৩২ নং খাতার প্রথম গল্প

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: শুক্র, ১৩/০৬/২০০৮ - ৪:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কখনো ৩২ নং খাতার গল্প করবার ইচ্ছা আছে। সেই সিন্ধুতে যা পেয়েছিলাম, তারই বিন্দুখানিক এখানে দেবার চেষ্টা করেছি। এটা হয়তো গল্প কিংবা স্মৃতি কিংবা অজৈবনিক কিছু। তবে এ মানুষেরা সত্যি। তারা ছিল। এখনও হয়তো অপরাধ জগতের কোনো না কোনো চোরাগল্লিতে তারা দাঁড়িয়ে আছে। তাদের প্রতি আমার একটা ঋণ ছিল। এখানে সেটাই নিবেদন করার চেষ্টা করা গেল।
..........................................................

৩২ নং খাতায় এরকমটা হরহামেশাই ঘটে। মাঝে মাঝে সরিষার তেল কি সাবান খুঁজে পাই না। রাজ্জাক ভাইকে বলতেও সংকোচ। রাইটার মানুষ, তারই জিম্মায় থাকি। তার কাঠের বাক্সটার ভেতর একটা খাতায় সবার নাম লেখা। কেউ গেলে বা কেউ হারালে সেই খাতায় লাল-নীল দাগ পড়ে। ভুলচুক হলে রাইটারকেও একদিন কাটিয়ে আসতে হয় দুরমুশ সেলে। ফিরে আসার পর কমপক্ষে তিনদিন লাগে উঠে দাঁড়াতে।
সাবান-টাবান সিগারেট-টিগারেট এগুলা কিছু না। রাইটারের হেল্পার হিসেবে রাজু এগুলা নিতেই পারে। আবার রাতে তো সিদ্ধির যোগান ওই-ই দেয়। ওর আর ডাকু রমজানের জন্যই রাতটা রঙ্গিন রঙ্গিন হয়। রমজান ডাকু ছিল, আবার যাত্রার নায়কও ছিল। সারারাত রমজানের পাট দেখে শ'খানেক মুগ্ধ পুলিশ ভোরবেলা ওকে হাতকড়া পরাতে গেলে রমজান বলে, 'ওসি সাব, পালার গানগুলান কিন্তু আমরারই, নাগছে ক্যামুন'? ওসিরা সাধারণত আহাম্মক হয়। কিন্তু ইনি অন্যরকম। রমজান ডাকু বিনা হাতকড়ায় রাতজাগা যাত্রাপালার দর্শকরা ফ্যালফ্যাল চাহনির সামনে দিয়ে পুলিশের সঙ্গে চলে যায়। সেই রমজান এখন যাবজ্জীবন নিয়ে ৩২ নং ওয়ার্ডের গায়েন কাম প্রক্টর। রাতে সে যখন ওল্টানো থালিতে আঙ্গুল টুকে গান ধরে, 'যে আমারে আদর কইরে গো-ও-ও, নাম রাইখ্যাছে আদরিনী-ইই, আমি কী তার আদর জানি' গায়; দিলটা একেবারে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। কোনাকাঞ্চি থেকে কেউ হয়তো তখন ডুকরে ওঠে। আর রমজান পাহারা আওয়াজ দ্যায়, 'মাঙ্গির পুত, শাউয়ার কাঠি ভাঙুম নিহি'।
এদিক থেকে রাজু একটু ধান্ধাবাজ টাইপের। তখন আমীর খান হিট। ওরও আমীর খানের মতো চোহারাছবি। শুক্রবার সকালে নায়কটি সেজে মুখে স্নো-পাউডার মেখেটেখে আমাদের আমীর খান ডেটিংয়ে যান। চওড়া বারান্দা পেরিয়ে নামলে চত্বরের মধ্যিখানে বাঁধানো আম গাছ। সেখানে ছায়ায় দাঁড়িয়ে সেন্ডেলের ফিতা লাগান এবং হাতের তালু দিয়ে চুল শান দেন। রোজ শুক্রবারে আমরা এ দৃশ্য দেখি। সপ্তাহে এই একদিন; ওর ঈদ।
দুপুরের পরে ঘন্টাখানেকের জন্য ছাড়া হয় সবাইকে। তখন পায়চারি করতে করতে ওই আমগাছটার তলায় গিয়া বসি খানিক সময়। বেশিক্ষণ বসা ভাল না। সারাদিন বসে বসে থাকা হয় বলে চলে বেড়ানোর এইটুকু সুযোগ কেউ ছাড়ে না। ওই সময়টায় বিড়িটিড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা। আমরা বিড়ি খেতে খেতে উঁচু দেয়ালের ওপারে বসতবাড়ির ছাদের কাপড় কিংবা পাশের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বন্ধ জানালা দেখি।
মাঝে মাঝে তাস খেলা হয়। তাস চালতে চালতে দাড়ির গোড়া প্যাঁচানো অরুণের মুদ্রাদোষ। আমি বলি, 'কী অরুণ সব কেশই কি প্যাঁচাও নাকি!'। ওইটকু মানুষের অত্ত বড় দাড়ি আর ইয়া লম্বা চুল। সে এক কাণ্ড বটে! দাবা ভাল খেলে আরমান ভাই। মুখের সামনে শূণ্যে আঙুল দিয়ে আঁক কষে অব্যর্থ চাল দেয়। লোকটা কথা কয় না তেমন। শরিয়তপুর বাড়ি। ফলের ব্যবসা করতো। ভাইঝির ওপর কারা যেন বোমা মারে। পরের তিনদিন সে আগুন হয়া তামা তামা হয়া ঘোরে আর আতিপাতি করে খোঁজে। চতুর্থ দিন রাতে বোমারুদের একজনকে পায়। মশারির মধ্যে ঘুমাচ্ছে। ঐ মশারি পেঁচিয়েই লোকটাকে কাঁধে করে মাঠে এনে ফেলে। খড়টড় যোগাড় করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। তারপর সোজা এখানে এই ৩২ নং খাতার বাসিন্দা হয়।

