পথের গল্প ০৫(ক)- পাসপোর্ট বিড়ম্বনা

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: শুক্র, ২৩/০৫/২০০৮ - ১২:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সামনে হতচ্ছড়া জ্যাম, চৌরাস্তায় জট পাকিয়ে যাওয়া অবস্থা একেবারে। চার পাশের সকল গাড়ী এক সাথেই রাস্তায় উঠে এসেছে, কোথাও নড়বার জায়গা নেই। স্বতঃপ্রণোদিত এই জ্যামের পেছনে বসে আছি, রিকশায়।

ইদানিং অভ্যাস বদলে গেছে, আগে রিকশায় উঠা মাত্র একটা সিগারেট জ্বালাতাম, এখন অপেক্ষায় থাকি, জ্যামের ধোঁয়া আর গরমের ভেতরে সিগারেটের স্বাদ অসহ্য লাগে। অপেক্ষায় থাকি তার ঠোঁট উশখুশ করে। হাতের আঙ্গুলে কিসের যেনো অভাব বোধ করি।

আপাতত যেখানে দাড়িয়ে সেটা একটা রাস্তার সংযোগস্থল। আমার পাশে আজদাহা ট্রাক দাঁড়ানো, তার পাশের কাভার্ড ভ্যান, তার পাশে রিকশা, তার পাশে ঠেলাগাড়ী, দেড় টনি, ৩ টনি, ৫ টনি, ৮ টনি ট্রাকের পাশে একটা রিকশায় বসে আছি, আর সবাই স্থির যে যার জায়গায়। মনে হয় হঠাৎ করেই কেউ বরফ পানি খেলায় ছুঁয়ে দিয়েছে তাই আজ কোথাও যাওয়ার নেই।

আপনি নামেন, রিকশাওয়ালা ছোকড়া বয়েসের, মুখে ব্রণের দাগ, আমি নেমে দাঁড়ালাম ফুটপাতে। ফুটপাত দিয়ে হাঁটছি, চারপাশের সবাই যাওয়ার চেষ্টা করছে, লাভের লাভ হচ্ছে না কিছু, জ্যামের গিট্টু বাড়ছে আরও বেশী, সামনে অসহায় এক ট্রাফিক পুলিশ হাতে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে জ্যাম লেগেছে তা নিজ উদ্যোগে ছাড়বে, ট্রাফিক পুলিশের বাবার সাধ্যি নেই এই জ্যাম ছুটোনোর। বাস ঢুকে আছে ট্রাকের পেটের ভেতরে, সেই এক চিলতে ফাঁকে কোথা থেকে এক সিএনজি এসে আটকা পড়েছে, সবাই একসাথে হর্ণ চাপছে।
বিকট হুলুস্থুল অবস্থা যাকে বলে।

রিকশাওয়ালা ফুটপাতের উপর দিয়ে রিকশা টেনে ট্রাকের পাশ ঘেঁষে এত ক্ষণে জ্যামের শুরুতে এসে পৌঁচেছে। আমিও ফুটপাত থেকে রিকশার পাদানিতে পা রাখলাম।
সিটের উপরে অস্থির ছোকড়া রিকশাওয়ালা, হাত তুলে ট্রাফিক পুলিশকে বললো ওস্তাদ জলদি সিংগ্যাল ছাড়েন, লাইন তো লারাংঞ্জ গিয়া ঠ্যাকলো।
আমার দিকে ঘুরে ফিচকি হাসি দিলো। অবস্থা বিশেষ সুবিধার না। ট্রাফিক পুলিশের অবস্থা পাঁকে পড়া হাতির মতো, নড়তে পাড়ছে না। সীমিত বুদ্ধিতে যা কুলাচ্ছে তাতে ঠিক কোন সাইডটা আগে খালি করলে জ্যামের চাপটা কমবে তাই নির্ধারণ করতে পারছে না এখন।

বুঝলেন ভাই, ট্রাফিক পুলিশগো সমস্যা একটাই, শালাদের হাতে লাঠি থাকে, জায়গায় বেজায়গায় বাড়ি মাইরা বহে। আমাগোর দোষ বুঝলেন না,

আমি বিজ্ঞ ভঙ্গিতে মাথা নাড়াই, আমাদের যেকোনো দোষ এবং অক্ষমতা স্বীকারে আমি পিছু হটবো না কখনই। উৎসুক তাকিয়ে থাকি আমাদের দোষটা জানবার জন্য। আমাগোর দোষ হইলো বুঝলেন আমাদের একতা নাই, একত্বতা না থাকলে যা হয়, আমাগোর রিকশা বাড়ি দিয়ে উল্টায়া ফেলায়, চাকা লিক কইরা দেয়, আমরা চুপচাপ দেখি।

