অশরীরী জার্নাল

s-s এর ছবি
লিখেছেন s-s (তারিখ: সোম, ২৫/০২/২০০৮ - ৭:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[বুড়ি সোনা,এই লেখাটা তোর জন্য। শুধুই তোর জন্য। আমাদের সবার মাঝে সবার আগে ত্রিশ ছুঁয়ে ফেলা তোকে অনেক অনেক আদর আর চুমু ছাড়া দেবার মতো কিছুই আমার নেই যে! তোর "হয়েছে, তো কি হয়েছে" অথবা "বয়েই গেলো" জাতীয় জীবনবোধ এক সময় খুব প্রতিহত করার চেষ্টা করতাম,এখন বুঝি :ওটা আমারই সীমাবদ্ধতা ছিলো। নতমস্তকে এবং লজ্জিত মুখে (হ্যাঁ,তোর ভাষায় "রক্তাভা নিয়েই")স্বীকার করছি, মাঝে মাঝে "বয়েই গ্যালো" বলতে হয়! তুই পেরেছিস। দিদির বাড়ির ওই চতুষ্পদীকে সপাটে যে কথার চড় কষালি তাতে ত্রিশের অনেক নীচেও অনেকেই কুপোকাত!এগিয়ে যা,জোর কদমে!]

===============================
পঁচিশ বছর অবধি একটিও নারী শরীর ছোঁওনি বলে
তোমার যে আত্মশ্লাঘা
তাকে স্রেফ বেকুবি না নির্বোধের আস্ফালন কোন্ টা বলবো এই নিয়ে যখন ভেবে জেরবার হচ্ছি
ঠিক তখনি
ত্রিশ বছরে আমার কতগুলো শরীর ঘাঁটা হয়েছে
সেই পরিসংখ্যানে উৎসাহী লোকের সংখ্যা
পার্টিতে দাঁড়িয়ে গেলো দ্বিগুণ!
জানি,ভালো মতই জানি -
কেচ্ছা,তা নুন-লঙ্কা -তেল -মশলাদারই হোক
কি স্রেফ একটু জল দিয়ে সেদ্ধ,
কেচ্ছাই।
বিশেষতঃ নারী হয়ে শরীর নিয়ে খোলাখুলি কথা
উপভোগের বিস্তারিত
অথবা যৌন নিষেধগ্রস্ত নই যে আদৌ
সেই আত্মোপলব্ধি
স্বস্তি এবং শান্তি দিচ্ছিলো না কাউকেই।
এক গা গয়না পরা মধ্যবয়সী শাড়ী গোছানো রমণী
কিম্বা খালাম্মা,যার জরায়ু অপসারণের পর
"নারীত্ব" হারানো নিয়ে খসখসে গলার স্বরে তিক্ততা ছাড়া আর বেশি কিছু বের হয়না
সাতেপাঁচে না থাকা ভদ্র যুবক,যে নারী পুরুষ কচকচি না শুনে
টিভির সাউন্ড বাড়াতে একটু উসখুস
অথবা নুরুর রহমান- নিজের স্ত্রী ছাড়া অন্য সব মহিলার
মুখ বাদে সরাসরি বুকের দিকে তাকিয়ে যিনি কথা বলতে পছন্দ করেন
সকলেই থমকে গেলো।

নির্ দ্বিধায় বলি,হ্যাঁ,ত্রিশ বচ্ছরে ত্রিশটির ও বেশি পুরুষ ছুঁয়েছি আমি।
কি আসে যায় তাতে?
আমরা কে কতজনের সঙ্গে "শুয়েছি" অথবা "শুইনি"
[যদিও এই শব্দাবলী গরম লোহা বা সীসার মতই অনেকের কানে]
তা দিয়ে আদৌ আমাদের সংজ্ঞায়ন হয় কি?

