কার্বন যুগ : অধ্যায় ১ (বাকিটুকু)

ফারুক হাসান এর ছবি
লিখেছেন ফারুক হাসান (তারিখ: শুক্র, ১৭/০৬/২০১১ - ১:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অধ্যায় ১ (প্রথম অংশ, দ্বিতীয় অংশ)

ক্যালটেকের প্রয়াত পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান একবার বলেছিলেন, দুনিয়ার সকল জ্ঞান ধ্বংস হলেও যে বৈজ্ঞানিক বিবরণটি শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে চাইবো সেটি হচ্ছে, “সকল পদার্থ পরমাণু দিয়ে তৈরি। পরমাণুরা কোনো জ্বালানি ছাড়াই নিয়ত ঘূর্ণনশীল এক একটি অতিক্ষুদ্র কণা। সামান্য দূরত্বের পরমাণুরা একে অপরকে আকর্ষণ করে, কিন্তু খুব কাছে নিয়ে আসলে তারা আবার একে অপরকে বিকর্ষণ করে।” মৃতপ্রায় নক্ষত্রদের একেবারে বাইরের দিকে, যেখানে সবকিছু অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা, সেইখানে নিউক্লিরা ইলেকট্রন জোগাড় করে পরমাণুতে পরিণত হয়। যখন পরমাণুগুলির মধ্যে বিদ্যমান আকর্ষণ ও বিকর্ষণ বলের ভারসাম্য তৈরি হয়, তখন তারা জোড়া লেগে লেগে অণু সৃষ্টি করে।

নক্ষত্রের মৃত্যু ঘটলে এতদিন তার অধিকারে থাকা হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে। শীতল হতে থাকা নক্ষত্রদের বাইরের দিকে তৈরি হয় কার্বনের অণুর তৈরি নির্দিষ্ট আকারবিহীন নানান ঝুল। এদের কেউ হয়তো ন্যানোমিটার লম্বা হীরকদানা, কেউ আবার আণবিক কার্বন রিং, শিং, কিংবা গোলক, প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড, গ্রাফাইট, এসিটিলিন, হাইড্রোজেন আর নাইট্রোজেন লাগানো কার্বনের লম্বা শিকল, এবং আরো নানান পরিচিত-অপরিচিত মৌলিক রাসায়নিক পদার্থ। বায়বীয় গ্যাসগুলি উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে উঠে, দারুণ সব আকার নিয়ে ভাসতে থাকে, ভেসে ভেসে গ্যাসগুলি ছড়িয়ে পড়ে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির চারদিকে। নক্ষত্রের হাত থেকে মুক্ত হয়ে গ্যাস আর ধুলার পিণ্ড আবার থিতু হয়ে বসার আগে এমনকি ১০০ মিলিয়ন বছর ধরে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতে পারে।

মহাকর্ষের আকর্ষণে সব পদার্থ আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘের মধ্যে জড়ো হতে থাকে। এর ফলে মহাকাশীয় চক্রটি পুনরায় চালু হয়ে যায়। আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘগুলি যেন এক একটি প্রকাণ্ড ইনকিউবেটর। এদের বুকের গহীনেই কার্বনের স্থাপত্যগুণের বিকাশ ঘটে। “হালকা মেঘমালার” মধ্যে ছোট ছোট পকেটের মতোন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে “ঘন আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ”। (এই মেঘ আমাদের পৃথিবীর আকাশের সাধারণ মেঘ নয় কিন্তু। লেখক এখানে “মেঘ” বলতে মহাকাশের আন্তঃনাক্ষত্রিক বিশাল এলাকা জুড়ে পদার্থের সন্নিবেশকে বুঝিয়েছেন। বোঝার সুবিধার্থে নিচে দেয়া ছবিটি দেখতে পারেন)। যদিও মেঘের প্রতি ঘনসেন্টিমিটারে (সিসি’তে) মাত্র ১০,০০০ অণু থাকার কারণে এর ঘনত্ব পরীক্ষাগারে তৈরি বায়ুশূন্যতার চেয়েও অনেক অনেক কম হয়, তবু কেবল বোঝার সুবিধার্থে মেঘগুলিকে একে অপরের তুলনায় ঘন কিংবা হালকা বলা হয়ে থাকে। গ্যালাক্সিতে কার্বনের তুলনায় অক্সিজেনের সংখ্যাধিক্য ২.৩ অনুপাতে ১। বেশিরভাগ অক্সিজেনই মেঘে ছড়িয়ে থাকা ধুলিকণার মধ্যে আটকে থাকে। এই ধুলিকণা দুটি গুরুদায়িত্ব পালন করে। মেঘের অভ্যন্তরে প্রতিনিয়ত অণু তৈরি হয়। ধুলিকণাগুলি সেই সদ্যজাত অণুগুলিকে বাইরের অতিবেগুনী রশ্মির হাত থেকে বাঁচায়। দ্বিতীয়ত, এরা জোড়ায় জোড়ায় হাইড্রোজেন পরমাণু মিলিয়ে গ্যালাক্সির সবচেয়ে সুলভ অণু H2 তৈরিতে সাহায্য করে। প্রথমবারের মত কার্বনের স্থাপত্যগুণেরও প্রকাশ দেখা যায় এই মেঘমালায় যার তাপমাত্রা প্রায় ১০ ডিগ্রি কেলভিন (-৪৪২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।


