তারল্যের ধর্ম এমনই যে
পাশাপাশি থাকলে -
কিছু অভিস্রবনতো ঘটবেই;
ভালোবাসোনি জানি,
তবুতো বাস বহুকাল পাশাপাশি,
দূরে চলে গ্যালে –
অন্তত কিছু হারানোর কষ্টতো হবেই।
আমাদের রূপকথার নায়ক নায়িকা আমরা নই,
যারা ছিলো, তারাও ভুলে গ্যাছে
কৈশরের সব সোনার কাঠি-রূপোর কাঠির গল্প,
বড় হয়ে সকলেই বুঝে যায় কৌটোয় থাকেনা ভ্রমর,
কিংবা কাকে বলে কাফ লাভ্ অথবা ইনফ্যাচুয়েশন,
ফ্রয়েডিয় কঠিন জালে আটকে পড়ে অবি ...
বারো থেকেই বর্ষার সাথে প্রেম।
ভালোবেসে আদিগন্ত যা ঝরে পড়ে,
তাতে রোদের লুকোচুরিতে মায়ার
হাত ধরে শুষে নেই রামধনু রং;
জয়া তখন গ্যাছে কচুপাতা যোগাড়ে,
তার থেকে যতটুকু ঝরে পড়ে জল,
তাই বুকে ধরে রাখি, যদি সত্যিই
কোনদিন নদে আসে বান। আর
গোল হয়ে চেঁচাই, রোদবৃষ্টি হলে
খেকশিয়ালের বিয়ে যেন হয়, সেই
বিয়ে আজও হয় নাই; যদিও পুরোটা
বর্ষাই আত্মসাত করেছে শেয়ালের দল !
বহুদিন গ্যালো সন্যাসে
এইবার বুঝি ফেরা দরকার,
যদি তার পড়ে মনে,
আমারো ফের হবে সংসার ।
একুশে কাটে যে ক্ষত
তার ক্ষরণ থামেই বা কবে,
ঘরেই যে ভাঙে ঘর
তারোকি কোনদিন ঘরে ফেরা হবে?
প্লাবনের সাথী হবে বলে
সঙ্গ নেয় সরপুঁটি, ফুলতোলা হাঁস,
বালিকা ডাকেনি তাই,
নির্বাসনে আমাদের, আ-ক-ন্ঠ নিবাস ।
অযুত শতক টপকে তোমার কাছে যাওয়া
তোমার বন্ধ্যা চোখে তবু মেঘের আড়াল!
জানোতো, মেঘের হৃদয়ে যতখানি অশ্রু থাকে
তারো বেশী থাকে বজ্র বুঝিবা।
আর কে না জানে কবিদের যদিও
জলের বুকে নিজেদের দুঃখবোধ, ক্রোধ
লিপিবদ্ধ করে যেতে ক্লান্তি নেই,
বজ্রের সাথেই তাদের আবাল্য শত্রুতা।
সহস্র জগত টপকে তোমার কাছে যাওয়া
তোমার খরচোখে তবু মেঘের আড়াল!
অসুখ বিসুখ হলে মাঝে মধ্যে সে বেরিয়ে আসে। এই যে নিয়মিত ভাবে মাস দুই পর পর ধারাবাহিক জ্বর হচ্ছে, তখন মনে হয় যার জ্বর হলো, সে আর আমি এক নই। রাতে ভালো ঘুম হয়না, মনে হয়, যে ঘুমাচ্ছে, তাকে, যে জেগে আছে - সে পাশে বসে পাহারা দেয়। যে যাচ্ছে কাজে, তার সংগী হয়ে সব কষ্ট বয়ে নিয়ে যাচ্ছে আরেকজন। আর সেই কষ্টের কুলির কাছে মনে হয় – এইসব নিত্যদিনের ধারাবাহিকতা, এই ক্রমে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে চলা, এই যে ...