কিন্তু হাতে লাঠি থাকলেই হয় না, এই ধরেন আইজকা বিকালেই যদি আমরা ১৫ জন একতা হইতাম তাইলে কি ট্রাফিক পুলিশ আমাগো লগে পারে?
বাপ বাপ ডাকে আমাগোর পায়ে পড়তো শালায়।
আমি ভাববার চেষ্টা করি বিকেলে আসলে কি ঘটেছিলো, কিংবা কি ঘটতে পারে। ঢাকা শহর এখন বড় বড় গাড়ীর দখলে, তারা যাবে তাই অনেকগুলো রাস্তাই ভিআইপি, বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো, সড়কের মাঝে মাঝে সংযোগ, সেখান দিয়েই রিকশা এপাড় ও পাড় করে, এমনই কোনো এক জায়গায় তৎপর ট্রাফিক পুলিশ হয়তো হাতে লম্বা বোম সুঁই দিয়ে রিকশার পাম ছেড়ে দিয়েছে, হয়তো সেখানে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করা কয়েকটা রিকশার হুডে বাড়ি মেরেছে, এমনটাই নিত্যনৈমিত্যিক দৃশ্য এখানে।
ক্ষ্যামতার অপব্যবহার ঠিক না বুঝলেন ভাই, একদিন ক্ষ্যামতার অপব্যবহারের শাস্তি ঠিকই পাইবো শালায়। এই দুইন্যার হিসাব এই দুইন্যায় মিটায়া যাইতে হবে।

তার এই বিশ্বাসকে আঘাত করা শক্ত। জয়ামের সামনে ছোকড়া রিকশা ওয়ালা সুযোগ বুঝে ট্রাফিক পুলিশের সাথে মশকরা করে, সেখানে বসে থাকা একটু কঠিন।

জ্যাম ছুটলো, আমার রিকশাও ছুটে বেড়িয়ে আসলো জ্যাম থেকে, বসে বসে ভাবছি সারাদিন কি ঘটলো। সারাদিন অনেক ঘটনাই ঘটেছে আজকে। ঘটনাবহুল দিন বলা যায়।
পাসপোর্টের কাজ করতে হবে। অনেক দিন ধরেই বকেয়া হয়ে আছে কাজটা। করতেই হতো।অফিস থেকে ছুটি চেয়েছিলাম এক বেলা, অফিসের কতৃপক্ষ জানিয়েছে ও পাসপোর্টের কাজ ওটাতো ৩টার পরেও করা যায়।
কতৃপক্ষের দুত এসে আমাকে জানালো সে নিজেই ৩টার পরে পাসপোর্টের কাজ করিয়েছে। আমার টাকা জমা দেওয়া প্রয়োজন, টাকা জমা না দিয়ে ফর্ম জমা দেওয়ার কোনো মানে নেই। তাকে বলতেও পারলাম না তা আপনার কোন পরিচিত জন এই ৩টার পরে ব্যাংক খোলা রাখে জানাবেন ?
বাংলাদেশের সরকারী ব্যাংকগুলোর যা অবস্থা, এখানে দিনের লেনদেন শুরু এবং শেষের ভেতরে সময়ের ব্যবধান ৩ ঘন্টা। লড়তে চড়তে ১০ মাইল অবস্থা এদের।
সে অবস্থায় আমি ৩টার পরে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে যে কাজের কাজ কিছুই করতে পারবো না এটা জেনেও চুপ থাকি। কতৃপক্ষ ছুঁলে আঠারো ৪ গুনে ৭২ ঘা।
তাই আজ সকালেই বাং মেরেছি অফিস। বাসের লাইনে দাঁড়িয়ে বুঝলাম আজকে ভোগান্তির শেষ হবে না। বাসের লাইনে একজন সিগারেট টানছে। বাসস্টেশনে সিগারেট টানা নিষেধ তবে এখানের বাস স্টপেজগুলো ঠিক বাসস্টেশন না, রাস্তার উপরে একটা টুল বসিয়ে অস্থায়ী কাজ চালানোর ব্যবস্থা। সেখানে গিয়ে এইসব আইনের আশা করা বৃথা।
তার সিগারেট নিয়েও আপত্তি ছিলো না কোনো। বরং তার সিগারেটের গন্ধ আর তার আফটার শেভ লোশনের গন্ধে গলার কাছে টক স্বাদ পাচ্ছি, বিপদের কারণ এটাই।অন্য সবার এমন হয় কি না জানি না, আমি নিজে আফটার সেভ লোশন ব্যবহার করতে পারি না, করলেই গলার কাছে একটা অদ্ভুত স্বাদ পাই , সেটা মোটেও উপভোগ্য কিছু না।
সেই উৎকট গন্ধ হজম করছি আর প্রাণপনে চাইছি বাসটা এক্ষুণি এসে থামুক

