দুই মাস যখন দুই দিনে নেমে আসে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: শুক্র, ২২/০৮/২০০৮ - ৯:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কাল তিন তিনবার ভুল রাস্তায় চলে গেলাম। আক্ষরিক অর্থেই ‘এ পথে আমি যে গেছি বারবার’ বলার মতো দুশো মাইলের পথ। ইন্টারস্টেট-৩৫ ধরে সরাসরি ড্রাইভ, কোনো ঘোরপ্যা...কাল তিন তিনবার ভুল রাস্তায় চলে গেলাম। আক্ষরিক অর্থেই ‘এ পথে আমি যে গেছি বারবার’ বলার মতো দুশো মাইলের পথ। ইন্টারস্টেট-৩৫ ধরে সরাসরি ড্রাইভ, কোনো ঘোরপ্যাঁচ নেই। তবে হাইওয়ে মাঝেমধ্যে বিভক্ত হয়ে যায় অন্য নানা ঠিকানার দিকে। ভুল হলে অন্য শহরে পৌঁছে যাওয়া, নিদেনপক্ষে একটা চক্কর খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যায়। ডালাস থেকে অস্টিন গিয়েছি, তখন সব ঠিকঠাক। ফেরার পথে ভুল রাস্তায় গিয়ে গোলমাল, চক্কর খেতে হলো।

মেয়েটা বড়ো হয়েই গেলো, চলে যাবে পড়তে অস্টিনে। জুন মাসের মাঝামাঝি খবর জানার পর মনে হলো, দুই মাস সময় এখনো আছে । অথচ কোথা দিয়ে কীভাবে সময়টা চলে গেলো! এই দুই মাসে আমরা অনেক কথা বলবো; জর্জ হ্যারিসনের ‘বাংলাদেশ’ কনসার্টের ডিভিডি এবং হ্যারিসনের মৃত্যুর পর তাঁর বন্ধুদের আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর জর্জ’-এর ডিভিডি কিনে রাখা আছে দীর্ঘদিন, এখনো সেলোফেন-আবৃত, কথা ছিলো একসঙ্গে বসে দেখবো। সময়গুলি কোথায় গেলো?

পরশু আমাদের চারজনের পরিবার গেলাম অস্টিনে। গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মেয়ের পরিচয়-পর্ব (orientation) হলো। ক্লাস শুরু হতে এক সপ্তাহ দেরি, কিন্তু আবার তাকে নিয়ে অস্টিনে আসতে হবে শনিবার, তিনদিন পর। নতুন শহরে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে সে উঠবে সেদিন, গোছগাছ করে ক্লাসের জন্যে তৈরি হওয়ার সময় পাবে দিন তিনেক।

কাল দুপুরের দিকে তার অ্যাপার্টমেন্ট দেখতে যাওয়া হলো। মেয়ে রুমমেট ঠিক করেছে এক প্যালেস্টাইনি মেয়ে ফারাহকে। ফারাহ-র বাবা গতমাসে নিজে এসে ঘুরে ঘুরে সব ঠিকঠাক করে গেছেন। ভদ্রলোকের পছন্দের ওপর কোনো কথা চলে না, অ্যাপার্টমেন্ট এবং কাছাকাছি এলাকা দেখে যে কোনো বাবা-মা নিশ্চিন্ত বোধ করতে পারে। বস্তুত, সকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের রাস্তাঘাট-বাড়িঘর দেখে আমার একটু ফাঁপড় লাগছিলো। বেশ পুরনো, ঘিঞ্জিমতো সব, ডাউনটাউন এলাকায় যেমন হয়। তখনো সঠিক ধারণা নেই, ওদের অ্যাপার্টমেন্ট ঠিক কোথায়, কেমন জায়গা।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইল কয়েকের দূরত্বে অ্যাপার্টমেন্ট দেখে মেয়ে নিজেও মহা উচ্ছ্বসিত। নিজের প্রথম ঠিকানা বলে কথা, বাবা-মায়ের ছায়ার বাইরে তার স্বাধীনতার ঠিকানা।

