যুদ্ধ শেষ, বিজয় খরচ, হুতাশন অবশিষ্ঠ

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: বুধ, ০৫/০৩/২০০৮ - ১:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকাল মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন-সংগ্রামের করুণ কাহিনীর যে কদর; প্রশ্ন তোলা যেতে পারে, তার কারণ কি করুণ রসের মানসিক অর্থনীতি? মঞ্চে বা ছাপা কাগজে আর টিভির পর্দায় এত যে অশ্রুবর্ষণ, তা কি তবে জনতোষণের নতুন ফন্দি? জনগণের আবেগকে উস্কে দেয়ার মোহনীয় আয়োজন? হতে পারে কিন্তু। মার্চ বা ডিসেম্বরে তো বটেই, বছরের বাকি সময়েও সংবাদপত্র এবং দৃশ্যমাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্দশার সংবাদ বেশ একটা উপভোগ্য বিষয়ে পরিণত হয়। করুণ দৃশ্য ও আবেগী ভাষা মানুষের মনকে নরম করে। এভাবে সেটাও একটা উপভোগের বিষয় হয়ে ওঠে। এ কারণেই ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ যাত্রা বা ‘বেদের মেয়ে জ্যোছনার’ করুণ কাহিনী জনপ্রিয় হয়। যে সিনেমা যতবেশি দর্শকের যত ফোঁটা বেশি চোখের জল ফেলাতে পারে সেই সিনেমা তত বাজার পায়।
কিন্তু যারা এটা করেন, তাদের কী লাভ? রাজনীতিকদের না হয় ভাবমূর্তি গঠনে নিজ মুর্তির সঙ্গে মহান মহান ভাবের সামিয়ানা লাগাতে হয়, কলাম লেখকদের না হয় রচনাকে ওজন দেয়ার জন্য করুণ রসের জোগান দিতে হয়, কিন্তু এত করুণ রস নিয়ে সাংবাদিকদের কী কারবার?
উত্তরটি খুবই সোজা। কারণ, এরকম কাহিনী পাঠকরা পড়তে পছন্দ করে। দায়িত্ব কর্তব্যের কথা বাদ দিলে, যাহা পাঠক প্রিয় তাহাই সাংবাদিকতার খোরাক। সুতরাং পাঠক চায় বলেই অমুক পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার অসহায়ত্ব, তমুক গরিব মুক্তিযোদ্ধার না খেয়ে থাকা, অমুক মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষা করছে ইত্যাদি প্রচার করা।
এটা যদি মানি, তবে এই সত্যের ভেতরের তিতা শাঁসটিতেও জিভ ঠেকাতে হয়। চাই কি না চাই, সত্যের আঁটি তিতাই হয়_ অনেক সময়। সেই তিক্ত সত্যটি হলো, স্বাধীন দেশের মানুষ তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি করুণা দেখানোতে আনন্দ পান! ধনী দুনিয়ার মানুষ যেমন বাংলাদেশ বলতেই বন্যা আর পেটফোলা-পাছাচিকন শিশু আর ছিন্নবস্ত্রা ক্ষুধার্ত নারী বোঝে, তেমনি আমরাও কি মুক্তিযোদ্ধা বলতে এক ব্যর্থ ও অসহায় চরিত্রের ছবিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। সেই ব্যর্থতার প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে সত্য। তাই যার জন্য মুক্তিযুদ্ধ সেই দেশটাকে বাদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে মেকি আহাজারি করা। মানি বা না মানি এই এখন কাণ্ড এদেশের মধ্যবিত্ত সমাজে। বাংলাদেশে এটাই মুক্তিযোদ্ধার ‘জাতীয়’ প্রতিকৃতি।