দুই. কোথা থেকে যেন একটা গান ভেসে আসছে। কী যেন মনে করিয়ে দেয়া আর সুরে যেন পুলকের টান। গানটা আস্তে আস্তে আরো স্পষ্ট হয়। আমরা যেন এক চাপা গ্রহণ লাগা আলোর নীচে কোথায় চলেছি। একটা দীর্ঘ রজ্জুর মতো কী একটা আমাদের কাঁধে, গলা ঘেঁষে। একটা উতসবের গানের মধ্যে আমরা সার বেঁধে হেঁটে যাচ্ছি। কোথায় যেন আনন্দ লেগেছে। আর চাপা উজ্জল আলোর তলায় রাশি রাশি মেঘে ছাওয়া গানের পথ উঠে গেছে আকাশের দিকে। চারপাশে জ্যোতির্ময় কুয়াশার মত ঘোর আর সেই সুর তরলের মত ভিজিয়ে দিচ্ছে আমাদের। যত যাই, গানটা তত চেনা চেনা লাগে। হঠাত বুঝতে পারি, এটা স্বপ্ন। চাইছি স্বপ্নটা চলুক। কিন্তু গানটা যেন আরো পরিষ্কার হতে থাকে। মর্মে ঢুকে যেতে থাকে। আমাদের সবার ঘাড়ে গলা ঘেঁষে যাওয়া সেই রশিটাও আরো ভারি হতে থাকে। দমবন্ধ হয়ে আসে যেন। অকষ্মাত একটা ঝাঁকুনি দিয়ে গান চলে যায়, সুর চলে যায়, সেই আলোটা চলে যায়; আর আমি জেগে যাই।
বুকটা চেপে আছে। চাপা দমবন্ধ ভাব নিয়ে জানালা দিয়ে চেয়ে আছি। বাইরে কোথাও বাজতে থাকা গানটা তখনই শেষ হলো। আহ্! কী গান জানা হলো না!

