রবীন্দ্রনাথের জমিদারগিরি এবং জমিদারের রবীন্দ্রগিরি : চতুর্বিংশ পর্ব

কুলদা রায় এর ছবি
লিখেছেন কুলদা রায় [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৫/০২/২০১২ - ৯:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কুলদা রায়
এমএমআর জালাল

প্রজানিপীড়ণ খণ্ড : দুই

১৮৬৯ সালের ১৬ নভেম্বর অমৃতবাজার পত্রিকায় লেখা হয়েছে, দরিদ্র প্রজাদিগের সুসার সংগতি হওয়ার একটী প্রধান কণ্টক মহাজনেরা। অজ্ঞ, অবিবেচক, অপব্যয়ী ও দরিদ্র প্রজারা ধার পাইলে আর শুদের দিকে তাকায় না। মহাজনেরা তাহাই বুঝিয়া ইচ্ছামত শুদ নিরূপণ করে। এ বৎসরের টাকা আগত বৎসরে যদি না দিতে পারে, তবে মহাজনরা সমুদায় টাকার আর একখানা খত লয়। এক্ষণে শুদের শুদ চলিল। এইরূপে তার ধার পুত্রের পরিশোধ ও পিতার টাকা পুত্রে আদায় করে।

১৮৬৯ সালের ১ জুলাই অমৃতবাজারে লেখা হয়েছে, মহাজনরা যেরূপ অর্থগৃধ্নু ও কঠিন হৃদয়, তা প্রসিদ্ধই আছে। কৃষক মাত্রেরই প্রায় প্রতি বৎসর মহাজনের আশ্রয় লইতে হয়, কারণ তাহাদের কাহারও মূলধন নাই। যে একবার মহাজনের নিকট ঋণে আবদ্ধ হইয়াছে, সে আর তাহা পুরুষ পুরুষানুক্রমেও শোধ দিতে পারে না। শুদে শুদ, তার শুদ এইরূপে অনন্তকাল পর্যন্ত শুদ চলিতে থাকে। কর্জ্জ কখনো কখনো টাকা পাওয়া যায়, কখনো কখনো শস্যে পাওয়া যায়। টাকা লওয়া হইলে সুদের স্থিরতা নাই। কৃষকের গরজ বুঝিয়া কেহ এক আনা কেহ দুই আনা, কেহ চারি আনা পর্যন্ত সুদ লইয়া থাকেন। ধান্য কি অন্য শস্য দ্বারা যে কর্জ্জ দেওয়া হয়, তাহাকে বাড়ী বলে। কৃষকের ঘরের ধান ফুরাইলে মহাজনের নিকট হইতে ধান লয় এবং নূতন ধান হইলে উহা প্রত্যার্পন করে। মহাজনেরা সুদের স্বরূপ যত খুচি ধান দেন, তাহার দেড়া এবং কখনও দুন লইয়া থাকেন। যদি খাতক ধান দিতে না পারে তবে উহার মূল্য স্থির করিয়া যত টাকা হয়, তত টাকার খত লিখিয়া লন। কৃষকের মহাজনের টাকা শোধ করিবার একমাত্র উপায় শস্য বিক্রয় করিয়া।

যেবার দৈবদুর্য্যোগে শস্য না জন্মে, সেবার কৃষকের দুরাবস্থার আর শেষ থাকে না। এদিকে জমিদারের উদর পূর্ণ করিতে হইবে, ওদিকে মহাজনকে ঠাণ্ডা করিতে হইবে, আবার নিজের উদর পূর্ণ করিতে হইবে, এই হতভাগাদিগের পরিবার কম নয়। এতদ্ভিন্ন আরো খরচ আছে। নাপিতকে বার্ষিক দিতে হইবে, ধোপা, কামার, ছুতোর ইহাদের সকলকেই কিছু কিছু করিয়া দিতে হইবে। এইরূপে কৃষকগণের ব্যয় আয় অপেক্ষা ঢের বেশী হইয়া পড়ে। সাধারণতঃ কৃষকদিগের গরুই সর্ব্বাপেক্ষা মূল্যবান বস্তু। মহাজন, যখন দেখিলেন, অন্য উপায়ে কর্জ্জের টাকা আদায় হইল না, তখন ঐ গরু বিক্রয় করিয়া লন, কিন্তু দুর্ভাগা কৃষকের যে কি অবস্থা হইল, তাহার প্রতি একবার দৃকপাতও করেন না।

