ফিরে দেখা:অপারেশন সূর্যদীঘল বাড়ি-(শেষ)

নজমুল আলবাব এর ছবি
লিখেছেন নজমুল আলবাব (তারিখ: শুক্র, ০২/০৩/২০০৭ - ৪:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


1 2 3 4 5

-----------------------------------------------------------

শায়খের স্ত্রীসহ 9 জন আত্মসমর্পন করলেও সকাল থেকে বিকাল সন্ধ্যা অবধি র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা দস্তুরমত শায়খ রহমানকে নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করে রাখে। তারা এই বাড়ীর ধারে কাছে কাউকে যেতে দেয়নি। সময় সময় বিভিন্ন পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সাংবাদিকদের সেখানে নিয়ে গেলেও বেশিরভাগ েেত্র তাদের কোন তথ্য দেওয়া হয়নি। সারাদিনই শায়খ রহমানের গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে র্যাব রহস্য সৃষ্টি করে রাখে।

বিকেলের দিকে বিডিআর মোতায়েন করে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। বি ডি আর এর 21 রাইফেলস্ ব্যটেলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মনোয়ার রেজার সাথে আমার বেশ ভাল সম্পর্ক। স্পটে এসেই কুশল জিঙ্গেস করলেন। বল্লাম দু'দিন ধরে ঘুরছি কিন্তু বাড়ির পাশেই ঘেসতে পারলামনা। বল্লেন তার সাথে যাওয়ার জন্য। এই প্রথম সূর্যদীঘলের ফটকে আসতে পারলাম। পরিচয় করিয়ে দিলেন র্যাব এর দুজন ক্যাপ্টেনের সঙ্গে। একজনের নাম তোজাম্মেল। অন্যজনের নাম এই মুহুর্তে মনে পড়ছেনা। পরের কয়েক ঘন্টা এরা দারুন সাহাজ্য করেছেন।

এদিকে রেজা এসেই নতুন স্ট্র্যাটেজি নিলেন। তিনি বল্লেন, ছাদ নয়ত দেয়াল ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকার কথা। অন্যান্যেরও তা মনে ধরল। শুরু হল সূর্যদীঘলের ছাদ ফুটো করা। ফুটো করতে করতে নেমে আসে রাত। তোজাম্মেলের সহযোগিতায় সূর্যদীঘলের ঠিক উল্টোদিকের বাড়িতে ঢোকার সুযোগ পেয়ে যাই। 2 মার্চ ভোররাত পর্যনত গ্রেফতার অভিযান শিথিল ছিল। তাই অনে সাংবাদিকই এখানে এস পজিশন নেন।

ভোর 6টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযানে সর্বশক্তি নিয়োগ করে র্যাব। শায়খকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়। এসময় শায়খের বাসার ছাদের ছিদ্র দিয়ে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা পরীা-নিরীা করে দেখেন বাসার ভেতর উচ্চ মতাসমপন্ন কোন বিস্ফোরক আছে কি-না। এব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর বাসার ভেতর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ডাবল লাইনে হোসপাইপের গরম পানি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে অতীষ্ট হয়ে বদ্ধ ঘরের ভেতর থেকে জানালা খুলেন জঙ্গিনেতা শায়খ রহমান। তিনি জানালা দিয়ে মুখ বের করে অভিযানকারীদের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ ঝাড়েন। বলেন, এমন আচরণ অমানবিক। পানি, বিদু্যৎ, গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে পানি মারা হচ্ছে এটা অন্যায়। এ সময় র্যাব'র কর্মকর্তারা আত্মসমর্পনের জন্য শেষ আহ্বান জানান। জবাবে শায়খ রহমান বলেন, আত্মসমর্পনে রাজি তবে শর্ত আছে। যদি পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হয় তবে আত্মসমর্পন করবো। তিনি বলেন আমাকে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে দিতে হবে। র্যাব দুই প্রসতাব মেনে নেয় এবং পাল্টা প্রসতাব দেয় নিরসত্র হয়ে সারেন্ডার করার। সকাল সোয়া 7টার দুই সহযোগী জেএমবি ক্যাডার আব্দুল্লাহ ও মইজুল হক হৃদয়সহ হাতে কোরআন শরীফ মাথায় পাগড়ীর কাপড় ও আলখাল্লা পাঞ্জাবী পরে বাইরে বেরিয়ে আসেন সাদা দাঁড়িওয়ালা শায়খ আব্দুর রহমান। এরপর র্যাব তাকে হেফাজতে নেয়। এর মধ্যদিয়েই অবসান হয় শ্বাসরুদ্ধকর টানা 36 ঘন্টার।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।