বৈশ্বিক খাদ্যসংকট: ভুখা বাঙালির ভাতের কষ্ট মিটলো বলে অথবা শতাব্দীর বৃহত্তম জোচ্চুরির ইতিহাস

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: রবি, ০৮/০৬/২০০৮ - ১:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto
আজকের পৃথিবীর প্রধানতম স্বপ্নটি কী? অনেকেই অনেক কথা বলব। বলব দারিদ্র্যমুক্তি, ধ্বংসের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানো, যুদ্ধের অবসান প্রভৃতি। এগুলো মানবজাতির বিরাট স্বপ্ন। কিন্তু দুনিয়ার বেশির ভাগ মানুষ ব্যক্তিগতভাবে, দারা-পুত্র-পরিবার এবং স্ত্রী-কন্যাদি নিয়ে জানাচ্ছে সেই আদিম প্রয়োজনের কথা, যার নাম 'খাদ্য'। হ্যাঁ, অফুরান খাবারই আজকের পৃথিবীর প্রধান স্বপ্ন; এবং আমাদের বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষও এই বাসনাই দিনরাত জপ করে। আজকের পৃথিবীর প্রধানতম সাফল্যও এই যে সেই স্বপ্নপূরণের সামর্থ্য মানবজাতি অর্জন করেছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ফাও) এলান করেছে: ২০০৭ সালে বিশ্বে রেকর্ড পরিমাণ শস্য ফলেছে, বর্তমান চাহিদার দেড় গুণ বেশি। বাস্তবে ২০ বছর ধরে খাদ্য উৎপাদন টানা দুই শতাংশ হারে বাড়ছে। বাংলাদেশও এ সাফল্য থেকে পিছিয়ে নেই। ড. সাদত হুসাইন লিখেছেন, স্বাধীনতার সময় যেখানে সাড়ে সাত কোটি মানুষের দেশে খাদ্য উৎপাদিত হতো এক কোটি টন, সেখানে এখন ১৪ কোটি মানুষের দেশে খাদ্য উৎপাদিত হয়েছে তিন কোটি টন (খোলা কলম, প্রথম আলো, ৬ জুন)। অর্থাত জনসংখ্যা দ্বিগুণ বাড়লেও খাদ্য উতপাদন বেড়েছে তিন গুণ। তার মানে, চাহিদার চেয়ে খাদ্যের জোগান বেশিই তো হওয়ার কথা। এর চেয়ে বড় সুসংবাদ ‘ভুখা বাঙালি’র জন্য আর কী হতে পারে!
এতে ম্যালথাসের তত্ত্ব আবারও ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বৈশ্বিক খাদ্য উতপাদন একটানা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার পেরিয়ে যাচ্ছে। এই ২০০৭ সালেই বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল খাদ্যের দুই শতাংশ ফলনবৃদ্ধির তুলনায় কিঞ্চিত কম: ১ দশমিক ১৪ শতাংশ।
এখান থেকেই জন্মায় দ্বিতীয় প্রশ্নটি: তাহলে জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ফাওই কেন বলছে, বিশ্বের ৮৫ কোটি মানুষ অপুষ্টির শিকার? কেন খাদ্যের অভাব, এমনকি বাজারের তাপে মায়ের পেটের মধ্যে শিশুও জন্মাতে ভয় পাচ্ছে? এর একটা উত্তর হলো, ক্ষুধার্তকেই গালি দেওয়া যে তুমি ক্ষুধার্ত কেন, চারদিকে এত খাবার! কিংবা উত্তরটি এই যে খাদ্য আছে দোকানে, গুদামে, খাদ্যবেচা কোম্পানির কবজায়; কিন্তু মানুষের তা কেনার সামর্থ্য নেই। অর্থাত কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। আকাশে রোজ চাঁদ দেখি বলেই কি আর চাঁদ সহজলভ্য নাকি!
সাধারণ মানুষ দরকারমতো খাদ্য কেনার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। শুক্রবারের প্রথম আলোর শিরোনাম হয়েছে গবেষণা সংস্থা সিপিডির একটি জরিপ। তা বলছে, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত ১৫ মাসে গরিব মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে প্রায় ৩৭ শতাংশ। ওদিকে একজন পোশাকশ্রমিকের ন্যূনতম আয় সাব্যস্ত হয়েছে কমপে এক হাজার ৬৬২ টাকা পাঁচ পয়সা। আয় কমার ফলে, ওই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, সেটা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫২ টাকা। এই টাকায় তাকে পরিবার নিয়ে বাঁচতে হয়! ভাগ্যিস, তারা জাদু জানে! তা না হলে কীভাবে তা সম্ভব!
এবং এ অবস্থায়ও খাদ্যপণ্যের, বিশেষত চালের দাম কমেনি। এত দিন বলা হচ্ছিল, উতপাদন কম হওয়া এবং জৈব জ্বালানি তৈরিতে শস্য চলে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। এটা বাজারের যুক্তি। এ যুক্তির সারমর্ম হচ্ছে, জোগানের চেয়ে চাহিদা বাড়লে দাম বাড়বে এবং চাহিদার চেয়ে জোগান বাড়লে দাম কমবে। কিন্তু যখন জোগানও বেশি, দামও বেশি, তার ব্যাখ্যা কী? এও বলা দরকার যে আন্তর্জাতিক চালের বাজারে বিকিকিনি হয় বিশ্বের মোট চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ। তাহলে এই ১০ শতাংশের সরবরাহে গড়বড় হলেই চালের আস্ত বাজারটিই বেসামাল হয়ে পড়বে কেন? মুক্তবাজারের নীতির মধ্যে এমনটা ঘটে কোন জাদুবলে? জিজ্ঞাসি জনে জনে; মেলে না উত্তর।
