দ্বিজেন শর্মার > সমাজতন্ত্রে বসবাস।।

জাহেদ সরওয়ার এর ছবি
লিখেছেন জাহেদ সরওয়ার (তারিখ: শুক্র, ১৩/০৬/২০০৮ - ৫:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই বইটি সেইসব দিনগুলোকে উসকে দেয়। একদা চাটগার পথে পথে আগ্রাবাদে আর নিউমার্কেটের ফুটপাতে রাদুগা আর প্রগতির যাবতীয় বই প্রায় কিছু না বুঝেই সুন্দর ছাপা আর এত সস্তা যে প্রায় বিনামুল্যে বলা যায়। দেদার ছে কিনছি। নি কোলাই গোগোলের রচনা সপ্তক, আলেক্সান্দার পুশকিনের দুই খন্ড রচনা গদ্য ওপদ্য, তলস্তয়ের উপন্যাস গল্প, দস্তয়েভস্কির তিনটি উপন্যাস ও বঞ্চিত লাঞ্চিত। গোর্কীর লেখাগুলো। চেঙ্গিস আইতমাতভ ও শালোকভের প্রশান্তদনসহ আর কত কত বই। দীর্ঘদিন বইগুলো অপঠিতই ছিল তখন রোমনো আফাজ পড়ি। কিন্তু পরে পরে বুঝতে পারলাম আসলে সঠিক কাজটি আমি সঠিক সময়ে করেছিলাম সেই বই গুলো আজিবন আমাকে ছায়া দিয়ে এসেছে। যদি আন্নাকারেনিনা ডাবল বই কিনে ফেলেছিলাম মানে একই জিনিস দুই সেট। যখন সমাজতন্ত্র নাই বলা যায় প্রগতি আর রাদুগা উঠে গেছে তখন কিছু না বুঝেই চিঠি লিখেছিলাম প্রত্যেক বইয়ের শেষে ওদের আর্জি দেখে। সব স্মৃতি গুলো মনে পড়ে দ্বীজেন শর্মার এই বইটি পড়লে। বাংলা থেকে বেশ কজন পাড়ি জমিয়েছিলেন সোভিয়েত রাশিয়ায় অই সময় অনুবাদক হিসেবে যোগ দিতে রাদুগা প্রগতিতে। মনীন্দ্র,কামাক্ষীপ্রসাদ,সমর সেন, অরুণ সোম, খালেদ চৌধুরী, হায়াত মামুদ, দ্বীজেন শর্মা আরো অনেকে। সেই কাহিনিই দ্বীজেন শর্মা লিখেছেন এ বইয়ে। সন্দেহ নাই দ্বীজেন দা কোনো পপুলার লেখক নয়। তাই তার রচনা অনেকটা বৃক্ষ গোত্রীয়। অদ্ভুদ এক ভালা লাগা গদ্য লিখেন তিনি। এই বইটা সমাজতন্ত্রের আমল থেকে শুরু করে তার পতনকাল পর্যন্ত বিস্তৃত।


মন্তব্য

রেজওয়ান এর ছবি

সেই সময়ের কথা মনে পরে। আমিও বনহুর থেকে রানায় উত্তোরন করছি মাত্র। তখন আকার্দি গাইদারের ইসকুল, রুশ দেশের উপকথা ইত্যাদি আবিস্কার করলাম।

পরবর্তীতে একসময় শাহবাগের ফুটপাতে রাশান বাংলা বই বেশ উঠেছিল। সস্তাও ছিল বটে। তবে বেশীর ভাগই সমাজতন্ত্র কি এই ধরনের পকেট সংস্করণ। এই প্রকাশনাগুলো কি একদমই উঠে গেছে?

