দূরসম্পর্ক

মনামী এর ছবি
লিখেছেন মনামী (তারিখ: শুক্র, ২০/০৮/২০১০ - ৩:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তার এবং আমার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নাই। আহা, বললাম তো, তার এবং আমার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নাই। আমার চোখে চোখ রেখে তারপরও সে অট্টহাস্য করে।

আমি তাকে চিনি না। কোনোদিন দেখি নাই অথবা দেখেছি। কিন্তু তাকে চেনার আমার কোনো প্রয়োজন হয় নাই, কারণ সে কখোনোই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠে নাই এবং তার পক্ষে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠাটা ছিল অসম্ভবের পর্যায়ে। উফ! কি অসহ্য অট্টহাস্য!

সকালটা ছিল আনন্দদায়ক আলস্যে মাখা, একটি উপভোগ্য দিনের ইঙ্গিতবাহক। প্রস্তুতিও ছিল সম্পন্ন - বন্ধু, অর্থ , মোহনীয় সাজ। কিন্তু পেট চেপে ধরে কাৎরাতে কাৎরাতে সে মরে গেল।

একটি ময়লা সাদা কাপড়ে সহযোদ্ধারা ঢেকে দিল তার দেহটা তারপর রণে রত হল। এছাড়া আর কি বা করার থাকে। আমারই বা কি করার আছে প্রত্যক্ষদর্শী হওয়া ছাড়া। কিন্তু তারপরও সে কেন অট্টহাস্য করে?

আয় নিন্দো বায় নিন্দো
পাইকোরের পাত
কান কাটা কুকুর আইসে
ঝিৎ করিয়া থাক।

... হামার নিন্দ নাই। ঢাকাত নিন্দ পাড়তে আসি নাই। ইকশা চালাইয়া পয়সা করবিম তারপর করবিম ধান। ওমরাগুলা হামাক শুয়ায় দিল ক্যানে? মহাজনের জমার টাকা দিয়ে হাতে আর কিছু নাই্। আরো ইকশা চালাইতে হবে।

তাপানুকূল প্রেক্ষাগৃহে ঢুকে পড়ে লালমনিরহাটের জাড়। ঠকঠক করতে করতে পর্দায় তাকে দেখতে পাই। সে আমার চোখে চোখ রেখে অট্টহাস্য করে আর আমি টের পাই আসলে তা ছিল ক্রন্দন।


মন্তব্য

নুসায়ের এর ছবি

খোমাখাতায় স্ট্যাটাস দেইখা পড়তে আইলাম। তাড়াহুড়ায় কিসু "বুঝ" বাকি রইয়া গেল। রাইতে আরেকবার ভালা কইরা পড়ুমনে।

মনামী এর ছবি

আম্রিকায় বইসা আবার পইড়ো আর বুঝ করার চেষ্টা কইরো।

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

ভালো লাগলো পড়তে... হাসি

-----------------------------------------------------------------
নির্জলা নৈবেদ্য


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

মনামী এর ছবি

ধন্যবাদ মউ।

দ্রোহী এর ছবি

মন খারাপ

গরীবের জন্য একটা সারাংশ দিবেন?


কি মাঝি, ডরাইলা?

মনামী এর ছবি

আমাদের চোখের সামনে প্রতিদিন অগুনতি লোক মরে পড়ে থাকে, আমরা পাশ কাটিয়ে চলে যাই যার যার কাজে।

বইখাতা এর ছবি

লেখা ভাল লাগলো...আর ঘটনা পড়ে খারাপ লাগলো...

মনামী এর ছবি

উদ্দেশ্য সফল। অনেক ধন্যবাদ বইখাতা।

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার!
মাঝে মাঝে বাস্তব এই গল্পটাকে সাথী করে নিয়ে আসে আমার জীবনে, তখন অনেককিছুই আমার হাসিকে বিলীন করে দেয়।
ভালো লাগলো।

পলাশ রঞ্জন সান্যাল

মনামী এর ছবি

সবসময় ঠোটের কোনে হাসি ঝুলিয়ে ঘুরে বেরালে আমরা আর মানুষ বলে গণ্য হব কি? ধন্যবাদ গল্প পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ঘটনাটা আমারও দেখা। কিন্তু এই দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে পারি নাই। চলে গেছি, যেদিকে যাওয়ার। লেখক কি বারংবার ঘটে যাওয়া একই দুর্ঘটনাগুলোকে এড়িয়ে চলবে? নাকি নিরন্তর সংগ্রামে লিপ্ত হবে, যতদিন পরিবর্তন না আসে?
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মনামী এর ছবি

এখনও পরিবর্তনে বিশ্বাস করি ।

শুচি এর ছবি

ইদানিং যে কয়টা গল্প লিখেছিস, প্রত্যেকটার মধ্যে যন্ত্রণা আছে, ক্ষোভ আছে, এবং ক্ষোভটাকে প্রকাশ করবার তাড়না আছে। এগিয়ে যা। এই ক্ষোভের ডাকে আমরা কিছু মানুষ যদি সচেতন হয়ে উঠি, তাহলে আখেরে আমরাই নিজেদেরকে মানুষ বলে দাবি করতে পারবো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।