তিন.আমরা থাকি একটা পুরনো দক্ষিণমুখী লাল লম্বা দালানে। পুরো জেলখানাটা দুপুরের খাওয়ার পরে একটু শুনশান থাকে। ৩২ নং খাতার প্রাণীরা তখন যার যার ঘাম আর হাঁসফাঁসানিতে জারজার হতে হতে ঝিমায়। ঘামে কম্বল, জামা আর মেঝে ভেসে গেলে সেটাতে পিঠ ঠেকালে একটু ঠাণ্ডা লাগে। এরকম সময় টুপ করে দোতলার কয়েদিদের ওয়ার্ডে চলে যাই। নীচতলাটা হাজতিদের আর ওপরটায় দাগি কয়েদিদের জায়গা। দিনে ওরা কাজে যায়। জেলের ভেতরই নানানরকম খাঁটুনির ব্যবস্থা আছে। মাঝে মাঝে লুকিয়ে তাদের কারো বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবতাম। এখানে এসে বিরাট শিকওয়ালা জানালা দিয়ে আকাশ দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে যেতাম। নীচতলায় এসবের কোনো বালাই-ই নাই। আজ সেখানে শুয়ে আবার সেই স্বপ্নের কথা মনে হলো। ইস্ কোথায় যেন আনন্দ লেগেছে!

চার. এসময়টায় হাঁটুর ওপর থুতনি লাগিয়ে জগন্নাথ ঠাকুরের মতো না হয়ে উপায় খাকে না। গুনতি হবে এবং গুনতিতে কোনো ঝাউলিমাউলি চলবে না। সকাল-সন্ধ্যা গুনতি ঠিক আছে তো সব ঠিক। ওই যে গুনতি দারোগা আসছে। রমজানের পান্টির কয়েকটা বাড়ি এর-তার পিঠে পড়ায় সবাই বেশ সিজিলমিছিল করে বসে। আর দুনিয়ার বদমাইশি শালা তখনই চাগান দেয়। এ ওর পাছায় কাঠি দেয়, সে তাকে কম্বল পালিশের জন্য জেঁকে ধরে। তারই মধ্যে একেকজনকে দেখা যায় হাসির ঠেলায় হঠাত ছেড়ে দেয়া স্প্রিংয়ের মতো তড়পাচ্ছে।
কিন্তু আজ সব শুনশান। রমজান পান্টি দিয়ে নিজের ঊরুতে বাড়ি মারতে মারতে ঘুরপাক খাচ্ছে। চোখটা আর মানুষের নাই, কুকুরের মতো লাল। বুঝলাম ভর সন্ধ্যাতেই সিদ্ধি টেনে মেজাজ তিখা করে আছে। আমাদের কোণাটায় রাজ্জাক রাইটার তার কাঠের বাক্সের ওপর বসে গরাদের বাইরে তাকিয়ে আছে। তার পাতলা দাড়ি বাতাসে কাঁপে। ওদিকে সাত-আটজন দাবার দানের দিকে ঝিম মেরে তাকিয়ে আছে। যেন যে কোনো মুহূর্তে সেখান থেকে থেকে বিষ্ফোরণ ঘটবে। মুহূর্তে খেয়াল করলাম কেউ কারো মুখের দিকে তাকাচ্ছে না।
ধ্বক করে উঠল বুকের ভেতর। বুঝলাম, খবর চলে এসেছে। রাজুকে দেখলাম না। ওর আগেই কি খবরটা চলে এসেছে! আজ ছিল ওর রায়ের তারিখ। সকাল বেলা সেজেগুজে বেরিয়ে গেছে এক হাবিলদারের সাথে। ওদিকে মেয়েদের ওয়ার্ড থেকে সিরাতকেও বের করা হয়েছে। এক মামলার আসামি বিধায়, দুজনকে একসঙ্গেই কোর্টে তোলা হয়। একসঙ্গেই ওরা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে দিনের পর দিন সওয়াল-জবাব শোনে। আজকেও শুনেছে নিশ্চয়।