১৮৬৯ সালের ২৬ অক্টোবর অমৃত বাজার পত্রিকার রিপোর্ট থেকে জানা যায়--সেকালে বাংলায় শতকরা ৯০—৯৪ ভাগই জমিতেই ধান চাষ হত। এর মধ্যে বিল জলি ধানই প্রধান। ফাল্গুন মাসে ধানের বীজ বুনে দেওয়া হত। আর পাকত আষাঢ় মাসে। এটা আউশ ধান। আমন কাটা হত হেমন্তে। ভরা বর্ষায় এই ধানের বাড়বাড়তি। অমৃত বাজার লিখেছে, ইহাতে অপর্যাপ্ত ধান্য জন্মে ও এরূপ জমিতে দৈবাৎ দুই এক বছর ব্যতীত আর কোনো ফসল হয় না। কিছু কিছু বোরো ধানও চাষ হত। বোরো ধান শীতকালের ধান। এই সব জমিতে আউশ বা আমন হত না। এটা সাধারণ জোয়ারের জলের উপর নির্ভর করে চাষ হত। সেকালে কৃত্রিম সেচ ব্যবস্থা ছিল না। বৃষ্টি বা বর্ষার জলের উপর নির্ভর করে চাষ হত। যদি কখনো বপনের আগে বৃষ্টি না হত বা জো না আসত বা বপনের পরপরই তীব্র বৃষ্টি হত তাহলে চারা ধান নষ্ট হয়ে যেত। আবার শীষ বের হওয়ার সময় বৃষ্টিপাত না হলে ধান চিটা হয়ে যেত।

অমৃতবাজার লিখেছিল, অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশে কৃষি কার্য্যের সুপ্রণালী নাই। কূপ কি খাল হইতে জল উঠাইয়া ভূমি সাঞ্চন করার রীতি আমাদের নাই। ভূমি হইতে বাহির করিয়া দিবার উপায়ও আমাদের চাষারা জানে না। সুতরাং দৈবের উপর তাহাদের সম্পূর্ণ নির্ভর করিতে হয়। যদি অধিক বৃষ্টি হইল, শষ্য ডুবিয়া গেল, অনাবৃষ্টি হইলে ফসল পুড়িয়া গেল। এক্ষণে প্রায় প্রতি বছরই এই রূপ ঘটিতেছে। ইহাতে শুদ্ধ চাষা নয়, দেশীয় সমস্ত লোকদিগের অবস্থা দিন ২ কষ্টজনক হইয়া উঠিতেছে। আবার আজ কয়েক বৎসর এদেশে সংক্রামক জ্বর প্রভৃতি পীড়া প্রবেশ করিয়া অনেকগুলো চাসাকে একেবারে অকর্ম্মণ্য করিয়া ফেলিয়াছে, বিস্তর লোক প্রাণও হারাইয়াছে। ইহাতে কৃষি কার্য্যের অনেক ব্যাঘাত হইয়াছে। মাঝে ২ প্রবল ঝটিকা হওয়াতে ইহাদের দুর্দশার আর একটি কারণ বাড়িয়াছে। চাসারা দিন আনে, দিন খায়। নিয়মিত খরচের উপর এক টাকা ব্যয় হইলে তাহার এক বৎসরের মধ্যে তাহা পরিশোধ করিয়া উঠিতে পারে না। একখানি যৎসামান্য কুটির প্রস্তুত করিতে হইলেও অন্যূন দশটি টাকার কম খরচ হয় না।

অমৃতবাজারের এই নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৬৯ সালে ১ জুলাই। তখন বর্ষাকাল। নিবন্ধটিতে লেখা হয়েছে, এই পাঁচ বছরের মধ্যে পর পর কয়েকটি ঝড় কর্তৃক তাহারা গৃহশূন্য হইল। কে জানে পুনঃ পুনঃ গৃহ সংস্কার করিতে গিয়া কতজন চিরঋণ পাশে আবদ্ধ হইল।

