জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০০ বৃক্ষ নিধনের পরিকল্পনা

সিরাজ এর ছবি
লিখেছেন সিরাজ [অতিথি] (তারিখ: সোম, ১৫/০৯/২০০৮ - ৭:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি ৪০০ বৃক্ষ নিধনের পরিকল্পনা নিয়েছেন কতৃপক্ষ। ঢাকার এত কাছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস একটি চমত্কার পাখি অভয়ারণ্য যেখানে বছরের যে কোন সময়ে প্রচুর পাখির দেখা মেলে আর শীতকালে যোগ হয় পরিযায়ী পাখির। প্রচুর মিশ্র ধরণের গাছপালা এবং নিরুপদ্রব পরিবেশ এই পাখিপ্রাচুর্যের কারণ।

গাছগুলো নাকি ম্যাচুওর হয়ে গেছে তাই নাকি তাদের কেটে ফেলতে হবে। অথচ পরিণত গাছই পাখিদের প্রকৃত আবাস। ওখানে গাছচোর নেই, চেয়ারম্যন মেম্বার নেই, বনবিভাগ নেই তবুও গাছ কাটার এই উদ্দোগ সত্যিই দুঃখজনক।

সামনে লম্বা ছুটি, সেই সুযোগেই না কি এই অপকর্মটি গোপনে সমাধা করা হবে।


মন্তব্য

সিরাজ এর ছবি

ছবির ক্যপশনটা কেন যেন আসে নি:

জাবির বাসিন্দা অরিয়েন্টাল স্কপস্ আউল - ছবি লেখক

:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ধুরো !
চারদিকে এতো গাছ কাটাকাটি আর ভাল্লাগে না। মন খারাপ

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশএ কর্তৃপক্ষ জিনিস টা কোন কিছু তৈরি কারার থেকে মনে হয় কাটাকাটি আর ভাঙ্গাভাঙ্গিতে ওস্তাদ , ভাল কিছু হলে তো আরও কথা নেই।
নিবিড়

Fahim এর ছবি

প্রতিবাদ করা উচিত সবার......

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পরিকল্পিত ভাবে বৃক্ষনিধন অনেক দেশেই হয়ে থাকে। পরিণত গাছ কাটা যেতেই পারে যদি সেটা পরিবেশের স্বার্থে করা হয়। কিন্তু একটি বিশ্বিবদ্যালয়ে সে অবস্থা হতে পারে বলে আমার মনে হয়না। আমরা প্রতিবাদই করতে পারি। দেশের অনেক বড় বড় সমস্যা আছে যেগুলো ছাপিয়ে গাছের প্রতি দরদ দেখানোটাও এখন একটা সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু মানুষের স্বার্থেই এদের রক্ষা করা দরকার সেটাও যেন আমরা ভুলতে বসেছি।

ঘটনার নিন্দা জানাই।

সবজান্তা এর ছবি

প্রকৃতিপ্রেমিকের কথাটা এক অর্থে সত্যি। আমাদের জীবনে এত সমস্যা যে গাছের প্রতি মায়া মমতা দেখালে হয়তো দু কথা শুনে আসতে হবে। কিন্তু গাছ না থাকার ফল কী হতে পারে, তা তো আমরা ঢাকাবাসী এখন হাতে নাতে টের পাচ্ছি। কাজেই যে যা বলুক, আমাদের প্রতিবাদ করা উচিত।


অলমিতি বিস্তারেণ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই দেশে এখন এত বেশি প্রতিবাদের প্রয়োজন যে প্রতিবাদ ভাতা চালু করা উচিত। উফ... টায়ার্ড লাগে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

এই কাজটিকে রাজনৈতিক চাল হিসেবেই দেখছি। এই ইস্যুটি বর্তমান যৌননিপীড়নের অভিযোগে জোরালোভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকের যথোপযুক্ত শাস্তি দাবির আন্দোলন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেবার জন্যে ওয়ার্মকালার হিসেবে কাজ করবে, আবার এদিকে দৃষ্টি না দিলে আলগোছে শ'চারেক গাছ কেটে পরিবেশ জলাঞ্জলি দিয়ে টাকা পকেটান্তরিত হবে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

রথ দেখা ও কলা বেচা যাকে বলে।

দ্রোহী এর ছবি

"কতৃপক্ষ" শব্দটাকে "রাজাকার" শব্দের মতই গালি হিসাবে ব্যবহার শুরু করতে হবে দেখছি!!!


কী ব্লগার? ডরাইলা?

সিরাজ এর ছবি

তবুও প্রতিবাদ করতে হবে....

কতৃপক্ষের কাছে পিটিশন গেছে কয়েক শত...

কাল ১৭ই সেপ্টেম্বর সব প্রতিবাদী মিলে এক মানববন্ধন হবে জাবি ক্যাম্পাসে সকাল ১১ টায়। পরে সাক্ষরিত প্রতিবাদলিপি দেওয়া হবে ভিসির কাছে.....