ছবিঃ পৃথিবী থেকে প্রায় ১,৬০০ আলোকবর্ষ দূরে অরিয়ন (Orion) নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত হর্সহেড নেবুলা (Horsehead Nebula) নামের একটি গ্যাসসমৃদ্ধ ঘন মেঘ।

এরকম শীতল মেঘের জগতে একটি হাইড্রোজেন অণু এবং একটি হিলিয়াম পরমাণুর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য বিরাজ করে। মৌলিক পদার্থের জগতে কার্বনের নাগরিক-সম্রাট হয়ে উঠার পেছনে সেই পার্থক্যের ভূমিকা অনেক। হিলিয়াম এবং হাইড্রোজেনের অণুরা মিলে আক্রমণ না করলে কার্বনকে হয়তো আজীবন কার্বন মনোক্সাইডের মধ্যেই আবদ্ধ থাকতে হতো। কার্বনের সৃষ্টিশীলতা বিকশিত হতো না কখনোই। আমাদের শরীরের যত কার্বন, আমাদের আধুনিক সরঞ্জামগুলি যে কার্বন দিয়ে তৈরি, শত শত মিলিয়ন বছর ধরে যে কার্বন মাটির নিচে বসে আছে, এবং যে কার্বন পুড়ে CO2 হিসেবে বায়ুমণ্ডলে মিশেছে- তাদের সবাই একসময় হয়তো ঘন মেঘমালার মধ্যে কার্বন মনোক্সাইডে আবদ্ধ ছিল। এই কার্বনগুলি মুক্ত হতে পেরেছিল হিলিয়াম এবং হাইড্রোজেনের মধ্যে বিদ্যমান ইলেকট্রনিক প্রতিবন্ধতকার কারণে।

হাইড্রোজেন ও কার্বনসহ প্রাণ সৃষ্টির যে কয়টি প্রধান পরমাণু আছে তারা নিজেদের মধ্যে সমযোজী (covalent) বন্ধনে আবদ্ধ হয়। সহজ কথায়, এরা নিজেদের মধ্যে ইলেকট্রন শেয়ার করে। সব পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের চারদিকে কয়েকটি স্তর বা শেলে (shells) বসতি গড়ে তোলে। নিজ নিজ শেলের মধ্যে থেকে তারা তাদের “কক্ষপথে” বিচরণ করে। বেশিরভাগ পরমাণুর ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে বাইরের শেলগুলিতে যত ইলেকট্রন থাকা সম্ভব তার চেয়ে কম ইলেকট্রন আছে। সমযোজী বন্ধনের বেলায় পরমাণুগুলি এমনভাবে যুক্ত হয় যাতে তারা নিজেদের মধ্যে কিছু ইলেকট্রন ভাগাভাগি করে নিজেদের অপূর্ণ শেলগুলি পূর্ণ করে নিতে পারে। প্রত্যেক আণবিক বন্ধন আদতে দুইটি বলের সাম্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়। বল দুটির একটি হচ্ছে প্রোটন এবং ইলেকট্রনের মধ্যেকার আকর্ষণ বল। দ্বিতীয়টি হচ্ছে প্রত্যেক ইলেকট্রনকে তার নিজের সীমানায় অবরোধ করে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় যে শক্তি সেটি।

