কত রঙ্গ জানো রে মানুষ

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি
লিখেছেন অছ্যুৎ বলাই (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০৬/২০০৭ - ৭:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
শেষ বিচারের দিনেও নিরাকার ঈশ্বর সাকার হইলেন না। প্রধান উপদেষ্টা উপদেশ দিলেন, মহামান্য প্রভূ। এই কর্ম ভুলেও করিবেন না। অবিশ্বাসীগণ আপনার চেহারা নিয়া তর্ক জুড়িয়া দিবে এবং বিশ্বাসীগণ নানাদলে বিভক্ত হইয়া আপনাকে তাহাদের দলে ভিড়াইতে চাহিবে। এই বুড়া বয়সে এত ধকল সইতে আপনাকে অনেক বেগ পাইতে হইবে। এত ক্যাচাল হইতে আপনাকে রক্ষা করিতে যথেষ্ট সংখ্যক পাহারাদারও পাইবেন না। উহারা এতদিন পৃথিবীর কাইজা মিটাইতে মিটাইতে ক্লান্ত হইয়া এখন নাসিকগর্জনসহিত নিদ্রা যাইতেছে। ঈশ্বর ভাবিয়া দেখিলেন, পরামর্শ মন্দ নহে। যাহারা ঈশ্বরের দীদার লাভ করিবার আশায় এতক্ষণ অপেক্ষা করিতেছিলো, উহারা দেখিলো, বড় বড় স্ক্রীনগুলান বিটিভির অধিবেশন শেষের স্ট্রাইপ নকশায় ভরিয়া গেলো, জলদ গম্ভীর স্বরে ঈশ্বর আদেশ দিলেন, "উহারা কর্মানুযায়ী আকৃতিপ্রাপ্ত হউক।" চক্ষের পলকে একদল মানুষের প্রজাপতির ন্যায় পাখনা গজাইলো। দেবদূত গণ ঘোষণা করিলেন, উহারা মর্ত বেজায় নারীলোলুপতা প্রদর্শন করিয়াছিলেন। অন্য আরেকদলের মুখ গহবর হইতে স্ফটিককণা ছিটকাইয়া পড়িতে লাগিলো। এবং উহা মাটিতে পড়িবামাত্র তীক্ষ্ণ আলপিনে পরিণত হইলো। উহাদের খালি পায়ে উক্ত আলপিন বিঁধিতে লাগিলো। উহাদের চক্ষু তীব্র বেদনায় আর্দ্র হইয়া উঠিলেও মুখের হাসি কিংবা স্ফটিক বর্ষণ ক্ষান্ত হইলো না। দেবদূতগণ ব্যাখ্যা করিলেন, উহারা আসলে মিছরি নির্গত করিতেছে। উহারা ধরাধামে মানুষকে মিঠা কথায় ভুলাইয়া ব্যাপক পোঙ্গামারা দিয়াছেন। একপ্রান্তে কতক লোক অক্টোপাস আর রাবণের রেকর্ড ভঙ্গ করিয়া অগুণতি শাখাপ্রশাখা আর মস্তকের অধিকারী হইলেন। এক এক হস্তে ইহাকে-উহাকে চুলকাইয়া দিতে লাগিলেন। সহস্র পা সহস্র নৌকায় তুলিয়া দিয়া ভারসাম্য রক্ষা করিবার নিমিত্তে জানপ্রাণ দিয়া লড়িয়া গেলেন। উহাদের মস্তকসমূহ বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হইতে লাগিলো। কোনোটাতে টুপি উঠিলো, কোনোটাতে বুদ্ধের জ্যোতি, আবার কোনোটায় হরিনাম জপিতে লাগিলেন। দেবদূত বুঝাইলেন, ইহারা চামে নিজেদেরকে সুফীসাধক বলিয়া প্রচার করিতো; মাগার কামে দুনিয়ার মানুষরে তৈলমর্দন করিয়া আপনা আখের গুছাইতে সদাসচেষ্ট ছিলো। হঠাৎ কোথা হইতে বেসবল ব্যাট হাতে একটি বাঁদর আসিয়া উহাদিগকে বেধড়ক পিটাইতে পিটাইতে 'নেমকহারাম' বলিয়া গলাবাজি করিতে থাকিলো। দেবদূত মুখ টিপিয়া বয়ান করিলেন, "ইহা নারীঘটিত ব্যাপার-স্যাপার।" ঈশ্বর উহার সৃষ্টিদিগের এহেন নানরূপ দেখিয়া বিষম খাইলেন। উহারা এত বর্ণধারী তাহা তিনি ঘুনাক্ষরেও কল্পনা করিতে পারেন নাই। বমি বমি বোধে আক্রান্ত হইয়া জলদগম্ভীর স্বরে ঘোষণা করিলেন, "বিচারকার্য আজকের মত মূলতবি করা হইলো।"

মন্তব্য

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
না না কেন মুলতবি। চলুক।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অরূপ এর ছবি
সুখপাঠ্য! ------------------------------------- রামছাগলের সামনে, খচ্চরের পেছনে আর নিবোর্ধের ধারেকাছে না থাকাই শ্রেয়!
ধুসর গোধূলি এর ছবি
চাল্লুরে!!! _________________________________ <স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>
হাসান মোরশেদ এর ছবি
বলাই মোশাই, আপনার এই তীক্ষ্ণ ক্ষুরধার লিখনী টি সামহোয়ার বাজারে রপ্তানী আবশ্যক । উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করিয়া বাধিত করিবেন । -------------------------- আমি সত্য না হইলে গুরু সত্য কোনকালে?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি
আমি তো যামু না। অন্য কেউ নিয়ে পোস্টাইলে আমার আপত্তি নাই। শমশেররে কমু?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
শমসের আলম নামের ব্লগারটির প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা।
সুমন চৌধুরী এর ছবি
হাহাহা ....................................... ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

শুভ ভাই, এরকম এডিটবিহীন অগোছালো লিখা একজনই লিখতো।
এখন আবার পড়ে দেখলাম। সর্বনামের ব্যবহার মানুষ এত বাজেভাবে করে কিভাবে!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।