‘হাসান ফেরদৌস’ এর কলাম আর কিছু মন্তব্য

নব্য এর ছবি
লিখেছেন নব্য (তারিখ: শুক্র, ০৯/১১/২০০৭ - ৯:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার অনেক প্রিয় লেখকের মধ্যে ‘হাসান ফেরদৌস’ অন্যতম। আজকে ‘প্রথম আলোতে’ লেখকের ‘ইরাকঃ ভাগ কর ও শাসন কর’ সম্পাদকীয় কলামটি ক’জন পড়েছেন জানি না। এই লেখাটা সেসব পাঠকের অবশ্যপাঠ্য যারা কিনা বাংলাদেশের সমস্ত কিছুতেই, এ দেশের সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতের গন্ধ খুঁজে পান। আমি একজনকে চিনতাম যিনি কিনা দেশটার অধোগতির চিন্তায় মোটামুটি নাক সিঁটকে থাকতেন। একদিকে রাজাকারদের নীরব চাটূকার ছিলেন, আবার অন্যদিকে আমিরিকায় থেকে দেশীয় ঐতিহ্য রক্ষায় গলাবাজি করতেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য উনি আমেরিকায় থাকার সমস্ত বন্দোবস্তই সুসম্পন্ন করেছেন (আমি হলপ করে বলতে পারি সেই ভাই এর এ পাকা ব্যবস্থা অবশ্যই প্রবাসে দেশীয় সংস্কৃতির ফল্গুধারা ছড়িয়ে দেবার জন্য নয়!)। এ ধরণের বাংগালীর চাইতে বাংলাদেশের মাটিতে থেকে ভালোমন্দ মেশানো বাংগালীই কি দেশীয় ঐতিহ্য পূর্ণ মর্যাদায় রক্ষা করে চলছেন না?

যাই হোক, কথা শুরু করেছিলাম ‘হাসান ফেরদৌস’ এর লেখা নিয়ে। অতিরিক্ত ভূমিকাটুকুর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। লেখাটিতে স্থান পেয়েছে ইরাকের উপর মার্কিন ভাইদের নেকনজর (?) প্রসংগ। ইরাকের ‘তেলনীতি’ যে কত শত মার্কিন সেনার তথা এই দেশের প্রগলভ রাজনীতিবিদের ইরাক বিষয়ক শান্তি নিয়ে ঘুম হারাম করে দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এ বিষয়ে কি হিলারি ক্লিনটন কি জর্জ বুশ সব একই খাঁচার মুরগী। এতো বড় যে দেশ, এতো তার সম্পত্তি তবু যেন তার পাওয়ার আর ‘power’ এর আকাঙ্ক্ষা আর মেটে না! বাংলাদেশের যে পরবাসী মানুষগুলো উপরে উল্লেখিত আমার পরিচিত দেশী ভাইটার প্রতিবিম্ব, যারা প্রতি মুহুর্তে দেশটার শিরায় শিরায় সততার অভাব বোধ করেন, তারা কি এটা স্বীকার করেন যে, হ্যাঁ আমার দেশের মানুষগুলি বাধ্য হয়ে হয়ত ঘুষ দেন (আমি ঘুষখোরদের কথা বলছি না, যদি-ও আমি জানি ‘অন্যায় সহ্য করাটা, অন্যায় করার সমান অপরাধ’। কিন্তু যেখানে নির্দয় হত্যা মামলা নীরবে অবহেলায় পাশ ফিরে থাকে, সেখানে ঘুষ দেয়ার মত অপরাধ কতটা উচ্চ মার্গের দোষ!), কিন্তু মার্কিন অথবা ব্রিটিশ মুলুকের এসব মুখোশধারী সৎ রাজাদের চাইতে তো আমার দেশের নিপীড়িত মানুষগুলো হাজার গুণে মহান! অনেকে হয়ত বলে বসতে পারেন ‘ও সব তো রাজনীতি লেভেলে! সাধারণ মার্কিনীরা তো আমাদের দেশের লোকদের মত লোক ঠকায় না, ইরাক থেকে সৈন্য সরানোর পক্ষে, ইত্যাদি, ইত্যাদি’। হ্যাঁ তারা সৎ বটে! তবে সে সততাটুকু আইনের জালে আবদ্ধ আর খোদা নির্দেশিত পরকালের পাপের ভাগ কমানোর অংশ। নয়ত ইরাকি এতো হত্যা মাতমের পর-ও বুশ প্রশাসন শতকরা ৪০ ভাগ জনসমর্থন পায় এখনো!


