গল্প নয়, কিন্তু হতে পারতো

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি
লিখেছেন জুলিয়ান সিদ্দিকী (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/১০/২০০৮ - ৯:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বন্ধু হিসেবে আমি মোটামুটি মন্দ ছিলাম না। অবশ্য এখনও যে, মন্দ তা-ও কেউ জোর দিয়ে বলেনি। কাজেই বন্ধু হিসেবে আমি বেশ- কথাটি ভাবতে বেশ পুলক অনুভব করি। কিন্তু বন্ধুদের নিয়ে তাদেরই অজান্তে মাঝে মধ্যে একটি অদ্ভুত পরীক্ষা চালাই। আমার জানতে ইচ্ছে হয় - বন্ধু হিসেবে আমি যতটা নির্ভরযোগ্য, তেমনি আমার বন্ধুটি আমার জন্য কতটা নির্ভরযোগ্য? এবং তা জানতে নিজস্ব কিছু কলা-কৌশল ব্যবহার করি। এ পর্যন্ত যতজনের উপর পরীক্ষা চালিয়েছি পাশ-ফেলের নাগরদোলায় বলতে গেলে সবাই আমার থেকে ছিটকে পড়েছে দূরে। তবে বন্ধুটিকে কখনো জানতে দেই না যে, তার আর আমার মধ্যকার যোগসূত্রগুলো একে একে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছি। মুখ ফুটে কখনো বলি না আমরা পরস্পর ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছি। কিন্তু বন্ধুটি থেকে আমি বিচ্ছিন্ন থাকলেও কখনো তাকে ভুলে যেতে পারি না। যাপিত জীবনে সৃষ্ট নানা ক্ষতের মতই স্মৃতিতে রয়ে যায় টাটকা।

তেমনি আমার বন্ধু শুক্লা দত্ত মাঝে মধ্যে স্মৃতিতে বড্ড উৎপীড়ক হয়ে ওঠে। তখন প্রচন্ড দাপুটে ইচ্ছে হানা দেয় যে, একবার খোঁজ নিয়ে দেখি। সে কোথায় কোন অবস্থায় আছে। কিন্তু বানকুড়ানী যেভাবে পাক খেতে খেতে এঁকেবেঁকে আসে আবার চলেও যায়, তেমনি আমার ইচ্ছের দাপটও শিথিল হয়ে আসে। শুক্লার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কোনো পথ খুঁজে পাই না। ফলে আমিও বন্ধু দর্শনে সক্রিয় হতে পারি না। পাঠক হয়তো ভাবছেন, কোন কথা বলতে এসে কোন কথা জুড়ে দিয়েছি! অবশ্য তা আংশিক সত্য বলা যেতে পারে। কিন্তু যা বলতে এসেছি তা হয়তো অনুপুঙ্খ বলতে পারবো না। কিন্তু না বলে পারছি না।

উনিশশো একানব্বইর দিকে সমাপনী পরীক্ষার সুবাদে আমরা শেষবারের মত সমবেত হয়েছিলাম ক্যাম্পাসে। আর তখনই কথা প্রসঙ্গে জানতে পারি শুক্লার খুব ভালো বিয়ে হয়েছে। এবং সেই বিপুল উৎসাহে বলছিলো তার নতুন জীবনের কথা। নানা প্রাপ্তির সুখও যেন উপচে পড়ছিলো তার কথায় আর অঙ্গাবরণে, আভরণে। আমরা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে। বিশেষ করে আমি। কারণ আমাদের কারো কারো কাছে নিয়মিত কারো সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখা যেমন স্বপ্নের মত ছিলো, তেমনি তাদের মাঝ থেকেই কেউ যদি অকস্মাৎ ফোন এবং ফ্যাক্স-মেশিনের অধিকারি হয়ে ওঠে তাহলে তা অষ্টমাশ্চর্যকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার মত বিস্ময়কর ব্যাপার ছিলো। আমরা শুক্লার ফোন ও ফ্যাক্স নাম্বার যার যার নোটবুকে তখন টুকে নিলেও আমি কখনো তাকে ফোন করিনি বা ফ্যাক্সও পাঠাইনি। অবশ্য তেমন কোনো জরুরি প্রয়োজন পড়েনি যে, তাকে ফোন করতে হবে বা ফ্যাক্স পাঠাতে হবে। আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে, যাদের ঘরে নিজস্ব ফ্যাক্স মেশিন থাকে, তারা আমার আশপাশ তো দূরের কথা, বলতে হয় একেবারে নাগালের বাইরে। তেমনি শুক্লা দত্তকেও মনে হয়েছিলো নাগালের বাইরে অতিদূরলোকের মানুষ।

