তিতাস কোন নদীর নাম নয় - শেষ পর্ব

শ্যাজা এর ছবি
লিখেছেন শ্যাজা (তারিখ: মঙ্গল, ১০/০৭/২০০৭ - ১২:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

-5-


তাঁকে ডেকে এনে এখন এই শীতের শেষ রাতে
হাল্কা অন্ধকারের পোষকে মুখোমুখি বসিয়ে রেখে
আমার সবিনয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটাতে ইচ্ছা করছে৷
আচ্ছা বলুন তো: আপনার কাছ থেকে জীবন বেশি
গ্রহণ করেছে, না আপনি? কনফিউজ করে থাকলে
আমি ব্যাপারটা স্পষ্ট করছি- এই ধরুন আপনি সারা
জীবন আত্মা খরচ করে, দৈহিক শ্রম দিয়ে যে বাসনা
নির্মাণ করে পেছনে ফেলে ছলে গিয়েছিলেন- তার কতটুকু
আপনি ফেরত্ পেয়েছেন, আদৌ পেয়েছেন কি?
আপনি নতুন বাড়ির কতটুকু কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন?
( ঋত্বিক ঘটক শ্রদ্ধাস্পদেষু/ফিউরি খন্দকার; চিত্রালী 20 ফেব্রুয়ারী, 1976)

দাদাজি হজ্বে চলে গেলেন ৷ আমরা সবাই ঢাকায় গেলাম দাদাজিকে প্লেনে তুলে দিতে৷ চল্লিশ দিনের জন্যে দাদাজি যাচ্ছেন তাই আত্মীয় স্বজন যে যেখানে আছে সবাই এসে দেখা করে গেল দাদাজির সাথে৷ ঢাকায় যাওয়ার আগের দিন সবাইকে দাওয়াৎ করে খাওয়ানো হল৷ আমাদের পাড়ার সবাই এসেছিলো সেই দাওয়াৎএ৷ বাংলা উঠানে শামিয়ানা টাঙিয়ে পুরুষদের বসার ব্যবস্থা আর ভিতর বাড়ির উঠানে মেয়েদের৷ পাড়ার লোক ছাড়াও এল গ্রামের লোক, প্রতি বাড়ি থেকে দুজনকে আসতে বলে এসেছিল বড়কাকা৷ আর ছিল গরীব ভিখিরিরা৷ বাড়ি থেকে বেরুনোর আগে দাদাজি বড় মৌলভি সাহেবের ক্কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরব প্রার্থনা করে গেলেন, আমাদের বাড়ির সব পুরুষেরা আর যারা এসেছিল বিদায় দিতে তাঁরাও যোগ দিলেন সেই প্রার্থনায়৷ বাড়ির সব মেয়েদের সাথে আমিও জানলায় দাঁড়িয়ে দেখলাম সেই প্রার্থনা৷ আর তারপর সবাই মিলে খাল পার করে গাড়িতে তুলে দিয়ে এল দাদাজিকে৷ দাদাজি এখন এক সপ্তাহ থাকবেন ঢাকার হাজী ক্যাম্পে, তারপরে প্লেন ধরে যাবেন হজ্বে ৷ এই ক্যাম্পে সারা দেশ থেকে হজ্জ্বযাত্রীরা এসে জমায়েত হন, নিজেদের মধ্যে আলাপ পরিচয় করেন ৷

