নারীবাদি ও পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোজনিত বিভ্রম( পুর্বের রচনা পাঠ সহায়িকা)

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৫/১০/২০০৭ - ৭:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের প্রচলিত সমাজ আসলে পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো, যেমনটা আমাদের প্রচলিত নারীবাদিরা বলে থাকেন, আমাদের পুরুষতান্ত্রিকতার ব্যবচ্ছেদ করে তারা লৈঙ্গিক বিভাজন দুর করবার নিমিত্তে কিছু ধারণা সামনে নিয়ে এসেছেন।

আমার বক্তব্য এবং নারীবাদি কাঠামো এবং পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো এই প্রচলিত নারীবাদী বক্তব্য থেকে গৃহীত। আমার নিজস্ব নারীবাদী ধারণা আদতে নেই।

মেয়েরাও মানুষ কিংবা তাদেরও পুরুষের সমান অধিকার এমন বিবেচনা মেনে নিতেও আপত্তি নেই, স্পষ্ট ভাবেই নারী অধ্যুষিত রিশেপশনিস্টের চাকুরি কিংবা মেয়েদের আলাদা বলে বিবেচনা করবার ধারণাটা মেয়েদের লিঙ্গভিত্তিক বিভাজিত করছে এমন সিদ্ধান্তও সঠিক মনে হয় আমার কাছে।

আমরা নারীকে মানুষ মনে করলে তার সাথে মানুষের মতো আচরণ করতে বাধ্য, অন্তত আমাদের সামাজিক সৈজন্যতা বোধ কিংবা আমাদের শোভনতা বোধ আমাদের ভিন্ন কিছু করবার তাড়না জাগায়।

আমরা ভীড় বাসে কোনো মহিলা দাঁড়িয়ে থাকলে তাকে সসম্মানে বসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করি, আমরা ভীড় বাসে বসে থাকা মহিলার পাশে সচারাচর বসতে চাই না- এইসব জেন্ডার ডিসক্রিমিনেটিভ আচরণ আমাদের সামাজিক সুশীলতা ও শোভনতা বোধের অন্তর্ভুক্ত।

আমরা অনায়াসে পুরুষের পাশে বসতে পারি, আমরা দাঁড়িয়ে থাকা কোনো পুরুষকে বসতে দেওয়ার সুযোগ দিতে লালায়িত নই। কিন্তু মেয়েদের বিষয়ে আমাদের বিবেচনাবোধ ভিন্ন রকম- যদিও শোভন তবে ডিসক্রিমিনেটিভ।

যদি আমরা ধরেই নেই এই সামাজিক শোভনতার বিষয়টা মেয়েদের হীন এবং দুর্বল প্রমাণে সহায়ক আমাদের এইসব আচরন না করাটাই হবে অপুরুষতান্ত্রিক আচরণ।

আমার পুরুষতান্ত্রিক কথাটা বিষয়ে কেউ যদি কোনো ভিন্ন বক্তব্য রাখতে চান তবে স্বাগতম-

আমাদের সামাজিক শোভনতা শিক্ষার অনেকাংশই এবং আমাদের নারীর সাথে ব্যবহার অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত আমাদের সামাজিক পুরুষতান্ত্রিকতা দ্বারা। এই আচরণ আমাদের এই বোধতাড়িত হবার পরিচায়ক।

মেয়েদের মেয়ে হিসেবে বিবেচনা করে কোনো রকম বৈষম্য তা ধনাত্বক কিংবা ঋণাত্বক যাই হোক না কেনো তা মেয়েদের মানুষ স্বীকৃতি দেয় না, তাকে কিছুটা হীন প্রমাণিত করে, যার রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন এবং যে বাইরের জগতে অচল। এমন ধারণা অপমান ও ন্যক্কার জনক।


মন্তব্য

ভাস্কর এর ছবি

যদি আমরা ধরেই নেই এই সামাজিক শোভনতার বিষয়টা মেয়েদের হীন এবং দুর্বল প্রমাণে সহায়ক আমাদের এইসব আচরন না করাটাই হবে অপুরুষতান্ত্রিক আচরণ।

আমার কাছে আপনার সিদ্ধান্ত টানার ভঙ্গীটারে অনেক সরল কইরা দেখা বইলা মনে হইলো। আমরা পুরুষেরা আজকে সিদ্ধান্ত নিলাম মেয়েরাও মানুষ আর তারা মানুষ হইলো...এইরম সিদ্ধান্তে আসলে কেবল মেয়েটারে মানুষ না নিজেরেও মানুষ ভাবনটা প্রয়োজন, পুরুষ না। নাইলে এই বৈষম্য ঠেকাইতে মেয়েরা ঠিকই মানুষ হইলো আমরা কিন্তু পুরুষই রইয়া গেলাম।

মেয়েদের মেয়ে হিসেবে বিবেচনা করে কোনো রকম বৈষম্য তা ধনাত্বক কিংবা ঋণাত্বক যাই হোক না কেনো তা মেয়েদের মানুষ স্বীকৃতি দেয় না, তাকে কিছুটা হীন প্রমাণিত করে, যার রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন এবং যে বাইরের জগতে অচল। এমন ধারণা অপমান ও ন্যক্কার জনক।

আপনার সাথে সম্পূর্ণ সহমত...কিন্তু তারপরেও প্রশ্ন থাকে। আমি পুরুষ হিসাবে তারে অপমান করলাম না ঠিক, কিন্তু এই সমাজে দীর্ঘ সময়ের পুরুষতান্ত্রিকতার চর্চ্চাকারী কিন্তু কেবল পুরুষেরাই না...নারীরাও...এবং অধিকাংশ সংখ্যক নারীর রুচীবোধ-নিয়ম-লংঘন-সৌন্দর্য্যবোধ কিন্তু পুরুষতান্ত্রিকতার নিরীখেই তৈরী...আর তাই বাসে তারপাশে বসতে আড়ষ্ট হওনটা যেরম পুরুষতান্ত্রিকতার বহিঃপ্রকাশ তেমন নারী নিজেও তার পাশে একজন পুরুষরে কেরম ভাবে নেয় সেইটাও বিবেচনার প্রয়োজন আছে।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।