এল এন জি - ১

দুর্দান্ত এর ছবি
লিখেছেন দুর্দান্ত (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০৪/২০১৯ - ৯:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গ্যাসের চুলা ঢাকাবাসীর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ । রান্নাঘরের এই নীল শিখা ঢাকাসহ বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের খাবার রান্নাই শুধু করেনা, কলকারখানা চালিয়ে সার বানিয়ে দেশের প্রবৃদ্ধির একটি বিশাল চালিকা শক্তি এই গ্যাস

আগে পাইপ দিয়ে সিলেট বা কুমিল্লার মাটির তলা থেকে গ্যাস আসতো আগে। নানাবিধ কারনে ঐ গ্যাসের সরবহার কমে গেছে। নতুন বিজলীকলগুলো তেল, কয়লা, পারমানবিক শক্তির দিকে ঝুকছে। সেই সাথে আমরা শুনছি এল এন জি বা তরলায়িত গ্যাসের কথা

প্রাকৃতিক গ্যাসকে হীমাঙ্কের নিচে ১৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ঠান্ডা করা হলে সেটা তরল হয়ে যায়। তখন তাকে জাহাজে করে এক দেশ থেকে আরেক দেশে নিয়ে বিক্রি করা যায়। আফ্রিকা মধ্যপ্রাচ্য আর আমেরিকা এভাবে জাহাজে করা তাদের উদ্বৃত্য গ্যাস রপ্তানী করে থাকে

৭০ এর দশকে এল এন জি কেনাবেচা শুরু হলেও মূলত ২০০১-১০ এর অর্থনৈতিক উত্তাল আবর্তে এল এন জির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। তদুপরি পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের কদর থাকায় জাপান কোরিয়া আর ইউরোপ গ্যাসের দিকে আরো ঝুকে পড়ে। বড় বড় তেল কম্পানিগুলোও ক্রমে তেলের বদলে গ্যাসে বিনীয়োগ বাড়ায়

২০১৮ সালে দুনিয়ার ১৯টি দেশে মোট ৪৫০ মিলিয়ন টন এল এন জি সরবরাহ করার ব্যাবস্থা আছে যার মাঝে কাতার, অস্ট্রেলিয়া, মালয়শিয়া বড় রপ্তানিকারক হিসাবে পরিচিত। খুব শিঘ্রিই অবশ্য এই দলে আমেরিকা যোগ দিচ্ছে তাদের নতুন পাওয়া Shale গ্যাস ক্ষেত্রগুলো থেকে

বাংলদেশে এল এন জি ব্যাপারে আগ্রহ শুরু হয় এই দশকের গোড়ার দিকে। সিলেট থেকে সরবরাহ কমে যাবার ব্যাপারটা ততদিনে মোটামুটি নিশ্চিত। ২০১৬ সালে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ নীতির আওতায় আমেরিকার একসেলারেট কোম্পানির সাথে ১৫ বছরের একটি চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। এর মাধ্যমে এক্সেলারেট চট্টগ্রামের মহেশখালীতে একটি এল এন জি রিগ্যাসিফিকেশন জাহাজ (৩.৮ মিলিয়ন টন) স্থাপন করে, এবং এরই মধ্যে থেকে কিনে আনা গ্যাস সরবরাহ শুরু করে

শোনা যাচ্ছে এক্সেলারেট কোম্পানি মহেশখালী তে, আরও একটি সমমানের রিগ্যাসিফিকেশন জাহাজ বসিয়ে ২০১৯ সাল থেকে আরও গ্যাস সরবরাহ করবে। ২০১৭ সালে ভারতের রিলায়েন্স এর সাথে স্থলভিত্তিক আরেকটি চুক্তি হয়। এর পর একে একে আরও কয়েকটি গ্যাস আমদানি ও রিগ্যাসিফিকেশন প্লান্ট বসানোর চুক্তি হয়ে গেছে

চলমান প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে ২০২৫ সাল নাগাদ ১০ আর ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে প্রায় ১৫ মিলিওন টন এল এন জির দরকার হবে। সেই অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত যোগাড় হয়ছে মাত্র ৬ মিলিওন টন। দেখা যাক সামনে নতুন নতুন আর কি ঘটে বাংলাদেশের এল এন জির বাজারে


মন্তব্য

মেঘলা মানুষ এর ছবি

সামনের দিন‌গুলোতে এটাই ভরসা হবে বলে দেখা যাচ্ছে। এবিষয়ে কিছুই জানতাম না, লেখা পড়ে তাও কিছু ধারণা পাওয়া গেল।

মূল্যের তুলনামূলক চিত্রটা পেলে আরও ভালো লাগতো।

শুভেচ্ছা হাসি

এক লহমা এর ছবি

এল এন জি নিয়ে যে এইরকম ধুন্ধুমার চলছে জানা ছিল না। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।