পাঁচ. লকআপের ঘন্টা বাজিয়ে দিল ঘন্টি। এখনও ফিরল না রাজু। আমরা বসে আছি। শিকের ভেতর দিয়ে বাইরের চত্বর, চত্বর পেরিয়ে চৌবাচ্চা। তার পরে লোহার বেড়ার ওপারে গুদামের মতো একটা টিন শেড। ওটার নাম আমদানি। নতুন চালান এলে প্রথম রাতটা তাদের ওখানেই কাটাতে হয়। সন্ধ্যার আলোর মধ্যে সেটাকে একটা মালবাহী জাহাজের মতো লাগে। প্রথম রাতটায় আমাদের সাতজনকে ওখানে রেখেছিল। পরদিন বিকালে যার যার ওয়ার্ড ভাগ হওয়ার সময় রাজ্জাক রাইটার আমাদের নিতে রাজি হয়। বিছানা-কম্বল-গোসলের পানি ইত্যাদি বাবদ সপ্তাহে জনপ্রতি পাঁচশ টাকা চুক্তি।
গুণতি শেষ। কয়েকটা ঠোঙ্গা বারান্দায় এ মাথা ও মাথা করে। সেন্ট্রিদের এ নামেই ডাকা হয়। রাজুর বিয়ে হয়েছে এখানেই। কিংবা হয়তো ওরা আগেই বিয়ে করে রেখেছিল। কে জানে?
কেবল বিয়েই। সেই সুবাদে শুক্রবার সকাল করে ওদের দেখা করতে দিত। মুখোমুখি শিকের এপার ওপার বসে ওরা কী কথা বলতো? গরাদের দুদিক থেকে দুটো হাত এসে কী তখন একটা জায়গায় মিলত? ওরা কি পরস্পরকে অভয় দিত? তবে আমাদের ভাগের সাবান চোরাই পথে যে রাজু মারফত সিরাতের কাছে চলে যেত, সেটা নিশ্চিত। এজন্যই রাজু কিছু নিলে আমরা কিছু মনে করতাম না। বরং চোখ টিপে হাঁসতাম।
খুনটা ওরা দুজন মিলেই করেছিল। আদালতেও সেটা প্রমাণ হয়েছে। কিংবা ওরা করেনি। কে জানে? রাজু এ নিয়ে মুখ খোলে না। তবে আজকে আর ছাড়ব না। বলতেই হবে, যে মরেছে সে কেন মরেছে? কিংবা এসব প্রশ্ন আজ অবান্তর। ৩২ নং খাতার মানুষেরা কখনো এসব কথা তোলে না। যা হবার তা নাকি হয়-ই, আর যখন হয় তখন নাকি কেউ ঠেকাতে পারে না। আরমান কি জানতো না, মশারির মধ্যে পেঁচিয়ে একজনকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারলে কী হয়? কিংবা সাভারের শেরআলী কি জানে না, মাকে খুন না করেও মায়ের ঘাতক হিসাবেই ওর বিচার হবে? ৩২ নং খাতায় এসব প্রশ্ন তোলা আহাম্মকি।
আমরা বসে আছি। আমগাছটা থেকে ঝুরঝুর করে অন্ধকার পড়ে সবকিছু কালিকালি করে দিচ্ছে। সবগুলো ওয়ার্ডে তালা পড়বে এখনই। দূরের একটা দালানে শিকের সঙ্গে কেউ টিনের থালি বাজাচ্ছে। রাজুর আসার সময় হলো।

আহ স্বপ্নে আসা গানটা কী ছিল যদি জানা যেত!


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

এভাবে বলাটা ঠিক হবে কিনা জানি না, কিন্তু এ পর্য্যন্ত আপনার যতগুলো লেখা পড়েছি - এটা সবচাইতে ভালো !! আপনার 'মানুষ নির্ভর' নীতি বা জীবন বোধের ব্যাপারটা এটাতেই সবচাইতে সোচ্চার।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

কী জানি! তবে এই মানুষগুলো ছিল। আর জীবনবোধটা বোধহয় জীবনকে যেভাবে বোধ করেছি, যাদের জীবনের আস্বাদন কিছুটা পেয়েছি সেসব মিলেই গড়ে ওঠে। আমারো ওরকম কিছু একটা বোধহয় গড়ে উঠেছে।
আপনার বলাটা ভাল লাগলো। র

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

তীরন্দাজ এর ছবি

আহ স্বপ্নে আসা গানটা কী ছিল যদি জানা যেত!