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

শেষপর্যন্ত সত্য এই,ইশ্বরপুত্র পবিত্র জর্জ ডাব্লিউ বুশ ইউনাইটেড স্টেট অব ভয়ংকর আমেরিকার মহান গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত নৃপতি ।
আসুন মহান ইশ্বর ও তার পবিত্র পুত্রের নামে আমরা ঢেঁকুর তুলি
-----------------------------------------
'প্রিয়তম পাতাগুলো ঝরে যাবে মনে ও রাখবেনা
আমি কে ছিলাম,কি ছিলাম--কেন আমি
সংসারী না হয়ে খুব রাগ করে হয়েছি সন্ন্যাসী
হয়েছি হিরন দাহ,হয়েছি বিজন ব্যথা,হয়েছি আগুন'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দিগন্ত এর ছবি

ইরাকে কি সত্যি কেউ বাইরে থেকে ডিভাইড এন্ড রুল চালাচ্ছে না ইরাকিরা আগে থেকেই ডিভাইডেড? আমারতো মনে হয় দ্বিতীয়টাই ঠিক। আমরা যেমন ইংরেজদের নামে দোষ দিই আর বলি আমাদের এই ডিভিশন ওদেরই তৈরী, আমার মনে হয় ইরাকের ব্যাপারটাও সেরকমই।
আর লেখার শেষে উনি বলেছেন দেশ ভাগ করে দিলে যে শেষরক্ষা হবেনা সেটা তো ব্রিটিশদের কাছ থেকেই জানা যাবে। কিন্তু ব্রিটিশেরা কি সত্যি শেষরক্ষা করতে পারেনি? তাহলে আজ ষাট-বছর পরে আমাদের দেশের লোকে ব্রিটেনমুখী কেন?
পশ্চিমের দেশগুলোর সব ব্যাপারে চক্রান্তের অভিসন্ধি বের করা আমাদের একটা বদ-অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে - এই প্রবন্ধ সেই একই অভ্যাসের আরো একটা নিদর্শন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নব্য এর ছবি

হ্যাঁ, ইরাকিরা আগে থেকে বিভক্ত সেটা মানছি। কিন্তু সে ফাটলকে টুকরো করে দিতে বাইরে থেকে যে শক্তিশালী বল কাজ করছে সেটা আজকে তারা নিজেরাই স্বীকার করে। নয়তো যে দেশের গোয়েন্দা চক্রে এতো তুখোড় মাথাওয়ালারা বসে আছে তারা আজ ৭, ৮ বছরে-ও লাদেন এর জোট খুঁজে পান না, সেটা কতটা বিশ্বাস্য?

ইংরেজদের আমরা দোষ দেই না, কিন্তু ক্ষমতার দাপটে অন্যায়ভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারার যুক্তি কোনোভাবেই সমর্থিত নয়। আর ইংরেজদের দোষ আমাদের দেশের ডাল ভাত খাওয়া প্রাণের মায়া করা কেউ জোর দিয়ে ততদিন বলতে পারেননি যতদিন না ঐ ইংরেজদেরই কোনো এক সাহসী, নির্ভীক সাংবাদিক হাটে হাঁড়ি ভেংগে না বসেন। ইঁনারা ততদিনই আমাদের সহ্য করেন যতদিন হয় আমরা তাদের নীচে আছি অথবা তাদের গোলামি করে যাচ্ছি।

ব্রিটিশদের দাপট তো অনেক আগেই শেষ! এজন্যই মার্কিনিদের সাথে সাথে 'জ্বি হুজুর, জ্বি হুজুর' করা লাগে। ব্রিটেনে বাংগালীদের পদচারণার শব্দ শোনার আগে, মার্কিন মুলুকে ব্রিটেনবাসীর স্বতস্ফূ্র্ত আগমন আর স্থায়ী বসবাসের দিকে কি একটু লক্ষ করা যায় না?

