উন্মূল-উদ্বাস্তু অথচ রাজসিক এক কবির সঙ্গে দেখা হয়েছিল বার্লিনে। যে কবির চোখে এখনো ঝলমল করে পাবনা অন্নদা গোবিন্দ লাইব্রেরী কিংবা বনমালী ইনস্টিটিউটের স্মৃতি। বাবা মা'র স্নেহ মাখা গৃহের ছবিটা ক্রমশ: ঝাপসা হয়ে এসেছে তার কাছে। শৈশব কৈশোরের নরম ভালবাসার ঘরখানা, পুরনো আমলের নক্সা খোদাই করা খাট- আতাইকূলার ধূ...
মুকুল কেশ একরত্তি ছেলে। তাকে নিয়ে তার বাবার এক বুক স্বপ্ন। দাদা কেশারাম উঠোনে টুলের ওপর বসে মৃতসঞ্জীবনী সুরা খায় আর মুকুল কেশের বাবাকে গালমন্দ করে- নাকিরার। কেশারাম কাশতে কাশতে চিৎকার জুড়ে দেয়। হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে টিনের চালে দুটো ঢিল ছোড়ে। ময়লা ধুতির খোঁটাটা কোমরে গুঁজে তেড়ে যায় জানালার কাছে।
মুকুল কে...
রান্নার চুলোর পাশে রনকার চোখ যখন ধোঁয়ায় লাল- হাঁসদার স্বপ্ন দেখায়, 'আবার সিসব দিন ফিরি আসবিক'। শিশুরা গোল গোল হয়ে খেলা করে। কেউ গিয়ে দৌড়ে একটা কাদা পানির পুকুরে ঝাঁপ দেয়। কাদা পানির মধ্যে মোষের মতো শরীর ডুবিয়ে রাখে।
সাহেবরা ফিরে যাওয়ার পর এক বছর চলে গেছে। টাকা-পয়সার অভাবে স্কুলটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।...
গাবতলিতে বাস থেকে নামে হাঁসদার। একটা কালো শীর্ণ শরীর জলশূণ্য হয়ে পড়েছে। চোখ দুটো লাল কোটরাগত। কতকগুলো লালচে গোঁফের রেখা আর চিতে পড়া পাঞ্জাবির খোলা বোতামের মাঝ থেকে উঁচিয়ে থাকা বুকের হাড়। হাঁসদার, বরেন্দ্র অঞ্চলের কাঁকনহাটের এক বিশীর্ণ সাঁওতাল যুবক। গালভাঙা হতদরিদ্র এই মানুষের অবয়বে এক ধরনের পৌঢ়ত্ব...
কতগুলো ছেলে তার দরজায় কড়া নাড়ে। অনেক নেড়েও কোনো জবাব মেলে না। কি ব্যাপার, লোকটা কি মরে গেলো নাকি! নাকি ঘরে কেউ নেই। কড়া নাড়তে নাড়তে হাত ব্যাথা হয়ে যায়।
আর্মেনিয়ান চার্চের পাশে ইট খসে পড়া একটা দোতলার ওপরে চিলেকোঠায় এক টুকরো ঘর। প্লাস্টার খসে পড়েছে। কালিঝুলি শ্যাওলায় দেয়াল জুড়ে নানা ধরণের তৈলচিত্র। বুঝি...