তা যদি হতো
তাহলে কেন বলুন,
দু'বেলা নমাজ পড়ে কপালে কালো টিপ সহ
গোড়ালির ওপর লুঙি ওঁচানো আখলাস সাহেব
ছোট্ট কাজের ছেলেকে দিয়ে স্পর্শ করান নিজের অন্ডকোষ
নিজের "ভালোমেয়ে"র সুনাম রাখতেই হবে এমন মরণপণ করে প্রতিরাতে উপোষী শরীরে
নপুংসক স্বামীর গায়ে হাত বোলায় ফুপিমণি
অথবা চল্লিশ পরুনো ওই রমণী যে প্রতি দুপুরে চুপিচুপি
জানলার ফাঁক দিয়ে প্রতিবেশী তরুণের নগ্ন জলকেলি
দ্যাখে বিস্ফারিত নয়নে
এদের সবাই কে এক কাতারে রেখে
সব আগল খুলে দিয়ে
নিজের শরীর আর মনকে একবার আদুল করতে বলুন দেখি!
দেখি একবার আমদের নেকুপুষুসুন্টুনিমুন্টুনি করা
টেবিলের পায়ায় পাজামা পরানো ভিক্টোরিয়ান শালীনতা
কোথায় থাকে?

আমাকে হরে দরে বেশ্যা বলে গাল দেবার আগে
বেশ্যা বাড়ি গমনোন্মুখ লোভার্ত সব পুরুষ
আর শরীর শরীর ছোঁকছোঁকানিতে
অবরুদ্ধ আর অবদমিত ভার্যা ও ভগিণীগণ
পৃথিবীটা সাদা আর কালো নয় - এটা মনে রাখাটা খুব জরুরী।
নীলচে ছাই ধূসর গেরুয়া পাঁশুটে হলদেটে মাখনরঙা
আরও কত শত স্তর আছে রঙের, বোধের
আপনাদের নিষেধ মানা দরজা বন্ধ করা
সপাট জোরে কপাট আটকানো শরীর আর মনেরও।

আমি না হয় হলামই একটু টলোমলো
যতগুলো ইচ্ছে নাহয় ছুঁলামই শরীর
তাতে কার কি এলো গেলো?
পিওর মনোগ্যামিস্ট ওই ভদ্রলোকের যিনি ল্যাপটপ খুলে
দশটা বিজ্ঞান গবেষণা গুলে খেয়ে
আমার চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার করতে পারেন?
আর দেখিয়ে দিতে পারেন আসলে আমার "বিকৃতি"
জেনেটিক?

দুরছাই এই প্রজন্মান্তরের গবেষণা
দুয়ো দিচ্ছি তোর একগামিতাকেও
আরও বড় ধিক বছরে শতবার বেশ্যাবাড়ি গমন করেও
বহুগামী পুরুষের পিতৃত্বের অহঙ্কার
আর হাতে তুড়ি বাজিয়ে "বাজারের মেয়ের" বাজারমুখিতা যাচাইয়ের

ভালোবাসা নিয়ে ,না ,আমি কথা বলবো না আপনাদের সাথে -
ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ
আপনার দুরন্ত স্মার্ট চুরুটের টান অথবা আধা ইংরেজ বুলি
না পেরেছে আপনার স্ত্রীর শরীর থেকে কালো নেটের সিল্কের আড়ালে ছ্যাঁকার দাগ গুলো ঢাকতে
পারেনি আপনার সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণ পুত্রের
ইতঃস্তত হস্তমৈথুনের বালখিল্য লুকোতেও।

সদ্যবিবাহিতা আগুনরঙা আঁচে রূপসী আপনার কন্যাটিও মাসীমণি,
জীবনের আল ধরে হাঁটেনি এ অব্দি
তাই কামাতুরা কবুতরের ধুকপুক বুকে নিয়েই
স্বামীগর্বে মাথায় চওড়া সিঁদুরে ডগমগ খুশি সে।
অপালামাসী, গান্ধারীর মতো ইচ্ছা অন্ধত্ব ও তো পারেনি
আপনার আর মেসোর অসম্ভব শীতল জীবনে
দু'চারটে উষ্ণ জলের টুপটাপ ফোঁটা দিতে।

তাহলে কেন,কেন বলুন - সকল হিংসা,সব ঘৃণা
আর বিদ্বেষের তীর আমার দিকেই তাক্?
আমি ত্রিশ নামক মাইলস্টোন আজ স্পর্শ করলাম বলে?
কেন অন্য আরো দশজনের মতো জীবনের একঘেঁয়েমিতে অভ্যস্ত নই,তাই?
নাকি ওই বয়েই গ্যালো - বেশ করেছি শব্দাবলীই আপনরা হজম করতে পারেন না,কোন্ টা?