ফেরার পথে মেয়েকে বলি আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হল-জীবনের গল্প। নিজস্ব অ্যাপার্টমেন্ট দূরের কথা, নিজের বিছানার স্বপ্ন দেখাও কঠিন সূর্যসেন হলের ৪৪৮ নম্বর কক্ষের মেঝেতে শায়িত হয়ে। প্রথম বছরের প্রায় পুরোটাই সেভাবে কেটেছিলো। চোখে অবিশ্বাস নিয়ে মেয়ে তাকিয়ে থাকে, কল্পনাশক্তিও তাকে ছবিটা দেখতে সাহায্য করে বলে মনে হয় না। না হোক, কোনো ক্ষতি নেই। তার এখন সামনে তাকানোর সময়, তাকে স্বপ্ন দেখতে হবে আগামীর, পিতামাতার অতীতের জঞ্জালে তার কোনো প্রয়োজন না থাকাই উচিত।

দীর্ঘ যাত্রায় যেমন হয়, একসময় কথা থামে। ছেলেমেয়েরা এরকম যাত্রায় সচরাচর পালা করে প্যাসেঞ্জার সীটে বসে ডি জে হয়ে গান বাজায়। এখন মেয়ে সেই ভূমিকায়, তার নিজের ও ছোটো ভাইটির পছন্দের গান বাজায়। ওদের বয়সের ব্যবধান আট বছরের, একটা সময় ছিলো তাদের মধ্যে বনিবনা প্রায় ছিলোই না – তাদের দুই পৃথিবীর দূরত্ব এতোটাই বেশি তখন। বছর দুয়েক ধরে সেটা পাল্টাতে শুরু করেছে। দুইজনে মিলে কতোসব বকবক করে, একত্রে বসে গান শোনে। মেয়ে নিজের গরজে প্রতি সপ্তাহে ভাইকে নিয়ে যায় সিনেমা দেখতে। বোনের ফিরতে দেরি হলে ছেলে ‘আপু কখন আসবে? ফোন করি?’ জিজ্ঞেস করতে থাকে। ঠিক এই সময়েই তাদের বিচ্ছিন্ন হতে হবে ভাবলে কষ্ট হয়। এই সময় কি আর তাদের জীবনে ফিরে আসবে?

সেদিন ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপু চলে গেলে তোমার খারাপ লাগবে?’

ছেলে নিঃশব্দে কাঁধ ঝাঁকায়, সে জানে না। হয়তো সত্যিই জানে না। তার জীবন এরকম চলে যাওয়ার ঘটনা কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। অবিলম্বে জানবে, জীবন তাকে আরো অনেক অভিজ্ঞানে অভিজ্ঞ করে তুলবে ক্রমশ। এইসব ছোটোবড়ো নানা ধরনের দুঃখ-কষ্ট থেকে কে কবে রেহাই পেয়েছে?

সিডি-তে বেজে যাওয়া গান কানে আসে, মরমে পশে না। গাড়ি চালাচ্ছি, বারবার অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছি। আচমকা মনে হয়, আর মোটে কয়েকদিন পরে যখন অস্টিন থেকে ফিরবো, তখন মেয়ে পাশে বসে থাকবে না। তাকে ছেড়ে আসতে হবে তার নতুন ঠিকানায়। ভেতরটা কেন কে জানে খুব শূন্য লাগতে থাকে। খুব দূরের পথ নয়, চাইলেই যাওয়া-আসা হবে। কিন্তু তবু সে তো দূরেরই একজন হয়ে উঠবে দিনদিন। এখন বলছে, প্রতি সপ্তাহে না হলেও অন্তত দুই সপ্তাহ পরপর সে আসবে। হয়তো আসবে, কিন্তু দুই ক্রমশ তিন বা চার সপ্তাহ হয়ে যাবে, একসময় আরো আরো দীর্ঘ। জীবন এরকমই, নিজেকে দিয়েই জানি, আমার পিতামাতাও আজ থেকে অনেক অনেক বছর আগে এই বোধ নিয়ে চোখ মুছে গৃহকর্মে মন দিয়েছিলেন। এখন আমার পালা। যা কিছু নিয়েছি তা ফিরিয়ে দিতেই হয়।