সুতরাং খাদ্যসংকট নিছক চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য টলে যাওয়ার জন্য হচ্ছে না; হচ্ছে গভীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে। বিশ্বের ৮৫ কোটি অপুষ্ট মানুষের আয়ু কমে যাওয়া এবং ুধায় দৈনিক ১৮ হাজার শিশুর মরে যাওয়া যদি রাজনৈতিক সমস্যা না হয়, তাহলে রাজনীতির কাজ কী, তা নিয়ে ভাবতে বসতে হবে। আর ভাবলে আন্তর্জাতিক মজুদদারি, ফটকাবাজি, অল্প কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির বিশ্বের খাদ্য ও কৃষিবাণিজ্যে একচেটিয়া প্রাধান্য কায়েম হওয়ার দিকে চোখ পড়বে। বহুজাতিক মার্কিন কোম্পানি কারগিল ও মাসেকাকে দায়ী করা হচ্ছে খাদ্যসংকটের জন্য। এমনকি এমন অভিযোগও জোরের সঙ্গে উঠছে যে তেলের দামের ৬০ শতাংশই বেড়েছে কয়েকটি অর্থকরী সংস্থার অসাধু কার্যকলাপের জন্য। তেলের চাহিদা বাড়ার যে গল্পটি শোনানো হয়, তা খারিজ করে দিয়ে জে পি মরগ্যান ফান্ডের ডেভিড কেলি ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক নিবন্ধে বলেছেন, ‘আমার কাছে একটা জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে যে বিশ্বে তেলের ব্যবহার ও চাহিদা তত জোরালোভাবে বাড়েনি।’ অতএব খাদ্য দেখলাম, তেল চাখলাম। কাজেই, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। বাজারে ঢুকে পড়েছে কিছু অদৃশ্য হাত। আর তাদের হাতে বন্দী আমাদের খাওয়া (খাদ্য) ও চলার (তেল) রসদ।
তৃতীয় প্রশ্নটি তখনই সামনে চলে আসে: বৈশ্বিক কৃষিবাণিজ্যের নিয়ন্তা কোম্পানিগুলো কেন বৈশ্বিক ক্ষুধা মেটাতে ব্যর্থ? উত্তরটি সরল: ওটা তাদের উদ্দেশ্য নয়। তারা গড়ে উঠেছে মুনাফার উদ্দেশ্যে। কিন্তু আমাদের মতো দেশে, একদা যেখানে কম হলেও দেশের সব রকম খাদ্যের চাহিদা তথা চাল থেকে আনাজ, তেল থেকে লবণ পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হতো এবং এখনো প্রধান খাদ্য চালের ৯০-৯৫ শতাংশ স্থানীয় কৃষকেরাই উতপাদন করে থাকে, তাদের এত ভয়ের কী আছে? তবু ভয়ের আলামত মিলছে। দুই দশক ধরে কাঠামোগত সংস্কার, দেশের বাজারকে বিদেশি পণ্যের জন্য অবাধ করে দেওয়া এবং কৃষিতে রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ ক্রমশ তুলে নেওয়ার মাধ্যমে খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশও মেক্সিকো, আফ্রিকার দেশ মালাবি কিংবা ফিলিপাইনের মতো খাদ্য-আমদানির দেশে পরিণত হওয়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ তিনটি দেশই দুই দশক আগে খাদ্যে সচ্ছল ছিল। স্বৈরশাসক মার্কোসের অপশাসনের ভেতরও ফিলিপাইন তো বিরাট খাদ্যমজুদও গড়ে তুলেছিল। এখন মেক্সিকোর খাদ্যচাহিদা ও খাদ্যের দামের ওঠানামা পরিপূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরশীল। ফিলিপাইন ও মালাবিকেও বিদেশ থেকে চড়া দামে খাদ্য কিনে খেতে হয়।
এসবই আশির দশক থেকে চালু হওয়া অর্থনৈতিক সংস্কারের ফল। উন্নয়নশীল দেশগুলোয় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সরাসরি হস্তেক্ষেপে কৃষিতে রাষ্ট্রের অনুদান ও সহায়তা তুলে নিতে বাধ্য করা হয়। স্থানীয় প্রয়োজন মেটানোর বদলে কৃষিকে করা হয় রপ্তানিমুখী। কৃষি থেকে তহবিল সরিয়ে সেই টাকা ঢালা হয় বিদেশি ঋণের সুদ মেটাতে। (উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিকে প্রধানত রপ্তানীমুখী করা হয় মূলত এ কারণেই, আমাদের দেশে যেমন ধানী জমিগুলোতে জোর করে নোনা পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ কিংবা পাহাড়ের জমিতে রাবার বাগান করা ইত্যাদি এরই ধারাবাহিকতা) বিলোপ করা হয় বাজার নিয়ন্ত্রণকারী আইন ও প্রতিষ্ঠানগুলো। এই ধারা বাংলাদেশেও চলেছে। এসবের পর খোলাবাজার দিয়ে বাইরে থেকে ঢুকে পড়ে বিপুল ভর্তুকিপ্রাপ্ত বাণিজ্যিক কৃষিপণ্য। স্থানীয় কৃষকেরা প্রতিযোগিতায় মার খেয়ে আবাদ থেকে উচ্ছেদ হয়। মার্কিন গবেষণা সংস্থা কার্নেগি এনডৌমেন্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, কেবল নাফটা চুক্তির ফলেই মেক্সিকোর ১৩ লাখ কৃষক কর্মচ্যুত হয়। এরা ভিড় জমায় শহুরে বস্তির অমানবিক পরিবেশে। ভারতেও একই ঘটনা। সেখানে সরকারি অবহেলার শিকার হয়ে গত এক দশকে দেড় লাখ কৃষক আÍহত্যা করেছে। অথচ খাদ্যসংকটের মুখে গত বছরও ভারত খাদ্য রপ্তানি করেছে। বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য যে ডলার প্রয়োজন, তার জন্য এটা পয়লা তরিকা। দ্বিতীয় পন্থা হলো, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের বিনিয়োগ কমিয়ে আনা। প্রভাবশালী দি ইকোনমিস্ট পত্রিকার একটি প্রতিবেদন জানিয়েছে, ১৯৮০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কৃষি খাতে সরকারি ব্যয় আগের অর্ধেকে এসে ঠেকেছে। পরিণামে একসময়কার খাদ্য-উদ্বৃত্ত দেশগুলো পরিণত হলো খাদ্যঘাটতির দেশে। ফিলিপাইন সরকারের এক কর্মকর্তার ভাষ্যে, বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কায়দাকানুনের মধ্যে পড়ে আমাদের ছোট উৎপাদকেরা একেবারে কোরবানি হয়ে গেছে। এর অন্য অর্থ, দেশটি তার খাদ্য-সার্বভৌমত্ব হারিয়ে ফেলল। খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের প্রয়োজন, কিন্তু খাদ্য-সার্বভৌমত্ব না এলে তা সম্ভব কি? কৃষক ও কষিকে শক্তিশালী না করে এটা অর্জনের আর আর কোনো উপায় নাই। http://www.commondreams.org/archive/2008/05/16/9004/
