমেইল পেয়ে। ঘটনা কি এতোই সিরিয়াস? তবে এখন বোঝা যাচ্ছে যে কালকে সিটি-তে এই সেমি-হরতাল ডাকা ছিল অনিবার্য।

আজ সন্ধ্যায় লন্ডনের কেন্দ্রে ব্যাপক চাপা উত্তেজনা। মানুষ থেকে শুরু করে পুলিশ - সবাই সম্ভাব্য এক ঝড়ের অপেক্ষায়। আগামী পরশু বিশ্বের বিশটি বড় দেশের বড় হুজুরেরা G20 শীর্ষ সম্মেলনের ছুতায় এই শহরে মিলিত হবেন। তাদের উদ্দেশ্য - সর্বগ্রাসী বিশ্বমন্দার ছোবল থেকে দুনিয়াকে বাঁচানোর জন্যে কিছু কমন পলিসি খু্ঁজে বের করা। কিন্তু বড় হুজুরদের নিরাপত্তা বহরের পাশাপাশি গত কয়েক দিনে লন্ডনে আরো এসে পৌঁছেছে হাজার হাজার প্রতিবাদী প্রোটেস্টার। আগামীকাল তাদের সাথেই নিরাপত্তা বাহিনীর বিরাট শোডাউন হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

বিশ্বায়নের বিরুদ্ধে গত দশ বছরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেকগুলো বিক্ষোভ আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল আর ২০০১ সালে ইতালির জেনোয়া-তে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কে জানে, হয়তো কালকে anti-globalization আন্দোলনের আরেকটি অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে।

*

আমাদের অফিস বিল্ডিংটা যেখানে অবস্থিত, সেটা হলো লন্ডনের ব্যবসা-পাড়ার একদম প্রাণকেন্দ্রে। সিটি অফ লন্ডন (সংক্ষেপে সিটি - পক্ষান্তরে এর ডাকনাম the Square Mile) - লন্ডন শহরের মতিঝিল বলতে পারেন। প্রায় এক হাজার বছর ধরে এখানে বাণিজ্য করে আসছে বণিক আর ব্যাংকারের দল। লন্ডনের সবচাইতে পুরাতন এবং ঐতিহাসিক এলাকা। সিটির রাস্তাঘাট অত্যন্ত সরু - কারন খুব বেশীর বেশী ঘোড়ার গাড়ি চলাচলের জন্যে এই রাস্তাগুলো বানানো হয়েছিল। অথচ এই রাস্তার পাশ ধরেই আজকে উঠে গেছে বিশ্বের তাবত ফিনানশিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশাল বিশাল অফিস। ৩০, ৪০ কি ৫০তলা উঁচু কাঁচ আর স্টিলের বহুতল দালান - প্রাচুর্য্যের এই প্রতীকগুলো ডিজাইন করেছেন আধুনিক যুগের শ্রেষ্ঠ স্থপতিবৃন্দ। যেমন নর্ম্যান ফস্টার বানিয়েছেন 30 St Mary Axe, এটা লন্ডনের সবচেয়ে বিচিত্র স্কাইস্ক্রেপার। আর স্কিডমোর মেরিল সংস্থা বানিয়েছে Broadgate Tower। (উল্লেখ্য যে সিয়ার্স টাওয়ার-খ্যাত আর্কিটেক্ট এফ আর খান এই স্কিডমোরে মেরিলে কাজ করতেন।)

auto ৩০ সেইন্ট মেরি এক্স (ছবি - ফ্লিকার)