কার্বনের ছয়টি প্রোটনের পরিপূরক হিসেবে ছয়টি ইলেকট্রনই আছে। কার্বনের প্রধান যে আইসোটোপ তার ছয়টি প্রোটনের সাথে থাকে ছয়টি নিউট্রন। তাই এদের ভর ১২ (প্রোটন এবং নিউট্রন দুজনেই ইলেকট্রনের চেয়ে প্রায় ১,৮০০ গুণ বেশি ভারী)। কিন্তু পরমাণুর কাজের ধারা এমন যে কেবলমাত্র বাইরের দিকে অবস্থিত ইলেকট্রনেরাই অণু সৃষ্টিতে সরাসরি অংশ নেয়। কার্বনের ছয়টি ইলেকট্রন থাকলেও বন্ধন গড়তে পারে কেবল চারটি। তারা যদিও কাজটি করে অপূর্বভাবে, কিন্তু সেই বন্ধন চিরস্থায়ী হয় না। কার্বন কেবল যে একই সময়ে চার চারটি শক্ত বন্ধন তৈরি করতে পারে তাই নয়, সেগুলোকে ভেঙ্গে আবার নতুন করে গড়তেও পারে। শক্তি এবং ভঙ্গুরতার এহেন মিলনের ফলেই যত কার্বনবিজ্ঞান এবং প্রাণের প্রকাশ সম্ভবপর হয়েছে।

কার্বনের এমন সাফল্য বলতে গেলে অপ্রত্যাশিতই। প্রথমত, আমাদের গ্যালাক্সির বেশির ভাগ জায়গাই খালি; নক্ষত্র এবং মেঘের মধ্যে দানা বাধা অবস্থায় ছাড়া পদার্থের দেখা মেলা ভার। দ্বিতীয়ত, এই পদার্থগুলোর বেশিরভাগই হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম। এবং তৃতীয়ত, গ্যালাক্সি কিংবা আমাদের জানা মহাবিশ্বের মাত্র ৪.৪ শতাংশ হচ্ছে পদার্থ। মহাবিশ্বের ৭৩ শতাংশই হচ্ছে কৃষ্ণ শক্তি (dark energy) ।গ্যালাক্সিগুলি যে স্ফীত হতে হতে এক অপর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে, সেটা এই কৃষ্ণ শক্তির কারণেই। মহাবিশ্বের বাকি প্রায় ২৩ শতাংশ গঠিত কৃষ্ণ পদার্থ (dark matter) দিয়ে। নক্ষত্র এবং গ্যালাক্সির মহাকর্ষ বলের জন্য দায়ী এই কৃষ্ণ পদার্থ। এদেরকে কৃষ্ণ বা ডার্ক বলা হয় কারণ এরা তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালির কোনো আলোক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সাথে মিথষ্ক্রিয়া করে না। নিম্ন-শক্তির রেডিও তরঙ্গ থেকে শুরু করে উচ্চ-শক্তির গামা রশ্মি - এদের কোনোটির সাথেই না। ক্যালটেকের শন ক্যারোল (Sean M. Carroll) কৃষ্ণ পদার্থ নিয়ে রসিকতা করে বলেছিলেন, “মহাবিশ্বের বেশিরভাগ অংশেরই আপনার সাথে সময় কাটানোর কোনো ইচ্ছে নেই।”

তো, মহাবিশ্বের একশো ভাগের যে ৪.৪ ভাগ মাত্র পদার্থ, তার আবার দশ হাজার ভাগের মাত্র তিন ভাগ কার্বন। খুব একটা উৎসাহব্যাঞ্জক ব্যাপার বলা যায় না। তারপরও বিস্ময়করভাবে নক্ষত্রের মধ্যে যত ধরণের অণু পাওয়া গেছে তাদের ৯০ শতাংশের মধ্যেই কার্বন আছে। ১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে মহাকাশবিদরা কয়েকটি ঘন মেঘের মধ্যে প্রায় ১৩০ জাতেরো বেশি অণুর উপস্থিতি নির্ণয় করেন। ঘন মেঘগুলির একটি ছিলো পৃথিবী থেকে প্রায় ১,৬০০ আলোকবর্ষ দূরের অরিয়ন নেবুলা, এবং আরেকটি ছিলো গ্যালাক্সির কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থিত সেগিটারিয়াস বি২। বেতার দূরবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংকেত থেকে সঠিক অণুটি চিনতে যাতে ভুল না হয় সেজন্য প্রতিটি অণুর সংকেতকে গবেষকরা আবার পরীক্ষাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিতে পুনরুৎপাদন করেন। এই অণুগুলির কিছু কিছু পৃথিবীতেও পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, একটি ঘন মেঘে যে পরিমাণ ইথাইল এলকোহল থাকে তা থেকে পৃথিবীর আকারের একশোটা পাত্রের সমান ভদকা পাওয়া যেতে পারে।