আমরা জানি, শক্তির ক্ষয় হয় না; তা এক রূপ থেকে আরেক রূপে যায়। অর্থাৎ এর হাত থেকে ওর হাতে যায়। অনেক দেশ যদি খাদ্য-সার্বভৌমত্ব হারিয়ে থাকে, তবে তা কার হাতে গিয়ে জমা হলো? জমা হলো ওই বিশ্বায়িত শিল্পায়িত কৃষিবাণিজ্য কোম্পানিগুলোর হাতে। সার্বভৌমত্বের প্রতিশব্দ হলো পরমুখিতা। এভাবে তারা পরমুখী হলো। অন্যদিকে প্রকৃত খামারিরা দিন দিন নাজুক হলো, খাদ্যের জন্য তাদেরও করজোড়ে দাঁড়াতে হলো বাজারঠাকুরের সমীপে। একসময় সেটাও তারা পেরে উঠল না। দেখা গেল যে একই দেশের বিশ্বায়িত এলাকায় খাদ্য-ঝলমল সমৃদ্ধি, অন্যদিকে গরিবি এলাকায় হানা দিল ‘নীরব দুর্ভিক্ষ’। এ রকম একটি সময়েই কিনা কৃষি খাতে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো অভূতপূর্ব মুনাফা অর্জন করে!http://www.globalresearch.ca/index.php?context=listByAuthor&authorFirst=Ian&authorName=Angus
শস্যবাণিজ্যে: আর্চার ড্যানেয়লস মিডল্যান্ড মুনাফা করে ১.১৫ বিলিয়ন ডলার, এ অংক আগের বছরের ৫৫ শতাংশ বেশি। কারগিল মুনাফা করে ১.০৩ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের ৮৬ শতাংশ বেশি। বাঞ্জ করে ৮৬৭ মিলিয়ন ডলার, আগের বছরের ১৮৯ শতাংশ বেশি। বীজ ও কীটনাশক কোম্পানিগুলোর মধ্যে: মনসান্টো মুনাফা করে ২.২৩ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের ৫৪ শতাংশ। ডুপোঁ অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশন লাভ করে আগের বছরের ২১ শতাংশ বেশি। এ রকম হারে সারের ব্যবসা করে মোজাইক নামের কোম্পানি আগের বছরের ১২০০ শতাংশ বেশি মুনাফা বাড়াতে সম হয়। এ রকম ঘটনা রূপকথায়ই সম্ভব। কিন্তু এখন রূপকথাই বাস্তব, বাস্তব হলো এক অদ্ভুত রূপকথা।
সুতরাং এককথায় আজকের খাদ্যসংকট বর্তমান বাজারব্যবস্থার গভীর ত্র“টি এবং কিছু কোম্পানির লাগামছাড়া মুনাফার ফল। আর ঠিক যখন সংকটটা এল, তখন আমাদের কৃষক ও দরিদ্র ক্রেতারা দেখল, তাদের পাশে কেউই তেমন নেই। তিন দশকের অর্থনৈতিক সংস্কারে তারা দুর্বল ও রুগ্ণ। রাষ্ট্র বাজারে হস্তপে করবে না, বরং বিডিআরের মাধ্যমে নতুন ‘ন্যায্যমূল্যের’ দোকান খুলবে। কৃষক দেখল, ভালো ফলন হলেও উপযুক্ত দাম পাওয়ার ভাগ্য তাদের হবে না। মিল মালিকেরা সেখানে ভাগ বসাবে। আগের মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানও আর তার পাশে নেই। আর ক্রেতা দেখল, বাজারঠাকুরই এ যুগের সর্বেসর্বা মহেশ্বর। আজকের বিশ্ব রাজনীতির আধিপত্যশীল নিওলিবারেল ধারার কাজ হলো এই মহেশ্বরেরই সেবাইতগিরি করা। রাষ্ট্র এখন বিশ্বায়িত পুঁজিবাদের অর্থনৈতিক ইউনিট, সরকার হলো কর্পোরেট স্বার্থের ম্যানেজার, তা বাংলাদেশই হোক আর ব্রিটেন-আমেরিকাই হোক।
তাই আজ যখন খাদ্যে প্রাচুর্য, তখনো কি তার ধারে-কাছে পৌঁছতে না পেরে কেবল তার দিকে চাহনি মেলে ক্ষুধায় ঢলে পড়ার ভয়ে সিটকে থাকতে হবে? ভবিষ্যতের ভয় এখনও দুঃসহ স্মৃতির মতো মনে জাগবে কেন?
পরিশিষ্ট: বিরাট এক খাদ্যাভাব তথা দুর্ভিরে পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন বিশ্বের অনেক ওয়াকিবহাল মানুষ। আর আমাদের স্মরণে আসছে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর বলে কুখ্যাত ১৭৬৯-৭০ সালের বাংলার দুর্ভিরে করাল ছায়া। সেই দুর্ভিক্ষে বাংলায় প্রতি তিনজনের একজন মারা গিয়েছিল, দুই হাজার বছর পুরনো সেকালে বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধিশালী শহর মুর্শিদাবাদ পরিণত হয়েছিল পোড়ো প্রেতপুরীতে। সেই আকালের বছরও সর্বোচ্চ পরিমাণ খাজনা আদায় করা হয়েছিল। এর সাক্ষি চিরস্থায়ী বন্দোবস্তবিরোধী ইংরেজ লাট জন শোরের বিবরণও মনে আসছে। দুর্ভিরে ৪০ বছর পরও তিনি ভুলতে পারেননি সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতা। এরই তাড়নায় লিখিত একটি কবিতায় তিনি বলছেন,
‘কেউ আর নেই,
মৃতের সঙ্গে মৃতপ্রায় মানুষও
আজ তাদের শিকার!’
জীবিত মানুষ তখন মৃত মানুষের মাংস ছিঁড়ে খাওয়া শুরু করেছিল। ওটা ভয়াবহতা কিন্তু কিছু স্বচ্ছল মানুষ যখন বাকি সবের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে শান-শওকত বাড়াতে থাকে, সেটা হয় উন্নয়ন। যাদের উন্নতি হচ্ছে উন্নয়নের স্লোগান তারাই বেশি দেয় আর মর্ত্যে বানায় শাদ্দাদের বেহেশত।
ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের চূড়ান্ত মুহূর্তের মাঠে মাঠে বিপুল ফসল ফলেছিল। লাখ লাখ ভুখা মানুষ ‘ফসল কাটার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে’। এই কাহিনীর বর্ণনাকারী উইলিয়াম হান্টার তাঁর বই পল্লী বাংলার ইতিহাসে লিখেছেন, ‘তাদের কাতর চোখের শেষ চাহনি সম্ভবত ঘন সন্নিবিষ্ট সবুজ ফসলে ঢাকা ক্ষেতর ওপরই নিবদ্ধ ছিল।’ আজ যখন খাদ্যে প্রাচুর্য, তখনো কি সেই প্রাচুর্যের দিকে চাহনি মেলেই ক্ষুধায় ঢলে পড়ার ভয়ে সিটকে থাকতে হবে? ভবিষ্যতের ভয় এখনই দুঃসহ স্মৃতির মতো মনে জাগছে কেন?