অদ্ভুত সুন্দর লাগলো আপনার গল্পটি ও বলার ধরণ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

এবং গানটা যে আপনার চোখে লেগেছে, তাতে সার্থক হলাম। আমি জানি না, গল্পটার সঙ্গে স্বপ্নে শোনা ঐ গানটার কী সম্পর্ক। তবে ৩২ নং খাতার কথা মনে হলে ঐ গানের আমেজটাও মনে আসে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

জেলে এলাম সেই কবে
তারপর দশবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছে পৃথিবী।
পৃথিবীকে যদি বলো, সে বলবে
'কিছুই নয়,
অণুমাত্র কাল।'
আমি বলব
'আমার জীবনের দশটা বছর।'

যে বছর জেলে এলাম
একটা পেন্সিল ছিলো
লিখে লিখে ক্ষইয়ে ফেলাতে এক হপ্তাও লাগেনি।
পেন্সিলকে জিজ্ঞেস করলে সে বলবে:
'একটা গোটা জীবন।'
আমি বলব:
এমন আর কী, একটা মাত্র সপ্তাহ।'

আসলে কিছুই বলার ছিলো না... সামর্থহীনতায়... তাই নাজিম হিকমতিয়া...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পুতুল এর ছবি

যদি সত্যিই জেলের অভিজ্ঞতা থাকে, তা নিয়ে একটা পোষ্ট দাবী করছি।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ছিল তো কিছুটা।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হুমম, দেখছি সর্বদাই আমার প্রতি আপনার অশেষ কৃপা। আপনার মন্তব্যে নাজিম হিকমতের কবিতাটা এই পোস্টকে যারপরনাই ধন্য করলো। @ নজরুল.কম

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পুতুল কি আমাকে বললেন জেলখানার অভিজ্ঞতার কথা লিখতে? ফারুক ওয়াসিফের সামনে সেটা ধৃষ্ঠতা হয়ে যাবে হে। আমার দৌড় ৪/৫বার থানা হাজত আর একবার জেল হাজত পর্যন্ত। যদিও তদিয় অভিজ্ঞতাই আমার জীবনে দারুণ...
ফারুক ওয়াসিফ তার ৩২ নম্বর খাতার সবগুলা গল্প নাজেল করলে সেইটা একটা দারুণ কাজ হইবো।

আর ফারুক... ভাইরে... আপনার অশেষ কৃপার দৌলতেই না এইরম অসাধারন সব লেখা পাঠ করতে পারি... আমি তো মুগ্ধ পাঠক মাত্র।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পুতুল এর ছবি

ভালইছে। ৫ তারা।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সুমন সুপান্থ এর ছবি

এ্য মাস্টার পিস্ ফরম এ্য টেলেন্ট রাইটার !!
ব্রাভো, ফারুক ওয়াসিফ

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জেলের ভাত না খাইয়া মনে হয় মিসই করছি....দেঁতো হাসি



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

জাহাঙ্গীরনগরের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়া জেলবাসে গিয়াছিলাম। অরাজনৈতিক (!) বিশ্বজিতও সেই দলে ছিল, সম্ভবত দেঁড়েল কোটায়। তুমি থাকলে রাজনৈতিক দেঁড়েল হিসাবে তোমারেও নিতে পারতাম। কী করা যাইবে, ছোটো কারাগারে তুমার পোষাইল না, তুমি গেলা জর্মন দেশে ....

