সৌভাগ্যের শক্তি, প্রভূদার পুঁথি পাঠ

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: শনি, ২৮/০৬/২০০৮ - ৫:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

http://www.uni-stuttgart.de/philo/index.php?id=643
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি!
কোন এক গবেষনা পত্রের খসড়ায় পড়ে থাকব; মন নিয়ে নিরীক্ষার কথা। মোট কথা আমাদের সাধ্যের বাইরে যেন কিছু না থাকে। যে দুএকটি নক্ষত্র এখনো মানুষের আলোক প্রক্ষেপনে ধন্য হয়নি; তাদের সন্ধানে "হাবেল" টেলিস্কোপ পাঠিয়েছি অজানায়। অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার চেয়ে অনেক জটিল কাজ করতে "ফিনিক্স"-কে পাঠিয়েছি মঙ্গলে। হয়তো সেখানে একদিন বসুন্ধরা আবাসিক কমপ্লেক্স তৈরী হবে।

একটার পর একটা মিশন পাঠিয়ে শেম্পেনের তোপধ্বনি আর তরল গোলায় সাফল্য-সৌভাগ্যের তৃপ্তি-সুখে যাদের সুখের লালসা চরিতার্থ করার সাধ্য নেই, তাদের সুখে কোকাকোলা আর ইগলু আইসক্রিম।

মানুষের সুখের সন্ধানে এত আয়োজনও অনেক সময় আশানুরুপ সাফল্য দিতে পারে না। আমাদের প্রতিদিনের অপূরণীয় ইচ্ছেগুলোই তার যথেষ্ট প্রমাণ।
কেউ আবার ক্ষিধের সময় কি খাবে তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় থাকে।
অনেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে কোন স্কলারশীপ নিয়ে ক্যারিয়ারের বারোটা বাজাবেন সে দূর্ভাবনায় নিদ্রাহীন রাত্রি কাটায়।

এমনি হাজারো সুখের অসুখে আক্রান্ত এ গ্রহের বাসিন্দারা। "তাদের একান্ত ব্যাক্তিগত সুখের উৎস আর তা অর্জণের অভিযান, তাদেরকে তেমন করে গড়ে তোলে, তারা যেমন;" -বলেন প্রভূদা।

পুরো নাম প্রভূ মজুমদার। মাত্র দুমাসের জন্য জার্মনীতে বেড়াতে এসে, একেবারে জীবনের ফয়সালা। মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শণে পড়ালেখা করে দর্শণ নিয়েই ব্যস্ত থেকেন সবসময়। গমগমে গলায় জার্মান সাহিত্য-দর্শণ নিয়ে বক্তৃতার সময় উৎকীর্ণ হয়ে থাকেন জার্মান শ্রোতা-দর্শক বৃন্দ। বিষয়- বস্তু, বাচন-ভঙ্গি আর ভাষা-শৈলীর উপস্থাপন দেখে অনেক সময় বিশ্বাস করা কঠিন: যে এ লোকটির মাতৃভাষা জার্মান নয়!

একদিন কায়দা মত পেয়ে বিয়ারের নেশায় মাতৃভক্তি তুঙ্গে তুলে প্রভুদা-কে বলি; প্রভুদা তুই বাংলায় লিখ।
প্রভুদার মনে হয় আমার উপদেশ জানাই ছিল। বলল: বাংলায় লিখতে হলে বাংলাদেশে গিয়ে থাকতে হবে। আমি আর কথা বাড়াই না। অথচ এমন একজন দার্শণিক আমাদের খুব প্রয়োজন ছিল।

অনেক বই প্রভুদা লিখেছে কিন্তু সবগুলোই জার্মান ভাষায়। তার কয়েকটা উপহার পেয়েও ভয়ের চোটে পড়িনি (একেকটার পৃষ্ঠা সংখ্যা ছ'শর মত)। আমার জার্মানটাও তেমন উর্বর নয়। কথায় কথায় যখন বই নিয়ে কোন কথা উঠে না, তখন প্রভুদা ধরে নেয়; বইটি আমি পড়িনি।

