বিতর্কঃ মুসলিম ও মুক্ত বচন

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: বুধ, ২৬/০৯/২০০৭ - ১:৩৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইউটিউবের ওপর আমার দখল খুবই সীমিত ছিলো কিছুদিন আগেও, ইন্টারনেটে তথ্যপ্রবাহের শ্লথগতির কারণে। আপাতত সে সীমাবদ্ধতা থেকে কিছুটা মুক্তি মিলেছে, তাই ইউটিউবের বিভিন্ন ক্লিপ দেখতে পারছি, শেয়ারও করতে চাইছি সচলদের সাথে।

এই ক্লিপটি দেখতে পারেন।

এখানে বিতর্কের তীব্রতাটুকু উপভোগ করার মতো।

একটা ফুটনোট সবার জন্যে, যারা ইউটিউবের ক্লিপ দিতে চান। অবজেক্টের প্রস্থ দিতে পারেন ২৮৯, আর উচ্চতা ২৩৮।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

পুরা ৪৫ মিনিট ধরে দেখলাম। দারুন লাগল। কিছু বলব শীঘ্রি।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

দ্রোহী এর ছবি

উইকএন্ডের আগে ৪৫ মিনিট ধরে এই জিনিষ দেখার সময় নেই হাতে - আর উইকএন্ডে ধৈর্য্য নেই। পুরোটা দেখে কেউ একটা পোষ্ট দিন। মামু/হিমু করতে পারেন এটা।


কি মাঝি? ডরাইলা?

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আগে জার্মানীর পত্র পত্রিকায় ইহুদীদের বিরুদ্ধে কি রকম কার্টুন প্রকাশিত হতো সে সব উৎসুক পাঠক দেখে নিতে পারেন। গুগল করলেই খুঁজে পাবেন। কুকুর, সাঁপ, শয়তান - কিছুই বাদ যেতো না। এক দশক ধরে প্রপাগান্ডার পরে যখন ৬০ লক্ষ ইহুদীদের চুল্লীতে ভরা হলো, তখন ইহুদীদের এমন ভাবেই dehumanize করা হয়ে গেছে, যে ইউরোপের বিশেষত জার্মানীর জনগণ টু শব্দ পর্যন্ত করেনি। নিজের পড়শীকে নাৎসী জল্লাদদের হাতে তুলে দিতো তারা। এমনটা ফ্রান্সে, ইতালিতে, সবখানেই হয়েছিলো।

৬০ লক্ষ মানুষ খুন হয়েছে মাত্র ৬০-৭০ বছর আগে, এই সভ্য মানুষের দেশে। ৬০ লক্ষ। সংখ্যাটা একবার ভেবে দেখুন শুধু। মাথা ঘুরবে। আসলে তাহলে কারা 'সভ্য'?

কিছুদিন আগে Lars Vilks কার্টুন এঁকেছেন, নবী মুহাম্মদের মাথা কুকুরের মাথার সাথে জুড়ে দিয়ে। এটার মধ্যে বুদ্ধিদীপ্ত বিতর্ক আদৌ কিছু ছিল না। অতীতে যে রকম ইহুদীদের ত্যক্ত ক রা হতো, এটা অনেকটা সে রকমই। মুসলমানদের মুখে পেচ্ছাপ করা আর কি।

আসলে আমার মনে হয় সমস্যাটা ইউরোপীয়দেরও। তারা অভিবাসী দিয়ে দেশ ভরে দিয়েছে, কারন তারা কন্ডম বা পিল ছাড়া চুদতে রাজি না, বাচ্চা পয়দা করতে রাজি না, বাচ্চা মানুষ করার পরিশ্রম বা unselfishness ইউরোপীয়দের থেকে লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। পরিবার জিনিসটা তারা চায় না। Demographic সমস্যার কারনে প্রতিটি দেশের এখন অভিবাসী দরকার। কিন্তু সেই অভিবাসীদেরই তারা বানিয়ে রাখবে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে। উচ্চশিক্ষা বা ভাল চাকরি-বাকরি দিতে চাবে না, basically ওদের কাছে মুসলিমদের দরকার কাবাবের দোকান চালাতে, ট্যাক্সি চালাতে, রাস্তা-ঘাট পরিস্কার করতে, আর রাস্তার মোড়ে পয়সাওয়ালা শাদার কাছে গাঁজা বা কোকেইন বেঁচতে। এই যে প্রত্যক্ষ আর পরোক্ষ রেসিজ্‌ম ইউরোপীয় সমাজের পরতে পরতে, সেটা ঢাকার জন্যেই হোক বা তাদের অপরাধবোধ ঢাকার জন্যেই হোক বা অন্য যে কোন কারনেই হোক, এরা মুসলিমদের খুঁচিয়ে মজা পায়। Freedom of speech তাদের বর্ণ-বিদ্বেষ বা মুসলিম-ঘেন্না প্রকাশের একটা আব্রু মাত্র।