মন্তব্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com

অগ্নি এর ছবি

তবুও প্রতিবাদ করতে হবে।

পরিকল্পিত গাছ কাটার পদ্ধতিটি ঠিক ভাল জানিনা, তবে আমার মনে হয় - পরিকল্পিত গাছ কাটার মানে এই নয় যে ৫০০টার মধ্যে ৪০০টি গাছ একসাথে কেটে ফেলতে হবে। প্রকৃতিবিদ যদি বিষয়টি বুঝিয়ে দিতেন তাহলে বুঝতে সুবিধা হত। নিশ্চয় ১০টি ২০টি করে গাছ কাটাটাই স্বাভাবিক। প্রয়োজন হলে জাবিতে এভাবেও কয়েক বৎসর সময় নিয়ে ৪০০ গাছ কাটা যেতে পারে।

অগ্নি
http://agnisetu.blogspot.com

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

জানিনা আপনি আমাকেই উদ্দেশ্য করে প্রশ্নটা করেছেন কী-না। যাহোক, পরিকল্পিতভাবে গাছ কাটা ব্যাপারটা এরকম:

১. যে গাছ বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে গেছে, যার অস্তিত্ব অন্যগাছের অস্তিত্বকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে সে গাছ কাটা যায়, কোন সমস্যা হবার কথা নয়।

২. কিছু কিছু এগ্রেসিভ স্পিসিজ আছে যেগুলোকে পৃথিবীর অনেক দেশেই সরকারিভাবে ঘটা করে বিনষ্ট করা হয়। আমাদের দেশে সেই কনসেপ্ট অনেকেই জানেনা।

৩. বিশাল বিশাল বনভূমিতে ভারসাম্য রক্ষার জন্যও অনেক সময় পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষনিধন করা হয়। সেটা সেসব দেশের জন্যই প্রজোয্য যেখানে বনভূমির বিশালত্বের কারণে এটা সম্ভব। যেমন কানাডা এত টিম্বার উৎপাদন করে যে বনের এক স্থান থেকে গাছ কেটে নিয়ে আবার সেস্থানে ঘুরে আসতে আসতে সেখানের গাছগুলো পরিণত হয়ে যায়। তাদের বনভূমি এত বড় বলেই সেটা সম্ভব হয়, যেটা আমাদের দেশে হওয়ার কথা নয়।

আমার মন্তব্যটা আবার পড়লেই হয়তো ব্যাপারটা লক্ষ্য করবেন। যাহোক, জয় তো হলই-- আপাতত গাছ না কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেখা যাক কতদিন এটা ঠিক থাকে।

বিডিনিউজ২৪ এর খবর:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সেপ্টেম্বর ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থানের কারণে অবশেষে চারশ গাছ নিধনের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে রক্ষা পেয়েছে গাছগুলো।

ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মো. মুনিরুজ্জামান বুধবার জানিয়েছেন, গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। এর আগে সকালে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে এবং উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেয়।

মানবববন্ধনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকও অংশ নেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক স�প্রতি সেগুন, মেহগনি, শিল কড়ই, আকাশমনি, মহুয়া, কাঁঠাল, কদম, কৃষ্ণচূড়া, আম, জাম, বহেরা ও বটসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারশরও বেশি কাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয়। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এস্টেট অফিসের একজন মালিকে দিয়ে গাছগুলোতে লাল 'ক্রস' চিহ্ন দিয়ে দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নেয়।

বহু প্রজাতির পাখির আবাসস্থল এ গাছগুলো ঈদ ও পূজার ছুটির সময় কেটে ফেলা হবে- এমন আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানায়। তাতে শামিল হয় পরিবেশবাদীরাও।

বুধবার সকাল ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেয় পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

পরে তারা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, "এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪৫০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। যার ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রায় ১৭০ প্রজাতির পাখি ও অন্যান্য প্রাণী নির্ভরশীল। প্রশাসন চারশ'র বেশি বিভিন্ন প্রজাতির পরিপক্ক ও উপকারী গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওইসব গাছ কাটা হলে পাখিদের আবাসস্থলসহ ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হবে। "

শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশ নেন প্রত�তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক শাহ সুফি মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের, পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক প্রমুখ।

মানববন্ধনের পর ইনাম আল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "পাখির আবাস হিসেবে দশটি নবীন গাছ ১০ বছরেও একটি প্রাচীন গাছের সমতুল্য হবে না। একটি বর্ষীয়ান গাছ কাটার আগে ১০টি নতুন গাছ রোপণই যথেষ্ট নয়। এই ক্যাম্পাস পাখিদের অভয়ারণ্য, সেখানে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত দুঃখজনক।"

এরপর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হাইসহ মানবনন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করেন।

এরপর শিক্ষার্থীদের বলেন, "বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসের একটি গাছও কাটা হবে না।"

অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান পরে সাংবাদিকদের বলেন, "শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার পর গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপনের মাধ্যমে বিষয়টি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"

গাছ কাটার সিদ্ধান্তটিকে 'ভুল' বলেও স্বীকার করেন তিনি।

ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বক্তব্য শোনার পর শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন কর্মসূচিও স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। তবে একইসঙ্গে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত পুরোপুির বাতিলেরও দাবি জানায় তারা।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সামিউল মোহসেনিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "উপাচার্যের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছি। তবে ভবিষৎ এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা তা কখনও মেনে নেবে না।"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।