হলো না , ভাগ্যে শিকে ছিড়লো না মোটেও। অনেক প্রতীক্ষার পরে যখন বাস আসলো তখন বাসের ভেতরে প্রচণ্ড ভীড়, সুই ফেললেও সেটা মাটিতে পড়বে না। ৩০ মিনিটে অন্তত ৩টা বাস আসবার কথা ছিলো, ৩ বাসের যাত্রী একটাতে ঠেসে তুলেছে তাই সেখানে উঠবার কোনো চিন্তা না করেই টিকেট ফেরত দিয়ে চলে আসলাম।
বেশী দুর যাবো না, যাবো মতিঝিল। মতিঝিলের ট্রাস্ট ব্যাংকে, রমনা থানার আঁওতার ভেতরে আছি, ট্রাস্ট ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় পাসপোর্টের কাজ করে।
চলেও আসলাম ঠিক সময় মতোই, নয়টা তিরিশে ট্রাস্ট ব্যংকের গেটে এসে দারোয়ানকে বললাম ভাই পাসপোর্টের কাজটা কোথায় হয়।
৩ তলায় যান।
আমি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠি, সামনে একজন দারোয়ানকে পেলাম, উপরে লেখা পাসপোর্ট-
যাক তেমন কষ্ট হয় নি।

ভাই একটা ফর্ম লাগবে, ট্রাস্ট ব্যাংক বাংলাদেশ আর্মির ব্যাংক, সহবত মেনেই জিজ্ঞাসা করবার চেষ্টা করি, আমার সহবত জ্ঞানে খামতি আছে এটা মেনে নিয়েই যতদুর সম্ভব কোমল নম্র স্বর নির্গত করি গলা দিয়ে।
কিসের ফর্ম?
পাসপোর্ট-
মহামান্য দারোয়ান পাসপোর্টের ফরম এগিয়ে দিচ্ছেন। আমিও হাত বাড়ালাম- আমার হাতের নাগাল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে প্রচণ্ড ঝাড়ি- এই হাত ক্যান?

আমিও অবাক হয়ে হাতের দিকে তাকাই- কিছুই বুঝি না, আমি স্বভাবে খানিকটা ন্যাটা- বাম হাত একটু বেশী সামনে চলে আসে। এখানেও তাই হয়েছে।
আমার অপবিত্র বাম হাত দেখে মহামান্য দারোয়ান বিরুপ।
আমিও নম্রতার খোলস ছেঁটে বললাম ক্যান কি হইছে, সমস্যা কি?
এইটা আল্লাহর হাত না, আল্লাহর হাত দেন।

আমি আরও বেয়ারা কিছু বলবার ভাষা খুঁজছিলাম, যেটুকু পেলাম সেটুকু দিয়েই বললাম হাতের আল্লা খোদা কিয়ের হিসাব, দুই হাতই আল্লার নাইলে একটাও না।
আমার অসাধারণ যুক্তিবোধ তাকে বিন্দুমাত্র আক্রান্ত করলো না।
তাইলে বাম হাতেই খাইয়েন।
আমিও পাল্টা তেজে জবাব দিলাম, আমার তো খাইতে সমস্যা নাই। ভাবখানা লাগে যে আপ্নের ডান হাত বানায়া আল্লাহ ছাইড়্যা দিছিলো বাম হাত আপ্না আপ্নি গজাইছে কলম গাছের নাহান?
আমার প্রশ্ন আর বেয়ারামো দেখে সামনে বসে থাকা মহিলা এবং ভদ্রলোকের ভ্রু কুঁচকে তাকায়। আমি ডান হাতে পাসপোর্টের ফরম নিয়ে বাইরে যাই।
আমার সাথে কখনই কেনো যেনো কলম থাকে না। একটা কলম নিয়ে আসতে যাই।
ফিরেও আসলাম, এসে ঢুকলাম ট্রাস্ট ব্যাংকরের পেটের ভেতরে। অতিশয় ঠান্ডা। মনে হয় হঠাৎ করেই ফ্রীজের ভেতরে ঢুকে পড়লাম, এয়ার কুলারের টেম্পারেচার সেটিং মনে হয় ১৮ থেকে বাড়ায় নি। গেটের সামনেই অভ্যর্থনা লেখা, সেখানে একজন বিরক্ত মুখে বসে আছে। তার দিকে না তাকিয়ে আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখছি, সামনে বেশ সুন্দরী এক মহিলা বসা। তার পাশে একটা ছেলে, তার পাশের সীট ফাঁকা। সেখান থেকে একটু দুরে আরও একসারি চেয়ার দেয়াল ঘেঁষে রাখা।
সেখানে ব্যাগ পড়ে আছে, মানুষ হেলান দিয়ে বসেছে, পা যতটা সম্ভব ছড়িয়ে, যতটুকু সুখ খুঁজে নেওয়া যায়, মতিঝিল ঢাকা শহরের সবচেয়ে উষ্ণতম স্থানগুলোর একটা। স্বাভাবিকের তুলনায় এখানে তাপমাত্র সবসময়ই ২ থেকে ৩ ডিগ্রী বেশী থাকে, এটা আবহাওয়া দপ্তরের হিসাব। অনেক টাকার লেনদেন হয় তাই এলাকা গরম কি না কে জানে।

