হাসান হাসান ,আপনি ভালোই হাসাতে পারেন

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: বিষ্যুদ, ০১/১১/২০০৭ - ৮:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শব্দ বিভ্রান্তিকর, নানাবিধ ছলাকলা জানে- ক'দিন আগে এক আড্ডায় বিষয়টা হঠাৎ চলে আসলো। শব্দ শুধু কিছু ধ্বনির সমন্বয় কিংবা কিছু অক্ষরের সমষ্টি নয় বরং আরও অনেক বেশী ব্যপ্ত। সে তার উৎস এবং অভিধান ছাপিয়ে নিজস্বতা তৈরি করে নেয়, তখন সে স্বরাট।

অবশ্য এখন দেখা যাচ্ছে লোকজন শিরোনামেই মত্ত হয়ে যায়। শিরোনামেই তাদের সমঝদারিত্ব সাঙ্গ হয়ে যায়। অবশ্য মাঝে মন্তব্য দেখবার সুযোগ হয় নি তাই সমালোচনার সমালোচনায় ভীমরুলের মন্তব্য পড়বার সুযোগ হয় নি। পড়বার সুযোগ হয় নি বিধায় মানুষ যে সব কিছুতেই নিজেকে খুঁজে বেড়ায় এই চরম সত্যকে আবিস্কার করতে পারি নি।

অনেক কিছুই করতে হয় জীবনে তবে নিজস্ব লেখার বিশ্বকোষ রচনার গুঢ় দায়িত্বটা বোধ হয় এই প্রথম লেখকের কাঁধে ন্যস্ত হলো। লেখা লিখতে হবে, এবং যারা অনগ্রসর এবং নির্বোধ শ্রেনীর পাঠক তাদের বোধগম্য লেখা লিখতে হবে, এবং যদি কোনো লেখা তাদের পরিপক্কতার সীমা অতিক্রম করে তবে সেটা বুঝাবার জন্য একটা মেড ইজিও তৈরি করে দিতে হবে। ঠেলা সামলাও এইবার, মনো লিখলা কেনো মুইছ্যা ফেলাও।

অবশ্য যদি হাসান সাহেব অহেতুক লোক হাসানোর মতো না ভেবে ইমরুল ভীমরুল দেখে বিভ্রান্ত না হয়ে একটা ব্যক্তিগত ব্যঙ্গাত্বক আক্রমন ভেবে ভারি মস্তিস্কে লেখাটা পড়া শুরু না করতেন তবে হয়তো একটা বিষয় একটু মাথা ঘামালে উপলব্ধি করতেন যে একটা লেখার সমালোচনার জায়গাটা উন্মুক্ত।
লেখা লিখিত হইবার পর পাঠকের দরবারে পৌঁছানো মাত্রই লেখার বিভিন্ন মুল্যায়ন শুরু হয় এবং তার এক একটা অর্থ তৈরি হতে থাকে।
যেমন এই আপত্তিকর অভিযুক্ত লেখাটা, সেটাও অনেকটা ভিন্ন অর্থ নিয়ে পাঠকের কাছে হাজির হয়েছে। এখানে দলবাজি গুটিবাজি নেই এমনটা বিশ্বাস করলেও একটা সংঘবদ্ধতার বিষয় উপলব্ধি করতে পারছি। রাজনীতি নিষিদ্ধ কোনো কাজ না, বরং গোত্রবদ্ধতা মাঝে মাঝে মানসিক ব্যধিতে পরিণত হয়। তখন সেটা নানাবিধ সমস্যা তৈরি করে।

ব্যক্তিগত পরিচয়ের সূত্রে কিছু আপনত্ব তৈরি হয়েই যায়- এবং এর পর পক্ষ বিপক্ষ সমর্থনের তাড়নাও তৈরি হয়। এবং দলবদ্ধতা যুথবদ্ধতা, লেখক শিবির, লেখক সঙ্ঘ নানাবিধ ধারণা তৈরি হতে থাকে।
অনেক আগে কোনো লেখায় লিখেছিলাম ছোটো কাগজের সম্পাদকের নিজস্ব পছন্দের বৃত্ত থাকে এবং একটা অহেতুক ঔদ্ধত্ব থাকে, তারা যা করছে সেটাই শিল্প এবং সেটাই শিল্পসম্মত, অন্য সবাই শিল্পের বাগানে ঢুকে পড়া বরাহনন্দন, অহেতুক বাল ছিড়ে আঁটি বাধছে। তাদের দিয়ে আসলে কোনো কিছু হওয়ার নেই, তাদের এইসব অহেতুক কাগজ এবং রং তুলি মাটি সিমেন্ট নষ্ট করবার কোনো অর্থই তারা খুঁজে পায় না।

