লেখার চেয়ে আলস্য ভালো (হিমু-র 'ফাও' পড়ে)

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: শুক্র, ১৫/০৬/২০০৭ - ৭:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:
ভোরের আজানে সুন্দর সুর করে বলা হয়, ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম। আমি এই তত্ত্বকথাকে একটু ঘুরিয়ে নিয়ে না লেখার কতো যে অজুহাত বানাই! সারাদিনের মেহনত (আচ্ছা মিন্তি শব্দটা কী মেহনতী-র সংক্ষিপ্তরূপ?) শেষ করে, বাবাগিরিসহ সংসারকর্মের দায় সম্পন্ন করে লিখতে বসার বাসনা থাকে। লিখি বা লিখবো এরকম একটা ভাবভঙ্গি করে নিজের জন্যে আলাদা একটা ঘর দখলে রেখেছি। কমপিউটারের সামনে বসে প্রথম যে কাজটি করি, আপনার অনুমান নির্ভুল, ইমেল চেক করা। মেল থাকলো তো তা পড়ো এবং উত্তর লেখো। না থাকলে পুরনোগুলো কি একটু দেখার ইচ্ছে হতে পারে না? নিশ্চয়ই পারে। খুবই দরকারি কাজ। তারপরে একটু দেশের খবর জানতে হয়। বিদেশে বাস করি মানেই তো দেশের খবরের জন্যে বুক উথাল-পাথাল। যদিও জানি বছরে একদিনের খবরের কাগজ পড়লে বাকি ৩৬৪ দিন আর না পড়লেও চলে। একটু এদিক-ওদিক, এই তো। ইন্টারনেট এখন বাংলা কাগজ আমার ঘরে এনে ফেলেছে। একটা-দুটো করে ছয়-সাতটা কাগজ দেখা হলো। তারপরও খুঁতখুঁত, আচ্ছা আজ তো ওই কাগজটা দেখলাম না। তা থাক, দুয়েকটা সাপ্তাহিকও তো দেখতে হয়। খবরের কাগজ পড়তে পড়তে আমি কিন্তু দেশের কথা ভাবতে শুরু করে দিয়েছি। দেশ বলতে আসলে দেশের মানুষ। পরিবারের লোকজন আছে, বন্ধুবান্ধব আছে - সবার খবর জানার জন্যে বুকের মধ্যে আইঢাই। তাহলে ফোন করা যাক। ঢাকায় তখন সকাল। বন্ধুদের কেউ কেউ তখনো ঘুম থেকে ওঠেনি। সকালবেলার বেলার পাখি হয়ে সবার আগে কুসুমবাগে উঠবো আমি ডাকি ভাব নিয়ে তাদের ঘুম থেকে তুলে তাদের গতরাত্রির জাগরণের গল্প শুনি। আচ্ছা রাখি, তুই ঘুমা বলে আরেকজেনর নাম্বার তুলে নিই। এই করে করে রাত অনেক হলো ভেবে ঘুমাতে যাওয়ার কথা ভাবি। একটু অপরাধী লাগে তখন। আচ্ছা, আমার না ওই লেখাটা আজ শেষ করার কথা ছিলো। ২০-৩০ মিনিট, তারপরে ভাবি, আজ থাক। কাল ঠিক এটা শেষ করবো। আজ শেষ করতেই হবে কে বললো? না করলে কী হয়? একটু বিশ্রামও তো দরকার। সকালে আবার উঠতে হবে, এখন ঘুমাতে যাই। এরপরও বলবেন আমি লিখি না? বলার সাহস হবে আপনার?

মন্তব্য

ধুসর গোধূলি এর ছবি
কে কয় খালি নামডা কইয়েন আমারে। (রাগের সিম্বল দেয় কেমনে?) _________________________________ <স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>
আড্ডাবাজ এর ছবি
জুবায়ের ভাইয়ের লেখাটার শিরোনাম দেই: জুবায়ের ভাইয়ের এইসব দিনরাত্রি..।
এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
ধূসর গোধুলী ইমোটিকন সব ইয়াহুর আদলে। ==== মানুষ চেনা দায়!
কনফুসিয়াস এর ছবি
হা হা মজা পাইছি। প্রায় একই কাহিনি আমারো। -যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
আড্ডাবাজ, আমি একা না। এইমাত্র কনফুসিয়াস বললেন তিনিও..

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

হাসান মোরশেদ এর ছবি
কবিতা লিখার চেয়ে, লিখছি লিখছি ভাবটাই ভালো লাগে যেমন প্রেম করার চেয়ে, প্রেম করছি করছি ভাব! -------------------------- আমি সত্য না হইলে গুরু সত্য কোনকালে?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
ঠিক তাই @ হাসান মোরশেদ।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

শুভ, আপনি যে ধ্বস্তাধ্বস্তির কথা বললেন আমার ক্ষেত্রে তা হয় অতি মৃদু এবং সংক্ষিপ্ত। কারণ আমার ইচ্ছে খুব সহজেই পরাজয় স্বীকার করে নেয় মহামান্য ও মহাক্ষমতাবান আলস্যের (বিকল্পে অজুহাত) কাছে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমার দোস্ত উল্লাস গোমেজের মদ খাওয়ার অনেক বাহানার কিছু ছিলো- 'দোস্ত আজ বড় ঠান্ডা ব্রান্ডি না খাইলে চলেনা; দোস্ত দেখ কেমন বৃষ্টি,চুমুক চুমুক ওয়াইন না হলে জমে?; দোস্ত কি চমৎকার রোদ,কয়েক পাইন্ট বিয়ার না খাওয়া তো রীতিমত অপরাধ' এ ছাড়া অমুক তমুক ডে তো ছিলোই- লেটস সেলিব্রট!
--------------------------
আমি সত্য না হইলে গুরু সত্য কোনকালে?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।