ঘুমের মতন নীরবে নদী
যায়, বয়ে যায়৷ ৷

এবাড়িতে প্রতিবছর মহররমে খিচুড়ি রাঁধা হয় বড় বড় সব হাড়িতে৷ রান্নাঘরে প্রচন্ড দ্রুততায় কাজ করে চলেছে আহাদালির মা বুবু, হাসিনার মা বুবু ও তার মেয়ে হাসিনা৷ তিনমুখো চুলোয় রান্না হচ্ছে একসাথে তিন হাড়ি খিচুড়ি, কাকিমা ঘুরে গেল রান্নাঘর৷ বাইরে সে মুর্গী কাটার তদারকি করছে৷ এবছর মহররমে স্পেশাল থাকছে খিচুড়ির সাথে ভুনা মুর্গীর গোশত৷ আজ আমাদের বাংলা উঠোনের শেষ মাথায় পুকুরের পুবপার ঘেঁষে স্থাপন করা হবে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর ৷ দাদাজি বলেন, "নেও' গাড়া হবে৷ রেজিষ্টি অফিসে গিয়ে দাদাজি বাংলা উঠোনের আর্ধেকটা ওয়াকফ করে দিয়েছেন৷ এই উঠোনে আর কারো কোন অধিকার থাকল না৷ এখানে মসজিদ হবে, আজ সেই মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হবে ৷ বাড়িভর্তি লোকজন ৷ মসজিদের "নেও' গাড়া হবে বলে দাওয়াত্ পেয়ে সবাই এসেছে ৷ আমিও এসেছি শ্বশুরবাড়ি থেকে ৷ বড়কাকা গিয়ে বলে এসেছিলেন আমার শ্বশুরবাড়িতে, শাশুড়ি আসতে পারেননি, আমি আর আমার স্বামী এসেছি৷ প্রতি বছরই এবাড়িতে মহররমের দিনে খিচুড়ি রান্না হয় বড় বড় সব হাড়িতে, সেদিন বাড়িতে সবার অবারিত দ্বার৷ পাড়া-পড়শী, ফকির-মিসকিন,বাড়ির লোক, সবাই একই খাবার খায়,খিচুড়ি৷ ছোলার ডাল, আলু আর ক্ষেতের আলোচাল দিয়ে রান্না খিচুড়ি৷ দাদি উপর থেকে নামান তুলে রাখা ডজন ডজন মেলামাইনের বাসন৷ নজুচাচা সেগুলো বড় প্লাষ্টিকের গামলায় করে নিয়ে যায় পুকুরে৷ ধুয়ে নিয়ে চলে যাবে সোজা বাংলা উঠোনে৷ সেখানেই খাওয়ানো হবে ফকির মিসকিন আর অতিথিদের৷ একই রকম সব থালায় একই খাবার খাবে সবাই আজকের দিনে৷ আজ স্পেশাল মেনু হিসেবে মুর্গী আছে৷ দাদাজী সাদা কাজ করা পাআবী আর ছোট ছোট চেকের লুঙ্গি পরে বসে আছেন বাংলা ঘরের বারান্দায় তার হাতলওয়ালা কাঠের চেয়ারটিতে৷ সামনে ওঠোনে শামিয়ানা টাঙানো হয়েছে, সেখানে আছে বাজারের ডেকরেটারের দোকান থেকে আনা কয়েক ডজন প্লাষ্টিকের চেয়ার৷ অতিথিরা আসছেন, দাদাজীর সাথে এসে কথা বলে গিয়ে বসছেন সামনে পেতে রাখা সব চেয়ারে৷ আমি মাঝে মাঝেই দাদির ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে বাংলা উঠোনের দিকে দেখছি৷ চোখে পড়ছে বসে থাকা অতিথিরা নিজেদের মধ্যেই কথা বলছেন, নজু চাচা ব্যস-সমস্ত হয়ে একবার বাংলা উঠোন তো আরেকবার ভেতর বাড়ি করছে৷ দাদাজী মুখে এক উজ্জ্বল হাসি নিয়ে তার পুরনো কাঠের হাতলওয়ালা চেয়ারটিতে বসে বসেই তদারক করছেন সবকিছু৷ রাজমিস্ত্রী বুড়ো করিম আর আলি হোসেন৷ খানিক পরেই জুম্মার নামাজ আর তারপরে দাদাজী নিজের হাতে রাখবেন মসজিদের প্রথম ইটটি৷ দেবেন একমুঠো বালি আর এক হাতা মাখানো সিমেন্ট৷ দাদাজী তার স্বপ্নের মসজিদের আজ "নেউ' গাড়বেন ৷

দু'কূলে তার বৃক্ষেরা সব
জেগে আছে;
গৃহস্তের ঘর-বাড়ি
ঘুমিয়ে গেছে,-
শুধু পরান মাঝি বসে আছে
শেষ খেয়ার আশায় ৷
যায়, বয়ে যায়৷৷