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সঠিক। খাঁচার মধ্যেই নাচি।

সেদিনের ঘটনা ছিল অন্যরকম। আমি আর শাপলু দুপুর থিকা ট্রেকিং করতেছিলাম কৈলাশ পর্বতে। রাত আটটার দিকে নন্দীভৃঙ্গী বর্হিবিশ্বের খবর নিতে প্রান্তিকে গিয়া শুনি ঠোলা নাকি একটু পর পর ক্যাম্পসের ভিতরে আইসা মাইরধইর করে। তারপর গেলাম ভাসানী। সেইখান থিকা বাইর হইলাম রাইত দুইটায়। দেখি প্রোভোস্টের নেতৃত্বে এমএইচের শিক্ষকরা হলের দিকে যায়। ঢুইকা পড়লাম সেই দলে। সকালে জানলাম গতরাতে ঢাকা থিকা ফিরা ঠোলার কুশল জিজ্ঞাসা করতে গিয়া ডেইরি গেইট থিকা আপনে, বিশ্বজিত প্রমুখ ঠোলার গাড়িতে কইরা আবার ঢাকায় গেছেন। সেইদিন সকাল দশটা নাগাদ ঠোলা আবারো মস্তানি শুরু করছিল। আমি বহু কায়দা কইরা কালিয়াকৈর হইয়া কখনো বাঁশ কখনো টেম্পো দিয়া ঢাকায় আসছিলাম।



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

সেদিন ক্যাম্পাসে বিনামেঘেই বর্জ্রপাত ঘটেছিল। ঢাকায় গিয়েছিলাম একটা সমাবেশে। সেখানেই শুনলাম ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক কাওসার আহমেদ মারা গেছেন ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনায়। ছাত্ররা আরিচা রোড বন্ধ করেছে সেটার খবর পাই নাই। রাতে সাভার পর্যন্ত এসে ফাঁকা রাস্তায় হেঁটে হেঁটে ডেইরি গেট দিয়া ঢুকতে গিয়া কী মনে করে পুলিশদের জটলার দিকে গেলাম। গিয়ে বললাম, রাস্তায় তো আর ছাত্ররা নাই রাস্তা গাড়ি চলা চালু করেন। বলা মাত্রই একজন সিভিল ড্রেস পড়া কনুই দিয়া গুতায়। মেজাজ খারাপ হল। বললাম, গুতান ক্যান, আমি তো কথা বলতেছি। অফিসার জিগগেস করে, নাম কি? নাম বললাম। ততক্ষণাত আটক এবং পুলিশ পিক আপে করে সাভার থানায়।
পরে ঐ সিভিল ড্রেস থানায় আমাকে বলে, আপনারে পেলে গ্রেফতারের নির্দেশ ছিল। এজন্যই ইশারা করছিলাম, চলে যান। আমি আপনারে ভাল করেই চিনি। আর আমি ভেবেছিলাম উল্টা।
রাতটা কাটে থানার ওয়েটিং রুমে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন এক মহিলা। তাঁকে বারবার বলি সমস্যাটা কী? কাল আমার মাস্টার্স ফাইনাল। এই আমার আইডি কার্ড। তিনি শোনেন, আর এদিক ওদিক ফোন করেন। শেষে এসে বললেন, ওপরের নির্দেশ আছে, তারপরও চেষ্টা করছি। তখনও আমার নামে আগের ভিসি বায়েসের করা অ্যাটেম্পট টু মার্ডার মামলাটা চলছিল বোধহয়। ভয় ছিল এটা নিয়ে। এটা জানলে তো আর ছাড়বে না। রাতে পুলিশের ওয়াকিটকির আওয়াজে শুনলাম, ক্যাম্পাসে রীতিমত যুদ্ধ চলছে। ভোরের দিকে সেই মহিলা এসে জানালেন, জননিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়ে গেছে। আর কিছু করার নাই। ততক্ষণে বিশ্বদেরও নিয়ে এসেছে। আমি ওদের সঙ্গে হাজতে ঢুকলাম। পরের কাহিনী পরে।
তবে আমার বোধহয় স্মৃতিবিভ্রাট হয়েছে। আমার মনে হয়েছিল তুমি বোধহয় ততদিনে ক্যাম্পাসে নাই। কিন্তু তা কী করে হয়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

তারেক এর ছবি

এসব মুগ্ধ হয়ে পড়ে যেতে হয়
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