প্রথম দুইবার ভুল পথে গিয়ে আর কেউ টের পাওয়ার আগেই চুপচাপ ফিরতে সক্ষম হই। ধরা পড়লাম শেষবার ডালাস শহরে ঢোকার পর। ছেলেমেয়ের মা টের পেয়ে যায়, ‘কী হলো তোমার?’

কী করে বলি, এই বাবাটি নিজেকে অনেক শক্ত মনের মানুষ ভাবলেও হয়তো ততোটা শক্ত সে নয়। কিন্তু আর কারো তা জানার দরকার নেই। চোখের কী দোষ? Must be the clouds in my eyes!

২১ অগাস্ট ২০০৮


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

মন খারাপ

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

মন খারাপ

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

তারেক এর ছবি

দিলেন তো মনটা খারাপ করে মন খারাপ
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ব্লগতুতো ভাইদের সঙ্গে ভাগাভাগি করি আর কি!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অমিত আহমেদ এর ছবি
মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ঠিক। বিকল্প তো কিছু নেই!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

দৃশা এর ছবি

আমার ভাইয়ের সাথেও আমার বয়সের প্রায় আট বছরের ডিফেরেন্স।
এতোটা ব্যবধান থাকার পরও ওর জাবতীয় ঝগড়াঝাটি মারপিট শুধু আমার সাথে। দেখলে মনে হবে দু'জন দু'জনের জন্মের শত্রু। অথচ এই আমি কোথাও খুব বেশি দিনের জন্য চলে গেলে সে দিনে ৪, ৫ বার ফোন করে বলবে 'এই তুই কবে আসবি। আমিতো খুব বোর হচ্ছি...ঝগড়া করার জন্য কাউকে পাই না তো'। আমি হাসি আর মনে মনে ভাবি আরো অনেক বড় হয়ে যাওয়ার পরও কি আমার ভাইটা ঠিক এমনই থাকবে।

পৃথিবীর সব বাবা মা গুলোই মনে হয় এমনই হয়। আমার মা যখন আমার বোনকে পড়াশোনার জন্য ক্যালিফোর্নিয়ায় একা রেখে আসছিলেন তখন কাঁদতে কাঁদতে আমার বোনকে বার বার বলছিলেন 'মা তুই আমাদের সাথে চল,একা কিভাবে রেখে যাই তোকে।' আর আমার বাবা করুন মুখ করে দাড়িয়েছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়া তো তাও অনেক দূর আমার মা আমাকে যখন একা ধানমন্ডিতে থাকতে দিলেন তাও দুশ্চিন্তায় অস্থির। দিনে হয়তো হাজারবার ফোনই দিতেন। আমার বোকা মা ভাবত আমরা একা একা কিভাবে থাকব তাদের ছাড়া। তিনি তো আর জানতেন না তার ছেলেমেয়ে কতটা স্বার্থপর...তাকে ছাড়াও একা একা বেশ থাকতে পারে। শুধু কখন কখনও মাঝরাতে আব্বু আম্মুর কথা খুব মনে পড়ত কিন্তু জানানর কোন উপায় থাকত না ।
লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল...নিজেদের জীবনের সাথে কোথায় জানি মিল খুঁজে পাই । হয়তো কমবেশী সবাই পাই।
-----------------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আপনার কথায় মন ভরে গেলো। আপনার গল্পই আমি চোখের সামনে অভিনীত হতে দেখছি, দেখবো।

