ইসলাম ও নারীঃ একটি মোহমুক্ত বিশ্লেষণ-৩

দীক্ষক দ্রাবিড় এর ছবি
লিখেছেন দীক্ষক দ্রাবিড় (তারিখ: রবি, ০২/০৪/২০০৬ - ২:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


Islam is a sex positive religion. । প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে মুসলিম বা অমুসলিম গবেষক এই কথাই বলেন যার অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে ধর্মটি পুরুষকে ঘিরেই আবর্তিত। পুরুষের যৌনআকাঙ্খাই এখানে মুখ্য, নারী ও তার ইচ্ছা, অনিচ্ছা এখানে গৌণ। মুসলিম মনীষিদের মতে বিবাহ হচ্ছে এমন একটি আইনসঙ্গত উপায় যার মাধ্যমে একজন পুরুষ একজন মহিলার সাথে সম্পর্কস্থাপন করতে পারে। মুসলিম পারিবারিক আইনের ভাষ্যতে অনেক ভাষ্যকার বিয়ে সম্পর্কে বলেন যে, মুসলমান পুরুষের জন্য বিয়ে হচ্ছে, এমন একটি চুক্তি যার মাধ্যমে সে একজন মহিলার প্রজনন অঙ্গের দখলদারিত্ব অর্জন করে যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে একে উপভোগ করা।
কথাটি বিপরীতভাবে মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ মহিলাটির জন্য স্বামীটি সংরক্ষিত নয়। কোরান মুসলিম পুরুষকে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয়।
If ye fear that ye shall not be able to deal justly with the orphans, Marry women of your choice, Two or three or four; but if ye fear that ye shall not be able to deal justly (with them), then only one, or (a captive) that your right hands possess, that will be more suitable, to prevent you from doing injustice. (4.3)

ডান হাতের মধ্যে থাকা অন্য নারীদের উপর অধিকার থাকা সংক্রান্ত ব্যাপারে কোরানে পুরুষদের জন্য আরো সুসংবাদ আছে:
The believers must (eventually) win through,- Those who humble themselves in their prayers; Who avoid vain talk; Who are active in deeds of charity; Who abstain from sex, Except with those joined to them in the marriage bond, or (the captives) whom their right hands possess,- for (in their case) they are free from blame, (Sura 23.1,5,6.)

তারপরও কোরানে পুরুষদেরকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে অক্ষম হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে : Ye are never able to be fair and just as between women, even if it is your ardent desire (Sura 4.129) । কিন্তু এ বিচার ক্ষমতার অভাব পুরুষের রয়েছে তা উল্লেখ করা সত্ত্বেও বহুস্ত্রী ও ডান হাতের অধিকারে থাকা স্ত্রী-অতিরিক্ত নারীর সুব্যবস্থা থেকে পুরুষকে বঞ্চিত করা হয়নি। অথচ ন্যায়ানুগ অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে নারী।

মুসলিম বিবাহ প্রকৃতঅর্থে তাই এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে একজন নারীর, প্রায়শ:ই তার মতামত ছাড়াই, তার স্বামীর যৌন চাহিদার কাছে সমর্পণ করার এবং প্রয়োজনে আরো তিনজন সতীন ও অসংখ্য উপপত্নীর পাশাপাশি স্ত্রী দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার আদেশ রয়েছে।

অনেকেই বলে থাকেন যে ইসলামে স্বামীকে সব স্ত্রীর সাথে সুবিচার করতে হয়। কিন্তু মুসলিম আইনবেত্তারা একটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন যে এই সুবিচার হবে প্রত্যেক স্ত্রীর বিভিন্ন রকমের খরচ, উপহার ইত্যাদির তুলনা করে; ভালবাসা বা যৌন সম্পর্কের তুলনা করে নয়। তবে ইসলামের নবীর এক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা ছিল। কোরানই তা নির্দেশ করে। যদিও নবীর জীবন অনুসরণকে বিশেষ সওয়াবের কাজ মনে করা হয়, এসব বিষয় অনুসরণ না করাটাই ধর্মের বিধান। কোরানে নবীকে এই বিশেষ অধিকার দেয়া হয়েছিল যে তার স্ত্রীদের মধ্যে তার রাতগুলো সমানভাবে ভাগ করার দরকার নেই।
O Prophet! surely We have made lawful to you your wives whom you have given their dowries, and those whom your right hand possesses out of those whom Allah has given to you as prisoners of war, and the daughters of your paternal uncles and the daughters of your paternal aunts, and the daughters of your maternal uncles and the daughters of your maternal aunts who fled with you; and a believing woman if she gave herself to the Prophet, if the Prophet desired to marry her-- specially for you, not for the (rest of) believers; We know what We have ordained for them concerning their wives and those whom their right hands possess in order that no blame may attach to you; and Allah is Forgiving, Merciful. (Sura 33: 50)