উলটা আমেরিকার সাথে তুলনা করেন। ওরাও মুসলমানদের কম অপছন্দ করে না। বিশেষ করে ৯-১১ এর পরে তো অবশ্যই। কিন্তু ভাবার বিষয় হলো এই যে এইসব demonizing বা dehumanizing কার্টুন আমেরিকার মিডিয়াতে তৈরী হয় না, কারন মানুষের - সেটা ইহুদী হোক বা মুসলিম - তাদের যে ন্যুনতম সম্মান বা মনুষত্ব্য প্রাপ্য আছে, আমেরিকানরা সেটা সব সময়ই স্বীকার করে। এখানেই আমার দৃষ্টিতে ইউরোপীয় আর আমেরিকানদের মুল তফাত।

এসব বলে আসলে লাভ নেই। আর ১০-১৫ বছর পর demographic পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে যে অভিবাসীদের আজাইরা গালি দিয়ে বা এদের হোগায় বাঁশ ঢুকিয়ে দিয়ে খুচরা সুখ পাওয়ার দিন চলে যাবে। অপমান যদি করতেই চাও, তাইলে যাদের দরকার তাদের আইনোনা। নিজেরা চুইদা কিছু বাচ্চা পয়দা কইরা দেখাও। কারন অভিবাসীর প্রয়োজন এখানে বাড়বেই, কমবে না। সেটা GDP growth-এর মতো দুঃখজনক কারনেই এরা স্বীকার করে নেবে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কন্ট্রাডিকটিং। প্রথমে বললেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইহুদী সংক্রান্ত কার্টুনের কথা। তখন ফ্রিডম স্পীচ ছিল না ছিল সেচ্ছাচার। তারা সেচ্ছাচার করত বলে বন্ধ করতে চাচ্ছেন ফ্রিডম অফ স্পীচ!

তারপর বললেন পশ্চিমা দেশ অভিবাসীদের নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করছে আবার উস্কে দিচ্ছে। অভিবাসীরাও কি ৯/১১র মত ঘটনা ঘটাচ্ছে না?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

স্বেচ্ছাচার বলেন আর ফ্রিডম বলেন, এদের ঘৃণা কিন্তু ঘৃণাই।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনার ঘৃণাও তো ঘৃণাই! এত দূর থেকে বসেও তা টের পাচ্ছি। আবেগ সরিয়ে আলোচনায় বসি আসেন। তারপর বলেন ঠিক কেন ফ্রীডম অভ স্পীচ আপনার পছন্দ না?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

ওরেব্বাপ। ভালই এনালাইসিস করে ফেললেন দেখি আমার। ব্যক্তিগত আক্রমণে গেলে কিছু বলার বাকি থাকে না হাসি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ব্যক্তিগত আক্রমন মোটেও নয়। আপনি জেনারেলাইজ করছেন একাধারে। সেটার সমালোচনা করছিলাম কেবল। আমার বির্তকের ইচ্ছে ছিল। সেজন্য একটু এগ্রেসিভলী আগাচ্ছিলাম। কিন্তু শুরুতেই ব্যক্তিগত আক্রমনের কথা বললে আর আগাই কিভাবে?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

সহমত।
মাঝে-মধ্যে বাকস্বাধীনতার অপব্যবহার হলেই তাকে বাতিল করে দিতে হবে?

