কল্পনা দিবস: ঐ পাহাড়ে জুলুম চলে

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: বুধ, ১১/০৬/২০০৮ - ৬:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

'ঐ পাহাড়ে জুলুম চলে এই কথা আর গল্প না
পাই না খুঁজে কোথায় আছে পাহাড়ি বোন কল্পনা।'

মাত্র ষোল বছর বয়সে কল্পনা চাকমা হারিয়ে গেছে। তার সম্পর্কে সরকারি ভাষ্যে বলা হয়, 'নিখোঁজ'। মানুষ অনেক ভাবেই হারিয়ে যায়, কত মানুষই তো হারিয়ে যায়। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে যখন স্বাধিকারকামী তরুণ-তরুণীরা হারিয়ে যায়, তখন আর একটি বিশেষ অর্থ থাকে। তখন তারা আর কোথাও নয় বিশেষ একটি জায়গাতেই হারিয়ে যেতে বাধ্য হয়। যেমন একাত্তরেও হারিয়ে যাওয়াদের বিশেষ কিছু জায়গায় পাওয়া যেত। সেই স্থানটি কোথায়? কারা তাদের নিয়ে যায়? কেন নিয়ে যায়? নিয়ে গিয়ে কী করে? বালকের মতো এইরকম অনেক প্রশ্ন মনে জাগে। উত্তরহীন প্রশ্নে প্রশ্নে আমাদের আকাশ কালো হয়ে আসে। কিন্তু কে দেবে উত্তর? কিংবা কে চাইবে এত এত ভয়ঙ্কর সব প্রশ্নের উত্তর?
একটা উত্তর দিয়েছে সুইডেন বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদের রোজালিন ডি কস্তা। তিনি বলেছেন, 'কল্পনা চাকমা (১৬), এক উপজাতীয় এসএসসি পরীক্ষার্থী কিশোরী বান্দরবানের আলিকদম থেকে অপহৃত হয়। অপহরণটি চালায় স্থানীয় বিএনপি ক্যাডারেরা এবং তাদের সহযোগিতা করে বিএনপির জোটভুক্ত অন্য কর্মীরা। আজো তার খোঁজ মেলেনি। (সুইডেন বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদের প্রতিবেদন, ২০০২) বাহ্! খুব সহজ উত্তর তিনি পেয়েছেন। বলিহারি তাঁর অনুসন্ধানী চক্ষুকে! কোনো কোনো পত্রিকায় খবর রটানো হয়েছিল, কল্পনা চাকমা সীমান্তের ওপারে আরাম-আয়েশেই আছে। যেদিন কল্পনা অপহৃত হয়, সেদিন ছিল ১৯৯৬ সালের ১১ জুন। ঐদিন দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনী ডামাডোলে হারিয়ে গিয়েছিল কল্পনা অপহৃত হওয়ার সংবাদ। আমরা গণতন্ত্র পেয়েছি কিন্তু কল্পনাকে হারিয়েছি। কিন্তু পাহাড়ের মানুষ জানে, যে দলই ক্ষমতায় থাকুক, পাহাড়ে চলে সামরিক শাসন। কল্পনার অপহরণকারী হিসাবে জনৈক লেফটেনান্ট ফেরদৌসের নাম আসে। হিল উইমেনস ফেডারেশনও একইরকম অভিযোগই তুলেছিল। কল্পনা ছিল এ সংগঠনটির সাংগাঠনিক সম্পাদক। এখন হয়তো সেই ফেরদ্যৌস আরো বড় পদে আসীন হয়ে দেশসেবা করে যাচ্ছে। ওদিকে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের সামরিক দায়িত্বে ছিলেন, এমন একজন এখন গণতন্ত্রের মহান পূজারি। তাঁকে নিয়মিত দেখা যায় টিভি টক শোতে এবং হালে তিনি একটি রাজনৈতিক দলও গঠন করেছেন। যখন শুনেছিলাম ঐ বীরপুঙ্গব আমার জেলাশহরের লোক, তখন ক্রোধ আরো বেড়িছিল। ওয়ার্ডসওয়ার্থ লিখেছিলেন, 'এ বয়েজ উইল ইজ উইন্ডস উইল'। আমার বায়বীয় সঙ্কল্প বায়ুতেই উড়ে গেছে। কিন্তু কল্পনার নাম আজো জ্বলজ্বল করছে নিখোঁজ তালিকায়।