মন্তব্য

দিগন্ত এর ছবি

আপনি অনেকগুলো তথ্য দিয়েছেন, কিছু তথ্যসূত্র দিলে ভাল হয়। যেমন বহুজাতিক কোম্পানীদের লাভের হিসাবগুলো ... ওগুলো দিনে দিনে বেড়েই চলে ...

আপনার শেষ অংশ ছাড়া বাকি সবই ভাল লাগল। আমি ব্যক্তি হিসাবে আশাবাদী বলে আশা রাখি উন্নয়নশীল দেশগুলো এ থেকে শিক্ষা নেবে।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

এটি আজকের প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখাটির আদি সংষ্করণ। দৈনিকে সাধারণত তথ্যসূত্র আশা করা হয় না, পাঠক দূরে সরবে ভেবে। তবে তথ্যসূত্র দেয়া উচিত। কয়েকটা এখনই দিচ্ছি। অফিসে বসে এটা পাঠিয়েছি বলে সময় পাইনি। ধন্যবাদ।
এখানে আরো একটি লিংক থাকলো আফ্রিকার কৃষি সংকট নিয়ে http://www.countercurrents.org/bello070608.htm
এছাড়া সামির আমিনের দ্য লিবারেল ভাইরাস কিংবা বন্দনা শিবা'র কাজ দেখা যেতে পারে।
.................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

দিগন্ত এর ছবি

লিঙ্কগুলোর জন্য অশেষ ধন্যবাদ। প্রতিটা লিঙ্ক থেকেই আরো অনেক কিছু জানা গেল।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

দুর্দান্ত আর্থ রাজনৈতিক বিশ্লেষন -তথ্য-উপাত্তে ঠাসা । চিন্তা ভাবনা উসকে দেয়া।

চাকুরি জগতে আসার পর ভুলেই গেয়েছিলাম আমার এককালের প্রেমিকা অর্থশাস্ত্র কে (বিনীত ভাবে বলছি , কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অর্থনীতির ভাল ছাত্র হিসেবে আমার বদনাম ছিল ) । সচলায়তন এ সুবিনয়-ফারুক-স্নিগ্ধার কল্যানে মনে পড়ে যায় !

তাহলে জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ফাওই কেন বলছে, বিশ্বের ৮৫ কোটি মানুষ অপুষ্টির শিকার? কেন খাদ্যের অভাব, এমনকি বাজারের তাপে মায়ের পেটের মধ্যে শিশুও জন্মাতে ভয় পাচ্ছে? এর একটা উত্তর হলো, ক্ষুধার্তকেই গালি দেওয়া যে তুমি ধার্ত কেন, চারদিকে এত খাবার! কিংবা উত্তরটি এই যে খাদ্য আছে দোকানে, গুদামে, খাদ্যবেচা কোম্পানির কবজায়; কিন্তু মানুষের তা কেনার সামর্থ্য নেই। অর্থাৎ কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। আকাশে রোজ চাঁদ দেখি বলেই কি আর চাঁদ সহজলভ্য নাকি!

খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের প্রয়োজন, কিন্তু খাদ্য-সার্বভৌমত্ব না এলে তা সম্ভব কি? কৃষক ও কষিকে শক্তিশালী না করে এটা অর্জনের আর আর কোনো উপায় নাই।

জীবিত মানুষ তখন মৃত মানুষের মাংস ছিঁড়ে খাওয়া শুরু করেছিল। ওটা ভয়াবহতা কিন্তু কিছু স্বচ্ছল মানুষ যখন বাকি সবের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে শান-শওকত বাড়াতে থাকে, সেটা হয় উন্নয়ন। যাদের উন্নতি হচ্ছে উন্নয়নের স্লোগান তারাই বেশি দেয় আর মর্ত্যে বানায় শাদ্দাদের বেহেশত।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

আরণ্যক সৌরভ (অফলাইনেই স্বস্তিবোধ করি) এর ছবি

গতকাল রুটি কিনতে গিয়ে দেখি, দাম বদলায়নি, কিন্তু রুটির আকার ছোট হয়ে গেছে। ছোট করে করে আর কয়দিন চালাতে পারবে এই রুটিবিক্রেতারা, সেটাই ভাবছি।

বিক্ষোভ করে আর লাভ নেই। রাষ্ট্র বা সরকার এখন বাহুল্যমাত্র।
সামনে আরো অদ্ভূত সময় আসছে।

খোলা অর্থনীতির এই সময়ে তেলের আর খাবারের দামের লাগাম কাদের হাতে, এটা খুব বড় প্রশ্ন অবশ্য।

অতিথি লেখক এর ছবি

এমনই যখন বাস্তবতা তাকে আরও দৃঢ় করতে বুশ ও রাইস বলছে ভারত আর চীনের লোকেরা নাকি পৃথিবীর সব খাবার খেয়ে ফেলেছে। সারা পৃথিবীর মানুষের দৃষ্টি একটু ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য; যখন খাদ্য অর্থনীতির বিশেষজ্ঞগণ বলা শুরু করেছেন - ভূট্টা থেকে ব্রাজিল, আমেরিকা ও বৃটেনের জৈব জ্বালানি উৎপাদন খাদ্য সংকটের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। বিদ্যমান অবস্থার জন্য যদি দায়ী করা হয় বড় বড় খাদ্য বণিকদের তাহলে তাদের দালাল হচ্ছে উন্নত বিশ্বের এসব রাজনীতি। ইউএন, আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ওই রাজনীতির কমিশন এজেন্ট। তাবত দুনিয়ার কথা যদিও সঙ্গত কারণেই ভাবতে হয় তথাপি আমাদের দেশের কর্ণধাররা নিজের দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তরিক না ভেবে ভীষণ কষ্ট পাই। আমাদের প্রধান খাদ্য ধানের আবাদের কথা না ভেবে বলে আলু খাও, কাসাভা ফলাও, এটা সেটা। কিন্তু ধানের প্রতি মনোযোগ নেই। ধানের জমিতে কাসাভা ফলালে জমির উর্বরতা চিরকালের জন্য বিনষ্ট হবে।
বিশেষজ্ঞগণের মতে বর্তমান অবস্থার কারণ পরাশক্তিগুলোর দ্বৈত নীতি। তারা নিজের দেশের জন্য যখন কৃষিতে সর্বোচ্চ পরিমাণ ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে, একই সাথে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তাদের দালাল আইএমএফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ইত্যাদির মাধ্যমে কৃষিতে ভর্তুকি বন্ধ করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আফিকার দেশ Malawi দাতা ও উন্নয়ন অংশীদারদের কথার তোয়াক্কা না করে কৃষিতে ভর্তুকির মাধ্যমে দেশে খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে যা তাদের ভবিষ্যত খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের মেরুদণ্ড তাদের চেয়ে যে দুর্বল তা যথার্থই প্রমানিত হচ্ছে এখন।
নবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ স্টিগলিৎজ্ বলেছেন উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর অবশ্যই যেকোন ধরনের খাদ্যশস্য থেকে ইথানল তথা জৈব জ্বালানি তৈরি বন্ধ করতে হবে। খাদ্যশস্যের সঙ্কটের সাথে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি আন্তজার্তিক বাজারে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের আবাদি জমির ৩০ শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে জৈব জ্বালানি উৎপাদনে। স্টিগলিৎজ্ আরও বলেছেন ইথানলের রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে তা আসলে পরিবেশ বান্ধব নয়।
উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রত্যেকটি individual দেশের পক্ষে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ। এখন দরকার শুধু সরকারি সদিচ্ছার। আমরা এখন যে মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি তা থেকে উত্তরণ সম্ভব এখন শুধু খাদ্য উৎপাদন দেশে দেশে বাড়ানোর মাধ্যমে। কয়েকমাস আগে প্রথম আলোয় পড়েছিলাম - মাটির প্রতি কৃষকের প্রতি আনত হবার সময় এসেছে। কিন্তু আমরা আনত না হয়ে রাষ্ট্রীয় নীতির কারণে বরং তাদের পদদলিত করছি। হায় সভ্যতা!!
ফারুক ওয়াসিফকে ধন্যবাদ।

জিজ্ঞাসু

সুমন চৌধুরী এর ছবি

(বিপ্লব)

স্টিগলিটজ সাহেব বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে পদত্যাগ করার সময় একখানা প্রাণঘাতী প্রবন্ধ লিখেছিলেন। সেটা খুঁজে বেড়াচ্ছি। সন্ধানে থাকলে আপলোডিত করতারেন।



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

দুর্দান্ত এর ছবি

জোগানের চেয়ে চাহিদা বাড়লে দাম বাড়বে এবং চাহিদার চেয়ে জোগান বাড়লে দাম কমবে। কিন্তু যখন জোগানও বেশি, দামও বেশি, তার ব্যাখ্যা কী?
- আপনার যুক্তিটা বুঝতে পারিনি। জুয়াকর আর লগ্নিকরেরা বেশী দাম দিয়ে ভবিষ্যতের ফলন কিনে নিচ্ছে, এর ফলে পেট আর জ্বালানীর জন্য যা দরকার, বাজারে চোখে তার চাইতেও বেশী চাহিদা প্রতীয়মান হচ্ছে! তাই এই দৌড়ে চাহিদা যোগানের চাইতে এগিয়ে।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমি বলেছি.

জোগানের চেয়ে চাহিদা বাড়লে দাম বাড়বে এবং চাহিদার চেয়ে জোগান বাড়লে দাম কমবে। কিন্তু যখন জোগানও বেশি, দামও বেশি, তার ব্যাখ্যা কী?