দিগন্ত এর ছবি

ব্রিটিশদের দাপট তো অনেক আগেই শেষ!

- দাপট কোথায় শেষ? হয়ত তাদের থেকে আরো বড় শক্তিধর কেউ এসে হাজির হয়েছে কিন্তু ব্রিটিশরা কি আমাদের চেয়ে কম দাপটে আছে? আর আমেরিকা বলেন যে দেশটাকে, তাদের লোকজনও তো মূলত ব্রিটিশই। কয়েক কোটির একটা দেশ কএকশ বছর ধরে সারা পৃথিবীকে শাসন করে গেল আর আজো তাদের বংশধরেররাই তা করে চলেছে ...
কিন্তু সে ফাটলকে টুকরো করে দিতে বাইরে থেকে যে শক্তিশালী বল কাজ করছে
- একমাত্র মিলিটারি শাসনে থাকলে তবেই এই ফাটল জোড়া লেগে থাকতে পারে। সেটাই ছিল, আর শাসন দুর্বল হতেই তা ভেঙ্গে পড়েছে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নব্য এর ছবি

ধন্যবাদ দিগন্ত আপনার মন্তব্যের জন্য। তবে আমার দৃষ্টিকোণটা হয়ত ভিন্ন।
দাপট শব্দটা হল ক্ষমতার লড়াই। সেই ক্ষমতার উৎস অর্থনীতি। বর্তমান আর্থিক বিচারে ইংরেজের সেই বাজার কোথায় যেটা হঠাৎ করে ‘boom’ করেছিল আঠারশ শতকের শেষে। কিভাবে ‘boom’ করেছিল? অন্যদের রক্ত শুষে যেটা এখন শোভা পাচ্ছে মার্কিনীদের মুকুটে। ব্রিটিশরা মার্কিন মুলুকে ছড়িয়ে পড়েছে ঠিকই, কিন্তু নিজেদের ‘ব্রিটিশ’ বলে পরিচয় দেন না। তাতে কি? রক্ত তো কথা বলে! তাই বলা যায় ব্রিটিশ-মার্কিনীদের সেই রক্তই আবারো একশ বছর পর মাথাচাড়া দিয়ে উঠল।

দিগন্ত এর ছবি

তাই বলা যায় ব্রিটিশ-মার্কিনীদের সেই রক্তই আবারো একশ বছর পর মাথাচাড়া দিয়ে উঠল।
- প্রথম কথা হল, এটা একটা নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া, ওরা নিয়মিতরূপে পৃথিবী শাসন করে চলেছে। তবে অন্যদের রক্ত শোষার ব্যপারটা পৃথিবীর সব মানুষের মধ্যেই আছে। ভেবে দেখুন না, আমাদের ভারত বা বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা কি আমাদের সাধারণ মানুষকে শোষে না? ঘটনা হল, এই শোষণের হায়ারার্কি তে ব্রিটিশেরা সবার ওপরে জায়গা করে রেখেছে। কারণ কি? সহজ ভাবে বললে ওরা বুদ্ধিমান ... এছাড়া আমি আর কোনো কারণ দেখি না। পৃথিবী বুদ্ধির দাস।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নব্য এর ছবি

