বিক্ষিপ্ত দিন

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি
লিখেছেন সুবিনয় মুস্তফী (তারিখ: সোম, ২১/০৭/২০০৮ - ৫:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

autoএত সিরিয়াস কান্ডের মধ্যে সিরিয়াস কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে না। সময়টা ১০০% সিরিয়াস। আর অনেকদিন ধরে আমার কীবোর্ড দিয়েও শুধু সিরিয়াস লেখাই বের হয়। বিরক্তিকর লাগে নিজের কাছে। আজকে ভাবছিলাম একটা ব্রেক নেই এসবের থেকে। তাই হয়তো কিছুটা ব্যক্তিগতর দিকে যাবে এই পোস্ট।

দিনগুলো কিছুটা বিক্ষিপ্ত যাচ্ছে। গত সপ্তাহ থেকেই ধরি। সচল যেদিন অফ করে দিল আমাদের সরকার মহাশয়, সেই প্রথম ৩৬ ঘন্টা কেমন কেটেছে এখনও মনে পড়ছে। কেমন একটা প্রবল আশংকা কাজ করছিল মনের ভেতর, একটা অজানার ভয় - আসলে কি হয়েছে? আর কি কি হতে পারে? অনেকের মত আমিও খানিকটা বেদিশাই হয়ে পড়েছিলাম। সেদিন কাজে এসে খুব একটা বেশী কাজ করতে পারিনি।

আজকে প্রায় ৫-৬ দিন পরে সবাই মোটামুটি আন্দাজ করে নিয়েছেন কি হয়েছে। ঐ সাইড থেকে অফ করে দিয়েছে কিন্তু স্পষ্ট করে তার কোন স্বীকারোক্তি মিলছে না। এভাবে কয়দিন চলবে কে জানে? চীনা ব্লগ পাঠকদের মত আমাদের ব্লগ পাঠকরা আন্তর্জালের ইতি-উতি দিয়ে সচলে ঢোকার চেষ্টা করবেন। আর বাকিটা অফিশিয়াল স্টেল্‌মেট। যেন দাবার বন্ধ্যা চাল।

*

এর মধ্যে এখানে জীবনে নানা কাজে ব্যস্ততা। চাকরিতে কিছু বড় বড় ডেডলাইন ঘুরছে মাথার উপরে - কিন্তু কাজে তেমন করে মন বসাতে পারছি না। ক্রেডিট ক্রাঞ্চ আর ব্যাপক মন্দা পুরো পশ্চিমা অর্থনীতিকে বিষ-বাষ্পের মত ছেয়ে ফেলেছে। সেটা নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তান্না করি, পড়াশোনা করি, লেখালেখি করি। কিন্তু আর কাহাতক সহ্য হয় এত খারাপ খবর? লেখার কাজ তাই অসমাপ্ত থেকে যায় - ইনকমপ্লিট অবস্থায় ফেলে রাখি।

এক ক্লায়েন্টের রিপোর্ট জমা দেবার তারিখ পার হয়ে গেছে দুই সপ্তাহ আগে। এখনো জমা দেইনি। কালকের মধ্যে দেওয়া উচিত আসলে। দেখা যাক শেষ হয় কি না। বস-ও দেখি কিছু বলে টলে না। তাতে অবশ্য অসুবিধা নেই তেমন। সৌভাগ্যবশত বস-কে বশ করে রেখেছি অনেক আগেই। কাজ করি বা না করি - এই বসের কাছে আমার সাত খুন মাফ। কারন সময়ে অসময়ে তার হয়ে প্রয়োজনীয় লেখালেখি করে দেই। প্রেজেন্টেশন বানিয়ে দেই। সে আমার উপর এসব ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারে।

আর আমার মত সেও কট্টর নিরাশাবাদী। পল নিশ্চিত যে আগামী পাঁচ বছরের জন্যে ধরাশায়ী হয়ে পড়লো এই দেশের অর্থনীতি। গত সপ্তাহে ওর একটা প্রেজেন্টেশনে গিয়েছিলাম - বেশ সিনিয়র ম্যানেজারদের কাছে। একদম পেছনের সারিতে বসে খেলা দেখবো। পল তার রীতিমতো ভয়ংকর দুই ডজন স্লাইড দেখানো শেষে কোমল গলায় জিজ্ঞেস করলো 'এনি কোয়েশ্চেন্স?'

দেখি রুম-শুদ্ধ ডাইরেক্টরের দল স্তব্ধ হয়ে গেছে। বোবা মুখ, শুকনো চেহারা। কেউ একটা কথা বলার সাহস পেলো না। বেশ মজাই লাগলো। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হাসছি। পল বলছে - শেল-শক হয়েছে মনে হয় বেচারাদের। হাহাহা!

আমি প্রশান্ত বদনে, নিশ্চিন্ত মনে টেবিলে ফিরে আসি। তারপর সচলায়তন খুলি।

*

খুব প্রিয় একটা গানের ভিডিও দিলাম। মেক্সিকোর ব্যান্ড - 'মানা'। এমটিভি আনপ্লাগড অনুষ্ঠান করেছিল কয়েক বছর আগে। আমি স্প্যানিশ বেশী বুঝি না, কিন্তু ২০০৩ সালে এক রেডিও স্টেশনে এই গানটা শুনে হন্যে হয়ে এর এমপিথ্রি খুঁজে বের করেছিলাম। গানের নাম - ভিভির সিন আইরে - বাতাস ছাড়া বেঁচে থাকা। নিখাদ প্রেমের গান - কথাগুলোর মানে এই পেজের শেষে লিপিবদ্ধ রয়েছে। আশা করি ভালো লাগবে।


মন্তব্য

দিগন্ত এর ছবি

স্লাইড গুলোর ভিডিও রেকর্ডিং করে ইউটুউবে দেন না ... কিছু জ্ঞান বাড়াই ... আপনি আর এখন যে কেন অর্থনীতি নিয়ে লেখা দেন না ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ্যাঁ বিশ্বের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে একটা পর্যালোচনা পাওনা হয়েছে আমাদের।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

কনফুসিয়াস এর ছবি

এইরকম কিছু লেখাই বরং নামান কিছুদিন। রিলাক্স হওয়াওতো দরকার আছে।

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।