পাগলের মতো, উন্মাদ ভালো আমিও বেসেছি
ভেঙে যখন চুরমার হয়েছি তখন
সমবেত সুধীমন্ডলী
এই আপনাদের মুখনিঃসৃত সমবেত চুক্চুক্,
উহু আহা বড় দুখী মেয়ে, আহা ওকে আগলে রেখো
জীবন শেষ হলো
ইত্যকার নান বাক্যবাণে আমাকে খামচে,জাপটে, থেঁতলে
কতভাবেই না পিষতে চেয়েছেন আপনারা।
তাহলে আজ?
আজ তো আপনাদের খুশি হবার কথা
আপনাদেরই সেই অবলা বালিকা
মুখে দুধের গন্ধ আর শরীরে সদ্য ফুটে ওঠা স্তনের কুঁড়ি
এই দুইয়ের স্তর বহু আগেই পেরিয়ে এসে

মনে না হোক শরীরে খুশি অন্ততঃ?

তাহলে কি এই সত্যি অর্ফিয়ুসের বাজনার মতো
কারো স্পর্শে যদি উচাটন হয় শরীর
মন হলে ক্ষতি নেই- মনের বেসাতি খুব
মূল্যহীন বলছেন, আপামর শোতৃগণ?
মন নিয়ে যতটা আহা উহু করা যায়
শরীর নিয়ে ততটা নয়, শরীর নিয়ে কেবল
কেচ্ছাই জমে ভালো -
হাজার খানেক ওয়াটের বাল্বের আলোতেও
এ আঁধার দূর করি কি করে?
অবশেষে বলি:
ব্রহ্মান্ডের সবচেয়ে বড় ক্ষত তবে হৃদয়ে নয় , শুধুই শরীরে?
হৃদয় মূল্যহীন শরীর তামাম
শুধরোবে এই বিভাজন কেউ -
আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ
ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??

২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮। রাত: ১২টা ৩৬ মিঃ


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

একটু ব্যস্ত, আগামী পরশুর একটা মহাসাগরসম পরীক্ষা নিয়ে। ভেবেছিলাম , শুধু একটু ঢু মেরে যাই সচলে, কোন কমেন্ট করবো না।

কিন্তু আপনার লেখা বাধ্য করলো আমাকে কি বোর্ডে বাংলা মোড অন করতে।

অসাধারণ, চমৎকার। আশা রাখি, আরো বিস্তারিতভাবে নিজের ভালো লাগাটাকে পরে লিখতে পারবো।

ধন্যবাদ এত্ত সুন্দর একটা লেখার জন্য। আরো পড়ার প্রত্যাশায়।
-----------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

s-s এর ছবি

আশায় রইলাম বিস্তারিতের। কৃতজ্ঞতা। অলমিতি হাসি

অন্দ্রিলা এর ছবি

আপনার লেখা একই সাথে অসম্ভব ভালো লেগেছে, এবং স্তম্ভিত করেছে, এরকম লেখবার সাহস কেমন করে পান?

অসাধারণ ভালো লাগে আপনার লেখা! আপনাকে, এবং ত্রিশে পা দেওয়া বার্থডে গার্লকে অনেক অনেক শুভকামনা।

s-s এর ছবি

সুপ্রিয়া অন্দ্রিলা: লেখাটি খুব সাহসী কি? লেখাটি অনেক গুলো ট্যাবুকে ছুঁতে চাওয়া। এই মাত্র। সাহসী আসলে সেই মানুষটি,যাঁর উদ্দেশ্যে এই লেখা। ওই বার্থডে গার্লের সাহসকে আমি স্যলুট জানাই আর তাঁকে অনেক শুভকামনা করি - এটুকুই!

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অসাধারণ !

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

s-s এর ছবি

ধন্যবাদ

কেমিকেল আলী এর ছবি

কবিতা বরাবরই কম বুঝি। এইটা আরও জটিল

মুজিব মেহদী এর ছবি

এ কবিতা যিনি লিখেন তিনি সাহসী ও সংস্কারমুক্ত। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা না জানানো অতীব কৃপণতা। জানালাম।

এবার তাঁকে পড়তে বলি পুরুষের আড়ালের রূপ উন্মোচনকারী দু'টো ছোট্ট কবিতা।

আমাদের শহরে : রণজিৎ দাশ
আমাদের শহরে
প্রত্যেক ধর্মের মানুষদের জন্য
ভিন্ন ভিন্ন দেবালয়;
কিন্তু সকল ধর্মের মানুষদের জন্য
একটিই বেশ্যালয়--