সাধারণ মানুষদের উপর নির্বিচারে হত্যা আর অস্ত্রের ভয় দেখানো নিউরনের কোন বুদ্ধিমত্তার অংশ তা আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক ঠিক ধরতে পারছে না। ভারত, বাংলাদেশের লুটপাটের কথা বলছেন? আমি এর চেয়ে-ও ভয়াংকর লুটপাট দেখেছি আমার দেশে-এই ইংরেজদের দ্বারাই করা। প্রয়োজনের খাতিরে উল্লেখ না করে থাকতে পারছি না।
এক, আমাদের দেশে আর্সেনিক সমস্যার কথা তো জানেন। জানেন এর জন্য দায়ী কে? UNICEF. হ্যাঁ তারা বাংলাদেশের গরীব মানুষদের নলকূপ বসিয়ে দিয়েছে। এ দেশের প্রথা অনুযায়ী তারা সেই নলকূপের পানি পরীক্ষা করেন, অথচ কোনো এক অদৃশ্য কারণে সে টেস্টের রেজাল্ট বেমালুম গায়েব হয়ে যায়। হ্যাঁ বুদ্ধিমান-ই বটে! এটার খেসারত দিচ্ছে আমাদের গরীব কৃষক। আপনি –ও না আমি-ও না। আমরা কাগজে লিখে পাতা ভরিয়ে ফেলতে পারবো কিন্তু ঐ বিষ থেকে উদ্ধার করার পথ দেশের মানুষদের বাতলে দিতে পারবো না। UNICEF সেটা ধামাচাপা দিলো কিভাবে জানেন? বাংলাদেশে ‘শিশু আর নারী শিক্ষা কার্যক্রম’ চালু করে।
দুই, নাইকো সাংগু গ্যাসফিল্ডে যেখানে সেখানে ড্রিল করে যে পয়সা খরচ করলো, ছাতকের গ্যাসফিল্ডে যে গ্যাস পোড়ালো তার ক্ষতি কি কখনো পুষিয়ে দিতে পারবে? এর জন্য তাদের জবাবদিহিতার-ও দরকার পড়ে না, কারণ তারা বুদ্ধিমান জাতি!

দিগন্ত এর ছবি

আপনি নিজেই দেখুন, আর্সেনিক বা গ্যাসফিল্ডের সমস্যার জন্য ওদের দায়ী করছেন বেশ কথা, কিন্তু ভেবে দেখুন ওরা কাজগুলো না করলে করতোটা কে? আর কিভাবে বুঝছেন যে আপনাদের দেশের লোকে এই গভীর নলকূপ বসানোর বা ড্রিল করার কাজগুলো করলে সেটা ভাল কাজ হত? অন্যের নামে দোষ দেওয়া ভাল তবে নিজেদের সীমাবদ্ধতাও মাথায় রাখতে হবে।
একটা উদাহরণ দিই - আমাদের বম্বে হাই-তে যখন খনিজ তেল পাওয়া গেল তখন আমাদের হাতে ২টো পথ খোলা ছিল - প্রথমত বিদেশী কোম্পানী ডেকে তাদের ২০% মালিকানা দিয়ে বাকি তেল সুনিশ্চিত করা আর দ্বিতীয় হল নিজেরা তেল তোলা। ইন্দিরা গান্ধী পাশ্চাত্যবিরোধী ছিলেন - তেল তোলা হল নিজেদের প্রযুক্তিতে। আজকে ৩০ বছর পরে হিসাব করে দেখা যাচ্ছে আমরা মাত্র সঞ্চয়ের ৪০% তেল তুলতে পেরেছি, বাকি তেল তোলা যাবে না - যেখানে শেল বা শেভরণের মত কোম্পানী তাদের প্রযুক্তি দিয়ে অনায়াসে ৯০% তেল তুলে ফেলত। তাহলে সেই সময়ে তাদের ২০% তেল দিয়ে দিলেই ভাল হত, কি বলেন?
যে পেছিয়ে আছে, শোষণের অভিযোগ সেই আনে, এগিয়ে যাবার চেয়ে অভিযোগ করে বেঁচে থাকাটা অনেক শান্তিদায়ক বলে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নব্য এর ছবি

অভিযোগটা তখনি আসে যখন আমার বাড়া ভাতে অন্য কেউ ছাই ঢেলে যায়। আমি বলি নি যে নাইকো গ্যাস তুলতে পারবে না। তবে তোলার আগে পাইলট প্লান্টের ছক লাগে। সেটা বাদ দিয়ে যখন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন গ্যাস পুড়েছিল, তখন তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। এই ড্রিলিং এর আগে আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞ দল বলেছিল এই ড্রিলিং অফশোরে করতে; তারা সে কথায় কর্ণপাত না করে কাজ শুরু করেছিল। এখন কেউ যদি প্রশ্ন করেন এত সাহস তারা পায় কোত্থেকে? তাহলে লোকচক্ষুর অন্তরালে তাদের টাকা পয়সার লেনদেনটা বুঝতে ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে’ যাওয়ার পর্যায়ে পড়ে। পাইলট প্লান্ট বাদে আমাদের দেশের সীমিত গ্যাসটাকে গিনিপিগ বানানোর ধৃষ্টতা তারাই দেখাতে পারে।