সেকেন্ড ইয়ারে থাকাকালীন শুক্লার অসুস্থতার সংবাদ পেয়ে একবার তাদের গ্রামের বাড়ি বলাশপুর গিয়েছিলাম। সেই হিসেবে মনে করতাম বন্ধুত্বের দাবীটা আমার দিক থেকেই হয়তো বেশি হবে। আর তাই হয়তো দীর্ঘ পাঁচবছর পর হঠাৎ করেই তার চিঠি পেয়ে আমি আপ্লুত হই। ক্যাম্পাসের সময়গুলো মুহূর্তেই কেমন জীবন্ত হয়ে ভেসে ওঠে চোখের সামনে।

তখন সবেমাত্র বিবাহিত জীবনে নিজের নাম লিখিয়েছি। মাস তিন-চার পেরিয়েছে মাত্র। স্ত্রী থাকে গ্রামের বাড়ি। সপ্তাহান্তে কলেপড়া ইঁদুরের মত কেরানিজীবন থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যার ট্রেনে চড়ে বাড়ি ফিরে যাই। তো, এমনি এক ছুটির দিনে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পর গোমড়া মুখে আমার স্ত্রী বিম্বিতা একটি হলুদ খাম এগিয়ে দিয়ে বললো, ‘শুক্লা দত্ত কে?’

আকস্মিক জিজ্ঞাসায় হতচকিত আমি বলে উঠি, ‘শুক্লা দত্ত মানে?’

বিম্বিতার মুখ আরো গম্ভীর হয়। ‘যাকে চিনতে পারো না, তেমন মানুষ চিঠি পাঠায় কিভাবে?’

ততক্ষণে চিঠি বের করে মেলে ধরেছি দৃষ্টির উপত্যকায়। বলি, ‘আরে আমরা একসঙ্গে পড়তাম!’

‘যাও, এবার গিয়ে দেখা করো!’

বিম্বিতার শীতল কন্ঠস্বরে আমি চমকে উঠে তাকাই।

সে হয়তো ধরেই নিয়েছে যে, যেহেতু শুক্লা দত্ত একজন মেয়ের নাম। তার সঙ্গে আমার বিবাহপূর্ব প্রেম থাকলেও থাকতে পারে হয়তো। আর সেই ভাবনা থেকেই অতিরিক্ত কৌতুহলী হয়ে চিঠিটা খুলে পড়ে ফেলেছে। কিন্তু আমি তাকে তখন মনে করিয়ে দেই না যে, অন্যের চিঠি পড়ে ফেলাটা শোভনীয় নয়। কারণ আমার কথা শুনে মেয়েলী বুদ্ধিতে সে বলে ফেলতেও পারে যে, তার নামে কোনো চিঠি এলে আর তার প্রেরক যদি কোনো পুরুষ হতো তাহলে কি আমি না খুলে পারতাম? হয়তো খুলতাম না। কিংবা খুলতাম। আজ এতবছর পর সেই কথা জোর দিয়েও বলতে পারি না।

শুক্লা তার চিঠিতে বিশদ কিছু লেখেনি। সাধারণ সৌজন্যমূলক কথাবার্তা। চিঠি থেকেই জানতে পারি সে বলাশপুরেই আছে। আর তখন আমার ভাবনায় হুড়মুড় করে প্রশ্ন চলে এলো, শুক্লা বাড়িতে কেন? স্বামী-স্ত্রী ভালো আছে তো? দীর্ঘ পাঁচ বছরে কোনো সন্তানাদি হয়নি? ছেলে না মেয়ে? ক’টি সন্তান? তার স্বামীর বিষয়ে কিছু লিখলো না কেন? আর এই পাঁচ বছর কোনো যোগাযোগ না রেখে হঠাৎ করেই বা চিঠি লিখে যেতে বললো কেন?

বিম্বিতা পাশেই দাঁড়িয়েছিলো। মনের ভেতর জিজ্ঞাসাগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় হয়তো আমার মুখের ভাবে কোনো পরিবর্তন হয়ে থাকবে যা তার দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। তাই সে অবলীলায় বলতে পারে, ‘খুবই জরুরি?’