ঐ নিবন্ধে লেখা হয়েছে, আমাদের কৃসকের ন্যায় ঘোর পরিশ্রমী জাতি পৃথিবীর মধ্যে দৃষ্ট হইবে না, আবার ইহাদের দৈন্যও বুঝি জগতে নাই। (সকালে) উঠিয়া দেখ কৃষক ভূমি কর্ষণ করিতে আরম্ভ করিয়াছে, দুই প্রহরের সময় যাইয়া দেখ ভূমি কর্ষণ করিতেছে, সন্ধ্যার সময় যাইয়া দেখ ভূমি কর্ষণ করিতেছে—তাহার আহার বিহার বিশ্রাম সকলেই ঐ মাঠের ভিতর। বৎসরের অধিকাংশই ইহারা এই রূপে অতিবাহিত করে। কি গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড রৌদ্র কি বর্ষাকালে মুসলধার বৃষ্টি কি শীতকালের তীক্ষ্ণ শীতল বায়ূ, সকল অবস্থায় ইহারা ক্ষেত্রের কার্য্যে প্রবর্ত্ত রহিয়াছে।

কৃষক মাত্রেই প্রায় অন্ন ও বস্ত্রহীন, গৃহহীন বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। অধিকাংশেরই পর্ণ কুটিরে বাস করিতে হয়, সকলের ঘরে আবার আবশ্যকীয় খড়ও নাই। পরিধেয় বস্ত্র একখানি ভিন্ন দুখানি কাহার ভাগ্যে জুটিয়া ওঠে না। প্রায় কৃষক মাত্রের অর্দ্বশনে কি অনশনে দিন পাত করিতে হয়, অধিক কি ভোজনপাত্র ও জলপাত্র পর্যন্ত নাই। এই হৃদয়বিদারক অবস্থায় ১২ ঘণ্টা পর্য্যন্ত ভুতানন্দী পরিশ্রম! আমাদের শুনিলে আতঙ্ক হয়, কিন্তু এই হতভাগাদের প্রতিদিন এইরূপে কাটাইতে হয়।

চাষের জন্য গরুগুলো ছিল হাড় জিরজিরে। অমৃত বাজার পত্রিকা জানাচ্ছে, বসন্ত রোগে গোরুর সংখ্যা ক্রমেই কমিতেছে। আবার অবশিষ্ট যাহা রহিতেছে, তাহারা নিতান্ত দুর্বল। গোরুর দুর্বলতার একটা কারণ অনাহার, ঘাসের চাস আমাদের দেশে নাই। আর ছিল ফসলের ক্ষেতে গোছাগাদির উৎপাত। এই নিমিত্ত বৎসর বৎসর কতক্ষতি হয়, তাহা বলিয়া উঠা যায় না। বোধহয় যত শস্য মনুষ্যে আহার করে, গো ছাগাদিতে তত নষ্ট করে।

ফসলের রোগপোকার আক্রমণ হলে তেমন কোনো ব্যবস্থাপনা নেওয়ার সুযোগ ছিল না। ১৮১৮ সালে ভারতে ধানের ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ ঘটেছিল বলে জানা যায়। এ রোগ তখন বাংলায়ও আক্রমণ করেছিল। ব্লাস্ট ছত্রাকঘটিত রোগ। এই ছত্রাক জীবাণু ধান গাছের যে কোন অবস্থায় আক্রমণ করতে পারে। এ রোগে প্রথমে পত্র ফলকে অতি ছোট ডিম্বাকৃতি দাগ পড়ে। এ দাগের মাঝামাঝি অংশ প্রশস্ত হয় এবং দু’প্রান্ত সরু থাকে যাতে দাগটাকে মনে হয় অনেকটা চোখের মত। বড় দাগগুলোর (০-১.৫ ০.৩-০.৫ সেন্টিমিটার) কেন্দ্র ভাগ ধূসর বর্ণের হয়। আক্রমণ প্রবণ ধানের পাতা মরে যেতে পারে। এ রোগে সে বছর কোথাও কোথাও ২০ ভাগ, কোথাও কোথাও ৮০ ভাগ ধান ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

ধানের আরেকটি মারাত্মক রোগ ব্লাস্ট। ধানগাছে ব্লাস্ট রোগ কান্ডের গিঁটেও আক্রমণ করতে পারে। গিঁট পঁচে গিয়ে কালচে হয় এবং সহজেই ভেঙ্গে যায়।ছড়া বা শিষের গোড়া আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত অংশ কালচে হয়ে ভেঙ্গে যেতে পারে যাকে শীষ ব্লাস্ট বলে। বাতাসের আর্দ্রতা এ রোগের প্রকোপ বাড়ায়। এ ছাড়া রাতে ঠাণ্ডা, দিনে গরম ও সকালে শিশির পড়া এ রোগের প্রকোপ বাড়ায়। মাঠে এ রোগের আক্রমণ ব্যাপক হলে পুড়ে বসে যাওয়ার মত হয়।