কোনও সমস্যা নেই।

পুরুষের ধর্ম : মুজিব মেহদী
নারীমানুষের ধর্ম আছে নারীশরীরের নেই
সম্প্রদায় নিরপেক্ষ খুব নারীর শরীর জাতপাতহীন
জাতপাতে অন্ধ ধর্মকানারাও ধর্ম খুঁজে না বিশেষ শরীর পূজায়

তাবৎ পুরুষেরই দেখি পক্ষপাত আছে নারীশরীরের প্রতি
এমনকি আছে ধর্মগুরুদেরও

পুরুষের ধর্ম বড়ো বিচিত্র জিনিস

....................

এবার আপনাকে বিপ্লব

....................................
...ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি...

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

s-s এর ছবি

নারী পুরুষ স্টিরিওটাইপিং টা বাদ দিলে বোধ করি আপনার মন্তব্য ও কবিতা নিয়ে আরো কিছু বলার ইচ্ছে রাখতাম।
আমি ঠিক জানিনা কেন, আপনার চোখে শুধু পুরুষের ধর্ম আর ভন্ডামিই এই কবিতার মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে ধরা দিলো -
যেখানে লেখার মূল সুরটা অন্ততঃ আমার কাছে অবশ্যই ছিলো নারী পুরুষ নির্বিশেষে শরীর বিষয়ক ট্যাবু টাকে ছুঁতে চাওয়া -
সেটা কিভাবে যেন আপনার মন্তব্যের কারণে প্রো - নারী আ্যন্টি - পুরুষ বিষয়ক একটা জটিলতায় দাঁড়িয়ে গেলো যেটা চাইছিলাম না হয়তো - অবরুদ্ধ আর অবদমিত ভার্যা ও ভগিণীগণ অবশ্যই ছিলেন সেই কাতারে, শুধু লোভার্ত পুরুষ নন।

মন্তব্য ও কবিতার জন্য কৃতজ্ঞতা, প্রথম কবিতাটি ছুঁয়ে গেলো।
শুভাশীষ।

অনিন্দিতা এর ছবি

সাহসী কবিতার জন্য অভিনন্দন।

s-s এর ছবি

ধন্যবাদ, অণুপ্রেণা ও উৎসাহের জন্য।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

কালকে পড়তে শুরু করেছিলাম ; পুরোটা পড়তে পারিনি । আজ পড়লাম । কবে কোন কালে , এই পোড়া দেশের এক সাহসী নারীর কবিতার একটা লাইন মনে পড়ে গেলো ! আমার দেখি ত্রিশোর্ধ শরীর বিপরীত !!
তসলিমা নাসরীনের কবিতা । ( তার সাহিত্যের মান নিয়ে, সম্ভাবনা নিয়ে আমি কখনো-ই উচ্ছসিত না । আমার স্যালুট তাঁর সাহসের প্রতি )
s-s , ভালো লেগেছে আপনার কবিতা । এই বলে নয় যে , পুরো লেখাতে উদ্দীপক শব্দে ঠাসা , এ ও নয় ; এক বাঙালী ( অন্দ্রিলা'র মন্তব্য থেকে জানলাম ) মেয়ের জবানে 'ত্রিশ বছরে ত্রিশটি পুরুষ ছু্য়েছি আমি' পড়ে পুরুষালী বাহবা ।
কবিতা কেমন হলো মুজিব মেহদী , মাহবুব লীলেন , ফারুখ ওয়াসিফ কিংবা আহমেদুর রশীদ ভালো বলতে পারবেন
আপনি কেবল আমার অভিবাদন গ্রহণ করুন ।
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

s-s এর ছবি

সুপ্রিয় সুপান্থ :

কেন এবং কি কারণে ভালো লাগা উচিৎ হয়নি, "উদ্দীপক" শব্দ ,"নাসরীন ঘরানা" বা
"পুরুষালী বাহবা" এই নিয়ে যতটা লিখলেন, তার চেয়ে একটু খোলাসা করে যদি লিখতেন কেন ভালো লেগেছে, হয়তো বুঝতে সুবিধে হতো!
আর শরীর এবং নারীর লেখা দেখা মাত্রই তসলিমা নাসরীন বা বেগম রোকেয়া ধরেণের লেবেলিং খুব জরুরী নয় বলে মনে করি। এই স্টিরিওটাইপিং এর বাইরে বেরিয়ে এসে নারী এবং পুরুষ উভয় লিঙ্গের ই শরীর বিষয়ক যে ট্যাবু আছে, এবং সেই জায়গাটাতে যেতে আমরা যে সবাই নিরৎসুক সেই সত্য মাথায় রেখে কবিতা পড়লে হয়তো আরো খুশি হতাম।