না আমি তাকে দেখিনি। কিংবা হয়তো দেখেছি, পার্বত্য ইস্যুতে ঢাকার কোনো যৌথ মিছিলে। হয়তো হেঁটেছি তার পাশে, একসঙ্গে গলা তুলেছি। কিন্তু খেয়াল করিনি, কে কল্পনা। ছোট্ট একটি মেয়ে, কিন্তু কী বিরাট ছিল তার সাহস ও প্রতিজ্ঞা; তা শ্রাবণ থেকে প্রকাশিত কল্পনা চাকমার ডায়রি পড়লে বোঝা যায়। না, আমি শোক করতে বসিনি। জানি, এদেশে কল্পনারা হারায়। পাহাড়ি বিপ্লবী কল্পনা চাকমা কিংবা ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী কল্পনা দত্তরা থাকতে আসে না। তারা আসে আমাদের মুমূর্ষ সংকল্পকে জাগাতে। কিন্তু হায়! এদেশের জলীয় আবহাওয়ায় রাগ-সংকল্পও জলো হয়ে যায়। আর্দ্র বাতাসে স্মৃতির রং দ্রুত বিবর্ণ হয়। আরামের নোনা বাষ্পঘামে ফেঁসে যায় তার বুনট। কল্পনা হারিয়ে যাওয়ার এক যুগ পরে তাই মনে আর কোনো তাপ-জ্বালা নাই। কিন্তু গ্লানির ঘুণপোকা অক্ষয়-অমর-অজর। সেটা কুট কুট করে দাঁত ফুটিয়েই চলেছে আত্মার গহীনে, ইতিহাসে আর পার্বত্য জনপদে।
জাবিতে পড়বার দ্বিতীয় বর্ষের কোনো এক সন্ধ্যায় আমরা তিনজন তিনটি কাকের মতো বসেছিলাম লেকপাড়ের কালভার্টের ওপর। আমি, জাঈদ আজিজ আর সঞ্চয় চাকমা। তিনি তখন ছাত্র ফেডারেশনের সহসভাপতি আর ইউপিডিএফের দ্বিতীয় নেতা। ইউপিডিএফ শান্তি চুক্তির প্রতারণার বিরুদ্ধে সন্তু লারমাদের সঙ্গে দ্বিমত করে সদ্য আলাদা দল গঠন করেছে। সঞ্চয়দার মতো এর নেতারাও সবাই তরুণ। সেদিন সন্ধ্যায় সঞ্চয়দা-ই কল্পনা কাহিনী শুনিয়েছিলেন। শুনে স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম তিনজনই। তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। একটু আগে বৃষ্টি হয়ে গেছে। লেকে লেকে অজস্র পাখি সান্ধ্য আরতি করছে। আর কালো পানিতে তাদের ডানার একেকটা ঝাপট যেন আগুনের তরঙ্গ হয়ে আছড়ে পড়ছিল আমাদের গায়ে। আমরা তিনজন অন্ধকারে পোকার মতো সেই আগুনে বসে বসে পুড়ছিলাম।
কল্পনা নিখোঁজ হওয়ার পরপরই প্রেসকাবের সামনে আমাদের এক যৌথ প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছিল। সেই সমাবেশে আমার উদ্বাস্তু জীবনের বন্ধু রবিন আহসান পাঠ করেছিল এই প্রতিবাদপত্রটি।
'ঐ পাহাড়ে জুলুম চলে এই কথা আর গল্প না
পাই না খুঁজে কোথায় আছে পাহাড়ি বোন কল্পনা
যে স্বাধিকার চাইতে গিয়ে কল্পনারা হারায়
প্রতিবাদে স্লোগানে রুখে ওরা দাঁড়ায়।
সেই পাহাড়ি জনগণের বন্ধু আমি ভাই
কল্পনা বোন হারালো কই, রাষ্ট্র জবাব চাই!'
রাষ্ট্র জবাব দেয় নাই। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে খবর পাই, আমাদের জাবি'র বন্ধু, আরেক পাহাড়ি নেতা রূপক চাকমা অপহৃত ও নিহত হয়েছে।