এর পরে আরও বড় রাজনৈতিক বিশ্বাসের সংঘবদ্ধতার জন্ম হয়, তখন বিভিন্ন পকেট তৈরি হয়ে যায়, আওয়ামী পন্থী বুদ্ধিজীবি, বিএনপি পন্থী জামাত পন্থী, প্রথম আলো কর্পোরেট বিভিন্ন পকেটে ঢুকে পড়া সুশীল থাকে এবং তারা মাঝে মাঝে পকেট থেকে উঁকি দিয়ে দেখে বাইরের পৃথিবীতে কি ঘটছে।

পকেট খুঁজে নেওয়া এবং সেই পকেটের প্রতি বিশ্বস্ততা তৈরি এবং নিজেকে একটা পরিত্যাগঅযোগ্য অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাটুকার বৃত্তিও গ্রহন করে কেউ কেউ।
হাসান সাহেব কোন পকেটের সদস্য হিসেবে কিছু বলছেন এমন অভিযোগ আমি করছি না। ( এটা আবার শিশুপাঠের অংশ, যারা অহেতুক হোগা নিয়ে চিন্তিত থাকে তাদের সার্বক্ষণিক ফোবিয়া, কেউ বুঝি উদ্যত লিঙ্গ নিয়ে তাদের ধাওয়া করছে, তাই ফোবিয়াআক্রান্ত মানুষ এবং কতৃপক্ষের জন্য এই প্রথম ব্রাকেট)
তবে যেখানে ছিলাম সেখানে ফিরে আসি। লেখার মুল্যায়ন করে পাঠক এবং সে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করে, যারা পেশাগত সমালোচক তাদের অনেক শব্দ ব্যবহার করতে হয় অহেতুক। এই স্থানে যে বিমুর্ততা
তৈরি হয়েছে সেটা অনন্যসাধারন, উক্ত স্থানে যেভাবে এটা বিবৃত হয়েছে সেটা নিশ্চিত ভাবেই এই লেখাকে বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম এখটা স্তম্ভ করে তুলতে পারে,
তার লেখার অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হলো মানুষের প্রতি তার মমত্ব বোধ। এই যে বিভিন্ন বিশেষণতাড়িত সমালোচনা এটাও আসলে নিজের ভারিক্কি গড়ে তোলা।সে হিসেবে একজন সমালোচক যখন ভারি ভারি কথা বলে নিজেকে একটা বিশিষ্ট অবস্থান দিতে চান সেই একই হিসেবে অনেকেই নিজেদের ছদ্ম একটা চরিত্র তৈরি করতে চান।

প্রতিটা মানুষই একই রকম অসহায়ত্ব নিজে জন্ম নেয়, একএকটা সামাজিক পরিবেশ এবং প্রতিবেশে তার এক এক রকম মনোভাবনা তৈরি হয় তবে একটা কথা সত্য সে মানুষ নিজের আত্মপরিচয় তৈরি করতে সদা সচেষ্ট।
একটা ফ্যাশন এবং স্টাইল বিষয়ক বিবেচনা তৈরি করে সে নিজের পরিচ্ছদ এবং ভঙ্গিতে বিশিষ্ঠতা আনতে চায়। যদি এই অনন্যতা আনবার কোনো বাসনা কিংবা এই নিজেকে সবার থেকে আলাদা প্রমাণের কোনো তাগিদ না থাকতো তবে বিষয়টা কেমন হতো এটা জানে ৫০এর দশকের মানুষেরা, যাদের আসলে তেমন করে ফ্যাশনেবল হয়ে উঠবার সুযোগ হয় নি, তবে তখনও আবরন জনিত বিভিন্নতা আনবার সুযোগ না থাকলেও আভরণ জনিত বিশিষ্ঠতা অর্জনের চেষ্টা ছিলো। এখন সে চেষ্টা করতে হয় না , ১০০০ বুটিক তৈরি হয়েছে এবং তাদের সবার সেলিং পয়েন্ট কিংবা ব্যবসার একটা প্রধান কারণ মানুষ নিজের একটা ধাঁচ তৈরি করতে চাইছে এবং এ তাগিদ সে সবসময়ই অনুভব করে, এই মানসিকতার একটা ব্যবসায়িক গুরুত্ব আছে। বুটিক শৈল্পিকতার চলমান প্রদর্শনী তবে এই প্রদর্শনীতে মঞ্চ বিশ্ব, রিয়েল মাদ্রিদ বেখামকে কিনেছিলো, তবে তার পরনের ৭ নাম্বার জার্সি বিক্রিও বেড়েছিলো, এই যে অনুকরনযোগ্য হয়ে ওঠা কিংবা একটা ব্যবসায়িক মূল্য এটাও অনেকটা ফ্যাশনফিভার।
তবে সাহিত্যে যা হয় সেটা হলো লিখিত বিবৃতিতে সবাই সব অর্থ আর অনুভবকে একই ভাবে উপলব্ধি করে না। এবং শেষ পর্যন্ত লেখার সামাজিক একটা গুরুত্ব তৈরি হয়, তসলিমার লেখা যেভাবে দেশের যুব সমাজকে নষ্ট ও বিকৃত চরিত্র করে তুলতে পারে একই ভাবে একজনের লেখা কেনো সামাজিক পুরুষের মর্ষকাম চরিতার্থ করতে পারে না এটা বোঝা আমার জন্য একটু কঠিন হয়ে যায়।

