মানুষ ছাড়া কেউ রচনা করতে পারে না

দীক্ষক দ্রাবিড় এর ছবি
লিখেছেন দীক্ষক দ্রাবিড় (তারিখ: সোম, ২১/০৫/২০০৭ - ৫:৪০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শিম্পাঞ্জিকে টাইপ করা শিক্ষা দিতে কত সময় লাগে এরকম গবেষণা কিছু বিজ্ঞানী করে থাকেন। হাতি ছবি আঁকলে কিরকম হয় এ নিয়েও প্রামাণ্যচিত্র দেখেছি। কিছু লোক বানরকে নানা কসরত্ শিখিয়ে, শিল মাছকে জলকেলি শিখিয়ে জীবিকা উপার্জন করেন। সার্কাসের ঘোড়া, সিংহ, বাঘও নানা অঙ্গভঙ্গি দেখায়। (ছাগল দিয়ে এরকম চেষ্টা কাউকে করতে দেখিনি।)

প্রাণী ছাড়াও মানুষের আয়ত্তের মাঝে আছে বলে দাবী করা হয় অশরীরি বিষয়। বাংলাদেশ ও পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে জ্বিন পালে বলে দাবী করে কিছু লোক। তারা নাকি জ্বিন দিয়েও নানা কারবার করাতে পারে।

তবে আস্ত একটা বই? লেখার মান যত খারাপই হোক আস্ত একটা বই লেখা এইসব সার্কাসের বাঘ, বানর বা জ্বিন-প্রেতের পক্ষে সম্ভব নয়। বই রচনা শেষ পর্যন্ত মানুষকেই করতে হয়। সেইসব রচনা করা বই বিভিন্ন সম্রাটের নামে, দেব-দেবী বা ঈশ্বর-খোদা-আল্লাহর নামে মনুষ্যসমাজে চালানোর একটা চল ছিলো। কারণ ক্ষমতাধর না হলে, গোত্রপ্রধান না হলে আরেক মানুষের কথা মানুষ সহজে মেনে নিতো না। যুক্তি সেখানে অবান্তর।

তবে মানুষের লেখা বই, সংবিধান, সনদ এখন সারা বিশ্বের নানা ধর্মের মানুষরা সমানভাবে মানছে। জাতিসংঘের কিছু সনদ ও নিয়মাবলী এত মানুষ ও দেশের নাগরিক অনুসরণ করে যে এর কাছে একটা বিশেষ ধর্মের ধর্মগ্রন্থের লেখকদের তুচ্ছ মনে হয়। এমন তুচ্ছ লেখালেখির কৃতিত্ব ঈশ্বর-খোদা-আল্লাহকে দিলে এই সর্বশক্তিমান ধারণাটারই অপমান করা হয়।

ব্যাকরণ মেনে লেখালেখি করা, ছন্দ মেলানো, অক্ষর ও ভাষা চর্চা, ভাষার সাহায্য নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করা, এগুলো মানুষের মত সীমাবদ্ধ ক্ষমতার প্রাণীদের কাজকর্ম। এতো ছোট কাজে ঈশ্বর-আল্লাহ-খোদা-ভগবানকে টেনে এনে তাদেরকে পন্ডিতের বেতের নীচে না ফেললে কি হয় না?

লাল কলম হাতে নিলে কিন্তু কোনও ঈশ্বরই পাশ মার্ক পাবে না।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।