২য় পর্যায়-

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: রবি, ০৭/০৯/২০০৮ - ৬:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মূলত পুরোনো লেখার সম্প্রসারণ এটা, বিকেলে যখন লিখছিলাম তখন লোড শেডিংয়ের খপ্পরে পড়ে হারিয়ে গেলো সবটাই, পুনরায় ভাবতে বসে দেখলাম তখন যা লিখেছিলাম এখন ঠিক সেই কথাগুলো আসলো না, তবে মূলত সমাজের পরিবর্তনশীল স্বত্তবাকে মেনে নিয়েই মার্ক্সবাদ প্রতিটা সমাজে প্রয়োগ করতে হবে এই অনুভাবনাটুকুই এ লেখার প্রধান বিবেচ্য, ব্যক্তিগত আক্রমনে বিষয়ে বক্তব্য এর আগের পোষ্টের মতোই।

সমাজ পরিবর্তনশীল এবং পরিবর্তনশীল সমাজের প্রেক্ষিতে মার্ক্সবাদ কখনই ওয়ান সাইজ ফিটস অল বিশ্লেষণ নয়, অভিজিৎ কিংবা সুবিনয় কিংবা অন্য যারা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ব্যর্থতাকে মার্ক্সবাদের প্রায়োগিক ব্যর্থতা হিসেবে মেনে নিতে নারাজ তার সম্ভবত পরিবর্তনশীলতাকে স্বাভাবিক গণ্য করতে রাজি না।

প্রতিটা সমাজের নিজস্ব সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ আছে, সমাজের এই নিজস্বতা নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই অভিজিৎএর। অন্তত মার্ক্সবাদী ঘারানায় সমাজ বিশ্লেষণের উপাদান হিসেবে অর্থনৈতিক সম্পর্কের সাথে পূঁজির সম্পর্কের সাথে সামাজিক , সাংস্কৃতিক এবং কৃষ্টিগত উপাদানগুলোও বিবেচনার বিষয় এটা অভিজিৎ মেনে নিতে গররাজী কেনো এটা আমার বোধগম্য না।

প্রতিটি সমাজ কাঠামো অনন্য, একটির সাথে অন্যটির সাংস্কৃতিক মিলমিশ নেই।সাংস্কৃতিক লেনদেন, সাংস্কৃতিক বিবর্তন শব্দগুলো অভিজিৎএর শব্দকোষে নেই, সমাজের পরিবর্তনশীল ধারনাটিকে নিজের ভেতরে ধারণ করতে না পারলে মার্ক্সবাদের প্রয়োগিকতা এবং প্রায়োগিক ভুলকে অনুধাবন করা কঠিন।

মূলত মার্ক্সবাদের অবৈজ্ঞানিকতা বিবেচনা করতে গিয়ে অভিজিৎ এবং তার সমস্বর মানুষেরা যে যুক্তিগুলোকে তাদের আলোচনার বিস্তারের ভিত্তি করেছেন, সবগুলোই মার্ক্সবাদের প্রয়োগিক দিক। মার্ক্সবাদ অবৈজ্ঞানিক কারণ এই মার্ক্সবাদ প্রয়োগ করে সাম্যবাদের উত্তরণের পথে রাশিয়া মানবতাবাদী রাষ্ট্র না হয়ে নিপীড়ক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।কেনো মার্ক্সবাদের প্রয়োগে একটি মানবতাবাদী রাষ্ট্র না হয়ে রাশিয়া ফ্যাসিবাদী, নিপীড়ক রাষ্ট্রে পরিণত হলো? এটা কি মার্ক্সবাদের অন্তর্গত ত্রুটি?