তবে কি ইমরুল হাসানের ব্যক্তিগত পরিচয় আসে লেখিকার সাথে? সে কি কোনোভাবে নিজেকে সংযুক্ত করে ফেলছে এবং সঙ্ঘবদ্ধতার দায় চুকাচ্ছে। অবশ্য এসব বিবেচনা আমি এই মুহূর্তে করছি, এর আগে তার মন্তব্য( পরবর্তি লেখায় যার উদাহরন টেনে তিনি বগল বাজাচ্ছেন, দেখছো দেখছো এইটা না আমারে নিয়া লিখছে) পড়বার আগে বেশ কয়েক জন পরিচিতের সূত্রে কিছু ঋণাত্বক মন্তব্য করেছে- এবং সবাই একই ভাবে আহত হয়েছে-

এর আগে একটা লেখায় বলেছি আমাদের সামাজিক পরিবেশে আমরা যেসব শোভনতার বোধের চর্চা করি তাতে আমাদের ভেতরে বেশ বড় একটা পুরুষতান্ত্রিক স্বত্ত্বা সদা জাগ্রত থাকে। এবং এরই তাড়নার যখন ভীড় বাসে কোনো মহিলা বা মেয়ে দাঁড়িয়ে যায় তা দেখে আমাদের অনেকের জিহ্ব এবং পাছা চুলকায়, মৃদু শিরশির করে, যাদের জিহ্বা চুলকায় তারা হেঁকে বলেন ঐ মিয়া মহিলা মানুষ খাড়ায়া যইতাছে ওরে উইঠা বওনের জায়গা দাও। আর সবার চুলকাতে থাকা পাছার একটা বাসের সীট থেকে উঠে দাঁড়ালে তার পাছার জ্বলুনি কমে এমন কি একই সাথে বাসভর্তি সবার পাছার মৃদু শিরশির অনুভব থেমে যায়। এটা জানাযার নামাজের মতো কেউ একজন পড়লেই ফরজ আদায় হয়ে যায়,

তবে এই পুরুষতান্ত্রিকতা স্পষ্ট করে বলবার পরেও কেউ কেউ আদতে উপলব্ধি করতে পারে নি এটা। তাদের মেধাহীনতার জন্য কোমল নীল হয়ে যাই।

লেখার সমালোচনা এবং লেখার পড়ে পাঠকের অনুভবেরএকটা পুরুষতান্ত্রিকতা এবং মর্ষকাম চরিতার্থ হওয়া এবং আমার মন্তব্য বিমুখতা নিয়ে সোচ্চার ইমরুল হাসানকে আদতে কি বলা উচিত, মুক্ত বুদ্ধির চর্চা করা একজন মানুষকে বলা যায় না মুক্ত বুদ্ধি চর্চার জন্য যুক্তি এবং ভাবনা প্রবেশের জন্য একটা দরজা খোলা রাখতে হয়। সেটা না করে মুক্তিবুদ্ধি চর্চা এবং ভাবনার দরজা খোলা না রাখার কারণে তার মস্তিকের পচনের গন্ধও তার নাকে পৌঁছাচ্ছে না।

কখন মরে গেছে সে বুঝেও বুঝে নি তাই বেঁচে রয়েছে অনন্তকাল অন্যসব মানুষের পরিত্যাক্ত পুরীষে।

