ইভটিজ মাস্টার

টিটো রহমান এর ছবি
লিখেছেন টিটো রহমান (তারিখ: বুধ, ২৪/০৯/২০০৮ - ১২:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের সহপাঠী বিপুল। ইভটিজ মাস্টার। ক্লাসে ওদের ছেলেপূর্ণ একটা গ্রুপ, যারা ক্লাস শেষ হওয়া মাত্রই বারান্দায় গিয়ে সিগারেট ধরায়, মেয়েদের চরিত্র ও গঠন নিয়ে বেশ চিন্তা করে, মাঝেমাঝে দেশী মদ খেয়ে মাতাল হবার ভান করে( আমি এদের সাথে ছিলাম না, সত্যি বলিছ)।
ও তাদের মধ্যে হিট। ছেলেদের সামনে ব্যাপক হিরোইজম থাকলেও মেয়েদের সাথে ঠিকমত কথা বলতে পারে না। মেয়েরা ওকে ভয় পায় ভীষণ।

এর মধ্যে ডিপার্টমেন্ট থেকেই ছেলেমেয়ে একসাথে কয়েকটা গ্রুপ করা হল, এ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য। স্বভবতই বিপুল পরল বিপদে। ও কোন মেয়ের সাথে মিশবে না..আর মেয়েরা তো ভয়ই পায় ওকে। এই গ্রুপে আমিও ছিলাম।

আমি খুব ভাল না কিন্তু কাজ চালিয়ে নেয়ার মত মিশতে পারি। যেহেতু এ্যাসাইনমেন্ট কাজেই মেয়েদের হলের সামনে প্রায়ই যেতে হত। ওকেও নিয়ে যেতাম। আমি কাজের সাথে প্রচুর অকাজের কথাও বলতাম। ও খুব উসখুস করত। আর ফেরার পথে আজেবাজে মন্তব্য করত। তবে রোজ ঠিকই যেত। থাকতোও পুরো সময়.........

এই এ্যাসাইনেমেন্টর কল্যানেই আমাদের(ততদিনে আরও অনেকেই জুটেছে) হলের মেয়েদের সাথে প্রায়ই আড্ডা হয়। আমরা কথা বলি, মেয়েরা কথা বলে। বিপুল উসখুস করে।

হঠাৎ একদিন আমাদের এক মেয়েকে ( সম্ভবত নিতু ছিল)দূরে বসা এক ছেলে টিজ করে। ধারণা করুন তো বিপুল তখন কি করল?

ও গিয়ে সেই ছেলে গুলির সাথে হ্যান্ডশেক করে আসল। আমাদের খুব মেজাজ খারাপ হল। আমরা চলে আসলাম সেদিন। আসার সময় বিপুলকে ছেলেগুলি আসতেই দিতে চায় না। যেন কত দিনের ভাই বেরাদর।

পরদিন আমরা মেয়েদের সাথে গল্প করছি আর বিপুল ওই ছেলেগুলির সাথে চা-বিড়ি খাচ্ছে।

এর কিছুদিন পর নিতুর কাছ থেকে ক্লাস চলাকালিন একটা চিরকুট পেল বিপুল। তাতে লেখা..............

থ্যাঙ্কস বিপুল। হলের সামনের ছেলেগুলি আর ডিস্টার্ব করছে না।

আর বিপুল ততদিনে টিজ ব্যাপারটা একদমই বোঝে না,করে তো না ই, কোনকালে করেছে এমন নজিরও নেই। এমন কি এডামটিজও ( অনেক মেয়ে একসাথে আড্ডা দিচ্ছে, এদের পাশ দিয়ে আমার যেতে ভয় লাগে। আমি বোধহয় অনেক ভীতু আর মেয়েরাও নিশ্চয়ই অন্য বিষয়েই হাসে বা মন্তব্য করে) হাসি মুখে গ্রহণ করতে পারে।


মন্তব্য

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আপনার বন্ধু কি পরিকল্পনামাফিক কাজটা করেছিল নাকি ভুল করে হয়ে গিয়েছিল ব্যাপারটা?
__________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

টিটো রহমান এর ছবি

ভুল করে কিন্তু পরে ভুল বুঝতে পারে

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম........................এমন ইউর্টান সাধারণত দেখা যায় না । তবে এডাম টিজ ও কিন্তু ডেঞ্জারাস । আমার এক বন্ধু তো এখন ক্লাসে মেয়েদের দেখলে সোজা উল্টা হাটা দেয় ।
নিবিড়

টিটো রহমান এর ছবি

হুম। আমারো ভয় লাগে

অমিত আহমেদ এর ছবি
তানবীরা এর ছবি

হাহাহাহা, ভালো কাজে পরিকল্পনা লাগে না, হয়ে যায় ঘটে যায়।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

টিটো রহমান এর ছবি

ঠিক ঠিক

অম্লান অভি এর ছবি

নিতুকে। ধন্যবাদ । আর আপনাকে নিতুর সাথে পরিচয় করানোর জন্য।

টিটো রহমান লিখেছেন:

আমাদের সহপাঠী বিপুল। ইভটিজ মাস্টার। ক্লাসে ওদের ছেলেপূর্ণ একটা গ্রুপ, যারা ক্লাস শেষ হওয়া মাত্রই বারান্দায় গিয়ে সিগারেট ধরায়, মেয়েদের চরিত্র ও গঠন নিয়ে বেশ চিন্তা করে, মাঝেমাঝে দেশী মদ খেয়ে মাতাল হবার ভান করে ( আমি এদের সাথে ছিলাম না, সত্যি বলিছ)।


গড় রেটিং
( ভোট)

এভাবে মিথ্যা বলা কি ঠিক। আর বেচারা বিপুল।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

টিটো রহমান এর ছবি

বেশিরকম গো বেচারা তো! তাই ঠকিমত মিথ্যাও বলতে পারি না

রণদীপম বসু এর ছবি

শাপে বর হলো, না কি বরে শাপ হলো বুঝলাম না। তবে ভালো লাগলো।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

টিটো রহমান এর ছবি

ধন্যবাদ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আচ্ছা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।