জলেখাবিবির বাগে এখন আর মেলা বসে না৷ জলেখা বিবির মৃত্যুর পর তার ছেলে মেয়েরা সম্পত্তি ভাগাভাগি করার সময় এই বাগ নিয়ে সমস্যা হয়, কে পাবে এই বাগ৷ কেউই দাবী ছাড়তে রাজী না হওয়াতে বাগ বিক্রী কিরে দেওয়াই সাব্যস্ত হয় ৷ সেই বাগ কিনে নিয়ে সেখানে এক নতুন মাদ্রাসা শুরু করে বাবা ও বড়কাকা৷ অল্প খানিকটা জায়গায় একখানা টিনের ঘর তুলে এবছরই সেখানে চালু হয় এক লোয়ার মাদ্রাসা ৷ প্রথম বছরে তাতে ছাত্র হয়েছে বত্রিশজন, এদের প্রয়োজনীয় খাতা পেন্সিল বই দেওয়া হয় মাদ্রাসার তরফ থেকে৷ সামনের বছর এরা যখন পাশ করে দ্বিতীয় শ্রেনীতে যাবে ততদিনে তোলা হবে আরেকটি ঘর আর ভর্তি নেওয়া হবে নতুন ছাত্র প্রথম শ্রেনীতে৷ সেই মাদ্রাসার শিক্ষক এসেছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে ৷ তিনি এবাড়িতেই থাকেন, খান আর মাদ্রাসায় পড়ান ৷ মাঝেই মাঝেই বড়কাকা ঐ বাচ্চাগুলোর জন্যে চকোলেট নিয়ে হাজি হন মাদ্রাসায়, ঘুরে ফিরে কথা বলেন ছোট ছোট ছেলেগুলির সাথে ৷ কেউ বা নালিশ জানায়, হুজুরে খালি মারে, বেত দিয়া! কাকা মাদ্রাসার শিক্ষককে, নিষেধ করেন ওদের বেত দিয়ে না মারতে ৷

কে জানে কবে কে নাম রেখেছে
তিতাস তোমার;
যে নামেই ডাকি তোমায়
তুমি কন্যা মেঘনার৷

বিজলীবাতি এসেছে শাহবাজপুরে ৷ তবে আমাদের তিতাসের জলবিদ্যুত্ কারখানা "ওয়াব্দা'র বিজলী নয়৷ বিজলী এসেছে দূরের শাহজীরবাজার পল্লী বিদ্যুত্ কারখানা থেকে৷ সেটি নাকি অনেক বড় আর সেই পল্লীবিদ্যুত্ কারখানার বিজলী পৌঁছে গেছে আশে পাশের সমস্ত গ্রামে এমনকি সেই মেদীর হাওর পর্যন্ত যত গ্রাম আছে তার সবকটিতেই৷ ফলে আমাদের তিতাসের এই জলবিদ্যুত্ কারখানা ওয়াব্দা এখন আর কোন কাজে লাগছে না ৷ কিছু লোক এখনও আছে সেখানে, যারা দেখাশোনা করে এই এলাকার বিদ্যুত্ পরিষেবা ৷ গ্রামের কোথায় ঝড়ে খুঁটি ওল্টালো, কোথায় তার ছিঁড়ল৷ মাঝে মাঝে লোকজন দূর থেকে গাড়ি করে আসে ওয়াব্দায় পিকনিক করতে৷ তিতাসের পুরনো ব্রীজ ভেঙে নতুন ব্রীজ হয়েছে ৷ এ ব্রীজ আরও বড়, আরও চওড়া৷ নতুন ব্রীজের উপর থেকে এখন ওয়াব্দাকে দেখলে মনে হয় যেন ছাড়া (পোড়ো) বাড়ি৷ সেই বাগান নেই,ঝা চকচকে সেই বিল্ডিং পুরনো হয়ে হয়েছে জরাজীর্ন, দেখাশোনার অভাবে ৷