সুবিনয় মুস্তফী বড়ো একপেশে মন্তব্য করেছেন। আসলে অধিকাংশ মুসলমানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভাব সহনশীলতার। তারা অপমানিত হবার জন্যে যেন মুখিয়ে থাকে।

খ্রীষ্টান-অধ্যুষিত এক দেশের এক টিভি চ্যানেলে সেদিন দেখলাম একজন রসিকতার সুরে বলছে, "বাইবেলে আছে - ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর নিজের আদলে। তার মানে এই যে, ঈশ্বরও দূষিত বায়ু ত্যাগ করেন!" উপস্থিত দর্শকরা হেসেছে। পরেও এ নিয়ে কোনও হাউকাউ হয়নি।

ঈশ্বর-আর যিশু নিয়ে কতো যে কার্টুন আর কৌতুক আছে! অথচ আমাদের কী অবস্থা? আল্লাহ-ধর্ম-নবীর প্রসঙ্গ এলেই আমাদের কৌতুকবোধ হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো মুসলিমরা আমেরিকানদের ঘৃনা করে ... আমার এ পর্যন্ত যতজন আমেরিকানের সাথে পরিচয় হয়েছে প্রত্যেককেই ভীষন সাবলীল, সাধারণ আর উঁচু মানের মানুষ বলে মনে হয়েছে ...

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমেরিকানরা ইন্ডিয়া আর বাংলাদেশের যত মানুষের সাথে মিশে তাদের ৯৫% ম্যাথে জিনিয়াস। তাহলে কি এই দুই দেশের ৯৫% জিনিয়াস? ওটা বায়াসড স্যম্পল।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

মুর্শেদ, আমি যে শুধু ইউনিভার্সিটি ছাত্র বা প্রফেসরদের কথা বলছি তা না ,,, সাধারন ব্যবসায়ী, টুরিস্ট, ইংলিশ টিচার এমনকি চার;চের ফাদারও আছেন এই লিস্টে ,,,
আমার ভাগ্য ভাল হতে পারে ,, তবে প্রত্যেকেই খুবই সাবলীল ,,সাধারন ,,এবং শ্রদ্ধা জাগানোর মতো মানুষ ছিল

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

তারপরেও তারা একটা বিশেষ জনগোষ্ঠীর। সচ্ছল, শিক্ষিত, বাইরের দেশের লোকদের সাথে সহজে মিশতে পারে। এব্যাপারে ইশতিয়াক রউফ না কার যেন একটা লেখা পড়েছিলাম। মাথা মোটা গোঁয়াড় এদের বেশীর ভাগই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

বাদশা ভাই,
ঠিকই বলেছেন। সাধারণ আমেরিকান মানুষের মতোন মাটির মানুষ আসলেই কোথাও পাবেন না। কিন্তু আমেরিকার আপামর জনগণ আর তাদের সরকার - বিশেষ করে সরকারের আগ্রাসী, নব্য ঔপনিবেশবাদী পলিসি (ভিয়েতনাম, ইরাক, ফিলিস্তিন) - এই দুইয়ের মধ্যে একটা সত্যিকারের ফারাক আছে। তাদের নামে তাদের সরকার কতো পাপ-ক্রিয়া করেছে এবং করে যাচ্ছে, এইটা আমেরিকানরা সবেমাত্রই বুঝতে শুরু করেছে।

হিমু এর ছবি

ইন দিস কর্ণার, ওয়েইং টু হান্ড্রেড অ্যান্ড ফিফটি পাউন্ডস, সুবিনয় "সুমো" মুস্তফী!

ইন দি আদার কর্ণার, ওয়েইং টু হান্ড্রেড অ্যান্ড ফিফটি পাউন্ডস, মাহবুব "মোটাসোটা" মুর্শেদ!

লেটস গেট রেডি টু রাম্বঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅঅল!!


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

হিমু মিয়া, আমারে দেখলে বুঝতা, আমার মতো তিনটারে জোড়া দিলে তুমি বড়জোর একটা সুমো রেস্‌লার পাইবা!!

হিমু এর ছবি

কোন ব্যাপার না। ঈদের দিন একটু ভালো করে খান। তাড়াহুড়ার কিছু নাই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সৌরভ এর ছবি

সেইটাই, হিমু ভাই, আর কোন সমস্যা হলে আমিতো আছি, মোটামুটি মোটাসোটা।
কাকে সাইজ করতে হবে বলেনতো।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।