এই বাস্তবের ভেতরে জনমনস্তত্ত্বের অন্য একটা দিকও উন্মোচিত হয়। জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের এমন মুর্তিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন যে, আসল মুক্তিযোদ্ধারা আপস করেন নাই। স্বাধীনতার সুযোগ সুবিধা নেন নাই। তারা যেমন একাত্তরেও সৎ ছিলেন, আজো তাই। যে মধ্যশ্রেণীর সাংবাদিক-লেখকেরা মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃস্থ ভাবমূর্তি তুলে আনেন, তাদের মনের কথাও অনেকটা এরকম। তাদের অনেকেরই অবস্থা ভাল। কিন্তু অনেকের মনের গহীনে হয়তো একটা অপরাধবোধ কাজ করে যে, দেশের ওপর যাদের হক বেশি, তাদের প্রতি ইনসাফ করা হয়নি। তাই এরকম করুণ গাথা পরিবেশন করে তারা ভাবেন, ‘যাক, একটা দায়িত্ব তো পালন করা গেল’! এভাবে বিবেকের জ্বলুনি শান্ত রাখা যায়_যদি এই কলিকালে সেটা থেকে থাকে।
তবে, এটা বলা সত্যের বরখেলাপ হবে যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার নায়কদের সকলের অবস্থাই করুণ নয়। মুক্তিযোদ্ধা অনেকের অবস্থাই সাধারণ জনগণের থেকে অনেক অনেক ভাল। একজন মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি হয়েছেন, মন্ত্রি হয়েছেন বেশ ক’জন। বড় আমলা বা সচিবও হয়েছেন অনেকে। দেশের বিত্তবানদের মধ্যে অনেকে আছেন মুক্তিযোদ্ধা। সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনীতিবিদ, আমলা, সচিব, ব্যবসায়ীসহ এমন ক্ষেত্র কম পাওয়া যাবে যেখানে তারা নাই। এমনকি ‘৭১-এ জনগণ ও দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতাকারী জাতীয় শত্রু জামায়াতে ইসলামেও মুক্তিযোদ্ধা নেতা আছেন। দেশের বেশ ক’জন প্রখ্যাত গডফাদারও মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন। এরা সফল মুক্তিযোদ্ধার প্রতীক। এদের চেতনার কাঠখড়ে আর আগুন জ্বালানো যাবে না। জ্বলবে না। নানান আরামের রসে সেটা ভিজা। তা যদি না হবে তো বাংলাদেশের অবস্থা এমন হবে কেন? কোথায় গেল সোনার বাংলার প্রতিশ্রুতি? কারা খেয়ে ফেললো সেটা? শুনি তো বিদেশীরা আর নাই, দেশ চালায় বাঙালিরা!‍ বহুদিন থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন???
তারপরও এসকল সফল মানুষদের নিয়ে করুণা করার সাহস এমনকি দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধারাও পাবেন না। সহ্যও করা হবে না। বেশিরভাগ মুক্তিযোদ্ধাই যদি গ্রামের হয়ে থাকে তবে তারা অস্ত্র জমা দিয়ে ঘরবাড়ি-পরিবারের খোঁজে ফিরে গেছেন গ্রামে নিজ পেশা ও গরিবির মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথায় এরা অনুপস্থিত। কিন্তু তারপরও এদের কথা বলা হয় না কেন? কেন দেখানো হয় না যে, সফল ও কামিয়াব ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদেরও একটা অংশ আপন মহিমায় জ্বলজ্বল করছেন! সত্যের খুঁটি এখানেই পোঁতা নয় কি? স্বাধীনতার সুফল যখন গরিষ্ঠভাগ জনগণ পান না, তখন ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধার সফলতা ব্যক্তিগত সফলতা। সেই সফলতাকে তারা সামনে আনতে কুণ্ঠা বোধ করেন। সহযোদ্ধাদের কথা বাদ দিলাম, জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে না? সোনার বাংলা গড়ার শপথ কতটুকু পালিত হলো তার পরিমাপ হবে না? তাই তারা নীরবে সফল হয়ে চলেছেন তো চলেছেনই। তাদের ঠেকায় কে? এই সফলতার ভাগীদার জনগণ নন। সেইসব মুক্তিযোদ্ধারা তো ননই, দিনের বিশ্রুত আলো নিভে গেলে পরে তাদের খোঁজ আর কে করে? তক হায় বেদনা খুঁড়ে হৃদয় জাগাতে ভালবাসে?