পাঠ ও মন্তব্যের জন্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

মুশফিকা মুমু এর ছবি

মন খারাপ মন খারাপ লাগল, খুব সুইট লিখেছেন।
আমার আব্বুর আম্মুর কাছেও তাদের ইউনিভার্সিটির অনেক গল্প শুনেছি মজার মজার। আমার একা থাকার খুব সখ ছিল কিন্তু সবাই সিডনী থাকায় আর আমার ইউনিভার্সিটিও এখানে হওয়াতে তা আর হলনা। মন খারাপ একা না থাকতে পারার কথা আম্মু কে বললেই বলে 'একাতো থাকোনাই তাই এত মজা ভাবতেস, থাকতে হলে আর থাকতে চাইতা না'
তবে এটা ঠিক খালার বাসায় কিছুদিনের জন্য বাবা-মা,ভাই ছারা থাকলেই কেমন জানি লাগে মনেহয় কি যেন নাই, ইনকম্পিট ইনকম্পিট লাগে। ছোট ভাইটার সাথে খেলা, মারামারি সবই করি আর ও কিছুদিনের জন্য কোথাও গেলেই মনেহয় বাসাটা একদম খালি, কি যেন নাই কি যেন নাই এমন লাগে মন খারাপ
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সুইট মন-খারাপের গল্প! মন খারাপ হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বিষন্নতা আরেক বার ছুঁয়ে দিয়ে গেল! জীবন আসলেই থেমে থাকে না, শুধু গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়।

শেষ প্যারাটা পড়ে একটা গানের কথা মনে পড়ে গেল - "নো হার্ট ইজ স্ট্রং অর টাফ এনাফ টু টেক আ লট অভ পেইন, লাভ ইজ লাইক আ ক্লাউড হোল্ডিং আ লট অভ রেইন"!

আরো মানসিক দৃঢ়তা অর্জন করুন, সেই কামনা করি।
_______________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমাদের বিষাদের সঙ্গীতগুলিই বিশুদ্ধতম।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

কনফুসিয়াস এর ছবি

মন খারাপ

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ঠিকাছে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটা মিউজিক বাজছে আমার পিসিতে, গত প্রায় ছত্রিশ ঘন্টা ধরে। করুণ মিউজিক না, অথচ কেমন একটা মন খারাপ করা। একটা ই-কার্ডের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এটা। কার্ডে লেখা, আই এম সো লস্ট উইদাউট ইউ, আই মিস ইউ।

লেখাটা পড়ার দরকার হয় না, মিউজিকটা শুনলেই চলে। মনটা কেমন জানি হয়ে যায়। ফাঁকা ফাঁকা লাগতে শুরু করে সবকিছু।

আপনার এই লেখাটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো যে মিউজিকটা আমার কানে বাজছে তার সঙ্গে এই লেখাটাই যায়, শুরু থেকে শেষ লাইনটা পর্যন্ত...।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

Sad songs say so much...

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

হেহে আপনেও দেখি আমার মত এল্টনের পোকা! একটা পর একটা গানের রেফারেন্স দিতেছেন দেঁতো হাসি আমি এককালে দিনরাত শুনতাম ওর গ্রেটেস্ট হিটস, গুডবাই ইয়েলো ব্রিক রোড, লাভ সংস - এই এলবামগুলা। বার্নি টপিন/ এল্টন জনের মত গীতিকার-সুরকার-গায়ক জুটি আর কখনো আসবে কি না সন্দেহ। ইদানীংকালের নতুনদের মধ্যে জন মায়ার অসাধারণ লেখে আর গায় - আপনার ভালো লাগতে পারে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এলটনের পুরনো গানগুলি বিষয়-বৈচিত্র্যে, উপস্থাপনায় একেকটি রত্নের মতো। তবে সাম্প্রতিক গানগুলি অবশ্য আমার একদম ভালো লাগে না।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

must be the clouds in your eyes.. অনেকদিন পর এল্টনের ড্যানিয়েল গানটার কথা মনে করিয়ে দিলেন...