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍"ফুলগুলি যেন কথা" নামের অন্য একটি বইয়ের লেখকের নাম দেখতে পাচ্ছি "দ্বিজেন শর্মা", দ্বীজেন শর্মা নয় মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমিও কিন্তু বানানটা 'দ্বিজেন' বলেই জানতাম, তবে আমার নিজেরই বানানের যা হাল তাতে অন্যকে কিছু বলা সাজে না মন খারাপ

সুমন চৌধুরী এর ছবি

প্রগতি যখন উঠে যাচ্ছে তখনকার বই মম দু:খের সাধন পড়েছিলাম। সমাজতন্ত্রে বসবাস পড়া হয় নি।



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

জাহেদ সরওয়ার এর ছবি

সুমন
আপনাদের বিষয়েও সামান্য স্মৃতি উল্লেখ করেছেন তিনি।

*********************************************

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

একসময় নীলক্ষেতের ফুটপাত ছিলো বই কেনার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। এখন তো সব নতুন বই পাওয়া যায় সেখানে... ফটোকপি সমৃদ্ধ। কিন্তু একসময় সেখানে পাওয়া যেত পুরনো কালেকশন। লোকজন তাদের পুরনো বই বিক্রি করতো সেখানে। সেখান থেকে অনেক দূলর্ভ বই আমি কিনেছি।
একটা সময় বই কেনার টাকার অভাব ছিলো... তখন করতাম পাল্টাপাল্টি... কিছু বই নিয়ে যেতাম... সেগুলো বিক্রি করে নতুন বই কিনতাম। এভাবেই প্রগতি রাদুগার বইগুলো একসময় বিক্রি হয়ে যায়। বিক্রি হয়ে যায় অ আ ক খ।
তবে গত বছর এক ধাক্কায় সেগুলো আবার সব কিনলাম নীলক্ষেত থেকেই। মালাকাইটের ঝাঁপি, ইশকুল, রঙধনু, উভচর মানুষ আন্না কারেনিনা, ইস্পাত থেকে শুরু করে অনেক অনেক বই... ইয়া পেরেলম্যানের অঙ্কের মজা, পদার্থবিদ্যার মজার কথা... আরো অনেক অনেক সব ছোটবেলার প্রিয় বইগুলো।

দ্বিজেন শর্মার এই বইটা পড়া হয়নি... পড়তে হবে। খালেদ চৌধুরীর খবর কারো জানা আছে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রেজাউল করিম সুমন এর ছবি

প্রিয় নজরুল,
খালেদ চৌধুরীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল গত মাসের ৩০ তারিখে, ছায়ানট ভবনে। ভেবে রেখেছিলাম তাঁর বাসায় যাব; তার আগেই আকস্মিকভাবে দেখা হয়ে যাওয়ায় ভালো লেগেছিল। শরীর তত ভালো নেই। গত কয়েক বছরে কখনোই তাঁর শরীর বিশেষ ভালো থাকতে দেখিনি।
আপনি নিশ্চয়ই চিঙ্গিজ আইতমাতভের "পাহাড় ও স্তেপের আখ্যান" পড়েছেন। "জামিলা" গল্পটির অনুবাদ খালেদ চৌধুরীর। আইতমাতভ এ মাসের ১০ তারিখে মারা গেছেন।
জেনে হয়তো খুশি হবেন, আমরা "নির্মাণ" নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন থেকে ননী ভৌমিককে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। গত কয়েক বছর ধরেই এর কাজ চলছে।
শুভেচ্ছা জানবেন।
রেজাউল করিম সুমন

সুমন চৌধুরী এর ছবি

রেজা ভাই আমাকে মেইল করেন



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ্যাঁ দ্বিজেন শর্মাই হবে। প্রগতি-রাদুগার বই আর কৈশোরের পৃথিবীটাকে বাড়িয়ে ফেলা সমার্থক।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

তীরন্দাজ এর ছবি

তখন পড়তাম না। রোমেনা আফাজই ভাল লাগতো বেশী। পরে অবশ্য রোমেনা আফাজ সহ অনেকেকই তাড়িয়ে দিয়েছেন আনোয়ার হোসেন। একেবারে ঠিক বলেছেন। রাশিয়ার অনুবাদগুলো এখন দেখলে বোঝা যায়, কী দুধর্ষ অনুবাদ করেছেন ওরা।

ভাল লাগলো বই নিয়ে আপনার এই স্মৃতিচারণ।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হায় আমি কাউকেই চিনি না মন খারাপ আফসোস!
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

দ্রোহী এর ছবি

কত কত দিন পরে বইপাগল মাশা!!!!!!!!!!


কি মাঝি? ডরাইলা?

রায়হান রশিদ এর ছবি

গত ১০ জুন চিঙ্গিস আইতমাতভ চলে গেলেন। এই পোস্টটা তা নিয়েই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।