ঘুমের মতন নীরবে নদী
যায়, বয়ে যায়৷৷

একতলা পাকাবাড়ির ছাদের উপর দাঁড়িয়ে আছে এক গোলাকার থাম৷ বেশ উঁচু সেই থামের মাথায় জালি দিয়ে ঘেরা দুখানা মাইক৷ মসজিদের মাইক৷ পাঁচবেলা আজান দেয় শামসুল, নজুচাচার ছেলে৷ উত্তরগাঁওয়ের নতুন প্রাইমারী স্কুলে সে পড়ায়৷ নিয়ম করে মসজিদে এসে পাঁচবেলা আজান দেয় শামসুল৷ সুমধুর সেই আজানের ধ্বনি সেই মাইকের ভেতর দিয়ে চলে যায় অনেকটা দূর অব্দি৷ মসজিদের একপাশে ছোট্ট এক ঘর, যাতে থাকেন মসজিদের ইমাম, জসিম হুজুর৷ পাশ করে মাদ্রাসা থেকে বেরুনোর পরেও জসিম হুজুর এবাড়ি থেকে চলে যায়নি৷ মসজিদের ইমাম হিসেবে তাকে চাকরী দিয়ে এবাড়িতেই রেখে দিয়েছেন দাদাজী৷ আছে অরেকটি ছেলে, রফিক৷ যে এবাড়িতে থেকে বাজারের হাই মাদ্রাসায় পড়ে, তার তিনবেলা খাওয়া দাওয়া এবাড়িতেই৷ জসিম হুজুর সকাল বেলায় মসজিদের গ্রীল দিয়ে ঘেরা বারান্দায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আরবী পড়ায়৷ এর জন্যে জসিম হুজুর আলাদা মাইনে পান৷ জসিম হুজুর মাঝে মাঝে ছুটিতে বাড়ি গেলে তখন রফিক মুন্সি নামাজ পড়ায়৷

মোষের মতন কালো সাঁঝ
নামে তীরে;
আবহমান উলুধ্বনি
বাজে ঘরে ঘরে,-
পোহালে রাত ফর্সা ভোর
আসে নদীর নামায়৷
যায়, বয়ে যায়৷৷

আমাদের বাড়িতে মসজিদ হওয়ার পর থেকে বিয়ে শাদীতে কিংবা কোন অনুষ্ঠানে জোরে গান বাজনা করতে দেন না দাদাজী, মসজিদ থেকে শোনা যায় বলে৷ বাড়ির মেয়েরা তবু দাদিকে পটিয়ে গীতের আসর বসায়, দাদি বলে, বেশি জোরে সুর তুলিস না, মসজিদ থেইক্যা যেমুন না হুনা যায়! গোল হয়ে বসে এখনও গীত গায় মেয়ে বউরা, কিন্তু সে যেন বড় ভয়ে ভয়ে৷ বড় মৌলভী সাহেবের এই বাড়িতে একটা ধর্মীয় আবহ বরাবরই ছিল কিন্তু এখন যেন সেটা বড় বেশি বেশি চেপে বসছে মানুষের উপরে৷ সামনের বাড়ির নজরুল ইসলামের ছোট ভাই কালা বিয়ে করে সংসারী হয়েছে ৷ করাত কলে চাকরী নিয়ে সে চলে গেছে শহরে৷ তার বাবা মুসা পাগলার ভাঙা বেড়ার ঘর ফেলে দিয়ে সেখানে দেওয়ালের উপর টিনের চাল দিয়ে তোলা নতুন ঘরে থাকে তার বৌ৷ সপ্তাহান্তের ছুটির দিনে বাড়ি এলেও এখন সে বাড়িতে আর মুর্শিদি গান হয় না৷ আমাদের খালের উপর পাকা পুলে ছেলে ছোকরাদের আড্ডা বসে বিকেলে ৷ ছোট্ট পুলের রেলিংএ বসে ছেলের দল মোড়ের দোকান থেকে কিনে আনা ছোলাভাজা, বাদামভাজা খায় ৷ কেউ কেউ এদিক ওদিক তাকিয়ে চট করে ধরায় একটা ক্যাপষ্টেন, তরপর সেটা হাতে হাতে ঘোরে৷ কেউ দেখে ফেলার আগেই উড়ে যায় ধোঁয়া৷ বড় পুল হয়েছে মোড়াহাটির সামনে ৷ এখন আর কোন বুড়ো মানুষকে অপেক্ষা করতে হয় না, কখন কোন দয়ালু মাঝি পার করে দেবে এই খালটুকু৷ মোড়ে, যেখানে এই বড় মৌলভি পাড়ার রাস্তা আর মোড়াহাটির রাস্তা এসে এক জায়গায় মিশেছে সেখানে হয়েছে এক ছোট্ট বাজার, মৌলবীবাজার৷ মোস্তাক ডাক্তারের চেম্বার কাম ডিসপেন্সারি সহ এই বাজারে পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী৷ আর হয়েছে এক চালকল৷ এখন আর উত্তরগাঁওয়ের কাওকে সি এন্ড বি বাজারে যেতে হয় না ধান ভাঙাতে৷ দৃশ্যত এই বড় মৌলভীবাড়ির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি শুধু বড় মৌলভী সাহেবের ঐ বাঁধানো কবরের সামনের নতুন দুটি কবর ছাড়া ৷ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা কবরদুটি আমার দাদাজী আর দাদির ৷

