কুর্ট ভাল্ডহাইমের মৃত্যু

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: শনি, ১৬/০৬/২০০৭ - ১২:০৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
কুর্ট ভাল্ডহাইম ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন গতকাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা (বসনিয়ায় ভাল্ডহাইম নাৎসীবাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন, কাজ করতেন জেনারেল আলেক্সান্ডার লোয়র এর অধীনে, যাকে ১৯৪৬ সালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিলো) কেউ ভোলেনি। ভাল্ডহাইম তাঁর অতীত সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব হয়েছিলেন, হয়েছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্ট, কিন্তু তাঁর অতীত সম্পর্কে তথ্য চাপা দিতে পারেননি। আজ এই মুক্ত তথ্যের পৃথিবীতে তাঁর ওবিচুয়ারি প্লাবিত হয়েছে যুদ্ধাপরাধের রেফারেন্সে। পড়তে পারেন রবার্ট ফিস্কের এই তীব্র প্রতিক্রিয়াটি। যদিও আন্তর্জাতিক ইতিহাসবিৎ কমিশন ভাল্ডহাইমকে সরাসরি অপরাধের দায় থেকে মুক্তি দিয়েছে, সাইমন ভিজেনঠালের মতো নাৎসীশিকারী তাঁকে ছাড়পত্র দিয়েছেন, কিন্তু এ সম্পর্কে তথ্য গোপনের অভিযোগ ভাল্ডহাইম এড়াতে পারেননি। ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ এর মাঝে ইউগোস্লাভিয়া আর গ্রিসে ভাল্ডহাইমের চোখের সামনেই ঘটে গেছে মানবতার বিরুদ্ধে অনেক নৃশংস অপরাধ, কিন্তু ভাল্ডহাইম বলতে চেয়েছেন তিনি ছিলেন একজন সামান্য করণিক, কিছু্ই জানতেন না এসবের। ভাল্ডহাইমের অপরাধ ধামাচাপা ছিলো বহুদিন। কিন্তু সত্য প্রকাশিত হয়ে পড়েছে ঠিকই। তবে ভাল্ডহাইম কেবল পারসোনা নন গ্রাতা ঘোষিত কিছু দেশে, আর কোন শাস্তি তাকে ভোগ করতে হয়নি। আমাদের দেশে আমরা প্রকাশ্য সত্যকে একটু একটু করে ধামাচাপা দিতে থাকি। স্বজনের ঘাতকদের আমরা এখনো পারিনি সুষ্ঠ বিচারের মুখোমুখি করতে। গোলাম আজম শাস্তি পায় না এদেশে, মন্ত্রী হয় নিজামী আর মুজাহিদ। এ লজ্জা আমাদের সবাইকে নিজের আয়নায়, মানুষের মাপকাঠিতে পারসোনা নন গ্রাতা করে তোলে।

মন্তব্য

উৎস এর ছবি

ঠিক। তবে নাৎসীদের অনেকেই পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের অনেকে বড় বড় কোম্পানীও তো আছে। মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ দুটোই যতদুর মনে পড়ে নাৎসীদের লুট করা পয়সায় তৈরী।

অরূপ এর ছবি

কাম করে, বাট পুরা না @ উৎস
-------------------------------------
রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভাল্ডহাইম কি জার্মান দেশীয় উচচারন?
--------------------------
আমি সত্য না হইলে গুরু সত্য কোনকালে?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হিমু এর ছবি

হ্যাঁ। ভাল্ড মানে জঙ্গল, হাইম মানে বাসা।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

যুদ্ধাপরাধ মেয়াদোত্তীর্ণ হয় না।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।