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার অসম্ভব প্রিয় এই গানটা। মাঝখান থেকে তুলে আনা লাইন দিয়ে চিনেছো, তার মানে তোমারও প্রিয় বুঝতে পারছি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

বজলুর রহমান এর ছবি

....my eyes....

সবজান্তা এর ছবি

আমার মা'র বারংবার আপত্তির জন্য এখনো আমার বোন বিদেশ যেতে পারছে না। আমি নিজেই হয়ত আর বছর দুয়েকের মধ্যে পরবাসী হওয়ার জন্য তৈরি হব। কে জানে তখন কেমন লাগবে আমার বাবা-মা-বোনের, যাদের ছাড়া কখনোই থাকিনি... কেমন লাগবে আমার।

রোদ্রজ্জ্বল একটা শুক্রবার দুপুরও কেমন মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেল হঠাৎ করে, লেখাটা পড়ে...


অলমিতি বিস্তারেণ

ধ্রুব হাসান এর ছবি

কে জানে তখন কেমন লাগবে আমার বাবা-মা-বোনের, যাদের ছাড়া কখনোই থাকিনি... কেমন লাগবে আমার।

মূহুর্তে মূহুর্তে ফিরতে চাইবেন প্রিয় ক্ষনগুলোতে কিন্তু জোড় করে কখনো কখনো ফেরা হলেও আর ফিরে পাবেননা সে পুরোনো সময়! কারন ততোদিনে সংসারে অন্যান্যদের জীবনও চলে গেছে অন্য বাকঁ ধরে! হয়তো দু'টো বা একাধিক বাকেঁর মধ্যে মাঝে-সাঝে দেখা সাক্ষাত হবে কিন্তু মেলবন্ধনের সম্ভাবনা প্রায় শূন্য! মাফ করবেন অভিজ্ঞতা দানের জন্য।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

রোদ্রজ্জ্বল একটা শুক্রবার দুপুরও কেমন মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেল হঠাৎ করে, লেখাটা পড়ে...

ভালোমন্দ যা-ই হোক, একটা প্রতিক্রিয়া তো হলো! তাতেই সার্থকতা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

"যা কিছু নিয়েছি তা ফিরিয়ে দিতেই হয়।"
বড় কঠিন কথা বলে ফেললেনরে ভাই .... বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠলো

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

আরিফ জেবতিক এর ছবি

মন্তব্য নেই ।

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আপনার "মন্তব্য নেই" বর্ষিত হোক আরো এবং আমি তার অর্থ খুঁজতে থাকি! হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সৌরভ এর ছবি

তারপর পৃথিবীর নিয়মে মেঘ নেমে আসে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এবং অতঃপর পৃথিবীর নিয়মেই কল্যাণের বৃষ্টি নামে, মেঘ কেটে যায়, ঝকঝকে রৌদ্রের দিন ফিরে আসে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

হিমু এর ছবি

আসলে মন্তব্যে লেখার মতো কিছু নেই। সান্ত্বনা দেয়ারও কোন অর্থ হয় না। মানুষের জীবনটাই হয়তো এরকম। তারপরও কামনা করি, এই বিষন্নতাবোধ দূর হোক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ধ্রুব হাসান এর ছবি

আমার দেখা ও জানা গুটিকয় সেরা বাবাদের মধ্যে আপনিও একজন (যদিও আপনাকে সরাসরি চিনিনা; যতটুকু জানি তা কালো কালো বর্ণগুলো দিয়ে)! কখনো বলা হয়নি কথাটা, আজ বলতে বাধ্য করলেন এবং জীবনের বৃত্তটা মনে করিয়ে দিলেন আবারো! একই বৃত্তে এতো অনুভূতি, এতো এতো গল্প...চলতেই থাকে অবিরাম......।কিন্তু তবুও Must be the clouds in my eyes! অদ্ভূত এইসব ক্ষন, বড়ই অদ্ভূত এই জীবন বৃত্ত! চলুক

স্নিগ্ধা এর ছবি

'যেতে দেয়া' শিখতে শিখতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম, মুজুদা!!