বলি, পাথর ভাল্লাগেনা,
হাসলে তুমি, পাথরে বুঝি ফুল ফোটেনা?
ফুটবে না ক্যান, ফোটেগো,
ফোটাতে যদি জানো, তবেতো।
অংক করা মেয়েযে তুমি,
অংক কষে ভালোবাসার শেষ জেনেছো,
পুষ্প-পাথর এক শিখেছো,
ফুল ফোটানোর হিসেব যতো,
হিসেব করেই বাদ দিয়েছো।
বাসতে যদি জানো ভালো,
প্রজাপতির ডানায় তবে,
রংধনুর আলোগো;
নয়তো সবই রাংতা পড়া,
চকচকে আর মিথ্যে ভরা,
মুখোশপড়া মানুষগো।
আমার অস্তিত্ব আজ
স্পষ্ট দু’ভাগে বিভক্ত-
মাঝখানে যেন সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া,
এক ভাগ তুমি-হীন,
অন্য ভাগে তোমাকে ফিরে পাবার সম্ভাবনা।
যে ভাগে তুমি নাই,
সেখানে আমি অফিস করি, বাজার যাই,
বোনাস আর বেতনের খবর রাখি,
ছেলে ভালো স্কুল পেলোনা বলে প্রেসার বাড়াই,
আর ক্রিকেটের স্কোরে পুরাতন বন্ধুদের ফোন করি।
কিন্তু তারা কেউ তোমার কথা জিজ্ঞাসা করেনা,
বলেনা কোথাও কখনো তোমার সাথে তাদের দেখ...
কবে কোনকালে বেহুলা গ্যাছে এই স্রোতে
তারই শোকে জলেশ্বরীর ঢেউয়ে আজো দ্বীর্ঘশ্বাস।
দংশনই যদি নিয়তি হবে, তবে সহস্র সাধনাতেও তাকে যায়না এড়ানো,
লৌহবাসরে - সেই বুঝি সদ্যপরিনীতার প্রথম পাঠ।
শাস্ত্র থেকে আমদের মৃত্তিকা জীবন
শেখেনি কিছু, ক্ষরন এড়ানোর হিরন্ময় চেষ্টায়,
তারো নিয়তি শুধু নিরন্তর ভেসে চলা,
দিকচিহ্নহীন অজানা স্রোতে, স্বপ্নের লাশ নিয়ে - একাকী ।
পকেট উপচে পড়া ক্যপস্টানের তাস,
চোখে ছুরি, তর্জনীতে মার্বেল,
এবার ঠিক প্রতিপক্ষ ঢুকে যাবে গর্তে
মাঞ্জামারা হাত এত কাবু নয়, তবু
তোমার লেজফিতার আট আনা কত উড়িয়েছি ধুলায়-
বলেছিলে দেখে নেবে।
দেখেতো নিয়েছো ঠিকই,
তোমার মৃগনাভে খেলে আজ বর্গী আঙুল।
বালকেরা জানেনা জীবন কতটা প্রবঞ্চক,
বালিকারা তবু ঠিকই শিখে যায় জাগতিক পাটিগণিত।
দুটো দুপুর ভাঁজ করা দেরাজে,
অপরাহ্নের নিঃসঙ্গতায় তাই ন্যাপথলিনের গন্ধ।
পদ্মপানায় স্থির মাছরাঙ্গা এক,
নিঃশঙক চিত্তে ঝড়ের অপেক্ষায় -
সামান্য বর্ষণেই বুকে তুলে নেবে, কদমের ঘ্রান।
দাওয়ায় ভাসে দূরাগত দীর্ঘশ্বাস
কাকে মনে করে থেমে যায়
কার গোবর লেপা দুটো হাত।
পুরোটা উঠান জুড়ে শুধু
অলস রোদের একলা কাটাকাটি।
মেঘ আর রোদের এমন লুকোচুরি
কোন এক প্রাচীন দুপুরে
কাছে এনেছিলো তাকে, ইশার...