হাতের লেখা

শমিত এর ছবি
লিখেছেন শমিত (তারিখ: বুধ, ০২/০৭/২০০৮ - ২:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ডাকে কিছু কবিতা এলো। ফুলস্কেপ কাগজে লেখা হাত ও কলম। ঘোরানো ঘরোয়া শব্দের মাথাগুলি গোল হয়ে উঠে বা কখনো নেমে, পরস্পরের কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে, যেন ভাঁজ করা পাতার এলোপাথারি মাঠজুড়ে সাঁওতালি নাচ জমেছে খুব চাঁদের আলোয়। মাঝে মাঝে কিছু দর্শনার্থী, ট্যুরিস্ট লালে লেখা হেড লাইন, দিকনির্দেশ, সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।

এসব দৃশ্য দেখে ছোটোবেলার সেই হাতের লেখার কথা মনে হয় যে রোজ বিকেলে গল্প করতে আসতো সান্টুদের বাড়িতে আর সন্ধে হলে রুলটানা খাতার বারান্দায় বসে ঢুলে ঢুলে নামতা পড়তো চাপাসুরে। ছোটোবেলার ঠিক পরের বেলায়, যেদিন ‘স’ ‘জ’ ও ‘ম’ লেখার কায়দা বদল হয়, সেদিন এই ছোটোবেলার হাতের লেখা খুব দুঃখ পায় ও সারারাত অঙ্কখাতার পেছনের রাফ করার পাতায় বসে বসে মিহিসুরে কাঁদে। পরদিন সকাল থেকে তাকে আর দেখা যায় নি, শুধু একবার ছাড়া। তখন মেজোবেলার হাতের লেখার রমরমা। তার ঠাট কায়দায় ছোটোবেলার হাতের লেখার কথা মিলিয়ে যায় অচিরেই।

এর অনেকদিন পরে, যখন বড়বেলার হাতের লেখাকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানিয়ে হাতের লেখার বাড়িতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়, তখন, ইনফ্যাক্ট তখনি শুধু একবার, ছোটোবেলা, মেজোবেলা ও বড়বেলার তিন হাতের লেখাকে পরষ্পরের গলা জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কাঁদতে দেখা যায়। সেই শেষ। তারপরে তাদের কাউকে আর দেখা যায় নি।

আজ ডাকে আসা কবিতা দেখে তিনজন হাতের লেখার কথাই মনে পড়ে বার বার।


মন্তব্য

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

বেশ! কয়দিন আগেই সেলফোনের সিম রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ফর্ম ফিলাপ করতে হচ্ছিল... দেখি হাত কাঁপছে! ঠিকমতো লেখা বেরোচ্ছে না হাত দিয়ে... পিসিতে লিখে লিখে এমনই অবস্থা! অথচ একসময় পোস্টারে ব্যানারে কত লেখা লিখে দিয়েছি একটানে...
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দেখা না গেলেও তাঁরা আছেন এদিক ওদিক



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই আমার এক ভ্যাজাল... হাতে বেশিক্ষন লেখতে পারি না... A4 সাইজের এক পাতা লেখতেই খবর হয়... তবে এককালে আমার হাতের লেখার প্রশংসা ছিলো বেশ... স্কুলে মানপত্র আমার হস্তেই লিখিত হইতো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুজিব মেহদী এর ছবি

ছোটোবেলা, মেজোবেলা ও বড়বেলার 'হাতের লেখা'কে মনের চোখ দিয়ে তো সবসময়ই দেখা যায় ধারণা করি।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।