অনেক দূরের এই কার্বনরা আসলে কি করে তা বুঝতে মহাকাশবিদদের তেমন বেগ পেতে হয় না। ব্যাপারটা খুব সহজ। প্রতিটা গ্যাসের অণু একটা নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কেই কেবল শক্তি শোষণ এবং বিকিরণ করতে পারে। আর সেই শোষিত কিংবা বিকিরিত শক্তিকে সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব। অণুতে অণুতে সংঘর্ষ ঘটলে কিংবা নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের শক্তি কোনো অণুর মধ্যে ঢুকে পড়লে তার ইলেকট্রনগুলি উদ্দীপ্ত হয়ে উঠে। উদ্দীপ্ত ইলেকট্রনগুলি অপেক্ষাকৃত উচ্চমাত্রার শক্তিস্তরে “লাফ” দেয়। কিছু সময় পর অণুগুলি থেকে ঐ বাড়তি শক্তির নিঃসরণ ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, সায়ানোজেন নামক কার্বন-নাইট্রোজেনের তৈরি একটি অণু ২.৭৩ K শক্তির প্রতি স্পর্শকাতর। বিগ ব্যাং যখন সংঘটিত হয়েছিলো তখন মহাবিশ্বের কম্পাঙ্কও প্রায় একই মাত্রার ছিলো। ১৯৯০এর দিকে মহাকাশবিদরা পাঁচটি বিস্তৃত মেঘে সায়ানোজেনের উপস্থিতি নির্ণয় করেন। এই পর্যবেক্ষণ ষাটের দশকে বেল ল্যাবের দুইজন বিজ্ঞানীর এবং ১৯৯২ সালে নাসা কর্তৃক পরিচালিত কিছু পরীক্ষার ফলাফলকেও জোড়দারভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।

বিভিন্ন টেলিস্কোপের মাধ্যমে ১৯৫০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সায়ানোজেনসহ আরো ডজনকে ডজন অণুর উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়েছে। গ্যাসের অণু বেতার-তরঙ্গের শক্তি গ্রহন করতে পারে। বেতার-তরঙ্গের শক্তি সাধারণ দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গের শক্তির চেয়ে কম শক্তিশালী হয়। আমাদের চোখ কিংবা বেশিরভাগ অপটিক্যাল টেলিস্কোপ এমন তরঙ্গদৈর্ঘ্যেই কাজ করতে সক্ষম। আমরা তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালির মাত্র ৪ শতাংশ দেখতে পাই। দৃশ্যমান সবচেয়ে উচ্চ-শক্তির উচ্চ-তরঙ্গের মধ্যে পড়ে গামা রশ্মি, এক্স-রে, অতিবেগুনী রশ্মি। অন্যদিকে দৃশ্যমান সবচেয়ে নিম্ন-শক্তির নিম্ন-তরঙ্গ হচ্ছে অবলোহিত, মাইক্রোওয়েভ, এবং বেতার তরঙ্গ। যখন কোনো অণুর ইলেকট্রনেরা শক্তি শোষণ করে তখন তারা শক্তিস্তরের উপরের দিকে “লাফ” দেয়। তেজস্ক্রিয়তা বিকিরণের সময় ঠিক উল্টোটা ঘটে। যদিও শক্তি এবং অণুর মধ্যেকার মিথষ্ক্রিয়ার এই গোপন রহস্য বেতার মহাকাশবিজ্ঞানের একটি বিষয়, কিন্তু এর মধ্যেই আবার লুকিয়ে আছে উদ্ভিদ কীভাবে সূর্যের আলো থেকে শর্করা তৈরি করে, একটি জীব কীভাবে দেখতে পায়, কীভাবে গ্রীনহাউজ গ্যাস তাপকে শোষণ করে, ইত্যাদি অনেক প্রশ্নের মৌলিক উত্তর।

হাইড্রোজেন অণু এবং হিলিয়াম পরমাণুর মধ্যেকার পারস্পরিক শত্রুতা কীভাবে কার্বনকে নির্মাতার সৃষ্টিশীলতা উপহার দিলো- সেই ব্যাখ্যাকে ঠিকমত দাড়া করাতে বিজ্ঞানিদের যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন ছিলো। সেই আত্মবিশ্বাস তারা অর্জন করেছেন টেলিস্কোপ দিয়ে করা নানান পর্যবেক্ষণের মধ্যে যোগসূত্র টেনে, প্রতিটি অণুর নির্দিষ্ট আণবিক পরিচয় উদঘাটনের গবেষণা করে, এবং পরমাণুর সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি জেনে। হিলিয়াম থেকে একটি ইলেকট্রন বাড়ি মেরে আলাদা করতে ২৪ V (ভোল্ট) এর চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ প্রয়োজন। হাইড্রোজেনের ইলেকট্রনগুলি একটু আলগা, তাই ১৪ V হলেই সে একটিকে ছেড়ে দেয়। উল্লেখ্য, একটি গাড়ির ব্যাটারি সাধারণত ১২ V হয়। কার্বন সবচেয়ে “সহৃদয়” মৌল, ১১ V দিলেই সে তার ছয়টি ইলেকট্রনের একটিকে ছেড়ে দেয়।