প্রতিদিন সকালবেলা আমি লিভারপুল স্ট্রীট স্টেশন থেকে নেমে ৭ মিনিটের হাঁটা শুরু করি অফিসের উদ্দেশ্যে। চোখ তুললে দেখতে পাই যে সকালের সূর্যের আলোকরশ্মি এই দালানগুলোর কাঁচ-স্টিলে আঘাত করে শুন্যেই বিচ্ছুরিত হয়ে পড়ছে। সেই আলো আর সিটির মাটি পর্যন্ত পৌঁছায় না, রাস্তা-ঘাট দোকান-পাট সারাদিন ছায়া-ঢাকাই থাকে। তবে সিটির স্থাপত্যের কথা বললে আধুনিকতার পরাকাষ্ঠার পাশাপাশি ৩০০-৪০০ বছর আগের পুরাতন দালানগুলোর কথাও বলতে হয়। ক্ষণে ক্ষণে দেখবেন পুরাতন গীর্জা - যার সবচাইতে ডাঁকসাইটে নিদর্শন নিশ্চয়ই ক্রিস্টোফার রেন-এর সুবিখ্যাত সেইন্ট পল'স গীর্জা। কিন্তু আমার কাছে তার থেকেও বেশী চমক লাগে মধ্যযুগের বিভিন্ন কুশলীদের যেই গিল্ড (guild বা সেই আমলের ট্রেড ইউনিয়ন) - তাদের জন্যে নির্মিত হেডকোয়ার্টারগুলো। নাম থেকেই বোঝা যায় যে এখানে কি জাতের কুশলী বা বণিকরা একত্রিত হতো আর ব্যবসা-বাণিজ্য করতো। Bakers Hall, Barbers Hall, Butchers Hall এমন কি Fishmongers Hall এবং Goldsmiths Hall-ও আছে।

Guild hall গুলোর ভেতরে একদম আলিশান কারবার। ডজন ডজন তৈলচিত্র, দামী কার্পেট আর এন্টিক আসবাবে মোড়া। দেয়ালের কোণে হয়তো শোভা পাচ্ছে প্রাচীনকালের কোন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর আবক্ষ মূর্তি - কে তার নাম মনে রেখেছে আজকে? বিশাল হলঘরগুলোতে প্রবেশ করলে মনে হয়ে ভূল করে ভিন্ন এক শতাব্দীতে চলে এসেছি। আজকাল এই হলগুলো ব্যবহৃত হয় মূলত বড়-সড় সেমিনার-কনফারেন্সের জন্যে অথবা বিভিন্ন কম্পানীর বাৎসরিক পার্টির জন্যে।

auto গোল্ডস্মিথস হলের ভেতরে (ছবি - ফ্লিকার)

এই হলো তাহলে সিটি - মধ্যযুগ আর আধুনিক যুগের এক অদ্ভূত সমন্বয়। এর ফুটপাথ আর কালো পিচের ভেতর মিশে আছে শুধু টাকার গন্ধ। ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স ফার্ম, হেজ ফান্ড - কি নেই। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু কিছু থাকে একটু আড়ালে আবডালে, আর কিছু থাকে বিরাট করে আজান দিয়ে - চকচকে অফিসের সামনে দশ ফুট উঁচু কম্পানীর লোগো ঝুলিয়ে। অফিস ব্লকগুলোর নীচে থাকে দামী রেস্তোরা, অথবা ব্যায়ামের জন্যে জিম যার মাসিক চাঁদাই মিনিমাম ১০০ পাউন্ড। থাকে ব্যাংকারদের দামী শার্ট স্যুটের দোকান। জুতোর দোকানের উইন্ডোতে যখন দেখি এক জোড়ার দাম বসিয়েছে ১৫০ পাউন্ড (সেটাও sale price!), তখন ভাবি এই মাল কে কেনে?

তার পরক্ষণেই জবাব পেয়ে যাই, যখন বিকট ভ্রুম-ভ্রুম শব্দে নতুন পোর্শ বা ফেরারি গাড়ি হাঁকিয়ে সরু রাস্তা দিয়ে চলে যায় কোন তস্কর বন্ড ট্রেডার!

*

কালকে লন্ডনের অনেক এলাকায় ফাটাফাটি লাগার চান্স আছে। এর মধ্যে সিটি হবে সংঘর্ষের প্রধাণ ক্ষেত্র - এমন আশংকা করছে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী। আর হবে নাই বা কেন? এই অফিস বিল্ডিং থেকে মাত্র এক মিনিট দূরে অবস্থিত বৃটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক - ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড। সেখানে বসেই গভর্ণর মার্ভিন কিং এবং তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা গত এক বছর ধরে এই ধ্বসে-পড়া অর্থনীতির শরীরে প্রাণ-সঞ্চারনের জন্যে জোরে-সোরে ফুৎকার দিয়ে চলছেন। (যদিও বিশেষ কাজ হচ্ছে না তাদের প্রচেষ্টায়।) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উল্টো পাশেই রয়েছে রয়্যাল এক্সচেঞ্জ। আমি যেই দালানে কাজ করি, সেটা নাকি একদা স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন ছিল। তাই এখানেও আঘাত হানা হবে - এমন ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