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

আমরাও কম নই। আমরাও চালাতে পারি গণহত্যার উৎসব। আমরাও অপহরণ করতে পারি। আমরাও পারি লিখে দিতে শেষ বাক্য 'নিখোঁজ'।

বাহবা, শাবাস।

সৌরভ এর ছবি

রাষ্ট্র নিজেই যখন সন্ত্রাসী, তখন আমরা কোথায় যাবো?


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

প্রশ্ন জাগে প্রশ্ন জাগে
প্রশ্নে ভরে বুক
রাষ্ট্র আজো আড়াল করে
জবাব দেবার মুখ

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

তারেক এর ছবি

পাহাড়িদের উপর জুলুমের এসব ঘটনা পড়লে নিজেদেরকে পাকিদের চাইতেও শূণ্য-বিবেক মনে হয়।

বিপ্লব রহমানের একটা চমৎকার লেখা আছে কল্পনা চাকমা কে নিয়ে। পুরনো ব্লগে পড়েছিলাম।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ্যাঁ আজ বিপ্লবদাকে বাধ্যতামূলকভাবে হাজিরা দেওয়ানো দরকার। এ বিষয়ে তিনি অনেক ওয়াকিবহাল লোক।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুবই হতাশাজনক এবং দুঃখজনক মন খারাপ

সুমন সুপান্থ এর ছবি

সংখ্যালঘিষ্টদের উপর সংখ্যাগরিষ্টদের নির্যাতন, পৃথিবীর ঘৃণ্য এই হাওয়ায় কতো কল্পনা যে ভেসে গেলো ! লিখে যেতে পারলে কিছু , কেউ, দেখা যেতো, কতো 'আনা কল্পনা কারেনিনা' র ডায়েরি
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পাহাড়ের আনাচে কানাচে !

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ্যাঁ, সত্য। লিখে যেতে পারলে...
আমরা পারি না। আমরা লিখি চোথা কলাম আর ভেজা ব্লগ_এই অধম তার বাজারচলতি নমুনা।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

এভাবেই আমরা হারিয়ে ফেলতে বাধ্য হই আমাদের প্রতিবাদের ভাষা। কেউ না কেউ কঠিন হাতে রুদ্ধ করে দেয় আমাদের উচ্চকিত কন্ঠ। আমরা নির্বাক হয়ে যাই। আমাদের নিরুচ্চার্য ঘৃনাও বাধ্য হয় সরে যেতে- আমাদের দৃষ্টির আড়ালে।
______________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ঘন্টাখানেক আগেই ফোন করলো বিপ্লব বড়ুয়া... চাকমা জাতিসত্তায় বেড়ে ওঠা... এখন ঢাকা শহরে মিউজিক করে... প্রাণপনে মিশে যাবার চেষ্টায় আছে বাঙ্গালীদের সাথে... নিজেও যে বাঙ্গালীদের চেয়ে কম কিছু না... এখন যে তিনিও বাঙ্গালীও অনেকটা... তারই প্রকাশ হয় মাঝে মাঝে... জিজ্ঞেস করি বিভেদের কথা... সেগুলো খুব একটা তুলতে চান না... মিলে মিশে চলতে চান। ফোন করেছিলেন মঙ-এর ফোন নম্বর নিতে... মঙ ম্রো... জাবিতে পড়ে... সম্ভবত এনথ্রোপলজিতে... তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে একদিন এসেছিলো... তারাও এখন মিশে যেতে চায় বাঙ্গালীদেরই সাথে... নীলা চাকমা এখন সুপার মডেল... ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে... শুধু বাঙ্গালী না... উঁচুতর বাঙ্গালীদের সহাবস্থানেই আছে...
ম্রো নিয়ে আমার কিছু কাজের ইচ্ছা আছে... মঙ-এর সাথে তাই তাদের গাঁয়ে যাবার কথা... তার কাছে শিখতে চাই তার ভাষা...