মেঘের মধ্যে থাকা ধূলিকণার চাদর অতিবেগুনী রশ্মিকে মেঘের গভীরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়, যার কারণে কেন্দ্রের রাসায়নিক ইনকিউবেটর অক্ষত থাকে। কিন্তু যাকে কোনোভাবেই আটকানো যায় না সে হলো কসমিক রশ্মি – গ্যালাক্সির বুক চিড়ে সুষমভাবে ছুটতে থাকা প্রোটন। যখন এই কসমিক রশ্মি মেঘকে ভেদ করে ছুট লাগায়, তখন তারা আটকে থাকা অনেক ইলেকট্রনকে মুক্ত করে। হিলিয়াম পর্যন্ত কসমিক রশ্মির হাত থেকে তার ইলেকট্রনকে বাঁচাতে পারে না। কসমিক রশ্মি প্রায় ১০০ মিলিয়ন ভোল্ট শক্তি নিয়ে অণু-পরমাণুর ভেতরে ঢুকে মুহূর্তের মধ্যে তাদের ইলেকট্রনকে টেনে হিচড়ে বের করে নিয়ে আসে। মেঘের প্রধান উপাদান আণবিক হাইড্রোজেন (H2) আর হিলিয়াম। যার পরিমাণ বেশি সে কসমিক রশ্মি দ্বারা বেশি আক্রান্ত হয়, যার পরিমাণ কম সে কম আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত হলে ইলেকট্রন হারিয়ে তারা দুজনেই ধনাত্মক চার্জযুক্ত কণাতে পরিণত হয়। তখন তাদের বলা হয় আয়ন। লেখা হয় H2+ এবং He+ হিসেবে। হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের পারস্পরিক অবহেলা কার্বনকে বড় কিছু হয়ে উঠতে সাহায্য করে।

হিলিয়াম আয়ন চায় ইলেকট্রন। কিন্তু আণবিক হাইড্রোজেন হিলিয়াম আয়নের দিকে ফিরেও তাকায় না। একটা আয়ন আর একটা অণুর মধ্যে যতটা রসায়ন আশা করা যায় তার দশ হাজার ভাগের একভাগও হিলিয়াম আয়ন ও H2 এর মধ্যে দেখা যায় না। যার কারণে, আয়নেরা হাত বাড়ায় ইলেকট্রনের পরবর্তী সুলভ উৎস – কার্বন মনোক্সাইডের দিকে।

কার্বন মনোক্সাইড সরাসরি না হলেও জীবনের জন্য আরাধ্য অণুর কাছাকাছি কিছু একটা। কার্বনের মূল সরবরাহকারী তো অবশ্যই। ঘন মেঘমালার মধ্যে এত এত কার্বন মনোক্সাইড পাওয়া যায় যে রেডিও টেলিস্কোপে তাদের দিয়ে আকাশের মানচিত্রকে সহজেই ফুটিয়ে তোলা যায়। কার্বন মনোক্সাইডের অবলুপ্তির ফলে তৈরি কার্বনের উপরেই তো সমস্ত জীবনের অস্তিত্ত্ব নির্ভরশীল। আমরা পৃথিবীর মানুষেরা কার্বন মনোক্সাইডকে যেভাবে মূল্যায়ন করি বা যে চোখে দেখি তা থেকে আদৌ বোঝার উপায় নেই যে এই অণুটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কার্বন মনোক্সাইডের প্রতি আমাদের বাজে ধারণার কারণ হচ্ছে এর সংস্পর্শে আসলে আমরা দ্রুত পটল তুলি। কিন্তু ঐ ঘন মেঘের জগতে কার্বন মনোক্সাইড শিকারী নয়, শিকার।