সেখানে এই হিমাগারে বসে আয়েশ করা মানুষগুলো আরও সুখ খুঁজে নিক আমারও প্রার্থনা এমনই। সামনে আগিয়ে গিয়ে ডানে বাঁক নিলে আরও ৩ সারি সোফা, অভ্যর্থনা এবং অপেক্ষাগৃহের সাজস্বজ্জা ভালোই বলা যায়। অন্তত জনা ৩০ লোক একত্রে আয়েশ করে বসতে পারবে। তবে এখানে মানুষ আছে বড়জোর ১২ জন। সামনের সারিতেই বসে আছে সবাই। এ পাশের ৩টা সোফা ফাঁকা। তার একটাতে বসে পাসপোর্টের ফরম ফিলাপ করা শুরু করলাম।
আমার ঠিক সামনেই আগুন এক মেয়ে বসে আছে বাবার সাথে। তার উপর থেকে নীচ দেখছি, মুগ্ধ হয়েই দেখছি। চমৎকার পরিমিত সাজ। চেহারায় চমক আছে। এমন সুন্দরীরা এমনি সময় কেনো ঢাকা শহরের রাস্তায় থাকে না, এই প্রশ্নটা অনেক দিন নিজেকে করেছি, বইমেলায় কিছু সুন্দরী দেখা যায় যাদের অনেক খুঁজেও ঢাকা শহরে ফেব্রুয়ারী মাসের পরে পাওয়া যায় না। এরা কোথায় থাকে, কিভাবে থাকে এটা জানতে ইচ্ছা করে ।
দুই ছাটের জামা, বর্তমানের ফ্যাশন বোধ হয় পায়ের কাছটা একটু উপরে তুলে মুড়ে রাখা, অন্তত ইদানিং মেয়েদের পোশাকের ছাঁট দেখে এমনটাই আমার অনুমান। পায়ের গোড়ালীর উপরে থাকবে পায়জামার ঘের, সেখানে একটা নুপুর থাকবে, একটা পায়ে জামার রংয়ের সাথে মিলিয়ে থাকবে নেইল পলিশ।
এত রংয়ের নেইল পলিশ পায় কোথায়, বেগুনি, আকাশী, আসমানী সবুজ, হালকা সবুজ, মেয়েরা কি এখন পোশাকের রং মিলিয়ে নেইল পলিশ কিনে?
জামাটাও বাহারী কাজের, এমবব্রোডায়রি করা, বুকের কাছে অনেকটা অংশ জুড়ে সেলাইয়ের কাজ, বিশেষ ভাবে প্রকাশিত, অনেক আগের হিন্দি ছবিতে নায়িকারা এমন কিছু জামা পড়তো, সেখানে জামার কাজগুলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পাহাড়ী রাস্তায় উঠার মতো ছিলো , তবে ইদানিং তেমনকাজ থাকে না, বরং ফ্ল্যাট স্পেসে রং আর সুতার বুনোন। ওড়নাটা একপাশে ফেলে রাখা, বেশ সযতনে বেখেয়াল সাজ, যতটুকু প্রকাশ করা প্রয়োজন ততটুকুর বেশী প্রকাশিত নয়, অথচ একটা সীমানা বেধে দেওয়া আছে।
আড় চোখে তাকাই আর পাসপোর্টের ফরম পুরন করি। সামনের সোফায় একজন এসে বসেছে, পায়ে নাইকের মুজা, জুতাটা চিকন, লম্বা, এটাও যুগের ফ্যাশান বলতে হবে। ইদানিং জুতাগুলোর ভেতরে জিরাফ ভাব প্রবল। পায়ের আঙ্গুল ছাঁড়িয়ে অনেকটা দুরে দিয়ে শেষ হয়। সুতরাং জুতার মাথা সুঁচালো। সেই জুতা দিয়ে জোরে বাড়ি দিলে সেটা পেটে ঢুকে যেতে পারে। কেউ মনে হয় এই চেষ্টা করে দেখে নি, আমার কোনো দিন হলে একটা চেষ্টা দিবো।
সাথে যে মেয়েটা, সে ট্রাস্ট ব্যাংকের কর্মচারী, উপরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট অবস্থা। ব্যাংকটা যতই উন্নত ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনের হোক না কেনো, কর্মচারীরা তেমন চৌকশ নয়, তাদেশ পোশাক আলুথালু।
তুমিতো অনেক শুকায়া গেছো।
না আছি আর কি, কই শুকনা দেখলেন,
মেয়ের বিগলিত হাসি দেখে ভালো লাগে। লোকটাও আরও তেলতেলে মুখে কথা বলতে থাকে,কত লাগবে?
জরুরি না নর্মাল। ৩০ দিনেরটা ২৫০০ টাকা, একদিনেরটা ৫০০০ আর সার্ভিস চার্জ ২০০ টাকা।
একটু দেখায়া আসো যব কাগজ ঠিক আছে না কি?
দেখাইছিলাম তো সব ঠিক আছে, শুধু বিদ্যুত আর গ্যাস বিলের ২টা কপি লাগবে।
মেয়েটা অফিসের পিয়নের উপরের হম্বি তম্বি করে বিলের কপি করে নিয়ে আসলো। সবাই ক্ষমতা দেখাতে ভালো বাসে।