এই সপ্তাহে প্রতিদিনই ইমেইল এলো সারাদিন ধরে সিকিউরিটি চিফের দপ্তর থেকে। অফিসে আসবেন না বুধবারে কোন অবস্থাতেই। সবাই বাসা থেকে কাজ করুন, দরকার হলে ল্যাপটপের হার্ড ড্রাইভে সমস্ত দরকারী ফাইল কপি করে বাসায় নিয়ে যান। ল্যান্ডলাইন ফোন যেন ব্যক্তিগত মোবাইলে অটো-ফরোয়ার্ড করা থাকে। ইত্যাদি হাজারো প্যাঁচাল। আদৌ কালকে কেউ কোন কাজ করবে বলে মনে হয় না। বাড়তি একটা ছুটির দিন পাওয়া গেল বরং। এখন অনেক রাত। কিছুক্ষণ আগে সিকিউরিটি দপ্তর থেকে এক লোক এসে বললো - আমরা এখন পাটাতন দিয়ে নীচতলার বড় বড় কাঁচগুলো ঢেকে দেবো, বিল্ডিং-এর সামনে কারো কোন বাইক থাকলে এখনই সরিয়ে ফেলুন। পাটাতনের কাজ আজকে আরো অনেকেই করেছে - বিশেষ করে যাদের দোকানপাটের storefront গুলো খুব সহজেই আক্রান্ত হতে পারে।

৫০০০ পুলিশ মোতায়েন হয়েছে, সব পুলিশ অফিসারদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এয়ারপোর্টে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পাতাল রেল ঠিকমতো চলবে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। এখন শুধু প্রতীক্ষার পালা।

*

এরই মাঝে আরেকটা দুঃসংবাদ পেলাম, বিশেষ করে বৃটেনে অজস্র প্রবাসী বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে। ভিসা কলেজগুলোর পেছনে সরকার অবশেষে উঠে পড়ে লেগেছে। এক দশক যাবত সরকারের কোন খবর ছিল না। নিজেদের প্রয়োজনেই হাজারে হাজার স্টুডেন্টদের এই দেশে আসার সুব্যবস্থা করে দিয়েছিলো। তাদের দিয়ে এখানের যত রকম ছুটা কাজ আছে, সব করিয়েছে ঘন্টায় ৬-৭ পাউন্ড বেতনে। সান্ধ্যপত্রিকা বিলি থেকে বার্গার-ফ্রাইজ বানানো। এখন যেই অর্থনীতির ঘাড়ে মন্দা আর বেকারত্ব ভর করেছে, সাথে সাথে তারা প্রবাসী স্টুডেন্টদের জীবন-ভবিষ্যত নিয়ে খেলা শুরু করেছে। দেশী ছাত্রদের ভিসা-জটিলতা নিয়ে অনেক হরর স্টোরি শুনেছি এর মধ্যে। কার কপালে কি যে আছে এখন, ঈশ্বরই মালুম...


মন্তব্য

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আবারো আমি ফার্স্ট দেঁতো হাসি

ছুটির দিনে আরেকটা ব্লগ নামায়ে ফেলেন হাসি
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

'ছুটির' দিনে যাবতীয় ব্যক্তিগত কাজ সারার নিয়ত করসি। আজকের দিনটা কোন কাজ না করে পার করে দেয়া যায় নাকি, দেখি!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

মূলত পাঠক এর ছবি

বেশ all-encompassing লেখা। ভালো লাগলো।

ঝড়ের আগের বর্ণনা দিলেন যখন, তখন আম-কুড়োনোর গল্পও শুনতে চাই।
আজ রেস্ট নিয়ে কাল লিখে ফেলুন।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আম আর নিজের তেমন কুড়ানো হয়নি। অনলাইন খবরে দেখলাম ঠিক-ঠিকই অফিসের আশেপাশে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়েছে। ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড, আর RBS-এর হেড অফিসে আঘাত করা হয়েছে। কোন এক সরেস বিক্ষোভকারী নাকি ন্যাপোলিয়ন বোনাপার্ট সেজে ব্যাংকের সামনে অবস্থিত স্বয়ং ডিউক অফ ওয়েলিংটনের বিরাট ঘোড়সওয়ার মূর্তিতে চড়ে বসেছিলেন। (ইতিহাস যাদের প্রিয় বিষয়, তারা এই নব্য ন্যাপোলিয়নের কান্ডে মজা পাবেন!)

