ফিরে দেখা: অপারেশন সূর্যদীঘল বাড়ি-(২)

নজমুল আলবাব এর ছবি
লিখেছেন নজমুল আলবাব (তারিখ: বুধ, ২৮/০২/২০০৭ - ৮:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


আগের পর্ব
-----------------------------------------------

বিকাল সাড়ে চার টার দিকে সহকর্মি জাকির জাহামজেদ ফোন করলেন। বল্লেন, ভাল একটা অপারেশন আছে। বল্লাম নিশ্চিত হও। তারপর জানাও। সন্ধার পর আর খেয়াল ছিলনা।

সাতটার দিকে আবার ফোন। ভাই আসেন, টিলাগড়ে। মনে হয় ভাল জিনিস! আবারও বল্লাম তুমি থাক, আমি পরে আসি। এরপর অফিসের কাজে মন দিই। এদিকে অফিসের অন্যান্য আরও অনেকের ফোনেও খবর আসছিল। কিন্তু কেউ নিশ্চিত কোন খবর কেউ জানেনা। বেশি ফোন করছিলেন টিলাগড়-উপশহর এলাকার মানুষজন। পুরো এলাকা বিকাল থেকে ঘিরে ফেলেছিল র্যাব। মানুষজন জানেনা কিছুই। তারা ছিলেন আতঙ্কিত। আমাদের অফিস থেকে এ ওকে, সে তাকে এভাবে ঠেলাঠেলি চলছে। কেউ একজন যাতে স্পট ভিজিট করে আসে। কেউ আর রাজি হয়না। সবার এক কথা আরে ওইদিন জেল বাবর হেলিকপ্টার নিয়াও কিছু করতে পারেনি!!

অন্যদিকে জাকির বারবার ফোন করছে, আর আমি বলছি, তুই থাক আমি আসব!!! রাত সাড়ে 11টার দিকে বাসায় যাবার জন্য বের হয়েছি। মোটর সাইকেলে উঠার পর এক সিনিয়ার ভাই বল্লেন, একবার মনে হয় যাওয়া দরকার। আমারও মনে হল, জাকির বেচারা বসে আছে। ভেবেছিলাম ওকে ফোনে বলব, বাসায় চলে যাও। ফাও ঘটনা সব। রওনা দিলাম। 10 মিনিটে পৌছে গেলাম টিলাগড় পয়েন্টে। হনতদন্ত হয়ে ছুটে এল জাকির। কানে কানে বল্ল, ভাই এত দেরি করলেন। শায়খ রহমান ধরা খেয়েছে! আমি বলি ধুর!!! দেখি আশেপাশে আমারই বয়েসি অথবা জুনিয়রের সারি। কোন সিনিয়ার নেই। বল্লাম, সিনিয়াররা আসে নাই দেখনা। তবুও তার তর্ক। তাকে কোন র্যাব অফিসার নাকী বলেছে।

সামনে দেখি র্যাবের অস্ত্রধারী পাহারা। কার্ড দেখিয়ে ভেতরে ঢুকি। শাপলাবাগের গলি। অন্ধকার হয়ে আছে। দশ হাত দুরে দুরে র্যাব সৈনিকরা দাড়িয়ে আছেন। বার বার থামতে হয়। কেমন কেমন লাগতে শুরু করে।

রাত তখন বারটা বেজে কয়েকমিনিট হবে। বাপ্পাকে ফোন দিই। ও ভোরের কাগজের ব্যুরো চিফ। আমরা দুজনেই যুক্তরাজ্যের টিভি 'চ্যানেল-এস' এ কাজ করে। ফোন দিই। পুরোটা বলতে হয়না। বলে আমি বেরুই, তুই নিতে আয়। মোটর সাইকেল ছুটাই। বিশ মিনিটের মাথায় স্পটে ফিরে এসে দেখি গলির মুখ ফাঁকা! কি করব ভাবতে ভাবতে ভেতরে ঢুকতে থাকি। বাপ্পার অবিশ্বাস শুরু হয়ে গেছে। আমাকে সন্দেহ করা শুরু করেছে। কিন্তু কিছু বলতেও পারছেনা! উপশহরের কাছে র্যাব দাড়িয়ে থাকতে দেখেছে। একটু ভেতরে যেতেই ভুল ভাঙ্গল। এন টিভির রিপোর্টার বুলবুলের দেখা মিল্ল। একসাথে এগিয়ে গেলাম সিলেটের সব জুনিয়র সাংবাদিকের পাল!(তখন পর্যন্ত সিনিয়াররা হয় জানেননা নয়ত ফোনে সাংবাদিকতা করছেন! দু-একজন ব্যাতিক্রম ছাড়া!)
--------------------------------------------
(চলবে)


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।