-শেষ-


মন্তব্য

??? এর ছবি

ডেফিনিটলি, আমি চাইবো এই লেখা আরো দীর্ঘ হোক। মেমোরি বিইং কনট্রাস্টেড উইদ রিডিং এক্সপেরিয়েন্সেস! সাথে মূল্যবান রিসোর্স হল আপনার অর‌্যাল লিটারেচার-এর ব্যবহার। খুব ভালো কাজ এটা। আগের পর্বে সম্ভবত শক্তি-র একটা উদ্ধৃতিও ছিল। আপনার লেখা "আবহমানকাল"এর অসীম রায় কে মনে করিয়ে দেয়।

শ্যাজা এর ছবি

সুমন,
ধন্যবাদ লেখাটা পুরো পড়ে সাথে সাথে নিজের মন্তব্যও করার জন্যে।
একটা সময়ে আমারও মনে হয়েছিল, এ আরেকটু বড় হত। লিখতে পারলে হয়তো বেশ বড়ই হত। লিখতে গিয়ে কিছু সমস্যা আমার হয়েছিল। শুরু করে মাঝখান অব্দি খুব দ্রুতই এগিয়েছিলাম কিন্তু তারপরে কিভাবে শেষ করবো, কোথায় গিয়ে থামব বুঝতে পারছিলাম না। কিছুদিন জাষ্ট ফেলে রেখে দিয়ে একটু ভাবনা চিন্তা করে আবার শুরু করি আর শেষও করি। আমার উদ্দেশ্য ছিল এটাকে ছোটগল্পের আকারেই ধরে রাখা। শেষের দিকে তাই একটু তাড়াহুড়ো করে শেষ করেছি এটা আমি নিজেও জানি।

এটা নিজেরও একটি প্রিয় লেখা। পরে হয়তো কোনদিন আবার বসব এটা নিয়ে। নাও বসতে পারি।
আবারও ধন্যবাদ।

ইমরুল,
হ্যাঁ। এটা এক জনপদের আখ্যানই বটে। খুব বেশি ভাবনা চিন্তা করে লিখতে বাসিওনি। শারদ সাংখয়ায় ছাপবে বলে এক বন্ধু লেখে চেয়ে চেয়ে তাড়া দিচ্ছিলো আর এই প্লটটাও মাথায় ঘুরছিলো। লিখে ফেললাম। খুব বেশি ভাবনা চিন্তা করে লেখা নয়। এখন যখন এই লেখাটা পড়ি, তখন মনে হয়, আরো একটু মনযোগ প্রত্যাশী ছিল চরিত্রগুলো, ঘটনাগুলো।
যাই হোক। যা হয়েছে, যেটুকু হয়েছে টা এখানে। কারো কারো ভাল লেগেছে এটাই প্রপ্তি।
ধন্যবাদ।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