You may put off whom you please of them, and you may take to you whom you please, and whom you desire of those whom you had separated provisionally; no blame attaches to you; this is most proper, so that their eyes may be cool and they may not grieve, and that they should be pleased, all of them with what you give them, and Allah knows what is in your hearts; and Allah is Knowing, Forbearing.
(Sura 33: 51)

স্ত্রী ও বিবাহ সম্পর্কে নবীর এসব বিশেষ সুবিধাযুক্ত আয়াত নাজিলের প্রেক্ষিতেই একবার নবী পত্নী আয়েশা বক্রোক্তি করে বলেছিলেন, "যখন আপনার ইচ্ছার বিষয় থাকে, তখন আল্লাহ বেশ দ্রুতই আপনার সাহায্যে এগিয়ে আসেন।" যা হোক, ইসলামের নবী নয়জন স্ত্রীর সানি্নধ্য পেয়েছিলেন, এবং গাজ্জালির মতে তিনি এক সকালের মধ্যে নয় স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য দায়িত্ব পালন করার মত তাকতের অধিকারী ছিলেন।

তবে মহিলারা তাদের স্বামীদের কাছে যৌনতৃপ্তি দাবী করার অধিকার রাখেন না। মুসলিম নারী শুধু দাবী করতে পারেন খাবার, কাপড়-চোপড় ও বাসস্থান। সুতরাং যৌনসম্পর্কের দিক দিয়ে স্বামীই হচ্ছেন প্রভু এবং বিপরীত দিক থেকে নারীদের জন্য সমান সুযোগ নেই। তালাকের অধিকারের ক্ষেত্রেও ইসলাম সাংঘাতিকভাবে পুরুষ-পক্ষপাতী। নারীদের অধিকার সাংঘাতিকভাবে খর্বিত। (এটি বিবাহের অধিকার সংক্রান্ত বলে বিশদ আলোচনায় যাচ্ছি না।)

ইসলাম, তাই বলা যায় পুরুষদের জন্য রেখেছে কাঁচা মাংসের স্বাদ নেয়ার এক অভূতপূর্ব ব্যবস্থা। যেমন দুনিয়াতে তেমনি বেহেশতে। খুবসুরত হুরীদের তৈরি করা হয়েছে বিশ্বাসী বান্দাদের জন্য। তবে অবশ্যই এ পুরষ্কার পুরুষদের জন্য: পড়ুন নীচের আয়াতগুলো:
Verily for the Righteous there will be a fulfilment of (the heart's) desires;enclosed gardens and vineyards; and voluptuous women with swelling breasts; and a full cup." (Sura 78: 31-33)

(To them will be said:) "Eat and drink ye, with profit and health, because of your (good) deeds."
They will recline (with ease) on Thrones (of dignity) arranged in ranks; and We shall join them to Companions, with beautiful big and lustrous eyes.
(Sura 52: 19-20 )

আরো অনেক আয়াতেই পুরুষদেরকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে অবারিত পান ও যৌনতার। এদিকে ইঙ্গিত করেই ইসলামের নবী বলেছেন, "বেহেশতে কোনো কুমার থাকবে না।"

মানবের ব্লগে ইসলামে যৌনতা নিয়ে বিশদ বর্ণনা ও বিশ্লেষণ দেয়া আছে। আমি এখানে তার পুনরুক্তি করতে চাচ্ছি না। সুতরাং বেহেশতে পুরুষেরা কত বেশি যৌন-সুযোগ পাবেন তার বিস্তারিত বিবরণ সেখানে পাবেন। আমার মূল বিষয় হচ্ছে নারীদের বঞ্চনা নিয়ে আলোচনা।

ঋতুকালে বা মিনসট্রেশনের সময়ের নারীকে ইসলামে অপবিত্রধরা হয়, যদিও এটি একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক চক্র। সুতরাং এ অবস্থায়, প্রার্থনা, রোজা রাখা, কাবা পরিভ্রমণ, কোরান পাঠ বা স্পর্শ করা, মসজিদে প্রবেশ করা ও স্বামীর সাথে মিলিত হওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে ধর্মীয় বাধা। অন্য ব্যাখ্যাও পাওয়া যায় এসবের। তবে কোরানে নারীকে অনুগতই থাকতে বলা হয়েছে সৃষ্টিকর্তার ও স্বামীর (সুরা 4:34)। আর ইসলাম মূলত: এমন একটি ধর্ম যার ব্যাখ্যা দেয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের প্রাধান্যই প্রতিষ্ঠিত। নারীকে কখনও ধর্মীয় বিষয়ে নেতৃত্বের অধিকার দেয়া হয়নি: পড়ুন আয়াত 16. 43:
And before thee also the messengers We sent were but men, to whom We granted inspiration: if ye realise this not, ask of those who possess the Message.

কোরান সাড়ম্বরে ঘোষণা দেয় ধর্ম সবসময়ই এসেছে পুরুষ নবীদের কাছে।


মন্তব্য

শিশিরকণা এর ছবি

মনের মুকুরে থেকে এই লেখাটি খুঁজে পেলাম। হুমমম।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।