বাড়াবাড়ি হলেও সত্য যে, যতদিন না দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধারা মরে ভুত হয়ে যান বাংলাদেশের মানুষ ও ইতিহাস ততদিন এদের এ সফলতাকে সন্দেহ করবে। কেননাই ওই পরাজিত ও হতাশ মূর্তিই যে মুক্তিযুদ্ধের আজকের পরিণতি সেটা কি মানুষ হাড়ে হাড়ে জানে না? জনগণের মনের মুকুরে চাপা থাকা আবেগের হ্রদ যতদিন না শুকাবে, ততদিন ব্যক্তিগতভাবে সফল মুক্তিযোদ্ধার ব্যক্তিগত স্বীকৃতির সুযোগ বাংলাদেশে সীমিত।
সত্যিই তো এটা কীভাবে হলো? যা কিছু বাংলাদেশের জনগণের জাতীয় বীরত্বের প্রতীক, তার সব কেন এত করুণ রসে সিক্ত? বাঙালি মধ্যবিত্তের প্রথম বীরত্ব ছিল ভাষা আন্দোলনের অভুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভিত কাঁপিয়ে দেয়া। এর পরে আসে ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানের দাবানল। পাকিস্তানের খোলনলচে তাতেই পুড়ে খাক। কাঠামোটা দাঁড়িয়েছিল। তাকে ভাঙতে যুদ্ধ হলো একাত্তরে। তিনটি ঘটনাতেই গরিব কৃষক-শ্রমিক আর মধ্যবিত্ত ছাত্রজনতার অভূতপূর্ব ঐক্য দাঁড়িয়েছিল। অশেষ বীরত্ব আর আত্মদানের বেদীতে যে আত্মবিশ্বাস রচিত হয়েছিল, তা-ই জন্ম দিয়েছিল বাংলাদেশের। কিন্তু নানান মধ্যবিত্ত মহল্লা মুক্তিযুদ্ধের যে বয়ান জোরদার বাজে, তাতে এর ছাপ কই? তা গায়েব করে মুক্তিযুদ্ধকে একরৈখিক সরল শুভ ও অশূভ'র দ্বন্দ্ব হিসাবে দেখানো গেলে তার প্রকৃত নায়ক ও তাদের স্বপ্নের ধার ক্ষয়ে দেয়া যায়।
সংস্কৃত নন্দনতত্ত্বে কয়েকরকম রসের কথা বলা আছে। তার মধ্যে হাস্যরস, করুণ রস, বীর রস. অদ্ভুত রস উল্লেখযোগ্য। নন্দনতত্ত্বে আছে বলে নয়, ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের মনের সংবেদনের ধরনই এই। কিন্তু এতবড় একটা যুদ্ধ জাতি করলো, যারা করলো তাদের অনেকেই জীবিত, তারপরও কেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বীর রসের কথা নাই। বীর রসে সঞ্জিত গল্প, কবিতা, গান, নাটক বা উপন্যাস কেন এতো হাতে গোণা। কেন আমাদের দেশাত্মবোধক গানের বেশিরভাগটাই পুতুপুতু আবেগে জবজবা। দেশটা কি ময়রার ভিয়েন যে, সবকিছুই মিষ্টির শিরায় চোবানো?
