বাংলার ইতিহাস : এক নজরে

যূথচারী এর ছবি
লিখেছেন যূথচারী (তারিখ: শনি, ২৩/০৬/২০০৭ - ৯:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখন পড়বেন না। লেখা শেষ হয়নি। সেভ করার অপশন নেই বলে পোস্টই দিয়ে দিতে হচ্ছে।

হাসান মোরশেদের এই লেখাটিতে কোন কুক্ষণেই যে একটা মন্তব্য করেছিলাম! তিনি আবার অনুরোধ করেছেন বাংলার ইতিহাস নিয়ে যেন কিছু লিখি। অবশ্য বাংলার ইতিহাস নয়, তিনি অনুরোধ করেছেন দখদারিত্বের ইতিহাস নিয়ে যেন কিছু বলি। বাংলার অঞ্চলের বারবার অধিকৃত হবার ইতিহাসটিকে তিনি তার লেখায় তুলে ধরতে চেয়েছেন এবং সেই বিষয়ে খানিকটা আলোকপাত করার জন্য আমাকে বলেছেন।

রোমিলা থাপারের ভারতবর্ষের ইতিহাসটা পড়তে পারেন। বাংলার ইতিহাস হবে না হয়তো, কিন্তু বাংলা তো ঠিক বিচ্ছিন্ন ভাবে আজকাল আমরা যেমন দেখি, তেমন ছিল না সবসময়ে, সুতরাং মোটাদাগে একটা ধারণা পাবেন। সাবঅলটার্ন গ্রুপের লেখালেখিগুলোও পড়তে পারেন।

আমি একটা লেখা দিবোনে, শেষ পর্যন্ত। কিন্তু এখন খুব সংক্ষেপে এক লাইনে বাংলার ইতিহাসটা একটু বলে যাই। বিরোধ থাকলে বলবেন। ব্যাখ্যা দরকার হলে করবেন।

এক. প্রাগৈতিহাসিক যুগ মানে পাথরের ব্যবহারের যুগ- প্রায় পুরো বাংলাদেশই গঠিত হয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ২৫ লাখ বছর আগে (স্থানভেদে সময়ের হেরফের ঘটে)। বাংলার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রাগৈতিহাসিক মানুষের বসতির নিদর্শন পাওয়া গেছে।

দুই. সভ্যতার যুগ- সিন্ধু, মিশরীয় এবং চীনা সভ্যতার সমকালে বাংলা অঞ্চলে ঐ ধরনের কোনো সভ্যতা ছিল কিনা তার নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায় না। তবে ঐ সময়ে (প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে) বাংলা অঞ্চলে যে মানববসতি ছিল এবং তাদের বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটি ছিল, প্রত্নতাত্ত্বিক খনন থেকে তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

তিন. ঐতিহাসিক যুগ- বাংলার ঐতিহাসিক যুগ ধরা হয়, কমবেশি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয়-চতুর্থ শতক থেকে। ঐ সময়ে ভারত শাসন করতেন অশোক। অশোক যদিও পশ্চিমবাংলার প্রান্তীয় শাসক তবু তাকে বাংলার শাসক বলা যায় হয়তো। কিন্তু অশোক না, তার অনেক আগে থেকেই বাংলা যে সমৃদ্ধ এক জনপদ ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় বেশ কিছু টেক্সটে। ভারতসহ বিশ্বের বড়ো সামরিকশক্তিগুলো যখন কোনো আগ্রাসী শক্তির কাছে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে পরাজিত ও অধিকৃত হয়ে গিয়েছিলো, তখনও কিন্তু এক অদ্ভুতভাবে বাংলা (বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পূর্ব বাংলা মানে এখনকার বাংলাদেশ) ওই আগ্রাসীদের রুখে দিয়েছে। আর্যরা তো বাধাপ্রাপ্ত হয়ে "শুদ্ধির অযোগ্য, পক্ষীভাষী" কতো গাল-ই না পাড়লো! আলেকজান্ডারের "হায় সেলুকাস" তো প্রবাদসম হয়ে গ্যাছে! ভার্জিলের বাঙালিগাথা তো জগদ্বিখ্যাত। টলেমি আর প্লিনি বলেছেন এক ঋদ্ধ জাতির কথা। এই সবই অশোকের আগের কথা। মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ সাল থেকে অশোকের সময় অবধি এর বিস্তার।

অশোকের পর বাংলার শাসনে আসে গুপ্তরা। শুঙ্গ ও কুষাণের সামান্য ও বিচ্ছিন্ন সময়টি বাদ দিলাম। সমুদ্রগুপ্ত তার রাজ্যবিস্তারের জন্য খুবই বিখ্যাত। তাকে উত্তরাপথস্বামী বলা হয়। এখানে একটা কথা খুব ভালো করে খেয়াল করতে বলবো। সেটা হলো

পরবর্তীতে বাংলার শাসক শশাঙ্কের কথা ভারতবাসী চিরদিন মনে রাখবে! কি শাসানিটাই না দিয়েছে! (?) তারপর পালশাসকগণের কথা তো বলাই বাহুল্য। মুসলিম যুগের আয়রনিতে তো মুসলিম আগন্তুকরাই সবচেয়ে কষ্ট পেয়েছে। ভারতে যখন প্রথম পর্বের মুসলিম শাসন শেষ হয় হয়, তখনো বাংলায় মুসলমানরা ঢুকতেই পারেনি। দ্বিতীয় পর্যায়ের মুসলিম শাসনের শেষভাগে যা-ও এলো শুরু হলো "বাংলার স্বাধীন সুলতানী আমল"। ইংরেজ আমলের পুরো সময়টাতেই বাংলা-ই ছিল ভারত-শাসনের কেন্দ্র।


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

অনেক সময় নিয়ে পড়লাম। খুব ভালো লাগলো। এমন লেখা আরও চাই।

??? এর ছবি

এই ইতিহাসতো রাজরাজড়াদের ইতিহাস। এইখানে জনগণ কই?

নজমুল আলবাব এর ছবি

লেখাতো এখনও কমপ্লিট হয়নি সুমন ভাই। পরে হয়ত আসবে।

??? এর ছবি

যাতে আসে সেজন্য একটু আবদারটা জানায়া রাখলাম।

সিরাত এর ছবি

ভাল লাগলো!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।