রানা মেহের এর ছবি

বাকি লেখার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি।
আপনার সব লেখার মাঝে এ লেখাটা সেরা
(অন্তত আমার কাছে)।
বিষয় - বর্ণনা সবকিছুই অসাধারণ।
সবচেয়ে ভালো লেগেছে পরিমিত মমত্ববোধ
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ৩২ নাম্বার খাতার কথাই লেখেন আর ৩২ নাম্বার ব্যাণার্জী লেন- আপনের হাত দিয়ে সবই পূর্ণতা পাইয়া যায়। চাইট্টা পুইট্টা খাইলেও মনে হয় পেট ভরছে মাগার মন ভরে নাই অখনো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আপনি ওস্তাদ মানুষ, কী যে কন না। লজ্জার পরিমাপ ইমোটিকন দিয়া পুষাইব না বিধায় লজ্জা পাইলাম না।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
মুশফিকা মুমু এর ছবি

এরকম গল্প এই প্রথম পড়লাম, একদম অন্যরকম লাগল, ইন্টারেসটিং হাসি
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ মুমু।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ভাবছিলাম ব্যক্তিগত ম্যাসেজ-এ বলবো... সেল নম্বর থাকলে সেখানেই আওয়াজ দিতাম... পরে ভাবলাম লুকোছাপার তো কিছু নাই... চে'র জন্মদিনে নিশ্চয়ই আপনার একটা লেখা পাবো তাই না?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

যা ভেবেছেন, চেপে যান। এমনিতেই সব লাটে তুলে গত কিছুদিন যেভাবে সচলামোতে মেতে আছি, তাতে গৃহে এবং কর্মকাজে অশান্তির মেঘ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা হয়েছে।
আর চে'র গেরিলা ওয়ারফেয়ার ছাড়া তেমন কিছু পড়া নাই। একটা না বুঝে লিখি কেমন করে?

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কি আর করা মন খারাপ
আমার অবস্থাও তথৈবচ... এবং আমার যেহেতু না লিখলে টাকার আমদানিও বন্ধ... সেই মতে আছি বিপদে... বেশি সচল থাকলে তো পরে দৈন্যদশা বাড়বে কেবল। ঘরের বস্ ইতোমধ্যেই সচলায়তনকে সতীন ভাবতে শুরু করেছে।
ঠিক আছে... লিখবেন না লিখবেন না... তাই বলে না বোঝার ভাণ নিলে কেম্নে কি?

নম্বরের জন্য ধন্যবাদ... ফোনও করেছিলাম... দেখলাম ব্যস্ত... ঠিকাছে... আরেকদিন কথা বলবো নে... ভালো থাইকেন...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ঘরের বস্ ইতোমধ্যেই সচলায়তনকে সতীন ভাবতে শুরু করেছে।
আমার অবস্থাও তথৈবচ। আর চে-র বাকি জীবনের ইতিহাস, ল্যাটিন আমেরিকায় যে ধরনের বিপ্লব তিনি করতে চেয়েছিলেন, তার ডাইনামিক্স কিংবা হুইস্কি কিংবা টি শার্টের গায়ে চে'র কল্লা ঝুলানো; এসব মিলিয়ে মনের মধ্যে কোনো স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়নি। এটা সত্যি।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

নীল সালাম হলেও মাথা পেতে নিতাম এবং নিলাম। @ খেকশিয়াল

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

খেকশিয়াল এর ছবি

ফারুক ওয়াসিফ ভাই আপনারে লাল সেলাম

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আপনার ব্লগে কী কমেন্ট করব কখনোই বুঝে উঠতে পারি না। কী করব। অভিজ্ঞতার ঝুলিটা প্রায় শূন্য।
আপনাকে দেখে হিংসা হয়। আপনাদের দেখে ঈর্ষা হয়।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

দ্রোহী এর ছবি
ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ মাঝি! ডরাইছি! অ্যাঁ

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

দুর্দান্ত গল্প। লেখককে অভিবাদন।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍খুউব ভালো লাগলো।

জেলখানার কাহিনী বলে মনে পড়লো অনেক আগে দেখা একটা সিনেমার কথা - "মিডনাইট এক্সপ্রেস"। পিংক ফ্লয়েডের "ওয়াল"-খ্যাত পরিচালক অ্যালান পার্কারের ছবি। অতিনাটকীয়তা প্রায় সারা ছবিতেই, তবু দেখতে মন্দ লাগে না।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