সামাজিক বিবর্তনের ধারাটা খেয়াল করতে অনুরোধ করবো, মার্ক্সবাদ মূলত সমাজ বিশ্লেষনের একটা কাঠামো, এই কাঠামোতে প্রতিটি সমাজের একটা বাস্তবতাকে তুলে ধরা হয়েছে, সমাজের স্বরূপ যেমনই হোক না কেনো, পরিশেষে একটা বাস্তবতাই মেনে নিতে হয়, সমাজে ক্ষমতা কেন্দ্রীভুত থাকে মূলত উচ্চবিত্তের হাতে, তারাই ক্ষমতা এবং সামাজিক চরিত্র নিয়ন্ত্রন করে। ক্ষমতাকেন্দ্রে এদের উপস্থিতি একটা বাস্তবতা।

পূঁজি ধারণ করে পূঁজিবাদি রাষ্ট্র মূলত এদের সংগঠিত করে এবং শক্তিশালী করে, সামাজিক ক্ষমতায়নের এই ঐক্যটুকু বাদ দিলে প্রতিটা সমাজই নিজস্ব সাংস্কৃতিক বিশিষ্ঠতায় অনন্য।

আমার দেশের সাথে নেপালের কিংবা ভুটানের সাংস্কৃতিক কাঠামো এবং মূল্যবোধের মিল নেই, এমন কি ১৯৮০ সালের বাংলাদেশের সমাজের সাথে ২০০৫ সালের বাংলাদেশের সমাজকাঠামোর মিল নেই, এই বিবর্তনটুকু অস্বীকার করে স্বেচ্ছা অন্ধত্ব মেনে নিয়ে মার্ক্সবাদকে ধর্মীয় একটা রুপ দেওয়ার বিরুদ্ধে অভিজিৎএর জবাব আশা করছিলাম।
অভিজিৎ অবশ্য এইসব রাস্তায় না হেঁটে অনেক জ্ঞানের কথা শুনিয়ে গেলেন, দেরিদা কি বললো, গ্রামস্কি, এডোর্নো, এলথুজার, ওয়াল্টার বেঞ্জামিন, হর্খেইমার কি বললো, তারা কি কখনও এমন অন্ধ উক্তি করেছেন সাংস্কৃতিক বিবেচনায় সবগুলো রাষ্ট্রই এক?

যদি সমাজের পরিবর্তনশীলতা বিদ্যমান থাকে তবে সমাজের পরিবর্তনের নিয়ামকগুলোও পরিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন মাত্রা ধারণ করবে। মার্ক্সবাদ পূঁজির সাথে মানুষের, মানুষের সাথে সমাজের এবং সামাজিক পরিবর্তনের ইতিহাসে পূঁজির অবস্থানকে চিহ্ণিত করবে শুধু, এখন এই বিশ্লেষণের পরিণতিতে যে সমাজ বিশ্লেষক সে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হবে এটা মার্ক্সবাদ কখনই নির্দিষ্ট করে দেয় না।

ধর্মের সাথে অনৈক্য এই অনির্দিষ্ট করবার ক্ষমতায়, মার্ক্সবাদ কখনই স্থির কোনো সমাজের অস্তিত্ব স্বীকার করে না, বরং সমাজের পরিবর্তনশীলতাকেই এর প্রাণ ধরে নেয়। প্রতিটা সামাজিক পরিবর্তনকে ব্যখ্যা করবার জন্য একটা কাঠামো দিয়ে দেয়,

১৯১৭ তে ফ্রেব্রুয়ারী মাসে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে যারা সামাজিক ক্ষমতায় আসলে জারকে উৎখাত করে তাদের সাথে লেলিনবাদি মানুষদের সমস্যা মুলত মেনে নেওয়ায়, সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিভাবে গঠিত হবে, কোনো কোন উপাদান থাকবে এটাতে এই নিয়ে বাদানুবাদের একটা পর্যায়ে যে ভাঙন দেখা যায় সেই ভাঙন আরও বেড়ে যায় সময়ের সাথে।