স্মরণীয় প্লাকার্ডের মধ্যে ছিল - "Abolish Money!" এবং "Consumers suck!"

সন্ধ্যায় নাটকপাড়ায় গিয়েছিলাম। ফিরে আসার সময় দেখি বিশাল গ্যাঞ্জাম। রাত ১০.৩০টা বাজে অথচ সাঁই-সাঁই চিৎকার করে পুলিশের গাড়ি ছোটাছুটি করছে। সবগুলো বাসের রুট ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে আমার বাস থেমে গেলো ১০-১৫ মিনিটের জন্যে। শ'খানেক প্রোটেস্টার পুলিশের কড়া পাহাড়ায় চলে গেলো - একটু ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া হৈ-হৈ উত্তেজনা - সব দেখলাম বাসের জানালা দিয়ে। ফিরতে ফিরতে রাত ১২টা কাবার।

কালকে অফিসে যাবার জন্যে all clear বলেছে। দেখা যাক।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ঝড় পরবর্তি সময়ের অপেক্ষা
***************
শাহেনশাহ সিমন

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

এখানে (জার্মানীতে)ও সেই একই অবস্থা। এরা ছুটা কাজের জন্য না আনলেও, অনেক স্বপ্ন দেখিয়ে এনেছে ঠিকই। এখন স্বপ্নাহতর দলে সামিল হয়েছে সর্বাগ্রে বিদেশীরাই।

জানি না, কি ঘটবে সামনে! পি.এইচ. ডি. শেষে আমিও এখন অনেকটা বসা; চাকরী খুঁজছি চাকরী হারানোদের ভীড়ে হাসি

___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

হুম সেটাই। শুরুতে এদিকে সবাই ভেবেছিল যে জার্মানী (বা ইউরোপ) হয়তো আমেরিকা-বৃটেনের মত ভুগবে না। কোন বাবেল-টাবেল যেহেতু হয়নি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে রপ্তানী শিল্পে ধ্বস নেমে ওদিককার অবস্থাও তথৈবচ। কবে সারবে, কে জানে ...
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হুম। পরিস্থিতি খুবই জটিল। আজকের একটা আপডেট দিয়েন।

সকাল থিকা টেনশনে কমেন্ট করি নাই। ইউকে তে পোলাপানের ভিসা নিয়া ঝামেলা করতাছে শুইনা মাথা ভোঁ ভোঁ করতাছিল। এই মাত্র এক্সটেইন কইরা আইলাম। এইরম ডর দেখানোর জন্য আপনারে জরিমানা করা হইলো। ভবিষ্যতে লন্ডনে গিয়া আদায় করুম দেঁতো হাসি



অজ্ঞাতবাস

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

লন ভিডিউ। RBS-এর কাঁচ ভাংছে। আমার অফিসের ঠিক পাশের বিল্ডিং।

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

স্বাধীন (মোস্তফা) এর ছবি

সুবিনয় ভাই

আপনাকেই যেন মনে মনে খোজছিলাম অনেকদিন ধরে। একে একে সবগুলু লেখা পড়লাম। কাল শেষ করতে পারিনি। আজ শেষ ক রলাম। বলা যায় ঝড়ের বেগেই শেষ করেছি। কিছুটা সময়ের অভাবে, কিছুটা উপন্যাস এর শেষ দেখার আশায়।

জানার আনন্দেই যখন এটা সেটা পড়ছি, তার মাঝেই যেটা কষ্ট দিতো তা হলো অর্থনীতিটা তেমন না বুঝা। এখন আপনাকে পেয়ে গেছি। অতিস ত্বর একটি পোষ্ট দিব কি কি জানতে চাই তার একটি লিস্টি দিয়ে। আশা করি না বলবেন না।