তসলিমা নাসরীন আমার প্রিয় কবিদের একজন, তাঁর শব্দাবলী অত্যন্ত শক্তিশালী বলেই মনে করি। as opposed to you, তাঁর অনেক কবিতার সাহিত্যের মান নিয়েই আমি উচ্ছ্বসিত। তাঁর জীবনবোধ যাই হোক না কেন।

আমার যাঁর উদ্দেশ্যে এই লেখাটি সেই সাহসিনী বার্থডে গার্লের জীবনবোধকেও আমি নত মস্তকে কুর্নিশ জানাই, এবং বাহবা দেই, নারী বলে নয়, ট্যাবু টাকে সে সফলতার সাথে অতিক্রম করতে পেরেছে বলে, নিজের পছন্দ মত জীবন যাপন করতে পারে বলে।

গেরুয়া ধূসর পাঁশুটে রং গুলোকে চেনা খুব জরুরি কিন্তু।
সাদা কালোর বাঁধনটা এবার ছাড়ুন।

আপনার অভিবাদনের জন্য অপরিসীম কৃতজ্ঞতা, ভালো থাকবেন। লিখবেন ।

শুভাশীষ।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

কবিতা কেন ভালো লাগলো , কেন লাগলো না ; এর খুব সাদা-মাঠা ব্যাখ্যা হয়না বোধকরি । যা হয় তা , তার অতীব সরলীকরণ !!
' কবি এখানে যা বলিতে চাহিয়াছেন '-এমন ব্যাখ্যার দিন ফুরিয়েছে , তা ও বহুদিন ।
বলেছিলাম,'ভালো লেগেছে ।'( কোন কিছু মাথায় রেখে কবিতা পড়ার অক্ষমতা বহুদিনের । কিছু মাথায় না রেখে পড়া কবিতা-ই বরং ভালো লাগে বেশী ) আর লেবলিং দেইনি । চাই ও নি । ( কোন কবিতারই লেবেল হয়না মনে হয় ! নারীবাদী কবিতা, সমাজবাদী কবিতা , কিংবা উত্তরাধুনিক কবিতা ! )
আমরা যাদের লেবেল দিয়ে নারীবাদী বানাচ্ছি , তারা তো শেষমেশ নারী ই থেকে যাচ্ছেন ! আমাদের একজন সিম্যোন দ্য বেভোয়ার থাকলে না হয় অন্য কথা ছিলো
(সমাজের আগল ভাঙা মানুষ হিসেবে, প্রথাবিরোধী সাহসী লেখক মেনে নিয়ে , তসলিমা নাসরীন প্রতি অপরিসীম শ্রদ্বা রেখে ও বলি , কথাটা যখন কবিতা /সাহিত্য নিয়ে , তাঁর সাহিত্য খুব উচুমানের বলে মনে করি না । )

গেরুয়া ধূসর পাঁশুটে রং গুলোকে চেনা খুব জরুরী কিন্তু ।
সাদা কালোর বাঁধনটা এবার ছাড়ুন
। জানাচ্ছি, ধরতেই চাইনি কোনদিন ! ট্যাবুটা কে শেকল বলে-ই মানি । মধ্যবিত্তের শরীরবিত্তীয় ট্যাবুটা কে তো আর ও ।
ভালো থাকুন আপনি ও । ভালো লিখুন ।

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

স্নিগ্ধা এর ছবি

s-s, আপনার কবিতা বরাবরই যেমন লাগে তেমনই লাগলো - অর্থাৎ চমৎকার!!

s-s এর ছবি

আপনি এমন করে ছোট্ট করে বলে চলে গেলে বুকের ভেতর ব্যথা ব্যথা করে যে স্নিগ্ধা ! "আরও কিছু ক্ষণ না হয় বসিলে কাছে, আরও কিছুক্ষণ না হয় বলিলে কথা" হেমন্তের মতো আমিও বলি?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।