অদ্ভুত শোনালেও এটা ঠিক যে ঘন মেঘগুলির মধ্যে অণুরা “হাটি হাটি পা পা” করে ধীরে সুস্থে নতুন বস্তু তৈরি করে। একটি আয়নিত হাইড্রোজেন অণু (H2+) অন্য একটি সাধারণ H2 অণুর কলকব্জা খুলে তাকে পরিণত করে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু (H) এবং একটি অপেক্ষাকৃত বৃহৎ হাইড্রোজেন আয়নে (H3+)। সেই আয়নটি আবার কার্বন মনোক্সাইডের গায়ে লেগে গিয়ে তৈরি করে একটি হাইড্রোজেন অণু এবং HCO+, যা কিনা মহাশূন্যে প্রাকজৈবিক জটিল অণু তৈরির এক একটি ইট।

ঘন মেঘগুলিতে হিলিয়াম পরমাণুর সংখ্যা কার্বন মনোক্সাইড অণুর চেয়ে প্রায় পাঁচশোগুণ বেশি। যখন কসমিক রশ্মির আঘাতে নিরপেক্ষ হিলিয়াম পরমাণু আয়নে পরিণত হয়, তখন সেই আয়ন কার্বন মনোক্সাইডের ইলেকট্রন চুরি করে। ফলে কার্বন মনোক্সাইড ভেঙ্গে যায়। সৃষ্টি হয় নিরপেক্ষ অক্সিজেন পরমাণু এবং কার্বনের আয়ন (C+)। এটি একটি বিশাল ঘটনা। এভাবেই মহাবিশ্বের চতুর্থ সহজলভ্য মৌলটি মোট পদার্থের একটি ক্ষুদ্র অংশ হয়েও ঘন মেঘের শতকরা ৯০ ভাগ অণু গঠন করার যোগ্যতা ও সামর্থ্যকে খুঁজে পায়। শুধু কি তাই, যত দিন যায় ততই দেখা যায় যে পৃথিবীর শতকরা ৯৯ ভাগ বস্তুই গঠিত হচ্ছে কার্বন দিয়ে।

কার্বন তার দুই হাত প্রসারিত করে এক হাতে হাইড্রোজেন আর অন্য হাতে নাইট্রোজেনকে আটকিয়ে পরিণত হয় হাইড্রোজেন সায়ানাইডে (HCN), যেটি মানুষের জন্য একটি মারাত্মক বিষাক্ত গ্যাস। অথচ পরবর্তীতে আমরা দেখবো যে পৃথিবীর বুকে প্রাণের আবির্ভাবে এই রাসায়নিক পদার্থটির ভূমিকা ছিল অপরিসীম। মুক্ত কার্বন আয়নেরা HCN এর ভেতর নাক গলিয়ে HC3N তৈরি করে। HC3N এর সাথে আরো দুটি কার্বন আওয়ন জোড়া লেগে তৈরি হয় HC5N। এভাবে আরো আরো কার্বন এসে জুটতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না HC11N উৎপন্ন হয়। HC11N মহাশূন্যে দেখা সবচেয়ে লম্বা শিকলের অণু। (আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘের মধ্যেকার প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝার জন্য বিজ্ঞানিরা গবেষণাগারে HC11Nকে বানিয়েছেন।) এই অণুগুলিকে বলা হয় সাইয়ানোপলিয়াইনস এবং কার্বনের গল্প শেষ হবার আগেই এরা “পৃথিবীতে পড়বে”। এই সরলাকৃতির শিকল ছাড়াও কার্বন আয়ন (C+) আরো অনেক কিছু উৎপন্ন করে; ত্রিভূজ, চক্রবলয়, ইত্যাদি ব্যতিক্রমী সব আকারের শিকল।

গ্যাস এবং ধুলিকণার পকেটগুলি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তপ্ত আণবিক কোর বা পিণ্ডে পরিণত হতে শুরু করলে ঘন মেঘের মধ্যেকার কার্বন-বান্ধব পরিবেশ একটু জটিলাকার ধারণ করে। ঘনত্ব বেড়ে যায় হাজারগুণে, বাড়ে তাপমাত্রা। এমন অবস্থায় অণুরা প্রতিনিয়ত ভাঙতে আর জোড়া লাগতে থাকে। পিণ্ডের কেন্দ্রে প্রচুর পরিমাণে নানা রকম অণুর সন্নিবেশ ঘটে। সেই অণুরা মিলে তৈরি করে কার্বনের অপেক্ষাকৃত জটিল যৌগগুলি। উত্তপ্ত কোরের উপর অনেক দিন ধরে গবেষণা চলছে যাতে আন্তঃনাক্ষত্রিক শূন্যস্থানে জীবনের বিকাশে ক্রান্তীয় ভূমিকা রাখা অণুগুলির খোঁজ পাওয়া যায়। তাহলে আমরা প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কে নতুন ধারণা পাবো।