এখানে ব্যক্তির বিশ্লেষণ প্রাধান্য পায়, তাই মার্ক্সবাদী হয়েও লেলিন কিংবা স্টয়ালিন কিংবা ট্রটস্কি নিজস্ব নামে একটা রাষ্ট্র মতবাদ খাঁড়া করানোর সাহস পান, যেখানে রাষ্ট্র ও সমাজ বিশ্লেষণে মার্ক্সবাদী কাঠামো ব্যবহার করে লেলিনের অনুধাবন লিপিবদ্ধ।

তবে অভিজিৎ যখন সমাজের পরিবর্তনশীলতা স্বীকার করতে নারাজ তখন তার সাথে এই বিষয়ে কোনো কুতর্কে লিপ্ত হওয়া অনর্থক, লাইগেশন করা ছাগল দিয়ে ছাগুপালন কর্মসূচি চালানো সম্ভব না এই সত্য না বুঝলে সেখানে ছাগলের উৎপাদন বাড়বে এমনটা আশা করা ভুল।


মন্তব্য

অভিজিৎ এর ছবি

তবে অভিজিৎ যখন সমাজের পরিবর্তনশীলতা স্বীকার করতে নারাজ তখন তার সাথে এই বিষয়ে কোনো কুতর্কে লিপ্ত হওয়া অনর্থক, লাইগেশন করা ছাগল দিয়ে ছাগুপালন কর্মসূচি চালানো সম্ভব না এই সত্য না বুঝলে সেখানে ছাগলের উৎপাদন বাড়বে এমনটা আশা করা ভুল।

ভাই রাসেল, আপনার মাথা গরম হয়ে আছে। 'সমাজ পরিবর্তনশীলতা ' কেউ অস্বীকার করছে না, আমি পরিবর্তনশীলতা নিয়ে প্রশ্ন করি নি , আমি প্রশ্ন করেছি সমাজ পরিবর্তনের 'মার্ক্সীয়' ব্যাখা নিয়ে।

আপনার লেখায় আবেগ বেশি ডেটা কম। আর আমার লেখা যদি আপনে 'ছাগল দিয়ে ছাগুপালন কর্মসূচি'র সাথে তুলনা করেন তা হলে বলবার কিছু নেই। এধরণের বিশেষণ প্রয়োগ করা খুব সহজ, এ ধরনের বিশেষন প্রয়োগ করে 'আত্মতুষ্টি' লাভ করাও মনে হয় বেশ স্বাচ্ছন্দ্যকর, কিন্তু এগুলোর 'বিষয়ে কোনো কুতর্কে লিপ্ত হওয়া' কেন অনর্থক তা বোধ হয় নিজের লেখা দেখেই আপনার বুঝে নেওয়া উচিৎ।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

রাসেল এর ছবি

আপনার লেখাটা আপনার পুনরায় পাঠ করা প্রয়োজন বোধ হয়। মার্ক্সের সমাজবিশ্লেষণে ভ্রান্তি মার্ক্সবাদের ভ্রান্তি এই সমাধানে পৌঁছানোর মতো কোন তথ্যটি আপনার লেখায় আছে?
কিংবা মার্ক্সবাদ অবৈজ্ঞানিক এমন মতবাদ সমর্থন করবার মতো কোন উপাত্ত আপনার লেখায় বিদ্যমান?

মূলত সম্পূর্ণ লেখাটিতে মার্ক্সবাদের প্রয়োগিক ভ্রান্তির উদাহরণ ছড়ানো। আমি মার্ক্সবাদ প্রয়োগের ধাঁচটাকে প্রশ্ন করছি, সেটা আপনার লেখায় অনুপস্থিত, শুধুমাত্র গুলাগ, লেখকের স্বাধীনতা হরণ কিংবা সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের পতনের সাথে মার্ক্সবাদের সম্পৃক্ততা নয়, বরং মার্ক্সবাদ পুনরায় এই পতনের কারণ অনুসন্ধানে লিপ্ত হয়।

সোভিয়েট রাশিয়া পতনের কারণ বিশ্লেষণের সময়ও যেই কাঠামো ব্যবহৃত হয় সেটাও গঠনতান্ত্রিক ভাবে মার্ক্সীয়। এর বিপরীতে অন্য কোন মতবাদ কিংবা সমাজবিশ্লেষণ কাঠামো আছে যা বৈজ্ঞানিক এবং যা সফল ভাবে সমাজ বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছে?

