অন্ধকারাচ্ছন্ন পাকিস্থানের খন্ডচিত্র -২

এস্কিমো এর ছবি
লিখেছেন এস্কিমো (তারিখ: শনি, ১৪/০৭/২০০৭ - ৮:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাকিস্থানে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী সহ সকল নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ দিন যাব ক্ষমতায় থেকে সামরিক বাহিনী প্রকৃতপক্ষে নিজেদেরকে সামন্তপ্রভুর পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। তাদের অত্যাচারের কথা প্রবাসী পাকিস্থানীরাও উচ্চারন করতে ভয় পায় - পাছে কোন ভাবে বিষয়টা দেশে চলে যায়। তাহলে তাদের মোটাদাগে খেশারত দিতে হবে।

সাজিয়ার ঘটনা প্রবাহ যখন পশ্চিমা মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার পায় - তখন মোশাররফ বিষয়টাকে ব্যক্তিগত ভাবে গ্রহন করেন। এই বছরের শুরুতে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী আফগানিস্থানে সফরে গেলে হামিদ কারজাই পাকিস্থানের সীমান্তে যথাযথ এন্টিটেররিজম এক্টিভিটি না নেওয়ায় পাকিস্থানী সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করলে জেনারেল মোশাররফ দ্রুত বেলুলিস্থানের উজিরিস্থানে সেনাবাহিনী কার্য্যক্রমকে বেগবান করার নির্দেশ দেন। সাথে সাথে আমেরিকান হেলিকাপ্টার গানশীপ এবং মিশাইলগুলো ট্রাইবাল বাহিনীর উপর পড়তে থাকে। উপায়ন্তর না দেখে নবাব বুকতি পাহাড়ে আশ্রয় নেন। এদিকে পাকিস্থান ট্রাইবাল মিলিটেন্টদের মেরে ছবি উঠিয়ে পশ্চিমা মিডিয়াতে প্রচার করতে থাকে যে, একটুর জন্য আল-কায়দার ২ নং বা ৩নং নেতাকে মারা গেল না। অবশেষে নবাব বুকতিকে একদিন মিশাইলের আঘাতে মরতে হলো। সপ্তাহ খানেক পর সকল পশ্চিমা সাংবাদিকদের হতবাক করে পাকিস্থান উজিরিস্থানের ট্রাইবাল যোদ্ধাদের সাথে একটা শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে - যাতে পাকিস্থানী সামরিক বাহিনী উজিরিস্থানসহ সকল সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে দ্রুত সরে যাবে। এতে সবচেয়ে হতবাক হয়েছেন - ক্যানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হারপার। কারন মাত্র কয়েকমাস আগে উনি মোশাররফের হাতে হাত রেখে “ওয়ার অন টেররের” সাফল্য কামনা করেছিলেন।

একটা বিষয় আশা করি আমাদের কাছে পরিষ্কার, ওয়ার অন টেররের ছত্রছায়ায় মোশাররফ তার ব্যক্তিগত শত্রু এবং বেলুচিস্থানের অধিকার আদায়ের মুখপাত্রকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। একজন ন্যায়ের পক্ষাবলম্বনকারী - যিনি একজন অসহায় নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছিলেন - সে “টেররিষ্ট” তকমা নিয়ে মাটির নীচে আর অন্যায় পক্ষাবলস্বনকারী একজন মিথ্যাবাদী এবং বিশ্বের স্বৈরশাসকদের অন্যতম জেনারেল যথারীতি বেঁচে আছেন এবং নিশ্চিত ভাবে আরো অনেক অন্যায় করবেন। আর যারা “ওয়ার অন টেররের” নামে একজন কুলাঙ্গার সামরিক শাসককে বন্ধুতের ছায়ায় বসিয়ে রেখেছেন - তাদের ভাবা উচিৎ, পাকিস্থানের প্রত্যেকটা মানুষ জানে বুকতি কে আর জেনারেল মোশাররফ কে।

যখনই এই কথাগুলো শুনছিলাম - ভাবছিলাম আমরা কত ভাগ্যবান। একটা আলাদা দেশের মালিক আমরা - যা মোশাররফের নাগালের লক্ষ কোটি মাইল দূরে।

আর ভাবি কখনও কি বেলুচিস্থানের মানুষ আমাদের মতো পাকি শাসন থেকে মুক্তি পাবে?

(একজন পাকিস্থানী ক্যানাডিয়ানের ভাষ্যের অনুলিখন - একজন পাকিস্থানী ক্যানাডিয়ানের ভাষ্যের অনুলিখন - মূল লেখাটি সদালাপ ডট কম এ সেপ্টেম্বর ১৭, ২০০৬ প্রকাশিত))


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

টুকিটাকি > প্রায়শ জিজ্ঞাস্যতে ছবি দেয়ার পদ্ধতি বলে দেয়া আছে। দেখে নিতে পারেন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এস্কিমো এর ছবি

ধন্যবাদ - মাহবুব মোর্শেদ

লেখতে চাই ..কিন্তু কি লিখবো?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

অনেকগুলো রাজনৈতিক সম্ভাবনা আছে ।
ষাট ও সত্তুরের দশকে আফ্রো-এশীয়ার অনেকগুলো দেশ স্বাধীন হয়েছে, যাদের স্বাধীনতা আন্দোলন কিংবা মুক্তির যুদ্ধে সোশালিষ্ট ব্লকের পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষ অবদান ছিলো ।
এখনকার একরৈখিক বিশ্বে আমেরিকা কিংবা তার রাজনৈতিক মিত্রদের বিরোধীতা করে স্বাধীন হওয়ার সম্ভাবনা কি আসলেই আছে কারো?
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।