ন্যানো - ২

শঙ্কর এর ছবি
লিখেছেন শঙ্কর [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ২২/০৭/২০০৯ - ৪:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শনিবারের সকালে একটু দেরী করেই ঘুম থেকে উঠতে ভালোবাসে রবার্ট বেকার। আড়মোড়া ভেঙ্গে বিছানার পাশের দিকে তাকিয়ে দেখলো কাল রাতের লাল চুলো মেয়েটা কখন চলে গেছে। ধ্যাত্তেরি, কাল রাতে বাড়ী ফিরে রবার্ট দেখেছিল, ওয়াশিং মেশিনটা খারাপ হয়ে গেছে। ভেবেছিল, আজ কিছু ভুজুং ভাজু দিয়ে মেয়েটাকে দিয়ে তিনটে ঘেমো গেঞ্জী, চাড্ডিগুলো আর দুয়েকটা জামা কাচিয়ে নেবে। কিন্তু মেয়েটাতো সকাল বেলায়ই ভেগে গেল।

বেজার মুখে বিছানা ছাড়লো রবার্ট। টেবিলের ওপর ওয়ালেটটা নেই। মেয়েটা যাওয়ার সময় ওটাও নিয়ে গেছে। টাকা-পয়সা অবশ্য বেশী ছিল না ওতে, মাত্র আটাত্তর পেনী। কিন্তু মাসের শেষে আবার একটা ওয়ালেট কিনতে হবে ভেবে সকাল সকাল মনটা আরো খিঁচড়ে গেল। ব্রাশ করে বিছানা তুলতে গিয়ে অবশ্য খুশীতে শিস দিয়ে উটলো রবার্ট। ওয়ালেটটা নিয়ে গেছে, কিন্তু ভুল করে নিজের পার্ল নেকলেসটা ফেলে গেছে সে। যাক, মাসের শেষটা অতোটা খারাপ যাবে না।

বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ রবার্টকে দেখা গেলো এ-হাতে চারটে ও-হাতে চারটে, আটটা ব্যাগ নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ফ্ল্যাটের দিকে ফিরছে। আগামী সপ্তাহের বাজার। পার্ল নেকলেসটা শেষ পর্যন্ত প্লাস্টিকের বেরিয়েছে। মেয়েটা রবার্টকে পুরোই বেকুব বানিয়ে ছেড়েছে। সামনের সপ্তাহে 'নো ইটিং আউট।' বাড়ীতে নিজেকে রেঁধেই খেতে হবে। কাজেই বাজারটা সেরেই ফিরলো রবার্ট। আটখানা ব্যাগ দরজার সামনে নামিয়ে ফোকরে চাবিটা ঢোকানোর সময়ই ফোনটা এল, 'মিঃ বন্ড?'

এই হয়েছে ভ্যালা ঝামেলা। চাকরী করতে গিয়ে বাপের দেওয়া নামটা পর্যন্ত খুইয়েছে রবার্ট বেকার। বারো খানা প্লেসমেন্ট এজেন্সীতে সিভি পাঠিয়েছিল সে। রিসেশনের বাজার। পাঁচ মাসে একটাও ইন্টারভিউয়ের ডাক এলো না। শেষকালে পাঁচমাস বাদে, এক এজেন্সী এই অফারটা দেয়। তারা পরিষ্কার বলে দিল, এই বাজারে একটা কল পেয়েছ, মহানন্দে থাকো। নিতে হয় নাও, না হলে বল। ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার ছেলেরা লাইন দিয়ে আছে, অনেক কম পয়সায় তোমার থেকে অনেক ভালো কাজ করে দেবে বলে।

ইন্টারভিউ বোর্ডে অবশ্য মিঃ এম বলেই দিয়েছিলেন নামের ব্যাপারটা। '00' বিভাগের সবাই সুপারম্যান। তারা কেউ মারা যায় না, বদল হয়। অনেকটা অরণ্যদেবের মত। একজন মারা গেলে, আরেকজন তার জায়গা নেয়, বাইরের লোকে ভাবে 007 অমর। পনের দিন আগে দু-নম্বর বন্ড মারা গেছে, তাই এখন তিন নম্বর বন্ডের জন্য খোঁজ চলছে। ইন্টারভিউয়ের শেষে এম রসিকতা করে বলেওছিলেন, 'মিঃ বেকার, আজকাল সবাই বন্ড দিয়ে, চাকরী পায়। আপনি তো বন্ড নিয়ে বেকারত্ব ঘোচাচ্ছেন।'

বিকেল চারটের ঠিক চার নম্বর ঢংটা শেষ হওয়া মাত্র মানিপেনীর ঘরের দরজাটা খুলে গেল, আর হাসিমুখে প্রবেশ করল রবার্ট বেকার, থুক্কু জেমস বন্ড নম্বর তিন। মিস মানিপেনীর প্রসারিত হাতের ইশারা মেনে ভেতরের দরজা খুলে ঢুকে পরল এম-এর খাস কামরায়।

'এসো জেমস, বসো। এককাপ চা চলবে নাকি?' স্মিতমুখে অভ্যর্থনা জানালেন এম, 'মিস মানিপেনী, জেমসের জন্য আরেক কাপ প্লীজ।'

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে প্রশ্ন করলেন এম, 'ন্যানো টেকনোলজির নাম শুনেচ?'


মন্তব্য

মূলত পাঠক এর ছবি

তারপর?

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ঘনাদার পর বন্ড, শঙ্করদা কী এরপর হোমস আর ব্যোমকেশ-দের ও আনবেন না কি ??
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

জাহিদ হোসেন এর ছবি

বুঝতে পারছি যে কাহিনী দানা বাঁধছে, কিন্তু সেটি যে কোনদিকে যাচ্ছে তা এখনো ঠাহর করতে পারছিনে। কি আর করা? অপেক্ষায় থাকলাম।
লেখা যে ভালো লাগছে, তা বলাই বাহুল্য।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

গৌরীশ রায় এর ছবি

প্রথম পর্বের মত একেবারেই মনে হয়নি ।
এই পর্বকে খুব দায়সারা গোছের মনে হয়েছে । পাঠক কিন্তু খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তে বসে!!
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ঘটনার বিস্তৃতিতে অনুমান, ঘনাদা আর বণ্ড'দা পরষ্পর মল্ল লড়তে যাচ্ছে। দেন, পুরা জাপানী সুমো স্টাইলে দুজনকে নেংটি পরিয়ে আগুনের বের দেওয়া বৃত্তের মধ্যে খাড়া করায়ে। যো জিতেগা ওহি সিকান্দার! হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

স্নিগ্ধা এর ছবি

ভালো লাগলো। প্রথম পর্বের সাথে কোনো মিল নেই, এ ব্যাপারটাও ভালো লাগলো। দানা বাঁধছে গল্প ......

দ্রোহী এর ছবি

সঙ্গে আছি। কাহিনি জমে উঠছে............

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।