মেলায় মেলারন্য শহর টরন্টো

এস্কিমো এর ছবি
লিখেছেন এস্কিমো (তারিখ: মঙ্গল, ০৩/০৭/২০০৭ - ৮:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গতকাল ছিল পহেলা জুলাই। ক্যানাডার জন্মদিন। হ্যাপী ক্যানাডা ডে। এদিকে টরন্টোর বাঙ্গালী কমিউনিটি মেতেছিলো আনন্দ উৎসবে। মেলায় মেলাময় হয়ে উঠলো শহর। ডাউন টাউনের রিজেন্ট পার্কে হলো “বাংলা মেলা” আর বাংলা টাউন নামে পরিচিত ভিক্টোরিয়া পার্ক এবং ডেনফোর্ত এলাকার ডেন্টনিয়অ পার্কে হয়ে গেল “সময় মেলা”। বাংলা মেলার আয়োজক মূলত “বাংলা কাগজ” নামের একটা সাপ্তাহিক আর সময় মেলা হলো “সময়” নামের আরেকটা সাপ্তাহিকের আয়োজন। এখানে একটা বিরাট বিবাদ আছ এই দুই মেলায়। বাংলা মেলার উপস্থিত লিবারেল পার্টির প্রাদেশিক মূখ্যমন্ত্রী আর তার পারিষদের উপস্থিতি এবং বাংলাদেশী স্টাইলে বক্তব্য প্রদানের ফলে সাধারনের মনে হল সেটা “লিবারেল পার্টি”র একটা প্রচারনা সভা। অন্যদিকে সময় মেলার মূল উদ্যোক্তা সময় পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর হোসেইন (যিনি এক সময় ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসভাপতি ছিলেন) এনডিপি (বামপন্থী) মনোনীত এমপিপি প্রার্থী হিসাবে এনডিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়ে কোন রাখঠাক না করেই রাজনৈতিক বক্তব্য দেবার সুযোগ দিয়ে তাদেরকে বিমোহিত করেছেন। ক্যানাডার কোন রাজনৈতিক নেতা এতোবড় জনসমাবেশে বক্তব্য দেবার সুযোগ হয়নি বলেই আমাদের বিশ্বাস।

এই বিষয়ের একটা ইতিবাচক দিক হলো - ক্যানাডা ডে -তে বাঙ্গালীরা যেভাবে মেলার মধ্য দিয়ে পালনের মধ্য দিয়ে মূল ধারার জনজীবনে একটা প্রভাব ফেলছে। আর মনে হচ্ছে - বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নীতিমালায় যে অংশ বলা হয়েছে - রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড় নিষিদ্ধ - তার বিষয়ে যথেষ্ঠ সজাগ হয়ে ৩ টা বিএনপি আর চারটা আওয়ামীলীগের শাখা নিয়ে কোন্দল বাদ দিয়ে ক্যানাডীয় রাজনৈতিক দলে ভিড়ছেন। তবে জামাত কিন্তু ধীরে ধীরে আরো সংঘঠিত হচ্ছে। বাংলা টাউনের প্রান কেন্দ্রে একটা মসজিদ থাকা অবস্থায়ও সেখানে সুবিধা করতে না পেরে নতুন একটা মসজিদ খোলা হয়েছে - যাতে জামাত সমর্থকদের লক্ষ্যনীয় কর্মকান্ড লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ধান ভানতে গিয়ে মনে হচ্ছে শিবের গীত হয়ে গেল। যা হোক এবার আসি মেলার বিষয়ে। সকাল থেকে শুরু হওয়া দুইটি মেলাতেই ধীরে ধীরে দর্শক সমাবেশ হতে থাকে। বিভিন্ন পন্য নিয়ে বসা স্টলগুলোতে ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আর খাবার ষ্টল যথারীতি ঢাকার মেলাগুলোর কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে।

হৈমন্তী শুক্লা আর মমতাজের উপন্থিতি মেলার জনগনের জন্যে একটা বিরাট আকর্ষন ছিল...সকল গায়ক গায়িকা এবং বক্তাদের সব রকমের অত্যাচার সহ্য করেও রাত ৮ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন তারা আর গান শুনেছেন রাত দশটা পর্যন্ত। ( উল্লেখ্য যে, এখানে এখন সূর্যাস্থ হয় রাত ৯:১০ মিনিটে)

দুইটি মেলায় উল্লেখযোগ্য জনসমাগম দেখে কিছুটা আবেগাল্পুত হতে হয়েছে। বিশেষ করে এক যুগ আগে যখন এখানে বসত গড়ি - তখন কোন অনুষ্ঠান করতে হলে মাসখানেক আগে ফোনবুক খুলে বসতে হতো - কার কখন অফ ডে আছে সেদিক লক্ষ্য রেখে দিনক্ষন নির্ধারন করে - অনুষ্ঠানের আগে তোষামোদি ফোন দেওয়ার পরও অর্ধ শত জনসমাগম হলে সেটাকে সাফল্য জনক অনুষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত হতো। এখন দুই দুইটা মেলায় দর্শক উপস্থিতি আর স্বতস্ফূর্ততা দেখে মনে হলো - আমরা কি বিদেশটাকে দেশ বানিয়ে ফেললাম!

(একই সাথে সামহোয়ার আর সচলায়তনে পোষ্টায়িত)


মন্তব্য

আরশাদ রহমান এর ছবি

এস্কিমোকে কি দেখা যাচ্ছে ছবিতে? হাসি

এস্কিমো এর ছবি

নারে ভাই..ক্যামেরার পিছনে...

লেখতে চাই ..কিন্তু কি লিখবো?

অমিত আহমেদ এর ছবি

হুম! টরান্টোতে থেকেও ড্যানফোর্থের দিকে যে কত দিন যাই না। আপনি কি যান নাকি নিয়মিত?

কানাডাতে আর কে কে আছেন জানেন? কেমিকেল আলী থাকেন গুয়েল্ফে সেটা জানি।
আচ্ছা সচলায়তন টরান্টো ও আশপাশ এলাকাবাসীদের গেট টুগেদার করলে কেমন হয়?


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

এস্কিমো এর ছবি

অমিত,

কাল জানলাম আপনি ইয়র্কে।
আমি ভাই ডেনফোর্তের আদিবাসী।
আরেকজন আছে - ডেনফোর্তের কাছাকাছি।

চেষ্টা করছি একটা খিচুরী টুগেদার করতে...

ডেনফোর্তে আসলে জানান দিয়েন ..

যোগাযোগ হবে।

লেখতে চাই ..কিন্তু কি লিখবো?

অমিত আহমেদ এর ছবি

অবশ্যই।
খিচুড়ি টুগেদারের প্রস্তাবে সহমত জ্ঞাপন হাসি


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

আড্ডাবাজ এর ছবি

ভাল খবর। গেট টুগেদার ঠিক করে দেশী ব্লগারদের খবর পাঠান। ধন্যবাদ।

এস্কিমো এর ছবি

আরশাদের সাথে আজ কথা হলো।
ভ্রমনসূচী জানান...

লেখতে চাই ..কিন্তু কি লিখবো?

কারুবাসনা এর ছবি

দেরীতে পড়লাম।

আজকে আমারা কলকাতায় পালন করব।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।