বৈজ্ঞানিকতা সুসংবদ্ধ জ্ঞান, ভবিষ্যতবানী করবার ক্ষমতা একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, তবে অতীত বিশ্লেষণে সাফল্য এবং সীমিত পর্যায়ে পরিবর্তনের ধাঁচ অনুমাণ করবার সাফল্যও বৈজ্ঞানিকতার মানদন্ডে সঠিক বিবেচিত হয়।

যদি মার্ক্সবাদ অতীত বিশ্লেষণে ভ্রান্তির পরিচয় রাখে কিংবা এমন কোনো নতুন সমাজবিশ্লেষণ কাঠামো যা মার্ক্সীয় উপজাত না হয় বরং স্বয়ং সম্পূর্ণ এবং ভিন্ন একটা মতবাদ হয়, সেটা দিয়ে সামাজিক ঘাত-প্রতিঘাত এবং পরিবর্তনকে আরও সফল ভাবে ব্যখ্যা করা সম্ভবপর তবে মার্ক্সবাদীয় ভাবনা পরিত্যাজ্য হতে পারে।

মূলত মার্ক্সবাদের কাঠানো নিয়ে আলোচনা করতে চাইছি এবং এই কাঠানোর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করতে চাইছি,অনেক গৃহীত অনুসিদ্ধান্তই পরে গবেষকের ব্যর্থতায় ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে, আইনস্টাইন নিজেও নিজের মৌলবিশ্বাসে আকাশ পাতাল এক করে খুঁজেছেন কসমোলজিক্যাল কনস্টান্ট, এবং শেষ বয়েসে এসে এটা পরিত্যাগ করেছেন,

তবে সেই পরিত্যাজ্য কসমোলজিক্যাল ধ্রুবক কি অবৈজ্ঞানিক ধারণা হিসেবে উচ্ছিস্ট হয়েছে? পুনরায় এটাকে গ্রহন করে মহাবিশ্বের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কোনো মতই নিঃসংশয়ে পরিত্যাজ্য হয় না, গবেষণা আগাবে, মার্ক্সবাদের ব্যর্থতাগুলো খতিয়ে নতুন একটা সচেতন কাঠামো আসবে, সেটা আরও বেশী ব্যপক হবে এবং আরও সফল ভাবে সমাজবিশ্লেষণে সফল হবে।

আমার বক্তব্য এখানেই, বৈজ্ঞানিকতা না থাকলে নিজের ভেতরে এই পরিবর্তন ধারণ করতে পারতো না মার্ক্সবাদ, এবং সময়ের সাথে নিজেকে সমৃদ্ধ করবার ক্ষমতা ধারণ করতো না।

সমাজ পরিবর্তনশীল বলেই এর প্রায়োগিক ভুলগুলো এক্যুমুলেটিভ, ভুলের পর ভুল যোগ হতে থাকে, একটা পরিসমাপ্তিতে একটা ভুল অনুসিদ্ধান্তের কারণেই সমাজ বিশ্লেষণে একটা ভ্রান্তি তৈরি হয়, এবং একটা পর্যায়ে সমাজতন্ত্রের মক্কা ধ্বসে পড়ে, তাতে মার্ক্সবাদ অবৈজ্ঞানিক হয়ে যায় না, বরং আরও সচেতন অনুমাণ হলো, কোনো একটা অনুসিদ্ধান্তে ভুল ছিলো।