এই পোস্টের নিজের একটা মন্তব্য জানান দিতে চাই... বলতে চাই কিছু কথা... কিন্তু বলতে পারি না... আমরা কি শুধু তাদেরই ভাষা কেড়ে নিয়েছি? কিছু প্রশ্নের জবাবের ভাষা কি আমরাও হারাইনি? যেমন ভাষা হারাই এই পোস্টের প্রতিক্রিয়া জানাতে?

কল্পনা চাকমারে নিয়া একটা ডকুমেন্টরি বানাইতেছিলো সাইদ আহমদের ভাইস্তা বউ (তার নামটা মনে আসতেছে না)। সেইটার খবর জানি না... জানেন কেউ?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

পাহাড়িদের ভেতর এখন এডিবি ও ডোনারদের সাহায্যপুষ্ট একটা মধ্যশ্রেণী গড়ে উঠেছে। বাঙালিদের সঙ্গে এরা মিশে যেতে চায়। যেমন আমরাও একসময় ব্রিটিশদের সঙ্গে মিশে যেতে চেয়েছিলাম বা এখনও চাই...অনেকে আবার মিশেও আলাদা হয়ে থাকে...ভেতরের ঘৃণার কথা বলে না...আরো অনেকে হারিয়ে যায়...তাদের লাশ সতকারহীন পড়ে থাকে কোনো অজানা পগারে বা ভাগাড়ে...............

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

... আমরা কি শুধু তাদেরই ভাষা কেড়ে নিয়েছি? কিছু প্রশ্নের জবাবের ভাষা কি আমরাও হারাইনি?

আর ভুলে যাচ্ছি, আরো সব নির্যতিত জাতিসত্ত্বার মতো আমদের উপর ও বয়েছে এমন সব স্টিম রোলার । মঙ,হার্মাদ,পর্তুগীজ জলদস্যু কি ব্রিটিশ বেনিয়ারা তো বটেই, আমাদের 'বেরাদার' পাকিদের হাতে তার বাকি বারো আনা । তাই বোধকরি শোধ তুলছি পাহাড়ে কিংবা সিলেটে ক্ষুদ্র মণিপুরি জাতি কে উপজাতি বলে । দুই ভাগ করে দিয়ে, একবার মৈতৈ , আর একবার বিষ্ণুপুরিদের পক্ষাবলম্বন করে ।
মহান,সংগ্রামী বাঙালী জাতি !!

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হু... আমরা তাদের মধ্যে বাঙ্গালী বোধসম্পন্ন ব্যক্তি খুঁজি... না থাকলে গড়ে নেই... যতক্ষন আমাদের মনমতো আছে ততক্ষন সহ্য করি... নতুবাই সে খারাপ... কল্পনা চাকমাদের স্মৃতি পুরনো হয়... অথবা এক কল্পনা চাকমার আড়ালে হারিয়ে যায় আরো অনেক অনেক কল্পনা চাকমা... কল্পনা চাকমার চেয়ে আমাদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে কনকচাপা চাকমা... আহ্... আমরা তাকে প্রদর্শনী করার সুযোগ দিই... সেমিনারে নিয়ে বসাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ওদিকে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের সামরিক দায়িত্বে ছিলেন, এমন একজন এখন গণতন্ত্রের মহান পূজারি।

