যশোর রোড

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি
লিখেছেন সংসারে এক সন্ন্যাসী (তারিখ: সোম, ২৬/০১/২০০৯ - ১:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড (ইংরেজি ভাষায়: September on Jessore Road) বিখ্যাত মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ রচিত একটি কবিতা যা থেকে পরে গান করা হয়েছিল। কবিতার কয়েকটি লাইন এরকম:

“ Millions of souls nineteenseventyone
homeless on Jessore road under grey sun
A million are dead, the million who can
Walk toward Calcutta from East Pakistan

Taxi September along Jessore Road
Oxcart skeletons drag charcoal load
past watery fields thru rain flood ruts
Dung cakes on treetrunks, plastic-roof huts

Wet processions Families walk
Stunted boys big heads don't talk
Look bony skulls & silent round eyes
Starving black angels in human disguise”

অ্যালেন গিন্সবার্গ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ দিকে ভারতের কলকাতায় এসেছিলেন। কলকাতার বেশ কয়েকজন সাহিত্যিকের সাথে তার বন্ধুত্ব ছিল যার মধ্যে একজন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি সুনীলের বাড়িতেই উঠেছিলেন। তখন বাংলাদেশ থেকে অনেক শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গ ও সীমান্তবর্তী অন্যান্য শহরে আশ্রয় নিয়েছিল। ব্রিটিশ রাজের সময় পূর্ব বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের সংযোগকারী সড়ক হিসেবে কাজ করতো "যশোর রোড"। অনেক বৃষ্টি হওয়ায় তখন যশোর রোড পানিতে ডুবে গিয়েছিল। সড়ক পথে না পেরে গিন্সবার্গ অবশেষে নৌকায় করে বনগাঁ পেরিয়ে বাংলাদেশের যশোর সীমান্তে পৌঁছেন। তার সাথে সুনীলও ছিলেন। তারা যশোর সীমান্ত ও এর আশপাশের শিবিরগুলোতে বসবাসকারী শরণার্থীদের দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেন।

তথ্যসূত্র: উইকিপেডিয়া

কবিতাটির বাংলা ভাবানুবাদ, খুব সম্ভব, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের।


যশোর রোড

মূল রচনা: অ্যালেন গিন্সবার্গ
সুর:
শিল্পী: মৌসুমি ভৌমিক

শত শত চোখ আকাশটা দেখে
শত শত শত মানুষের দল
যশোর রোডের দু-ধারে বসত
বাঁশের ছাউনি, কাদামাটি জল

কাদামাটি মাখা মানুষের দল
গাদাগাদি হয়ে আকাশটা দেখে
আকাশে বসত মরা ঈশ্বর
নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে

ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে
যুদ্ধে ছিন্ন ঘরবাড়ি দেশ
মাথার ভিতরে বোমারু বিমান
এই কালো রাত কবে হবে শেষ

শত শত মুখ হায় একাত্তর
যশোর রোড যে কত কথা বলে
এত মরা মুখ আধ মরা পায়ে
পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে

সময় চলেছে রাজপথ ধরে
যশোর রোডেতে মানুষ মিছিল
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর
গরুগাড়ি কাদা রাস্তা পিছিল

লক্ষ মানুষ ভাত চেয়ে মরে
লক্ষ মানুষ শোকে ভেসে যায়
ঘরহীন ভাসে শত শত লোক
লক্ষ জননী পাগলের প্রায়

রিফিউজি ঘরে খিদে পাওয়া শিশু
পেটগুলো সব ফুলে ফেঁপে ওঠে
এইটুকু শিশু এতবড় চোখ
দিশেহারা মা কার কাছে ছোটে

সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর
এতো এতো শুধু মানুষের মুখ
যুদ্ধ মৃত্যু তবুও স্বপ্ন
ফসলের মাঠে ফেলে আসা সুখ

কার কাছে বলি ভাত রুটি কথা
কাকে বলি কর কর কর ত্রাণ
কাকে বলি ওগো মৃত্যু থামাও
মরে যাওয়া বুকে এনে দাও প্রাণ

কাঁদো কাঁদো তুমি মানুষের দল
তোমার শরীর ক্ষত দিয়ে ঢাকা
জননীর কোলে আধপেটা শিশু
এ কেমন বাঁচা, বেঁচে মরে থাকা

ছোট ছোট তুমি মানুষের দল
তোমার ঘরেও মৃত্যুর ছায়া
গুলিতে ছিন্ন দেহ-মন-মাটি
ঘর ছেড়েছো তো মাটি মিছে মায়া

সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর
ঘর ভেঙ্গে গেছে যুদ্ধের ঝড়ে
যশোর রোডের দু'ধারে মানুষ
এত এত লোক শুধু কেন মরে

শত শত চোখ আকাশটা দেখে
শত শত শত শিশু মরে গেল
যশোর রোডের যুদ্ধক্ষেত্রে
ছেঁড়া সংসার সব এলোমেলো

কাদামাটি মাখা মানুষের দল
গাদাগাদি হয়ে আকাশটা দেখে
আকাশে বসত মরা ঈশ্বর
নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে

ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে
যুদ্ধে ছিন্ন ঘর-বাড়ী-দেশ
মাথার ভিতরে বোমারু বিমান
এই কালো রাত কবে হবে শেষ

শত শত মুখ হায় একাত্তর
যশোর রোড যে কত কথা বলে
এত মরা মুখ আধ মরা পায়ে
পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে

এত মরা মুখ আধ মরা পায়ে
পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে

Mousumi Bhowmik - ...

ইউটিউবে একটি মর্মস্পর্শী ভিডিও আছে গানটির।


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এই গানটা একদম অন্তর ধরে টান মার...

সজারু এর ছবি

হে: হে: আমার কাছে স্বয়ং অ্যালেন গিন্সবার্গের নিজের আবৃত্তিটাই আছে।
কয়দিন পরে আপলোডামুনে।
_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আহ!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

দৃশা এর ছবি

চলুক
======================
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।