মন্তব্য

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বইমেলায় কিছু সুন্দরী দেখা যায় যাদের অনেক খুঁজেও ঢাকা শহরে ফেব্রুয়ারী মাসের পরে পাওয়া যায় না। এরা কোথায় থাকে, কিভাবে থাকে এটা জানতে ইচ্ছা করে ।

হ রে ভাই , এই প্রশ্নটা আমারও ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ঢাকার রাস্তায় জ্যাম অনিবার্য। আমি জ্যামে আটকাইলেই আশপাশে খুঁজি সুন্দরী নারী। রৌদ্রকরোজ্জ্বল জ্যামের দুনিয়াতে যে নারী দিবে আমারে দৃষ্টিউপশম। দেল শান্ত হবে। কিন্তু সে কপাল খুব একটা হয় না।
বছর আটেক আগে পাসপোর্ট করছিলাম এক দিনের নোটিশে। ফর্ম আর টাকা নিয়া গেছি, যার যার সিগনেচার তার তার টেবিলের সামনে গেছি সিগনেচার নিয়া পরের টেবিলে... তারপর এক ঘন্টা বইসা বিকালে পাসপোর্ট নিয়া ফিরছি। ঝাড়িও দিছিলাম- ঐ মিয়া এত দেরি হয় কেন? আমার তো নাটকের রিহার্সেল আছে সন্ধ্যায়, জলদি দেন।
রিনিউ করার সময় ক্ষমতা ছিলো আরো বড়। দুপুর বেলা অফিসের সিদ্ধান্ত হইলো ইন্ডিয়া যাইতে হইবো দ্রুত। ফোন করলাম দুএক জায়গায়। আগারগগাঁয়ে যখন গেলাম ততক্ষনে ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়া গেছে। কিন্তু পেছনের দরজা খোলা ছিলো, ছিলো লোক দণ্ডায়মান। ৫ মিনিটে কাজ শেষ কইরা পাসপোর্ট অফিসে। সেখানে যার স্বাক্ষর দেওয়ার কথা সরাসরি তার কামড়ায়, তিনি কেবল আমার জন্যই বইসা ছিলেন, অফিস ছুটি হয়া গেছে। এই কাজ হইলো দুই মিনিটে। আহা কি আরাম!!!

কি এক দুদুক বানাইছে... আমাদের এই আরামের জায়গাগুলা গেছে নষ্ট হয়া। আমার বউয়ের একটা পাসপোর্ট করা দরকার... কিন্তু এখন কোথায় এত শান্তি? করাই হইতেছে না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।