নজমুল আলবাব এর ছবি

শুরু করেছিলাম দ্বিতীয় পর্ব দিয়ে। তারপর পেছনে গিয়ে সামনে হাটা।
আমি এলেবেলে পাঠক শ্রেনীর মানুষ। কঠিন কিংবা বিস্বাদ বস্তু গিলার কোন দায় আমার নাই। এই রচনা আমি পড়েছি। ভালো লেগেছে। এক পর্ব পড়ে পরের পর্বের দিকে দৌড় দেয়ার ইচ্ছা হয়েছে।
একজন সাধারন পাঠকের অনুভূতি জানানো হল। যে এমন আরও মানুষের কথা পড়তে চায়।

অমিত আহমেদ এর ছবি

একে একে বলি:

১) কোন লেখা পোস্ট করার পরপরই হিট না পড়ার অনেক কারন থাকতে পারে। আমার যদ্দুর মনে পড়ে সে সময়টা ব্লগাররা অন্য আলোচনায় (তর্কও বলতে পারেন) ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু যাদের পড়ার তাঁরা ফিরে এসে কিন্তু পড়বেন ঠিকই। এখন হিট দেখুন, কমেন্ট দেখুন, পাঠক কিন্তু আপনার কম নয়। আমার কথা বলি, আপনার পোস্ট দেখেই আমি পড়িনি। কারন প্রথমত আপনার লেখার ধরনের সাথে আমি পরিচিত। এটা হুমায়ুন আহমেদ না যে এক উপন্যাস আধা ঘন্টায় শেষ। আপনার লেখায় চিন্তার খোরাক থাকে, চেনা ছবিকে অন্য চোখে দেখার উদ্দিপনা জাগে। তাই আমি সময় ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই আপনার লেখা পড়তে চাইব। এছাড়া সে সময় আমি লেখাপড়া নিয়ে একটু ব্যস্তও ছিলাম। সে যাই হোক, শাপে বর হয়েছে, পুরোটা একসাথে পড়ার সুযোগ পেয়েছি।

২)সবাই বলছেন লেখাটা বড় করতে কিন্তু আমার মতে এটাই ঠিক আছে। এই যে পড়ে মনে হচ্ছে আরেকটু হলে ভালো হত, এটাই আপনার গল্পটার স্বার্থকতা। এই কারনেই আরও ভাবতে ইচ্ছে করে, কার কি হলো পাঠক হিসেবে আমার রং চড়াবার সুযোগটা থেকে যায়। লেখাটা এরচয়ে বড় হলেও হয়তো মন্দ হতো না আপনার লেখনীর জোরে, কিন্তু লেখাটা ছোট বলে খোরাকী যোগাত এক বিন্দু ব্যর্থ নয়।

৩) আমার মতে লেখাটার সাথে একটা টাইমলাইন দিলে ভালো হতো। কতদিন আগে, কতদিন পরে, এই জিনিস গুলো একটু বিভ্রান্ত করেছে।

আপনার লেখা যতবারই পড়ি ঈর্শা হয়। তাই আপনার নগন্য মুগ্ধ পাঠক হিসেবে বেশ বড় করেই কমেন্ট করে ফেললাম।

ধন্যবাদ!

(সব লেখাই ৫ পাবার যোগ্য)


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

কারুবাসনা এর ছবি

লিখছ না?


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।

শ্যাজা এর ছবি

ইমরুল,
একটু ধীরে সুস্থে লিখছি। এক অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, কিছুতেই মন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এই লেখায় আরো যাঁরা মন্তব্য করেছেন তাঁদেরকেও উত্তর দেওয়া হয়নি। পরে লিখছি।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

বিপ্লব রহমান এর ছবি

দিদি,

সামহোয়ারিনে তো বটেই সচলায়তনেও আপনার তিতাস পর্বগুলো খুব মুগ্ধতা নিয়ে পড়ি। কিন্তু আমার প্রিয় পর্বটি এখনই শেষ করে দিলেন!


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

শ্যাজা এর ছবি

বিপ্লব,
শেষ তো হতই এক সময় না একসময়...

পরে হয়তো আবার কোন এক সময় বসব এই লেখাটা নিয়ে। নাও বসতে পারি অবশ্য।

আপনাকে ধন্যবাদ।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।