------------------------------------

আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।

------------------------------------

আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।

অভিজিৎ এর ছবি

আপনার লেখাটা আপনার পুনরায় পাঠ করা প্রয়োজন বোধ হয়।

পড়েন আরেকবার। আর আপ্নের আগের লেখাতেও আমি কিছু ব্যাখ্যা করছি। সেইটা পাইবেন এইখানে

আমার একটাই দাবী- আপ্নেও, বিজ্ঞান জানেন, আমিও একেবারে অজ্ঞ তা না। কাজেই কাউরে 'ছাগল' বিশেষনে আখ্যায়িত কইরা কিছু শুরু করলেই বিতর্কের আবেদন নষ্ট হয়। আমি আপ্নের লগে আলোচনা করতে প্রস্তুত, রাগারাগি না।
ভাল থাইকেন।



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

সমাজ পরিবর্তনশীল এবং পরিবর্তনশীল সমাজের প্রেক্ষিতে মার্ক্সবাদ কখনই ওয়ান সাইজ ফিটস অল বিশ্লেষণ নয়, অভিজিৎ কিংবা সুবিনয় কিংবা অন্য যারা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ব্যর্থতাকে মার্ক্সবাদের প্রায়োগিক ব্যর্থতা হিসেবে মেনে নিতে নারাজ তার সম্ভবত পরিবর্তনশীলতাকে স্বাভাবিক গণ্য করতে রাজি না।

একমত রাসেল।
.............................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সাজেদ এর ছবি

উদ্ধৃতি
সমাজ পরিবর্তনশীল এবং পরিবর্তনশীল সমাজের প্রেক্ষিতে মার্ক্সবাদ কখনই ওয়ান সাইজ ফিটস অল বিশ্লেষণ নয়, অভিজিৎ কিংবা সুবিনয় কিংবা অন্য যারা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ব্যর্থতাকে মার্ক্সবাদের প্রায়োগিক ব্যর্থতা হিসেবে মেনে নিতে নারাজ তার সম্ভবত পরিবর্তনশীলতাকে স্বাভাবিক গণ্য করতে রাজি না।

তার মানে কোন দর্শনের বার বার প্রায়োগিক ব্যর্থতা সেই দর্শনের দুর্বলতা হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে না?
মজা তো!

শিক্ষানবিস এর ছবি

আমার মত হচ্ছে, মার্ক্সবাদ দিয়ে সমাজ বা রাষ্ট্র চলতে পারে না। বর্তমানে অর্থনীতি ওবং সমাজবিজ্ঞান যে স্থানে দাড়িয়ে আছে তা দিয়েই বর্তমানের রাষ্ট্র ও সমাজ চলবে। তাই মার্ক্সবাদীরা যখন সেই উনবিংশ শতকের তত্ত্বকে মূল ধরে তার মাধ্যমে সমাজের পরিবর্তনশীলতা ও বর্তমানে সেই তত্ত্বের উপযোগীতা ব্যাখ্যা করতে চান তখন তার বিরোধিতা না করে উপায় নেই। এখানেই মার্ক্সবাদীদের সাথে ধার্মিকদের মিল। আমি মার্ক্সবাদীদের কথা বলেছি, মার্ক্সবাদের কথা বলিনি। কিন্তু এটা বোঝা প্রয়োজন যে, এঙ্গেল্‌সই বলে গেছেন, মূল কাজ হল সমাজকে পরিবর্তন করা। তাই মার্ক্সবাদ থেকে তার প্রয়োগ ও সমাজে তার অবদানকে আলাদা করার কোন উপায় নেই।

মোটকথা, মার্ক্সবাদ নিয়ে থাকলে হবে না, বর্তমান অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞানের মূল ধারা কোথায় আছে তা দেখতে হবে। এই অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞান অতীতে মার্ক্সবাদেরও পর্যালোচনা করে এসেছে। কিন্তু সে তা নিয়ে স্থির থাকেনি। তাই পরিবর্তন ইতোমধ্যে হয়ে গেছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।