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং বিশেষ বাহিনী ছেড়ে প্রথমে পার্ব্ত্য এলাকার কাঠ বিক্রির জন্য কাঠের ব্যবসা এবং একই সাথে ইসলাম প্রচারের জ্ন্য একটা ইসস্টিটিটিউট চালু করেন

তারপর কাঠের ব্যবসা সঙ্গে রেখে ইসলামকে পেছনে রেখে বুদ্ধিজীবী হবার চেষ্টা করেন
তারপরে একখান (এখন দুইখান) রাজৈনৈতিক দল করে রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবী হওয়ার চেষ্টর করছেন

০২

শান্তিচুক্তির আগে একবার বিশেষ ব্যবস্থায় রাঙামাটি আর বান্দারবান গিয়ে সেই বিশেষ অত্যাচারের নমুনা দেখার সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্য হয়েছিল আমার....

এবং তারপর থেকেই আমার একটা বিশ্বাস জন্মায় যে পৃথিবীর সব বুটই একই ডিজাইনে তৈরি...

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হুম, অনেক দিন পর শিশির স্যারের ড্রইং দেখলাম।


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনি ঘাঁ না মারলে মনেই পড়তোনা আজ সেইদিন
-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমারো মনে পড়তো না যদি রেহনুমা আহমেদ মনে করিয়ে দিতেন। আজকের নিউ এজ পত্রিকায় ওনার লেখা সহ একটি আস্ত পাতাই উতসর্গ করা হয়েছে কল্পনা চাকমাকে। নিউ এজ এবং রেহনুমাকে অভিনন্দন।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটার জন্য ফারুক ওয়াসিফকে প্রাণঢালা অভিনন্দন।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটার জন্য ফারুক ওয়াসিফকে প্রানঢালা অভিনন্দন।

পরশ পাথর

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই।
....................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে। আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়, আর বাবা পথে পথে খোরাকি টোকায়....

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

.......................

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আজকের জন্য সচলের ব্যানার হেডে কল্পনাকে ঠাঁই দেয়া যায় কি?

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। কেবল বেদনাভারাক্রান্ত মনে নিজের অক্ষমতার কথা আরেকবার অনুধাবন করছি।

কল্পনা চাকমারা বেঁচে থাকুক যুগে যুগে আমাদের হৃদয়ে। সেই সাথে বেঁচে থাকুক ঘৃনা পৃথিবীর সব শোষকদের প্রতি। কল্পনা চাকমাদের স্বপ্ন সফল হোক।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

শেহাব এর ছবি

আমি জেনারেল মতিন (এখন উপদেষ্টা) এর এক বইয়ে পড়েছিলাম কল্পনা চাকমা বলে নাকি সত্যিকারে কেউ ছিল না। ব্যাটা তো দেখি চাপাবাজ!

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

যারা নিজের দেশের স্বাধীনতার অধিকারের জন্য অস্ত্র হাতে মরিয়া হয়ে লড়াই করে, তাদের হাত রঞ্জিত হয় অন্য অধিকারকামী মানুষদের রক্তে... হাস্যকর লাগে!
আমি মনশ্চক্ষে দেখতে পাই, পাহাড়ের বিশাল খাদের শেষে দলামোচড়া হয়ে পড়ে আছে কল্পনার লাশ। তার চুলে জমে আছে শিশির, বুলেটের ক্ষত চুঁইয়ে পড়া রক্তে ভিড় করেছে পিঁপড়েরা, কাদামাটি মাখা পড়ে আছে এত ভালোবাসার শরীর...
দেখতে পাচ্ছি বিপ্লবীর শেষ পরিণতি... হায় বাংলাদেশ!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

পুরুষ বিপ্লবীদের যেভাবে অত্যাচার করা হয়, কল্পনাকে কেবল সেভাবেই হত্যা করা হয়েছিল? তার থেকে বেশি কিছু কি তারা করেনি?

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।