আমি চিঠি ভাঁজ করে ফের খামের ভেতর ঢুকিয়ে বলি, ‘হয়তো না। হলে নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করতো। আর তুমি তো নিজেই পড়েছো! বুঝতে পারো নি?’

বিম্বিতা কি বোঝে কে জানে। তখনই কেমন ছটফট করতে করতে আমার দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়।

শুক্লার চিঠি ফের আমাকে আচ্ছন্ন করে। আমি ভেবে পাই না, কী এমন জরুরি কথা আছে যা আমার সঙ্গেই বলতে হবে? হয়তো গ্রামের বাড়িতে এমনিই কদিনের জন্যে বেড়াতে এসেছে। তাই আমাদের অন্যান্য বন্ধুদের তত্ত্ব-তালাশের জন্যেই আমাকে যেতে বলা। আর ময়মনসিংহের পথতো কম দূর না। তা ছাড়া খুবই খারাপ রাস্তাঘাট। বাসের ঝাকুনিতেই শরীরের সব জোড়া আলগা হয়ে যাবার যোগাড় হয়। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে এসে পরদিন অফিসের সেই কেরানি জীবনে যুক্ত হওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমি তেমন উৎসাহ বোধ করি না। আর এমনিতেও আমার জানা প্রয়োজন যে, শুক্লার সঙ্গে দেখা করা কতটা জরুরি? তেমন জরুরি হলে বন্ধুর জন্য একদিন অফিস কামাই করা যেতে পারে।

ফিরতি চিঠিতে শুক্লাকে জানাই, আমার খুবই দুরবস্থা। কঠিন জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছি প্রতিনিয়ত। জীবনের হিসেব-নিকেশ সবই কোনো এক অদৃশ্য কালো হাতের ইঙ্গিতে গুলিয়ে গেছে। গোঁজামিল দিয়েও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে ইদানিং।

যাবো কি যাবো না তার কোনোটাই চিঠিতে উল্লেখ করি না। ভেবেছিলাম, শুক্লার প্রয়োজন বেশি হলে সে আবার চিঠি লিখবে। না হলেও অন্তত আমার দুরবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইবে। হয়তো ফের যাওয়ার জন্যে তাগাদা দেবে। এমনটিই তো হওয়া উচিত ছিলো! কিন্তু দীর্ঘ দেড়যুগ পেরিয়ে গেলেও আমার সম্পর্কে শুক্লার পক্ষ থেকে কোনো কৌতুহল প্রকাশ পায়নি। এমন কি পরবর্তী কোনো চিঠিতে সে জানতে চায়নি আমার ব্যাপারে। এমন কি কী কথা বলতে চেয়েছিলো তা বলার জন্য তাগাদা দিয়েও লেখেনি কোনো চিঠি। আর এতে করেই আমি নিশ্চিত হই যে, আমি শুক্লার বন্ধু হিসেবে যতটা নির্ভরযোগ্য ছিলাম, বন্ধু হলেও শুক্লা আমার জন্যে ততটা নির্ভরযোগ্য ছিলো না।
২৮/১০/২০০৮


মন্তব্য

পরিবর্তনশীল এর ছবি

গোঁজামিল দিয়েও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে ইদানিং।

ভাল্লাগলো।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

ধন্যবাদ পরিবর্তনশীল।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হুম! এ রকম তো হতেই পারে। আপনাকে যে ব্যাকুলতা নিয়ে প্রথম চিঠিটি লিখেছিল, আপনার নির্লিপ্ততাই হয়তো তাকে এরকম নির্লিপ্ত হতে বাধ্য করেছে।
কিংবা হয়তোবা অন্য কিছু, হলেও হতে পারে। কে পারে কারো ভেতর পূর্ণ ঢুকে পড়তে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

"কে পারে কারো ভেতর পূর্ণ ঢুকে পড়তে। "
কি চমৎকার করে ভীষন সত্যি একটা কথা বলেছেন, পান্থ !