খোলাপোড়া রোগে প্রাথমিক অবস্থায় পানির উপরিভাগে খোলের উপর পানি ভেজা হালকা সবুজ রঙের দাগ পড়ে। ডিম্বাকৃতি বা বর্তুলাকার এ সব দাগ প্রায় ১ সেন্টিমিটার লম্বা হয় এবং বড় হয়ে দাগগুলো ২-৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে। কয়েকটি দাগ পরে একত্রে মিশে যায়। প্রত্যেকটি দাগের সীমারেখা এবং রঙের বৈচিত্র্য একটা আক্রান্ত এলাকার বৈশিষ্ট্যকে ফুটিয়ে তোলে। তখন আক্রান্ত খোলটার উপর ছোপ ছোপ দাগ মনে হয়। অনুকুল এবং আর্দ্র পরিবেশে আক্রান্ত কাণ্ডের নিকটবর্তী পাতাগুলোও আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণতঃ ফুল হওয়া থেকে ধান পাকা পর্যন্ত রোগের লক্ষণ স্পষ্ট দেখা যায়। আক্রান্ত জমি মাঝে মাঝে পুড়ে বসে যাওয়ার মত মনে হয় । রোগের প্রকোপ বেশি হলে ধান চিটা হয়ে যায়।

ধানে কৃমিজনিত রোগ উফরা রোগের আক্রমণ বাংলায় সবসময়ই কম বেশি ছিল। এখানে বিশেষ করে জলী আমন ধানে এ রোগের আক্রমণ হয়েছে বেশি। পানি ও মাটি দ্বারা পরিবাহিত এ কৃমি গাছের উপরের অংশ আক্রমণ করে। এ কৃমি ধান গাছের পাতায় কচি অংশের রস শুষে খায়, ফলে প্রথমত পাতার গোড়ায় সাদা ছিটা-ফোটা দাগের মত দেখায়। সাদা দাগ ক্রমে বাদামী রঙের হয় এবং পরে এ দাগ বেড়ে সম্পূর্ণ পাতাটাই শুকিয়ে ফেলে। অধিকাংশ ছড়াই মোচড় খেয়ে যায় ও ধান চিটা হয়। কোন কোন ছড়া মোটেই বের হয় না। এ রোগের জীবাণু জল স্রোতের সাথে এক জমি থেকে অন্য জমিতে যায়।

ধানের ভাইরাস জনিত রোগ টুংরো রোগের আক্রমণেও নানা সময়ে ফসল বিপর্যস্ত হয়েছে। সমস্যা হল ফসলে রোগ বিষয়ে তখন কৃষকদের তেমন কোনো ধারণাই ছিল না। এবং রোগ দমনে কি ধরনের ব্যবস্থানা নিতে হবে সে বিষয়টিও ছিল অজানা। ইংলন্ডে সে সময় এগ্রিকালচার বোর্ড ছিল—ভারতে কিছুই ছিল না। কৃষিগবেষণা গড়ে ওঠে নি। ফসলের রোগ বিষয়ে কারো সম্যক ধারণা না থাকায় সে বিষয়ে তথ্যও তেমন পাওয়া যায় না সে সময়কার পত্র-পত্রিকায় বা লেখালেখিতে।

পোকামাকড় সম্পর্কে কৃষকদের ধারণা মোটামুটি ছিল। ধানের মাজরা পোকা, শীষকাটা লেদা পোকা, বাদামী গাছ ফড়িংয়ের আক্রমণে অনেক ফসল নষ্ট হত। তখন পোকামাকড় দমনের জন্য কোনো কীটনাশক ছিল। যখন তীব্রভাবে শিষকাটা লেদা পোকা ধানের সদ্য বের হওয়া শীষগুলো কেটে ফেলত বা মাজরা পোকা শিষের গোড়াটি কেটে দিত অথবা মাজরা পোকার আক্রমণে ধান চিটা হয়ে যেত তখন কৃষকগণ অসহায় হয়ে পড়ত। সরকারী বা বেসরকারী কোনো উদ্যোগই নেওয়া হত না। এর সঙ্গে ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বন্যা ছিল নিত্য বছরের সঙ্গী। মাঝে মাঝে খরায় অজন্মা হত। ফলে দেশে অবধারিতভাবে দুর্ভিক্ষ দেখা দিত।