"সৌভাগ্যের শক্তি" বইটি হয়তো এসব কারণেই আমি উপহার পাইনি। কিন্তু নান্টু ভাইয়ের বাসায় বইটি দেখে বিশেষ করে নাম এবং সাইজ দেখে পড়ার ইচ্ছে হল।

পড়ি আর অবাক হই। মনে মনে বলি; প্রভুদা তুই এত লেখা পড়লি কখন! ফ্রিডরিখ নিন্সে থেকে শুরু করে দুনিয়ার তাবৎ দার্শনিকদের উদ্বৃতি। মনে হয় প্রভুদা আমার জন্যই বাছাই করে এসব মনিষীদের কথা এখানে তুলে দিয়েছে। নির্ঘন্টে উদ্বৃত বইয়ের তালিকা দেখে মাথা ঘুরে যায়। অনেক ছবি, নক্সাও বইয়ে প্রয়োজনীয় ভাবে যোগ হয়েছে।

হতাশা, ব্যর্থতা, সংশয়, সংকট এসব সমস্যা তো কম দেখলাম না! তাই এসবের পেছনের কারণ "আকাংখা" টি না থাকলে অনেক সমস্যার সৃষ্টিই হতো না। সৌভাগ্যের শক্তি পড়ে তাই মনে হয়।

কিন্তু অপেক্ষায় বসে থাকলে, সৌভাগ্যের বান আমাকে সুখের শায়রে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে, এমন কথা প্রভুদা বলেনি। অন্ততঃ সুখের আশা থাকতে হবে।

কিন্তু সব প্রস্তুতি সুসম্পন্ন থাকলেই সুখী হওয়া যাবে, সে গ্যারান্টিও প্রভুদা দেয়নি। প্রতিদিনের বিজ্ঞাপনী আর্বজনায় বস্তুগত আকাংখার স্রোতে ভেসে না গিয়ে থাকতে পারে, এ যুগে এমন মানুষের সংখ্যা কম। হয়তো এ কারণেই সত্যিকারের সুখী মানুষ পাওয়াও কঠিন।

কারণ; পরিশ্রমে সাফল্য পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু সুখ কি সব সময় পাওয়া যায়?


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

কি ভাই, উপন্যাস কি শ্যাষ? নাইলে অ্যাত্ত কঠিন লেখা কোইথন পাইলেন? আমার নরম মগজে কিছুই ঢুকতাসে না। কান বন বন করতাসে!
দুই চাইর প্যারার অনুবাদ পাইলেও মনেরে কিসু বুঝ দিতাম!

ধন্যবাদ পতুল!

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

পুতুল এর ছবি

"দুই চাইর প্যারার অনুবাদ পাইলেও মনেরে কিসু বুঝ দিতাম!"

ভাই শেরালীর আরো অনেক পথ বাকী, একটু জিরিয়ে নিচ্ছে।
অনেক দিন থেকেই ভাবছিলাম প্রভূদার লেখালেখির বিষয়টা ব্লগে শেয়ার করব। বিভিন্ন ঝামেলায় আর হয়ে উঠেনি।
কিছু অংশ অনুবাদ করে তুলে দিলে ভাল হত, কিন্তু সময় পেলাম না।
ভেবেছিলাম লিংকটায় অন্তত কিছু ইংরেজী থাকবে, তাও নেই।

অল্পবিদ্যা ভয়ংকর, বেশী ভাল লিখতে গিয়া নিজের বোকামীর কাছে ধরা কাইছি। তাই লেখাটা পড়ে জুইত পাইলেন না। দেখি যদি কাল যোগার করতে পারি তো একটা লিংক দেব যাতে মূল বইয়ের কিছু একটু পড়তে পারেন।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তীরন্দাজ এর ছবি

প্রভুদাকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। হয়তো লিংক সেই দিতে পারবে। আপনার উচ্ছাসের ও অনুভুতির সাথে পুরো নিজেকে মেলাতে পারছি।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।