কিন্তু আমরা বীরদের কথা শুনি, জানি। তারা এখন জাতীয় নায়ক। ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চে তাদের কথা শোনার জন্য মিডিয়া কান খাড়া করে রাখে আর জাতি শোনে। সমাজে তারা মর্যাদার সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত। তাই তাদের কথার দাম আছে।সবচেয়ে বড় কথা তাদের পেছনে বড় বড় দল আছে। কিন্তু এভাবে যে মুক্তিযুদ্ধটা একটা বিশেষ শ্রেণীর হাতে চলে গেল, বাদবাকি লোকজনদের ত্যাগ ও রক্তের ছাপ যে মুছে ফেলা হলো, তার বিচার কে করবে? ইতিহাস? ইতিহাসের বিচার অনেক লম্বা। অনেক সময় লাগে তাতে। আর মোটা মোটা ইতিহাসের বই ক’জন পড়ে? অতএব নীরবতাই হীরন্ময়! অন্যদিক থেকে জনগণের এই নীরবতাই প্রমাণ উচ্চবর্গের বানানো রূপকথায় তারা মজেন নাই।
সমাজের সকল স্তেরে মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব ও পরিণতি যেমন এক নয়, তেমনি এক নয় তা মূল্যায়নের ধরন ও ফলাফল।
তবে এটা বলা যায়, শিক্ষিত সুবিধাভোগী শ্রেণীর আবেগ ও সংবেদন যত স্যাঁতসেঁতে তাদেরটা তত নয়। এখনও তারাই ফুলবাড়ী-কানসাটে বিদ্রোহ করে, এক বোন ইয়াসমিনের জন্য সাত ভাই প্রাণ দেয় দিনাজপুরে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। খুব উদার হিসাবে বললে, এর মধ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুদ্ধে জড়িত হয়েছিল প্রায় দশ লাখ নারী-পুরুষ। বলা হয় সেসময়ের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে এখন বেঁচে আছে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। এরা যুদ্ধ দেখেছেন। এই আড়াই কোটিও বেশিদিন থাকবেন না। এদের সকলের বয়সও এখন পড়তির দিকে। এরপরে নতুন প্রজন্মের পক্ষে জানা কঠিন, সত্যিই কী হয়েছিল একাত্তরে?
কোনো এক ক্রিমিনাল এরশাদ শিকদারের ফাঁসির আদেশের পর তার জীবনী লেখা ‘করুণ’ পুস্তিকা পথে পথে বিকিয়েছিল। তার জন্যও অশ্রুও ফেলেছিল কেউ কেউ। ভয় যে, কিছু না জানা অনাগত প্রজন্ম হয়তো এরশাদ শিকদারের বইয়ের পাশে মুক্তিযোদ্ধার করুণ কাহিনীকে এক জায়গায় রেখে বিচার করবে। বলা যায় না কাঁদতেও পারে। পাকিস্তানীরা বলেছিল, বাঙালি নরম জাতি, ‘মেয়েলি’ স্বভাবের। আসুন স্বাধীন বাংলাদেশে আমরাও কেঁদে কেঁদে প্রমাণ করি আমাদের মন কত নরম। আমাদের কোমলমতি ডিজুস প্রজন্ম ভাববে, ‘আহা! মুক্তিযোদ্ধাদের কত না কষ্ট করতে হয়েছিল!’
তারা জানবে না ইতিহাসের কী মহাকাণ্ড ঘটে গিয়েছিল এদেশে। জন্ম নিয়েছিল উপমহাদেশের সবচে অগ্রসর একটি রাষ্ট্র। কেবলই ভাষার ভিত্তিতে কেবলই শোষণহীন একটি সমাজের জন্য এত মানুষ লড়েছিল এত প্রাণ বিসর্জিত হয়েছিল। পাকিস্তানীরা বলেছিল, ‌হার ঘরমে শহীদ বানায়া দে হুয়া'। তারা তা-ই করেছিল। যে দেশে প্রতি ঘরেই শহীদ সেদেশে মুক্তিযুদ্ধের এই অবান্তর দশা কার অপরাধে? দোষ কেবল আলবদরদের নয়, আমাদের জবজবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও।
মুক্তিযুদ্ধের শেষে সেনাতন্ত্রের হাত থেকে অভিজাততন্ত্রের হাতে ক্ষমতার বদলে একটি জয় হলেও চূড়ান্ত বিচারে জনতার পরাজয় ঘটেছিল। আর সব যুগে বিজয়ী পক্ষ জনগণের স্মৃতি থেকে পরাজয়ের স্মৃতি মুছে ফেলতে চায়। এখন আমাদের কাজ হলো পরজয়কে জয় ভেবে নিজ নিজ আঙুল চোষা বন্ধ করে পরাজয়কে রটিয়ে দেয়া। যাতে আবারো একই ভুল না হয়!