সময়ের অভাবে বিস্তারিত ম ন্তব্য করছি না।
অর্থনীতির কঠিন বিষয়গুলো কে সুন্দ র এবং সহজ করে উপস্থাপনের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আপনাকে (এবং নীচে ইশতিকেও) ধন্যবাদ। আসলে পাঠক বুঝতে না পারলে এই সব টেকনিকাল লেখা সবই পন্ডশ্রম। আপনার লিস্টি পাঠিয়ে দিয়েন, চেষ্টা করে দেখবো - তবে আমি যে অর্থনীতির সব বুঝি, তা একেবারেই না। নিজের জ্ঞানে অনেক গ্যাপ রয়ে গেছে, সেই সব জিনিস নিয়ে তেমন লেখি না।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

স্বাধীন [অতিথি] এর ছবি

আমি যে অর্থনীতির সব বুঝি, তা একেবারেই না। নিজের জ্ঞানে অনেক গ্যাপ রয়ে গেছে, সেই সব জিনিস নিয়ে তেমন লেখি না।

এ জন্যই বুঝি নাম নিয়েছেন সু-বিনয়!

ভেবেছিলাম ম ন্তব্য হিসেবে দিব, পরে দেখি বড় হয়ে যাচ্ছে তাই পোষ্ট দিয়ে দিলাম। আর পোষ্ট দেবার সুবিধে হবে অন্যরাও তাদের চাওয়া জানাতে পারবে মন্তব্যে। যদিও আপনার চোখে পড়বে তারপরও লিঙ্কটা দিয়ে দিলাম।

http://www.sachalayatan.com/guest_writer/23062

অগ্রিম ধন্যবাদ।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

চাকরী খুঁজছি চাকরী হারানোদের ভীড়ে

আমারও একই অবস্থা। মন খারাপ

আপনাকেই যেন মনে মনে খোজছিলাম অনেকদিন ধরে। একে একে সবগুলু লেখা পড়লাম। কাল শেষ করতে পারিনি। আজ শেষ ক রলাম। বলা যায় ঝড়ের বেগেই শেষ করেছি।

এই ধরনের কথা সুবিনয় মুস্তফীকে বলতে বলতে ক্লান্ত আমি। এমন ঝরঝরে, পাঠকবান্ধব লেখা খুব কম পাওয়া যায়। আমি মনে করি কর্পোরেট বিশ্বে এই ধস নামার পেছনে কোন ঐশ্বরিক ষড়যন্ত্র আছে। ঈশ্বর বোধহয় চাইছেন সুবিনয় সব ছেড়েছুঁড়ে শিক্ষকতায় যোগ দিন। চোখ টিপি

নিজেদের প্রয়োজনেই হাজারে হাজার স্টুডেন্টদের এই দেশে আসার সুব্যবস্থা করে দিয়েছিলো। তাদের দিয়ে এখানের যত রকম ছুটা কাজ আছে, সব করিয়েছে ঘন্টায় ৬-৭ পাউন্ড বেতনে।

আমেরিকার অবস্থাও তো জানেনই। এখানে শুধু ছাত্র-ছাত্রী না, প্রচুর অবৈধ অভিবাসীকেও আসতে দেওয়া হয়েছে। আমি অর্থনীতির ছাত্র হলে উন্নত বিশ্বের অর্থনীতির 'নোংরা' অংশে বাইরের দেশের শ্রমিকদের ভূমিকা ও স্থানীয়দের তুলনায় তাদের তুলনামূলক অবদান নিয়ে গবেষণা করে দেখতাম। এই শ্রম যদি যার যার নিজের দেশে চালান হয়ে যায়, তাহলে তার প্রভাবটা কী অসামান্য হত!

এ-ধরনের কাজের জন্য খুব একটা শিক্ষা। প্রশ্ন হল, অভাবটা কি তাহলে সম্পদের, নাকি নেতৃত্বের?

সিরাত এর ছবি

ভাল লাগলো লন্ডনের ফাইনান্সিয়াল হার্টের বর্ননা সুবিনয় ভাই। এরকম আরো চাই।

কত রাত পর্যন্ত কাজ করেন আপনি? ওয়ার্কোহলিক না তো? চোখ টিপি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।