মুহূর্তিকা - ১

নীল রোদ্দুর এর ছবি
লিখেছেন নীল রোদ্দুর [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৯/০৬/২০১০ - ১০:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেকদিন আগে লিখতাম কবিতা। সেগুলো ছিল আমার হৃদয়ের কথা। অনেক গভীর অনুভূতি, যা পারতাম না মুখে বলতে, তাই অগ্নুৎপাতের মত বেরিয়ে আসতো কবিতা হয়ে। তাতে ছন্দ ছিল কিনা জানিনা। ভাব ছিল, সে জানি। সে মেলা দিন আগের কথা। বছর তিনেক হল প্রায়। অযত্নে অবহেলায় হারিয়ে গেছে কয়েকটা। কিভাবে যেন বুকে আঘাত পেয়েছিলাম। তাই কবিতারাও অভিমানী হয়ে দিয়েছিল ছুট। কিছুদিন হল, হৃদয়ে শুনি গুন গুন। হঠাৎ হঠাৎ দেখি গুন গুন গুলো আঙ্গুলের ছোঁয়ায় শব্দ হয়ে যাচ্ছে। এগুলোর নাম দিয়েছি মুহূর্তিকা। মুহূর্তেই আসে, মুহূর্তেই হারিয়ে যায় আনমনে। হাতের কাছে কম্পিউটার না থাকলে লেখা হয় না। কিছু আবার বন্দী হয়ে যায় ডিজিটাল ডট পেন্সিলে। এইগুলোর মত। যত্ন করে গড়া না হলেও অযত্নে যেন না হারায় তাই জমিয়ে দিলেম সচলের খাতায়।

#১

বন্ধু তুমি কেমন আছ?

বন্ধু তুমি চোখের আড়াল,
চুপ করে তাই কাটে বিকাল।
অসীম আকাশ, একলা চিল;
উড়ছে একা আনন্দবিহীন।
বন্ধু তুমি কেমন আছো?
তুমি কি এখনো তেমনি হাসো?

#২

দেখিনি হৃদয় মাঝে

দেখিনি দেখিনি হৃদয় মাঝে,
শেষ বিকেলে অথবা মায়াবী সাঁঝে,
অর্থহীন কিছু গুঞ্জনের অবসরে,
কে আমার মন ছুঁয়েছে।

দেখিনি দেখিনি গত বিকেলের বর্ষনে
আঁধার মুছে রক্তিম সূর্যোদয়ে
কোন আবীরে সেজেছি শখে,
সদ্য ঘুম ভাঙ্গা চোখে,
কোন স্বপ্নের রেশ লেগে আছে।

তবু আজ জেনে গেছি,
ঘুমিয়ে ছিলাম গত রাতে,
কোন ভালোবাসার অন্তর জুড়ে।

#৩

একাকীত্বের অভিসারে

একাকীত্বের অভিসারে আমি ছুটে গেছি
সেই তুমুল বর্ষার মাঝে,
ভেজা মনে হাটু গেড়ে
জল মেখেছি আঁজল ভরে,
পূজারিনীর ভঙ্গিতে।
প্রার্থনার সুরে গেয়েছি প্রানপণে,
প্রানহীন অস্তিত্বের বন্দীশালা যাক ভেঙ্গে।

আমায় একটুখানি ঠাঁই দেবে
জীবনের প্রানোচ্ছল প্রানহীন প্রতি স্তরে?
তোমার বুকের পাঁজরে?
আমি তোমাকেও ভেজাবো,
আমার তীব্র প্রার্থনার বৃষ্টি জলে।

[বি. দ্র. শেষটা দিয়েছিলাম স্পর্শের "বৃষ্টিদুপুর" কবিতার কমেন্টে। কবিতাটার প্রতি মায়ায় তাকে এইখানে দিলেম ঠাঁই। ]


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একজন সুরকার খুঁজে বের করুন। গীতিময়তার জন্য এই কবিতাগুলো গান হবার যোগ্য। তবে গান হবার সময় ফরমাটটা একটু পালটে যাবে আরকি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

পান্ডবদাঃ
আমি তো কোন সুরকারকে চিনি না। আমার এক বন্ধু আছে, ডিজুস ডি রক স্টারের ফাইনাল পর্যন্ত ছিল। ও নিজেই গান লিখতো। নিজেই তাতে সুর দিতো। ওকে কলেজে পড়াকালে একটা ক্লাসিক গান গাইতে বলেছিলাম। ঐটা ওর গলায় ব্যান্ড ভার্সনের ক্লাসিকের মত শোনাচ্ছিল। এইগুলো ওর কাছে গেলে কি দশা হবে, কে জানে। সুরকার কৈ পাই? ইয়ে, মানে....
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

নজরুল অথবা আনিস ভাইকে জিজ্ঞেস করে দেখুন। উনারা জানার কথা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমটা বেশ ভালো লাগছে,ছন্দমিল আরেকটু ভালো হলে অনেক ভালো লাগতো।

এর পরেরটা খুব সুন্দর একটা গান বলা যায়।
ষষ্ঠ পাণ্ডবের কথা টা ভেবে দেখা উচিৎ।

শেষ টা অসাধারন।।

এরকম আরো মুহূর্তিকার অপেক্ষায় থাকবো,ভালো থাকুন।।

[বিষণ্ণ বাউন্ডুলে]

নীল রোদ্দুর এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে, ভালো লাগার জন্য। পারলে একজন সুরকার খুঁজে দেন না। হাসি.
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

অতিথি লেখক এর ছবি

পোড়াতে না পারলেও
আলোকিত করতে পারো

_____________________
বর্ণ অনুচ্ছেদ

নীল রোদ্দুর এর ছবি

পোড়াতে তো কোনদিন চাইনি আমি, আলোকিতই করতে চেয়েছি। সে নিজে পুড়ে পুড়ে হলেও। হাসি.
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

লিখো আপু... আরও কিছু মুহূর্তিকা...
আরও কিছু মুহূর্তকে ধরে রেখো নাহয়... হাসি

-------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো,
গৃহী হয়ে কে কবে কী পেয়েছে বলো....


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

নীল রোদ্দুর এর ছবি

লিখব আপি, মনের মাঝে গুনগুন আর হাতের কাছে ল্যাপটপ থাকলেই লিখে ফেলব। শুধু গুন গুন টিকে থাক আমার মাঝে। আবার অভিমানে ছুট না দিলেই হয়। হাসি.
--------------------------------------------------------
যখন প্রাণের সব ঢেউ
জেগে ওঠে, কথা বলে, রক্তের আশ্চর্য কলরবে
বৃষ্টির দুপুরে মনে পড়ে
বর্ষার মতন গাঢ় চোখ মেলে তুমি আছ দু'দিনের ঘরে।।
[শামসুর রাহমান]

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।