খাদ্য ও তেলের অভাবনীয় মূল্যবৃদ্ধি চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্যের লজিকে ঘটছে না এটা আমার আলোচনার ভিত্তি। এর সাপেক্ষে দুর্দান্ত বলেছেন,
আপনার যুক্তিটা বুঝতে পারিনি। জুয়াকর আর লগ্নিকরেরা বেশী দাম দিয়ে ভবিষ্যতের ফলন কিনে নিচ্ছে, এর ফলে পেট আর জ্বালানীর জন্য যা দরকার, বাজারে চোখে তার চাইতেও বেশী চাহিদা প্রতীয়মান হচ্ছে! তাই এই দৌড়ে চাহিদা যোগানের চাইতে এগিয়ে।

আপাতভাবে তা-ই মনে হচ্ছে। তবে পাঁচ কি দশ বছর পরের চাল বা তেল বিক্রি হয়ে গেছে বলে বাজারে বর্তমান প্রয়োজনের থেকে বেশি চাল-তেল থাকা সত্ত্বেও জিনিষ দুটোর দাম হুহু করে বাড়বে এবং তা বাকি সব ক্ষেত্রকেও মাতাল করে ছাড়বে, এ অবস্থার মধ্যে যে ধ্বংসাত্মক পাগলামো আছে সেটার দিকেই আমি নজর কাড়তে চেয়েছি। এখন জুয়াকর ও লগ্নিকরেরা কী ভাবে সেটা করছে তা দেখা যাক।
এখন তেলের বাজারমূল্য ব্যারেলপ্রতি ১২৮ ডলার ধরলে ঐ দুই খলচরিত্র ঐ মূল্যের মাত্র ৬% পরিশোধ করেই ভবিষ্যতের বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। অর্থাত মাত্র আট ডলার দিয়ে বাকি ১২০ ডলারের ক্ষমতাও তারা অর্জন করে। অপরিশোধিত টাকাটা ধরা হবে ধার হিসাবে। তার মানে সে সুবিধা পাচ্ছে ১:১৬। এভাবে সত্যিকার বাজারের বাইরে লন্ডন আইসিই ফিউচার ও নিউইয়র্ক নাইমেক্স এবং আন্ত: ব্যাংক কিংবা ওভার-দ্য-কাউন্টার লেনদেনই শত শত কোটি মানুষের জীবনে বিপর্যয় আনতে পারছে। এটাকে আমি সুস্থ অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বলে মানতে রাজি নই।
এদের ঢাকার জন্যই বলা হচ্ছে চীনের তেলের চাহিদা বেড়েছে বলে দাম বেড়েছে। কথাটা যে সতি নয়, তা ওপরে বলা হয়েছে। বলা হচ্ছে দাম ওপেক বাড়িয়েছে, তাও সত্যি নয়।
এ বিষয়ে সুন্দর আলোচনা পাওয়া যাবে এখানে।
http://www.globalresearch.ca/index.php?context=va&aid=9042

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

এই বিষয়ে অর্থনীতিবিদ মেঘনাদ দেশাই খুব দরকারী লেখা লিখেছেন। নাইমেক্সে তেল স্পেকুলেটারদের বিরুদ্ধে আশু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তিনি বলেছেন। FT তে গত সপ্তাহে সেই লেখা এসেছিল, তবে সেটা পাসোয়ার্ডে ঢাকা পড়ে গেছে। দেশাইয়ের মন্তব্যের সারবস্তু এখানে

http://petrostrategies.blogspot.com/2008/06/speculation-not-market-fundamentals.html

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ সুবিনয়, দেশাই মশাই বেশ ভাল আলোচনা করেছেন। ওঁর আর লেখাপত্র কোথায় পাওয়া যাবে?

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

উনি মূলত গবেষণাধর্মী লেখা লেখেন, একাডেমিক জার্নালে, বা বই-টই জাতীয়। মাঝে মাঝে হয়তো খবরের কাগজে লেখেন। Google মেরে দেখতে পারেন।

তবে উনি দেখতে ডাকসাইটে

auto
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সুমন চৌধুরী এর ছবি
দুর্দান্ত এর ছবি

নাইমেক্সেও কি তাহলে একদিন ডট কম আর রিয়েল এস্টেট বাবলের মত ধস নামতে পারে? পেনশন ফান্ড আর ভার্সিটি এন্ডাওমেন্টের এর পর আর থাকলো কি তাহলে - কার্বন, সাগরের পানি, চাঁদের জমি?

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়লাম। খুব ভালো হয়েছে। আবার এও মনে হচ্ছে- গণতন্ত্রর চাইতে সামাজতন্ত্রই ভালো হতো। রাশিয়ার দিকে তাকালে অনুভব করা যায়। কিন্তু পুঁজিবাদীরা কি তা হতে দেবে? গণতন্ত্রের চাপে, মুক্তবাজার অর্থনীতির স্রোতে ভুখা-নাঙ্গা সব সাফ হয়ে যাবে একদিন।

এখনকার সমাজে কেবল দুটি শ্রেণীই আছে- ধনী আর দরিদ্র। মধ্যবিত্তদের অধিকাংশই নেমে এসেছে দরিদ্রের কাতারে। আরো পরে কি কেবল ধনীরাই টিকে থাকবে?
-জুলিয়ান সিদ্দিকী

দুর্দান্ত এর ছবি

গণতন্ত্রর চাইতে সামাজতন্ত্রই ভালো হতো। রাশিয়ার দিকে তাকালে অনুভব করা যায়।

তাহলে বলছেন রাশিয়ার যা প্রগতি তা সমাজতন্ত্রের পতনের আগেই ঘটেছে?