অ্যামিনো অ্যাসিডরা হচ্ছে প্রোটিনের মূল গাঠনিক উপাদান। পানিকে বাদ দিলে আমাদের দেহের ওজনের অধিকাংশই আসে অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে। অগণিত সম্ভবপর অ্যামিনো অ্যাসিডের মধ্যে প্রাণের পছন্দ মাত্র বিশটি। সকল অ্যামিনো অ্যাসিডের কেন্দ্রে থাকে একটি কার্বন পরমাণু। সে তার চারটি বন্ধনের একটিকে ব্যবহার করে ধরে রাখে আরেকটি কার্বন পরমাণু যে কিনা কার্বোক্সাইল (CO2H) গ্রুপের মধ্যমণি। তৃতীয় বন্ধনটি দিয়ে ধরে রাখে নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেনের তৈরি অ্যামিনো গ্রুপকে। চতুর্থ বন্ধনের কাজে ব্যবহৃত ইলেকট্রনটি কার্বনের পাশে একটি নতুন শিকলকে বেধে ফেলে। এই শিকলটি অনন্য, কারণ এই শিকল প্রতিটা অ্যামিনো অ্যাসিড অণুকে স্বতন্ত্র্য পরিচিতি দান করে। সব প্রাণির দেহে শত শত হাজার হাজার প্রোটিন তৈরি হয় কেবলমাত্র এই বিশ ধরণের “ইট” দিয়ে, কার্বনের সাহায্য ছাড়া যে ইট কখনোই নিজেদেরকে একসাথে ধরে পারতো না।

সবচেয়ে সরল অ্যামিনো অ্যাসিডের একটি হচ্ছে গ্লাইসিন। মহাকাশবিদরা অন্তত দুইবার উত্তপ্ত কোরের মধ্যে গ্লাইসিন থাকার দাবি করেছিলেন। কিন্তু দুইবারই ভুল এলার্ম ছিল। কোরের মধ্যে এই অণুগুলি থাকতে পারে, আবার নাও পারে। আবিষ্কার করা যাই নি বলেই যে তারা সেখানে থাকতে পারবে না সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না। বিজ্ঞানে প্রায়শই অস্পষ্টতাকে কর্তৃত্ব করতে দেখা যায়। বিজ্ঞানিরা সবসময় চেষ্টা করেন তাদের গবেষণার ফলাফলের সাথে কোনো ধরণের আবেগময় সম্পর্কে না জড়াতে। এমনকি একটি গবেষণাক্ষেত্রই আছে যার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে তীব্র সংশয়বাদ। একজন বিজ্ঞানি যদি তার নিজের ফলাফলকে নিজেই ভুল প্রমাণ না করতে পারেন, তাহলে সবসময়ই একটা সম্ভাবনা থেকে যায় যে অন্য কেউ সেটা করবে। নিজের গবেষণা নিয়ে কীভাবে একজনের আগানো উচিত, সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে এড সালপিটার বলেছিলেন, “বিজ্ঞানকে বেশি সিরিয়াসলি নেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ না। হালকা মেজাজে থাকা জরুরী।”

মহাকর্ষ বলের কারণে ধুলা আর অণু উত্তপ্ত আণবিক কোরের ভেতরে একত্রিত হতে থাকে। কসমিক বল মহাকর্ষের বিপরীতে কাজ করলেও তার সাথে শেষ পর্যন্ত পেরে উঠে না। ধুলারা একটি গ্যাসীয় গোলকের মধ্যে ঘূর্ণাবর্তে পাক খেতে থাকে। ভেতরে, জন্ম হয় এক নতুন তারকার। সেই তারকার ঘূর্ণনে পদার্থরা সমতলে বিস্তৃত হয়ে গড়ে তোলে এক জায়মান সৌরজগত।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পড়ছি। চলুক
ছবিটা আসেনি। একটু দেখেন। হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ফারুক হাসান এর ছবি

ধন্যবাদ, অনার্য!

আমি তো ছবিটা ঠিকই দেখতে পাচ্ছি। একবার রিফ্রেশ চেপে দেখবেন? ছবিটা কিন্তু অসাধারণ!