সামাজিক মানুষ এবং সমাজের অনুভবগুলো সতন্ত্রএবং স্পষ্ট। মুহাম্মদ বেড়াল নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে যত সহজে মানুষ নিজেকে মোহাম্মদের সমর্থনে নিয়োজিত করতে পেরেছে তেমনভাবে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারছে না মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনার সাথে।,
কেউ কেউ অতিরোমান্টিকতায় আচ্ছন্ন ভাবছে তাদের। তারা নিশ্চিত মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও অসমসমরে যাচ্ছে এটা সাহসিকতা নয় বরং চরম নির্বুদ্ধিতা পরিচয় তাদের কাছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা, হাটখোলায় তাদের বাসা তার ২ ভাই যুদ্ধে গিয়েছিলো ২৭শে মার্চ, একজন ত্রিপুরা থেকে ট্রেনিং নিয়ে ঢাকার এই দিকে আসে অপারেশনে, অন্য জন গিয়েছিলো পঞ্চগর, সেখানে একটা অপারেশনে সে এবং তার খুদে দলটি মুখোমুখি হয় ১৫ জন সশস্ত্র সেনার- সবাই রিট্রিটের কথা বললেও সেই মানুষ শুনে নি,সে একাই এগিয়ে যায় এবং সম্মুখ সমরে নিহত হয়। হয়তো লোকজন সংগ্রহ করে পরে ফিরে আসলে সে ১৫ জনের সাথে উপযুক্ত ভাবে লড়তে পারতো। কিংবা এমনও হতে পারে তারা চলে যেতো। তার সে মুহূর্টের বিবেচনায় মনে হয়েছে মরলে মরলাম কিন্তু হাতের নাগালে শত্রুকে পেয়ে ভয়ে পিছু হটে যাবো এমনটা হবে না।
সে লোককে কেউ কেউ কেউ নির্বোধ বললেও আমার কাছে তাগে আবেগি একজন মনে হয়েছে।

তবে সবাই একটা বিষয়ে সংশয়বাদীতায় ভুগলে সে আদতে স্পষ্ট অবস্থান নিতে পারে না, যুদ্ধাপরাধীর বিচার বিষয়ে এমনটাই ঘটছে। কিন্তু মুহাম্মদ যে প্রেরিত পুরুষ এ বিষয়ে নিসংশয় বলেই এমন অযথা আচরণ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে সরকার।

আপত্তিকর লেখার বিষয়ে একটা কথাই বলতে পারি জনাব ইমরুল যখন ভেবেছিলো এই ইমরুলকে সস্তা ছন্দে ভীমরুল বানিয়ে তার উপরে কোপ মারছি আমি এবং এই ভাবনাটা মনে রেখেই যখন লেখাটা পড়বেন তখন ব্যক্তি আক্রমনের গল্প খুঁজতে তাকে নিজেকে অনেক স্থানে স্থাপন করতে হবে, হয়তো সুশীল হিসেবে সেসব সঙ্ঘ সে নিজেও মেনে চলে না। হয়তো সে শাহবাগী না হয়ে মিরপুরীও হতে পারে- সাহিত্যের রাজধানী এবং সাহিত্যের আলোচনা করবার জন্য যেকোনো স্থানই উপযুক্ত স্থান। ফ্লিম সোসাইটি আর ফ্লিম আপ্রিসিয়েশন কোর্স না করেও অনেকে ছবি দেখতে পারে এসবের জন্য কোনো বিশেষ বুৎপত্তির প্রয়োজনীয়তা আমি স্বীকার করি না। তাই নিজেকে উদ্ধার করতে না পেরে বেচারা বিভ্রান্ত এবং বেচারা আমার সাহায্য না চেয়ে জেবতিককে বেগতিক অনুরোধ করেছে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।

নিজেকে আবিস্কার করবার চেষ্টা না করে বরং লেখাটা খোলা মনে এবং শিরোনামের ছন্দটা ভুলে গিয়ে পড়ুন জনাব ইমরুল হাসান, সেখানে একটা সামাজিক পরিবেশের বর্ণনা আছে এবং বেশ কিছু পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক আচরণের বর্ণনা আছে- সেই সমাজের প্রেক্ষিতে আমার মনে হয়েছে এই সমাজে সেসব প্রচলিত মানুষ আছে তারা এ লেখায় আহা উহু করবার সময় আদতে তাদের মর্ষকাম চরিতার্থ করছে. এটা হয়তো সে মহিলার লেখার খুবই সস্তা একটা ফ্রয়েডীয় ব্যখ্যা।
তবে আমি এ ব্যাখ্যাটাকেই উপযুক্ত ভাবছি।
ধন্যবাদ হাসান হাসান, আপনি ভালোই হাসাতে পারেন।