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

বুঝলাম না, কিছুতেই কমেন্ট নিচ্ছে না। নেটের সমস্যা বোধ হয়।
যাহোক, পুরাতন সমাজতন্ত্রের নস্টালজিয়া আমাকেও আকুল করে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেভিয়েত মডেলের ব্যর্থতাকে গ্লোরিফাই করার কিছু নাই। যা গেছে তা গেছে, যা আসবে তাতে মনোনিবেশ করা দরকার। তাই বলে, মানবজাতির সর্ববৃহত এই মুক্তি প্রচেষ্টাকে এক কথায় উড়িয়ে দেয়াও কাজের কথা হতে পারে না। এবং এটাও ভাবতে হবে যে, যে মুক্তি অন্যকে মুক্ত করবে সে নিজে মুক্ত কিনা সেটাও ভাবা দরকার।
আরো পরে কি কেবল ধনীরাই টিকে থাকবে?
মুষ্ঠিমেয় লোকদের জন্য গোটা দুনিয়াকে একচেটিয়া ভাবে করায়ত্ত করার এমন খায়েশ বোধহয় পৃথিবীতে আগে দেখা যায় নাই। এই গ্রহের সকল প্রাণীকুলের জন্যই ভয়ংকর দুঃসংবাদ এলান হচ্ছে।
@ দুর্দান্ত
উপস্থিত সমস্যাটি সভ্যতা ও মানব অস্তিত্বের তিন রসদ খাদ্য তেল ও পানি নিয়ে এবং এ তিনের ওপর মুষ্ঠিমেয়র নিয়ন্ত্রণ কায়েমের কুফল নিয়ে। তবে আপনার প্রশ্নটিও গুরুত্বপূর্ণ। অন্যত্র এটি নিয়ে কথা বলা যায়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

@ফারুক ওয়াসিফ

পুরাতন সমাজতন্ত্রের নস্টালজিয়া আমাকেও আকুল করে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেভিয়েত মডেলের ব্যর্থতাকে গ্লোরিফাই করার কিছু নাই। যা গেছে তা গেছে, যা আসবে তাতে মনোনিবেশ করা দরকার।

একমত। বুলগেরিয়ায় এক গায়িকা কে জানতাম, সমাজতন্ত্রের পতনের পর তার পেশা বার ড্য্যন্সার কাম বেশ্যা । ভাল ভাল -এই না হলে উন্নয়ন -বিশ্ব্যায়ন ।

[/quoteমানবজাতির সর্ববৃহত এই মুক্তি প্রচেষ্টাকে এক কথায় উড়িয়ে দেয়াও কাজের কথা হতে পারে না।

একমত । শুধু তাই নয় , এই বিপ্লব আর তত্ত্ব কেন এল ? কি তার শানে নুযুল তা' জানাও জরুরি -এমনকি বিরোধিতার জন্য হলেও। আমরা প্রতিক্রিয়া নিয়ে নাচানাচি করতে উস্তাদ কিন্তু ক্রিয়ার খো্জ নিতে বা তার নেপথ্য শক্তির নাম নিতে নারাজ ।

যে মুক্তি অন্যকে মুক্ত করবে সে নিজে মুক্ত কিনা সেটাও ভাবা দরকার।

আবার অপরকে মুক্ত করার মাধ্যমেই নিজের মুক্তি বা নির্বান লাভ হয় বলেছেন ছফা ভাই । প্রশ্ন হল ঃ

মুক্তি কার -ব্যক্তিক না সামস্টিক ? মুক্তি বলতে আমরা আদৌ কি বুঝি ? স্বাধীনতা আর মুক্তি কি এক জিনিস না আলাদা ? ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম উদ্দেশ্য অথনৈতিক মুক্তির স্বরুপ কি ? আজকের বাজার সিস্টেমে আমরা কি মুক্ত হচ্ছি না দাস হচ্ছি ? নাকি এটাই মুক্তি আনু , উমর ,রনো বা তরুন ফারুকরা এই মুক্তি দেখতে পাচ্ছেন না ?

আরো পরে কি কেবল ধনীরাই টিকে থাকবে?

টিকে থাকাই কি চরম সার্থকতা ? বুড়ি ভিখাড়ী বা কাগজকুরানি ত' ৯০ বছর ধরে বেচে আছে আর শিল্পপতি ৪০ বছরে গত হয়েছে ? এই এলাকায় চার হাজার বছর আগে হস্তি বাহিনী ছিল কিন্তু আজ বিলুপ্ত , আরশোলা ঠিকই টিকে আছে । আমরা হয়ত টিকে থাকব তেলাপোকার মত । তবে স্বিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদেরই -কি ভাবে টিকে থাকতে চাই আমরা ?

নিজের বুঝ নাকি পাগলেও বুঝে , আমরা বুঝব কবে ?

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

তীরন্দাজ এর ছবি

এ মুহুর্তে বিশদ আলোচনায় যাবার সময় নেই বলে দু:খিত। তবে একটি কথাই বলছি,

"খুবই মূল্যবান লেখনী আপনার!"
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

বন্ধু আমার এই কথার:

পুরাতন সমাজতন্ত্রের নস্টালজিয়া আমাকেও আকুল করে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেভিয়েত মডেলের ব্যর্থতাকে গ্লোরিফাই করার কিছু নাই। যা গেছে তা গেছে, যা আসবে তাতে মনোনিবেশ করা দরকার। তাই বলে, মানবজাতির সর্ববৃহত এই মুক্তি প্রচেষ্টাকে এক কথায় উড়িয়ে দেয়াও কাজের কথা হতে পারে না। এবং এটাও ভাবতে হবে যে, যে মুক্তি অন্যকে মুক্ত করবে সে নিজে মুক্ত কিনা সেটাও ভাবা দরকার।

জবাবে কি এই কথা আসে বা তা আমার জন্য প্রযোজ্য যে,
বুলগেরিয়ায় এক গায়িকা কে জানতাম, সমাজতন্ত্রের পতনের পর তার পেশা বার ড্য্যন্সার কাম বেশ্যা । ভাল ভাল -এই না হলে উন্নয়ন -বিশ্ব্যায়ন ।

তবে আপনার এই কথা অতি গুরুত্বপূর্ণ
এই বিপ্লব আর তত্ত্ব কেন এল ? কি তার শানে নুযুল তা' জানাও জরুরি -এমনকি বিরোধিতার জন্য হলেও। আমরা প্রতিক্রিয়া নিয়ে নাচানাচি করতে উস্তাদ কিন্তু ক্রিয়ার খো্জ নিতে বা তার নেপথ্য শক্তির নাম নিতে নারাজ ।

সমাজতন্ত্রের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নিশ্চয়ই স্বতন্ত্র পোস্টে আলোচনা করতে পারবো। আপনিই লেখেন না তা?
তরুন ফারুকরা এই মুক্তি দেখতে পাচ্ছেন না ?