ফারুক হাসান এর ছবি

আরেকটা কথা, প্রথম অধ্যায়ে মূলত পদার্থিবিজ্ঞানের কথা বলা হয়েছে। কীভাবে মহাবিশ্ব এবং মহাবিশ্বে কার্বনের আবির্ভাব ঘটলো। জানি কাঠখোট্টা লেগেছে, তবু ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

এবার সুখবরটা দেই।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে থাকছে আপনার প্রিয় বিষয় - প্রাণের উৎপত্তি।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম
ভাজাভুজি কিনে স্টক করলাম চোখ টিপি

[রিফ্রেশ করেও ছবি দেখতে পাচ্ছি না মন খারাপ ]

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ফারুক হাসান এর ছবি

ছবি ঠিক করে দিয়েছি।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ভালো হচ্ছে। নিয়মিত কর্তে থাকুন।

ফারুক হাসান এর ছবি

হাসি

শামীম এর ছবি

যথারীতি চরম ভাল লাগলো। তবে আমিও ছবি পাই নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ফারুক হাসান এর ছবি

এখন দেখা যাচ্ছে।

দ্রোহী এর ছবি

দারুণ! চলুক

সিরিজ দৌড়াক।

রিচার্ড ফাইনম্যান তো কাফের। তার উদাহরণ টানলে চলবে? তার চাইতে এক কাম করেন বেয়াই, পুরো কার্বন যুগকে এক বাক্যে এনে উপসংহার টেনে দেন। কেয়স থিওরী ফালতু জিনিস। বিশ্বসংসারের সবকিছু এক ফুৎকারে সৃষ্টি হয়েছে।

ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের স্বপক্ষে হুমায়ুন আহমেদ যেমন আজ কালের কণ্ঠে 'মহেশের মহাযাত্রা' লেখাটিতে লিখেছেন, মঙ্গল গ্রহে হাঁটতে হাঁটতে যদি একটা নিকন ডিজিটাল ক্যামেরা পেয়ে যান তাহলে বুঝতে হবে স্রষ্টা আছেন। এইরকম মোটা দাগের উদাহরণ খুঁজে বার করেন।

সুতারাং, গ্যাস বা কসমিক ডাস্ট একত্রে ঘণীভূত হয়ে উত্তপ্ত আনবিক কোরে সংগঠিত রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জটিল কার্বণ অণু তৈরি হয়েছে বলা ভুল। বলেন সবকিছু তেনার দান। তিনি বড়ই মেহেরজান।

ফারুক হাসান এর ছবি

হক মওলা!

ফাইনম্যান খালি কাফিরই না, বোমা বানানোর কারিগড়ও ছিল। সেই হিসেবে বেয়াই, তার কথার দাম আছে চোখ টিপি

হুআর মত মোটা মাথা তো আমার নাই বেয়াই যে ঐরকম মোটা দাগে উদাহরণ খুঁজে পাবো।

চিলতে রোদ এর ছবি

'ফারুক হাসান' কে বুকমার্ক করে রাখলাম। প্রতিদিন আমার 'মাউস' অন্তত একবার গুগুল ক্রোমের বুকমার্ক বারে ক্লিক করবে 'কার্বন যুগ' এর পরবর্তী সিরিজের প্রত্যাশায়। হাসি
চলুক

ফারুক হাসান এর ছবি

খাইছে!

আসলে হয়েছে কি ভাই, সে প্রায় মাস তিনেক আগেকার কথা- আমি সিঙ্গাপুর থেকে তল্পিতল্পাসহ বিদায় নেবার আগে অন্যান্য আরো বইয়ের সাথে এই বইটার মূল কপিও শিপিং করেছিলাম আমার বর্তমান ঠিকানা বরাবর। কিন্তু এখনো সেই বইয়ের বাক্স আমার হাতে এসে পৌছায়নি। এদিকে আমার কাছে বর্তমানে বইটার অন্য কোনো কপিও নেই যে সেটা থেকে অনুবাদ করে পোস্ট দিবো। কথা দিচ্ছি, বইটা হাতে পৌছা মাত্রই পরবর্তী অধ্যায়ের অনুবাদে হাত দিবো এবং যথাশীগ্র পোস্ট দিবো।

সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, চিলতে রোদ!

স্পর্শ এর ছবি

যেখানে গেছেন, ওখানে লাইব্রেরীতে পাবেন কিন্তু চোখ টিপি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ফারুক হাসান এর ছবি

ওরে নাছোড়বান্দা! বই পাইলেও সেটা নিয়ে বসার সময় পাওয়া যে দুষ্কর!

কল্যাণF এর ছবি

পরের পর্ব কোই কোই কোই পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

ফারুক হাসান এর ছবি

আসিতেছে, চা খাওয়া শেষ হলেই দিবো চোখ টিপি

কল্যাণF এর ছবি

এত চা চু খাইলে পেটে চায়ের গাছ গজাবেরে ভাই দেঁতো হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।