অনেকেই পড়ে ফেলেছেন। এখন গল্পের কাহিনীর জন্য একটা ফুটনোট দরকার মনে হয়।
যতদূর মনে পড়ে রাজু আর সীরাতের খুনের দায়ে ফাঁসির আদেশই হয়েছিল। বেরিয়ে আসার কিছু পরে খবর পাই, ওরা আপিল করেছে। আরো পরে জানতে পাই, সেই আপিল খারিজও হয়েছে। এরপর আর খবর আসেনি।
রাজ্জাক ভাই জামিন পেয়েছেন, মাঝে মাঝে আজিজে এসে বুকে জড়িয়ে ধরতেন। একদিন তিনিও নিরুদ্দেশ হলেন। সবেধন মোবাইলটা নাকি বেচে দিতে হয়েছিল। ৩২ নং খাতার আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে এভাবেই আমার যোগাযোগ ছিন্ন হলো।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

স্পর্শ এর ছবি

অসাধারণ!! সিম্পলি অসাধারণ!
....................................................................................
অতঃপর ফুটে যাবার ঠিক আগে হীরক খন্ডটা বুঝলো, সে আসলে ছিল একটা মামুলি বুদবুদ!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

shafayet chowdhury এর ছবি

ভালো লাগলো তোমার লেখাটা। পরের কিস্তির অপেক্ষায় থাকবো।

রাজ্জাক ভাইকে দেখেছিলাম আজিজ মার্কেটের বারান্দায়। অরাজনৈতিক (!) বিশ্বজিত আলাপ করিয়ে দিয়েছিলো। তারপর একদিন অনেকটা সময় যায় একসাথে । এক রিক্সায় বাড়ি ফিরি , আমি নামি শাহজাহানপুর রাজ্জাক ভাই ধায় খিলগাঁয়ে । কথা ছিলো আবার দেখা হবে, গল্প হবে হয়তো। তারপর দেখি নাই আর কোনদিন।

লোকটা খুব তাড়ায় ছিলো। কাজকাম কিছু একটা করে গুছিয়ে নিতে চাইছিলো, অনেকটা সময় বেহুদা গ্যাছে ...

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

দেখছিলা তুমি রাজ্জাক ভাইকে! । আবার যদি পাও ঠিকানা ফোন নং ইত্যাদি রাইখ।
আর আছ কেমন?

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

এইসব জিনিস শব্দগুনে লিখছেন কেন? কীবোর্ড খুলে ঝাড়েন, লুটেপুটে পড়ি।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

দ্রব্যমূল্য বাড়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এ বছর শব্দের উতপাদন কম হয়েছে। তাছাড়া যা পাওয়া যায় তার মান ও দাম দুটোই চড়া। দাম একটা পড়ুক...চোখ টিপি

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

.........

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

.....................................

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অসাধারণ আপনার এই লেখাটা। আর আপনাদের জীবন...
কতো অভিজ্ঞতা যে মানুষের থাকে...
আমার মতো সহজ সরল পাঠকদের কথা ভেবে মাঝে মাঝে এইরকম সহজ বুঝানিয়া ভাষায় লিখলে তো আপনাকে খানিকটা পড়তে পারি।
বেশি সময় বসিয়ে রাখবেন না নিশ্চয়ই ?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

জো হুকুম জাঁহাপনা!

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ইয়েস স্যার

মামুন হক [অতিথি] এর ছবি

ভালো লেখা, আশাকরি আমরা পড়ে যতটা আনন্দ বা চিন্তার খোরাক পেয়েছি আপনি ও লিখতে গিয়ে ততটাই আমোদ বা নস্টালজিয়া অনুভব করেছেন। ভবিষ্যতে এ রকম আরো লেখার আশায় রইলাম।

আলতাইর এর ছবি

পড়তে পড়তে হঠাৎ ক্যান জানি মনে হইলো জহির রায়হানে লেখা পড়তেছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।