মুক্তি চাই কিন্তু তা আল্লার আরশ থেকে নামা বাণীতে কিংবা কথিত কাল্পনিক ইতিহাসে নয়, জানা-বোঝার বর্তমান ও অতি বিদ্যমান বাস্তবতার ভেতর থেকে খূঁজে নিতে চাই_যতটা পারা যায়। আপনি জানেন এই পথ আরো কঠিন। আমি ক্রিটিকাল আশাবাদী।
এই আর কি। ধন্যবাদ।
............................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে। আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঠিকাছে।

নন ক্রিটিক্যাল আশাবাদ অশ্লিল।



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

@ফারুক ওয়াসিফ

পুরাতন সমাজতন্ত্রের নস্টালজিয়া আমাকেও আকুল করে। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেভিয়েত মডেলের ব্যর্থতাকে গ্লোরিফাই করার কিছু নাই। যা গেছে তা গেছে, যা আসবে তাতে মনোনিবেশ করা দরকার। তাই বলে, মানবজাতির সর্ববৃহত এই মুক্তি প্রচেষ্টাকে এক কথায় উড়িয়ে দেয়াও কাজের কথা হতে পারে না। এবং এটাও ভাবতে হবে যে, যে মুক্তি অন্যকে মুক্ত করবে সে নিজে মুক্ত কিনা সেটাও ভাবা দরকার।

আপনার উপরের কথার প্রথম তিন লাইনেরে জবাব দেয়া হয়েছে এক শব্দে " একমত "
বাকিটা আপনার জবাবে বা তা আপনার জন্য প্রযোজ্য নয় ।
উন্নয়ন -বিশ্ব্যায়নের একটা চিত্রকল্প এখানে এসেছে ।
আপনি নিশ্চয় জানেন
পাঠ হতে পারে দু'রকম ১) পাঠক যেখানে লেখকের সাথে একমত হন ২ ) পাঠক যেখানে লেখকের সাথে দ্বিমত হন
আবার পাঠ ও পাঠ কেন্দ্রীক সমালোচনায় গ্যাপ বা শূন্যস্থান শ্ব্দটি বারবার আসে
উলফগ্যাং আইশার এর মতে
Text এ এই শূন্যস্থান পুরনের দায়ি্ত্ব পাঠকের
আর এখানে পাঠক কিন্তু সক্রিয় এবং সৃষ্টিশীল
যেমন আপনার বর্তমান আর আগের Text কে কেন্দ্র করে মন্তব্য প্রতিমন্তব্য উন্নয়ন -বিশ্ব্যায়ন পক্ষে বিপক্ষে যে অবস্থান বা সমাজতন্ত্রের সাথে প্রগতি এসেছে না তার পতনের পরে সে তর্ক প্রসঙ্গে উদাহরনটি টানা হয় " বুলগেরিয়ায় এক গায়িকা কে জানতাম, সমাজতন্ত্রের পতনের পর তার পেশা বার ড্য্যন্সার কাম বেশ্যা । ভাল ভাল -এই না হলে উন্নয়ন -বিশ্ব্যায়ন । "

তবে আপনার এই কথা অতি গুরুত্বপূর্ণ "এই বিপ্লব আর তত্ত্ব কেন এল ? কি তার শানে নুযুল তা' জানাও জরুরি -এমনকি বিরোধিতার জন্য হলেও। আমরা প্রতিক্রিয়া নিয়ে নাচানাচি করতে উস্তাদ কিন্তু ক্রিয়ার খো্জ নিতে বা তার নেপথ্য শক্তির নাম নিতে নারাজ । " সমাজতন্ত্রের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নিশ্চয়ই স্বতন্ত্র পোস্টে আলোচনা করতে পারবো।

আশায় থাকলাম আপনার স্বতন্ত্র পোস্টের ।

"তরুন ফারুকরা এই মুক্তি দেখতে পাচ্ছেন না ? "মুক্তি চাই কিন্তু তা আল্লার আরশ থেকে নামা বাণীতে কিংবা কথিত কাল্পনিক ইতিহাসে নয়, জানা-বোঝার বর্তমান ও অতি বিদ্যমান বাস্তবতার ভেতর থেকে খূঁজে নিতে চাই_যতটা পারা যায়। আপনি জানেন এই পথ আরো কঠিন। আমি ক্রিটিকাল আশাবাদী।
এই আর কি ?

আমার প্রশ্ন ছিল "আজকের বাজার সিস্টেমে আমরা কি মুক্ত হচ্ছি না দাস হচ্ছি ? উমর রনো আনু বা তরুন ফারুক যে চিত্র আমাদের দেখাচ্ছেন তা আমার কাছে সত্য ঠাহর হয়
মাকাল ফল আমিও কিছুটা চিনি বৈকি
কিন্তু যারা মানতে নারাজ বা দাসত্ব কেই মুক্তি ভাবছেন তাদের যুক্তি শুনতে চাইছিলাম আর কি
রুমাল হয়ে গেল বিড়াল
ফারুক বুঝল ভুল
তার দোষ নেই
আমারই দায়
আমারই কেবল ভুল হয়ে যায়

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

থ্যাংক্স, এবার সব ফকফকা লাগছে। আর আমার কেবলই দেরি হয়ে যায়!

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।