লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে-৪

দীক্ষক দ্রাবিড় এর ছবি
লিখেছেন দীক্ষক দ্রাবিড় (তারিখ: শনি, ২৫/০৩/২০০৬ - ৮:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনী প্রতিটি জেলায় থানাকেন্দ্রিক বধ্যভূমি সৃষ্টির পাশাপাশি গ্রাম পর্যায়েও এর বিসত্দার ঘটিয়েছে। কোনো কোনো থানায় 4-5 এমনকি 6-7টিরও অধিক বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। আর থানা পর্যায়ের এসব বধ্যভূমির মোট হিসাব মিলিয়ে জেলা পর্যায়ে বধ্যভূমির সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে নিদেনপক্ষে 30 থেকে 40টি। এমনই একটি জেলা গাইবান্ধা। এই জেলায় 30টি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে। আর অনাবিষ্কৃত বধ্যভূমির সংখ্যা কতো তা আজো জানা সম্ভব হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর 35 বছরের দীর্ঘকাল পরিক্রমায় সময়ের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বেদনাবিধূর এসব স্মৃতি ও ঐতিহ্য। গাইবান্ধা জেলার উল্লেখযোগ্য বধ্যভূমিগুলো হচ্ছে_ সদর উপজেলার সাহাপাড়া, কামারজানি ও বল্লমঝাড়, সাঘাটার দলদড়িয়া, সগুনা, ফুলছড়ি রেললাইনের আশপাশ, গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি সেতু এলাকা, নাকাই হাট, কোচা শহর, সুন্দরগঞ্জের ছাপরহাটি, পলাশবাড়ীর গিরিধারীপুর, কাশিয়াবাড়ী, বৈরীহরিণমারি ও ঝাপড় এলাকা। এসব বধ্যভূমিতে পাক হানাদার বাহিনী নির্মম নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে হাজার হাজার নিরীহ, নিরপরাধ নারী-পুর"ষকে। শিশু এবং মহিলারাও এই অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। একমাত্র পলাশবাড়ী উপজেলার সড়ক ও জনপথ অফিসের ডাকবাংলোর পেছনের বধ্যভূটিতেই 1 হাজারেরও অধিক মানুষকে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়_ জেলার 30টি বধ্যভূমির মধ্যে ওপরে 14টি বধ্যভূমির নাম স্মরণ করা সম্ভব হলো। এসব বধ্যভূমির কোনোটিই সংরক্ষিত ও সুরক্ষিত নয়। সরকারিভাবে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ তো দূরের কথা। স্থানীয় জনগণ কিছু বধ্যভূমি ইট গেঁথে এবং বেড়া দিয়ে স্থানটুকু ঘেরাও করে রাখলেও সরকারি সহযোগিতার অভাবে অধিকাংশ বধ্যভূমির স্মৃতিচিহ্নই হারিয়ে যেতে বসেছে।
সরকারের কাছে গাইবান্ধাবাসীর প্রত্যাশা তাদের জেলার বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ পূর্বক স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হোক। যাতে বিজয় দিবস_ স্বাধীনতা দিবসে তারা সমাধির বেদিমূলে শ্রদ্ধা জানাতে পারে জাতির মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী বীর সনত্দানদের।

গবেষণা: ড. আবুল আজাদ।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।