পাঁচ মাতালের সাতকাহন

নাসিফ এর ছবি
লিখেছেন নাসিফ [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৫/০৭/২০০৮ - ৯:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা মাতাল হয়ে যেতে চাই
পৃথিবীর সুখ দুঃখের স্পর্শ থেকে দূরে চলে যেতে চাই
পাওয়া না পাওয়ার অসম দ্বন্দ্ব থেকে আমরা মুক্তি চাই
তাইতো এসব খাই।
সভ্য মানুষেরা যাকে বলে মাদকদ্রব্য
আর আমরা বলি মাল।

অনেক নাম এসবের
মদ গাঁজা আফিম বিয়ার
হুইসকি ভদকা রাম জিন
আমাদের প্রিয় হিরোইন।

আমরা পাঁচজন, চারটি ছেলে একটি মেয়ে
সুনন্দা নাম মেয়েটির
ক্লাসে প্রথম দিন ওকে দেখে
আমার মতো অনেকের ঘুম হারাম হয়েছিল
আশ্চর্য সুন্দর- অপ্সরী যেন।

হঠাৎ একদিন পত্রিকার প্রথম পাতায় ওর ছবিটা দেখলাম
ব্যথিত হলাম- বিস্মিত হলাম;
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুনন্দা পাল
ক্যাডারদের ধর্ষণের শিকার’
নিন্দা জানানোর ভাষা বা সাহস কোনটাই খুজেঁ পেলাম না।
সুনন্দা ক্লাসে আসত মাথা নীচু করে
ওকে দেখে ছাত্রছাত্রীরা ছিটকে সরে যেত
যেন নর্দমার ময়লা শরীরে মেখেছে সে।
সেই সুনন্দা একদিন
নিঃশব্দে এসে আমাদের সাথে যোগ দিল
সেই থেকে আমরা পাঁচজন।

আমরা মাদকসেবী
রাতের আঁধারে আমরা মাতাল হই
আমাদের কথাগুলো জড়িয়ে যায়-
অট্টহাসিতে ফেটে পড়ি-
আমরা নাচতে শুরু করি-
নগ্ন হয়ে- খেমটা নাচ,
আমরা গলগল করে বমি করি
উগরে ফেলে দেই জমাট বাঁধা দুঃখগুলোকে।

টহল পুলিশ মাঝে মাঝে অহেতুক বিরক্ত করে
সুখের জগৎ থেকে ফিরিয়ে আনে দুঃখের পৃথিবীতে
রোলার দিয়ে বেদম পোতে থাকে-
আমাদেরকে- নিরীহ কয়েকটি যুবককে।
সুনন্দাকে ওরা রাস্তার মেয়ে মনে করে
পিটপিট করে তাকিয়ে থাকে
বিস্রস্ত বসনা উন্মাদ-প্রায় যুবতিটির দিকে।
নেতাগোছের কেউ এসে
ওর নরম উদ্ধত স্তনদুটি মোচড়াতে থাকে
সুনন্দা হেসে ওঠে প্রচণ্ড শব্দে
পুলিশ অফিসার ভয় পায়
পিছিয়ে যায় কয়েকপা- একসময় চলে যায়।

আমরা উঠে বসি
হাড়গুলো মটমট করে
দু’একটা হয়তো ভেঙ্গে গেছে
শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা
আমরা এই ব্যথার উপশম চাই।
আমরা আবার শুরু করি পানপর্ব।
উড়ে যাই রঙিন স্বপ্নের দেশে
আমরা এই ঘোরের মাঝেই বেঁচে থাকতে চাই
পৃথিবীর সুখ দুঃখের স্পর্শ থেকে দূরে চলে যেতে চাই
পাওয়া না পাওয়ার অসম দ্বন্দ্ব থেকে আমরা মুক্তি চাই।।


মন্তব্য

জিফরান খালেদ এর ছবি

যা বলতে চেয়েছেন তা আকৃষ্ট করলো... যেভাবে বললেন, তা খুব একটা করলো না।

তবে, আমার ঘনিষ্ঠ বান্ধব তানিমের একটা পঙ্কতি মনে পড়ে গেলো পাঁচ মাতালের কথা শুনে -

'দুঃখিত চোখ
দ্রৌপদী হলে ক্ষতি কি ছিল?

পঞ্চভূজের পিশাব দিয়ে
কাটাকুটি খেলা...'

নাসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার সমালোচনার জন্য।।

ইমরুল কায়েস এর ছবি

নাসিফ , অবশেষে অনেক ঠেলাঠেলির পর লিখলা । খুব ভাল লাগল লিখতেছ । জীবনে তো কবিতা ছাড়া আর কিছু লেখলা না এবার একটু গদ্যও কর , বুঝলা । লেখ , সচল থাক । শুভ কামনা ।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

জিফরানের মতো করেই বলতে হচ্ছে উপস্থাপনা তেমন টানলো না। তবে শট হিসেবে দারুন; মানে একেবারে স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র! এসব পাওয়া না পাওয়ার নিয়ে আরো যে সব গল্প জমা হয়ে আছে, ছাড়ুন ধীরে ধীরে। আর প্লীজ আমাদের কমেন্টরে বেশী গুরুত্ব দেয়ার দরকার নাই, আপনার যেভাবে ইচ্ছে ঐভাবেই লিখে যান। জীবনের পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায়...। চিয়ারস্‌

(তবে গাজা, আফিম, হেরোইন আর বিয়ার বা লিকুইড মনে হয় এক না! যাক দেশেতো সবি মাল! এইটা সাইড মন্তব্য তাই গুরুত্ব না দিলেই খুশি হবো।)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।