মন্তব্য

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

এই পালাবদলটা কিভাবে হতে পারে?

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সংবাদপত্র প্রথম পাতায় ধর্ষিতার ছবি ছাপিয়ে তাকে দ্বিতীবার গণধর্ষণ করে যে উদ্দেশ্যে
সেই একই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের করুণ কাহিনী ছাপিয়ে নিজেদর কাটতি বাড়ায়

০২

কোনো মুক্তিযোদ্ধার কোনো সফল কাহিনী কোনো পত্রিকায় কোনোদিন পড়েছি বলে মনে পড়ে না
কেউ কি পড়েছেন?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটা কথা বলি, শুনতে খারাপ শোনাতে পারে-
বিশ্ব বাণিজ্যের সাথে এক সঙ্গে লেফট রাইট করতে করতে আমরা যা পাচ্ছি তাই নিয়েই ময়ূরপঙ্খী সাজিয়ে বাণিজ্যে রওনা হচ্ছি। এখানে নিরীহ সাংবাদিকরা সেই ময়ূরপঙ্খীর সাধারণ নাবিক হলেও বাণিজ্যতরীটির হাল ধরে আছে কোনো মেদবহুল, রাঘবাকৃতির কাপ্তান বোয়াল। বিশ্বাস করুন, মুক্তিযোদ্ধাদের দশা কিংবা দুর্দশা- কোনটাতেই সেই কাপ্তানদের কিছুই এসে যায় না!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মাহবুব লীলেন এর ছবি

একমত

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

সাংবাদিক তায় আবার নিরীহ! বলেন কি?
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভয়ে ভয়ে বললাম আর কি!
বলতে তো চাই গলা ছেড়েই, ভাবলাম আপনার বাড়ি- এখন আপনার উপরেই গলা চড়ালে গাবের লাঠির তাড়া মিলতে পারে ভালে! চোখ টিপি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

মালিকের ক্যানভাসারদের আজ আর লাঠি হাতে নেওয়ারও সাহস নাই। আর গলা যদি ছাড়বেনই তখন আর খাতা দেখে গেয়ে লাভ কী! মহামতি সুমন কয়েছেন...

::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

গৌতম এর ছবি

সেন্টিমেন্ট একটা বড় ব্যাপার। আর অধিকাংশই স্রোতের বিরুদ্ধে যেতে চায় না, বলা ভালো যাওয়ার যোগ্যতা নাই। তবে অনেকেই আছেন যারা এগুলোকে তুলে আনছেন কোনো দ্বিতীয় চিন্তা না করেই; স্রেফ কেবল একধরনের মায়া অনুভব করেন। মালিকপক্ষ এর সাথে ব্যবসাকে যুক্ত করে দিয়েছেন মাত্র।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

পালাবদলের শুরু তো চিন্তায় হয় আগে। নতুন চিন্তা ফুটছে কি, যা মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপ্তি, শক্তি ও জটিলতাকে ধরতে পারে? এত বড় মানবিক ট্র্যাজেডিকে আর খাটো করা সম্ভব নয়। তাই দূর্বলতা চিনলে ভয় নাই।
দ্বিতীয়ত, মালিকপক্ষ আর সাংবাদিক গোষ্ঠীর মধ্যে একধরনের আদর্শগত সমঝোতাও আছে। সেকারণে জনকণ্ঠের সাংবাদিক আর প্রথম আলোর সাংবাদিকদের মধ্যে আদর্শগত দূরত্ব থাকে। প্রশ্নটা কেবল সাংবাদিকদের একার নয়, আমাদের অনেকেরই মুক্তিযুদ্ধ প্রেম কি এরকম পাতলা আবেগে গাঁথা নয়? ::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

অতিথি লেখক এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কি কম বাণিজ্য হলো?
এখনও হচ্ছে
তারা সবাই মার যাবার পরেও এটা থামবে বলে মনে হয় না
_ ক্যামেলিয়া আলম

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধ যে রাজনৈতিক বৈধতা আর জনগণের আবেগের অফুরান খনি সেটা টের পেয়ে রাজনীতি-সংষ্কৃতি, ব্যবসা-সেনাতন্ত্র-এনজিওবাজি থেকে শুরু করে সবাই একে সামনে রেখে ধান্ধাটা শুরু করে। এ বিষয়ে সবার একটা ঐকমত্যও তৈরি হয়েছে। সেই ঐকমত্যের জন্য মুক্তিযুদ্ধকে পুতুপুতু নিরীহ চেহারায় সাজিয়ে নিয়েই তবে পরিবশেন করা হয় এবং আমরা তা খাই।
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

শেখ জলিল এর ছবি

মোক্ষম সমালোচনা।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।