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

আপনার নির্লিপ্ততাই হয়তো তাকে এরকম নির্লিপ্ত হতে বাধ্য করেছে।

হতে পারে কথকের নির্লিপ্ততা কিংবা দৃষ্টিভঙ্গীটাই আসলে বিচ্ছিন্নতার জন্য দায়ী।

তা ছাড়া- কে পারে কারো ভেতর পূর্ণ ঢুকে পড়তে। কথাটি অনস্বীকার্য। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

কীর্তিনাশা এর ছবি

দুধের মাছি । মন খারাপ

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

কীর্তিনাশা, আপনার অভিযোগটা খুবই কঠিন।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

"এ পর্যন্ত যতজনের উপর পরীক্ষা চালিয়েছি পাশ-ফেলের নাগরদোলায় বলতে গেলে সবাই আমার থেকে ছিটকে পড়েছে দূরে।"
আগে থেকেই অতো যন্ত্রণা খুঁড়ে বের করার দরকারটা কি?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

বেশির ভাগ মানুষ কষ্ট পেতেই মনে হয় ভালোবাসে। আর তাই সে- "হৃদয় খুঁড়ে বেদনা" জাগাতে চায়।
ধন্যবাদ শিমুল।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কিন্তু বন্ধুদের নিয়ে তাদেরই অজান্তে মাঝে মধ্যে একটি অদ্ভুত পরীক্ষা চালাই।

মানতে পারলাম না (নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত মত)। বন্ধুদের যদি নিয়মিত পরীক্ষা দিয়ে নির্ভরযোগ্যতা প্রমাণ করতে হয় তাহলে তো আর সে "বন্ধু" হলো না... হয়ে গেলো শুধুই কাছের একজন মানুষ... মনের মধ্যে সারাক্ষণ দ্বিধা আর প্রশ্ন নিয়ে কী আর ভাই বন্ধুত্ব হয়? হাসি

আর শুক্লাদি'র অবস্থান থেকে চিন্তা করলে আমার মনে হয় না উনি কোন অযৌক্তিক কাজ করেছিলেন... স্বাভাবিকভাবেই তিনি আশা করেছিলেন হয়তো চিঠি পেয়ে আপনি দেখা করতে যাবেন... আপনার ফিরতি চিঠি পেয়ে উনি হয়তো সংকোচের কারণে আর অনুরোধ করার সাহস পান নি... এমনটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক... কারণ মাঝের সময়ের ব্যবধান আর দূরত্বটাও তো বিবেচনা করতে হবে... নিজেকে দিয়ে বিচার করে বলি... যদি আমার খুব প্রয়োজনে কোন বন্ধুর কাছে কিছু টাকা ধার চেয়ে চিঠি দেই, আর ফিরতি চিঠিতে যদি তার ঝামেলা-সংক্রান্ত কোন উত্তর পাই... তাহলে যতো দরকারই হোক, হয়তো তাকে আর দ্বিতীয়বার অনুরোধ করবো না টাকা ধার দেবার জন্য...

যাই হোক, এসব একান্তই আমার চিন্তাভাবনা... আপনার সাথে নাও মিলতে পারে... আপনার সংবেদনশীলতা আর বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি যদি কোন কথায় আঘাত করে থাকি... প্লিজ কিছু মনে করবেন না...

ভালো থাকবেন...

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

যদি কোন কথায় আঘাত করে থাকি... প্লিজ কিছু মনে করবেন না...

-দুঃখ পাওয়ার কী আছে ভাই! এটা তো আর জীবনের ছাপচিত্র নয়। ছায়াচিত্র। গল্পটা লেখার পর মনে হলো এটি ঠিক ঠিক গল্প হয়ে ওঠেনি। মনে হয় আগাগোড়াই বাস্তব। এ নিয়ে ভাবতেও আর আগ্রহ বোধ করছিলাম না। তাই ব্লগরব্লগর

অতন্দ্র প্রহরী আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। দেঁতো হাসি
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

রানা মেহের এর ছবি

মনে হচ্ছে বন্ধু হিসেবে শুক্লা নয়,
গল্পের আপনিই খুব বেশী নির্ভরযোগ্য ছিলেন না
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

মনে হচ্ছে বন্ধু হিসেবে শুক্লা নয়,
গল্পের আপনিই খুব বেশী নির্ভরযোগ্য ছিলেন না

- তা ও হতে পারে। আবার এও হতে পারে গল্পের আমিটা অভাবের কারণে বা তার স্ত্রীকে ভয় পেয়ে কিংবা সংসারে অশান্তির ভয়েও তখন এমন হয়ে উঠতে পারে।

আবার এও বলা যায় কথক দেড়যুগ অপেক্ষা করেছে, না ভুলে ছিলো? বিলম্বে মনে হওয়াতে অনুশোচনা কাটাতেও এ কাহিনীর অবতারণা হতে পারে। তাই তো আমার মনে হয়েছে এটি ঠিক গল্প হয়ে ওঠতে পারেনি।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।