অমৃত বাজার পত্রিকার ১৮৭০ সালের ২৮ জুলাই তারিখের রিপোর্টে জানা যায়, পূর্ব্বে কৃষকেরা জমি ৪/৫ বছর পতিত রাখিয়া তাহা আবাদ করিত সুতরাং শস্য প্রচুর হইত কিন্তু এক্ষণ দেশের জনসংখ্যা ও কৃষিকার্য্যের বৃদ্ধির দ্বারা ভূমি আর পতিত থাকে না সুতরাং ভূমির উৎপন্ন ক্রমে হ্রাস পাইতেছে। ভুমি ক্রমাগত কর্ষণ করিলে উহার উর্ব্বরা শক্তি ক্রমে লোপ পায়। এটি একটি স্বতঃসিদ্ধ কথা, সুতরাং যে ভূমিতে ৫০ বছর পূর্বে ৫ মন ধান্য উৎপন্ন হইত তাহাতে এখন সম্ভবতঃ এক মনও উৎপন্ন হয় না।

ধান ছাড়া অবশিষ্ট জমিতে আখ, পাট, তামাক,কিছু গম,সরিষা, তিল, তিসি, মুগ, মুসুর, খেসারী, সবজি, আলু, পিয়াজ, রসুন, আদা হলুদ, রসুন, মরিচের আবাদ হত। তবে এইসব ফসলেরর আওতায় জমির পরিমাণ ছিল কম।

অমৃত বাজার পত্রিকা একটি নিবন্ধে ১৮৭০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এদেশের কৃষকদের অবস্থা সম্পর্কে লিখেছে, ইহারা (কৃষক) মদ্য পান করে না, ইহারা মাংসাশী নহে, ইহাদের পরণ পরিচ্ছেদের ব্যয় একরূপ নাই বলিলেও হয়, উহাদের আমোদ তা হল দেব মধ্যে জারির গীত, আবার কৃষিকার্য়্যের নিমিত্ত অতি সামান্য ব্যয় পড়ে, ইহাতে বহু মুল্যবান বলিবদ্ধের প্রয়োজন করে না, অনেক ভূমিতে জল সিঞ্চন কি সারের প্রয়োজন করে না, ভূমি স্বাভাবিক উর্ব্বরা বলিয়া অল্প পরিশ্রমে অল্প কর্ষণে প্রচুর শস্য উৎপন্ন হয়, অথচ এমন দীন দুঃখী প্রজা পৃথিবীর কোথাও নাই। ইংলন্ডে যাহার ১০/১৫ বিঘা ভূমির আবাদ আছে। সে একজন ‘গৃহস্থ’, এবং এদেশে চাষা মাত্রেরই এরূপ আবাদ আছে, অথচ ইহারা বৎসর মাস এক সন্ধ্যা আহার কি উপবাস করে।

সূত্র............................
উনিশ শতকে বাংলাদেশের সংবাদ-সাময়িকপত্র : মুনতাসীর মামুন
রবিজীবনী : প্রশান্তকুমার পাল
ব্রাত্য লোকায়ত লালন : সুধীর চক্রবর্তী
জমিদার রবীন্দ্রনাথ : শিলাইদহ পর্ব : অমিতাভ চৌধুরী
সাক্ষাৎকার--প্রফেসর আবুল আহসান চৌধুরী : শাশ্বতিকী, রবীন্দ্রসংখ্যা. সম্পাদক : মোজাফ্ফর হোসেন
রবীন্দ্রমানস ও সাহিত্যে পূর্ববঙ্গের প্রভাব : গোলাম মুরশিদ
Pabna Peasant Uprising : Nurul Hossain Choudhury
রবীন্দ্রোত্তর তৃতীয় প্রজন্মে রবীন্দ্র মূল্যায়ন’ : প্রফেসর আহম্মদ শরীফ
রক্তের দাগ মুছে রবীন্দ্রপাঠ : ফরহাদ মজহার


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।