একটি নাটক অথবা উপন্যাসের খসড়া : ০৮

কর্ণজয় এর ছবি
লিখেছেন কর্ণজয় (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০৬/২০০৭ - ১১:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
পুরো দ্বীপাঞ্চলে একটি মাত্র কবিরাজ তরণী মাঝি। মাঝি তো এখানে সবাই, দরিয়া হলো মাতা। জন্ম থেকেই সাগরের লোনা পানি পাড়ি দিতে শিখে যায় বেড়ে ওঠার মতো করেই। তরনী মাঝির বাবা মনো মাঝির নৌকা একবার দরিয়ার বুকে ডুবে গেলে টানা সতেরদিন খাদ্য পানিহীনভাবে ভাসতে ভাসতে প্রায় অচৈতন্যভাবে কুলে এসে ভিড়েছিল। মৃত্যু সাগর পাড়ি দেয়া মানুষের কাছে নতুন নয় বরং দরিয়ায় মৃত্যুবরনকে একধরনের দেবতার অনুগ্রহ হিসেবে জেনে এসেছে। কিন্তু জগৎে সবাই একরকম নয় - স্বামী আর পুত্রের নৌকার সমাধির খবর পৌছানোর পর একটানা সতেরদিন দরিয়ার দেবতার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ হাহাকারে কেউ দুচোখের পাতা একবারের জন্য এক করতে পারে নি কেউ। সমুদ্রের প্রবল বাতাস আর ঢেউ এর গর্জন ছাপিয়ে উঠেছিল মহিলার একটানা সম্পাৎ। তারা শিউরে উঠেছিল , একে অন্যের সঙ্গে সলাপরামর্শ করছিল কিভাবে মহিলাকে থামানো যায় নতুবা দেবতার রোষ নেমে আসতে পারে গোটা জনপদ ধরে। কেন্তু কি করে তারা তাকে শান্ত করবে এটা বুঝতে পারছিল না। কারন যে মেয়েটি সামনে বড় হয়ে কন্যা থেকে জায়া হলো, তার থেকে জননী - যার গোচা জীবনটিই দরিয়ার মতো চেনা সেই মেয়েটি এখন কেমন অচেনা । তাকে আর মানুষ মনে হয় না - মনে হয় অন্য কোন গ্রহের । কিন্তু কতদিন দেবতার অপমান সহ্য করা যায় - সবাই নড়ে চড়ে বসে এক এক করে সতের দিন সহ্য করে শেষে না পেরে তারা তাকে সমুদ্রে সমাধি দিয়ে আসে। সেদিন সন্ধ্যায়ই ঘটে সেই আশচর্য্য ঘটনা। তরণী ভাসতে ভাসতে ফিরে আসে। সবাই হতচকিত হয়ে যায় .. কেউ বুঝতে পাওে না এটি কি দেবতার প্রতি অশ্রƒতপূর্ব অনুযোগ বন্ধে কৃতকল্পের পুরস্কার নাকি তিরস্কার। সে যে কারনে হোক তরনী যে দেবতার স্পশ্য পেয়েছে এ নিয়ে দ্বিমত থাকে না। তারা সকলে ছুটে যায় তাকে শ্রশ্রূসা করতে। কেউ বলে মার আহাজারীতে মৃত্যু সন্তানকে স্পর্শ করতে ভয় পেয়েছে কিন্তু কেউ কেউ এতে সন্দেহ করে বলেছে - তাহলে মনো ফিরলো না ক্যান ? তাদের চকিতে মনে পড়ে সেই নারীর কন্ঠে স্বামীর জন্য আেেপর চেয়েও অনেক বেশি বেজেছিল সন্তানের জন্য হাহাকার। তবে কি নারীর পূর্ণতা সন্তানে যার মৃত্যুতে পুরোটা অস্তি¡ত্ব বিলীন হয়ে হয়ে যায়। কামনার চেয়ে স্নেহের জমিন অনেক ফলদায়ীনি সে কথা তারা নিজের জীবনেও অনুভব করে। সবার সেবা শুশ্র“ষা অথবা মাটির স্পর্শে তরনী চোখ মেলে তার জননীর বৃত্তান্ত জেনে কেদে ওঠে। পুরুষের কান্না এ অঞ্চলে কেই কখনো দেখে নি। কাদতে কাদতে তারা শাপান্ত করতে থাকে তাদেও এবং তাদের দেবতার। দেবতার বিরুদ্ধে শব্দ উচ্চারনে তারা একজন অসহায় নারীকেও ছাড়ে নি কিন্তু তরণীর স্পর্ধার বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পায় না। কারন দেবতা র । তরণী এরপর যখন ক্রমাগত বলে যেতে থাকে দেবতার চাইতে মানুষ বড়ৃ - তারা শুধু শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে নিজেদের দু কান ঢেকে রাখে। এমন কথা তারা কেউ কখনও শোনে নি।

মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি
পড়তাছি... ....................................... ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।