আর আরসেনিকের কথা কি বলব! দেশের লোকগুলো তো পুকুরের পানি দিব্যি পান করছিল। আমরা কি বলেছিলাম যে আমাদের নলকূপ না হলে পেটের পীড়ায় মরে যাব? তাদের এই আগ বাড়িয়ে মাতব্বরির শিকার আমরা সবাই এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে সেটা রক্তে থেকে যা্চছে। মানুষের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। গরীব মেয়েগুলির বিয়ের পর সংসার ভেংগে যাচ্ছে। গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এ সবই সত্যি অভিযোগ? ভাবতে অবাক লাগে!

আমার লেখাটায় আমি আমার দেশের সাধারণ মানুষদের কথা বলেছি যারা প্রতিনিয়ত আমাদের সভ্য সমাজের ধিক্কারের অংশীদার। এখানে-ও অনেক আলোকিত মানুষ আছেন যাদের কথা আমরা বলি না। অবশ্যি আমাদের নিজেদের দোষ খুঁজে পেতে হবে, তবে সেটা পাশ্চাত্যের ভ্রান্ত গুণগান গেয়ে নয়।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

চলুক ।
-----------------------------------------
'প্রিয়তম পাতাগুলো ঝরে যাবে মনে ও রাখবেনা
আমি কে ছিলাম,কি ছিলাম--কেন আমি
সংসারী না হয়ে খুব রাগ করে হয়েছি সন্ন্যাসী
হয়েছি হিরন দাহ,হয়েছি বিজন ব্যথা,হয়েছি আগুন'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

yadittya এর ছবি

দিগন্তের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত। আমআদের আসলেই নিজের দূর্বলতাটা, সীমাবদ্ধতা কম চোখে পড়ে, প্রায়শই রুল অফ নেচারটাকে মানতে চাইনা। বুদ্ধিমান বলবানরাই শাসন করবে দুনিয়া, এইটাকে কেউই ঠেকাতে পারবেনা।

ইয়াদিত্য

কালোবিড়াল এর ছবি

আমিও মনে করি যে 'বীরভোগ্যা বসুন্ধরা' (বানান ভুল করলে মাফ করে দিয়েন)। আমরা কথায় কথায় পাশ্চাত্যকে দোষ দেই। আজকে আমেরিকার পরিবর্তে আমাদের প্রাচ্যের কোনো দেশ যদি একক সুপার পাওয়ার হ'ত, দুনিয়াটার অবস্থা কি রকম হত কল্পনা করতে পারেন? মনে করুন জাপান, চায়না, ইরান, অথবা রাশিয়া-এই দেশগুলোর কোন একটি দেশ একক সুপার পাওয়ার। পশ্চিম আমাদেরকে (বাংলা / ভারত) শাসন করেছে বিগত ২/৩ শতাব্দি, তার আগেও কি আমরা শাসিত/শোষিত হইনি মুঘল/পাঠান এদের দারা? নিজে দুর্বল থাকলে অন্যেরা সুযোগতো নেবেই। মাগুরছড়া অগ্নিকান্ড বা আর্সেনিক প্রব্লেম-যেটাই বলেন-সুযোগটা কিন্তু করে দিয়েছিল আমাদের করাপ্ট রাজনিতিবিদ আর ব্যাবসায়ীরা। আমরা যতদিন নিজের মোরাল ঠিক করতে না পারব, সুবিধাভোগীরা ততদিন আমাদেরকে ব্যাবহার করবে। আমরা ইংরেজদেরকে দোষ দেই হিন্দু-মুসলিম এর উপর বেসিস করে ভারত ভাগ করার জন্য। ১৯৪৭ এর রায়টে যে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের ভিতর কাটাকাটি করে মরল, সেটাই কি প্রমান করে না আমরা নিজেরাই বিভক্ত ছিলাম? নিজেদেরকে 'শিশুতোষ নির্দোষ' মনে করে অন্যদের উপর সব দোষ চাপানোর বদ্‌অভ্যাস আমাদের ছাড়া উচিত।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।