সারভাইভাল স্ট্র্যাটেজি হিসেবে তাই এখন অনেক কিছুকেই অন্যভাবে দেখি।

তোমার এই কষ্টটাও সুখের মত হোক, এই কামনা করি ...

অনিন্দিতা এর ছবি

সচলায়তনে আজ ঢুকেই আপনার লেখায় আটকে গেলাম।
মন্তব্য করার ভাষা হারিয়ে গেছে।
আপনার জীবনের এ সত্য তো আমাদের সবার জন্য সত্য!

অমিত এর ছবি

অস্টিনে ইমারজেন্সি কনট্যাক্টের জন্য যদি কোনও নাম্বার প্রয়োজন হয়, তাহলে বলেন।চেনা মানুষজন এখনও কিছু আছে। আর ইউ টির বাস সার্ভিস খুবই ভালো(যদি গাড়ি না থেকে থাকে), প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় সব জায়গাই কভার করে।দূপুরের খাবারের জন্য ডোবি মলের ফুডকোর্ট অথবা গুয়ারালুপে স্ট্রিটের পাশ দিয়ে প্রচুর দোকান আছে।টেক্সট বইয়ের জন্য ইউটি কোঅপে (গুয়ারালুপে স্ট্রিট আর ডিন কিটন স্ট্রিট)অনেক সময় ব্যবহৃত বই ভাল ডিলে পাওয়া যায়।
আর পার্টির জন্য সিক্সথ স্ট্রিট। ওইটা মনে হয় না জানলেও চলবে !! হাসি

হিমু এর ছবি

বহু বহু বছর পর চিৎকার করে কানতেসি জুবায়ের ভাই! এইটা কী হলো? মানুষের জীবনটা এরকম কেন?


হাঁটুপানির জলদস্যু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

মন খারাপ(

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বাতিঘর জুবায়ের ভাই, অনেক কষ্ট হচ্ছে, অনেক রাগ লাগছে সবকিছুর উপরে ... খুব অসহায় লাগছে ...কি বলবো!!

আপনি ভালো থাকবেন, যতদূরেই থাকেন, ভালো থাকবেন
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

বিবর্তনবাদী এর ছবি

আপনার নতুন পথের যাত্রা শুভ হোক।

সৌরভ এর ছবি

সবাই এই পোস্টে কমেন্ট করছে।
মনে হচ্ছে, জুবায়ের ভাই এই তো জবাবের ঝাঁপি খুলে বসবেন।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অতিথি লেখক এর ছবি

আর তো জুবায়ের ভাইয়ের লেখায় কমেন্ট করা হবে না...তাই এখানেই শেষ শ্রদ্ধা...
~

রানা মেহের এর ছবি

ভালো লাগছেনা
কিছু ভালো লাগছেনা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আসাদ এর ছবি

আর একটু পথ--চলতে চলতে
আবার হবে দেখা
শুনব অনেক কথা

কল্যাণ এর ছবি

এখন আমার পালা। যা কিছু নিয়েছি তা ফিরিয়ে দিতেই হয়।

কত কঠিন সত্য অথচ কত না সহজ আর সাবলীল করে লিখে গেছেন আপনি জুবায়ের ভাই।

অসাধারণ

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

স্যাম এর ছবি

----------
---------
ভীষণ ছুয়ে গেল।
কি শিরোনাম ! [u]দুই মাস যখন দুই দিনে নেমে আসে[/u]
অনেকগুলো কথা যেন তার মেয়ের জন্য না আমাদের জন্য বা নিজের জন্য বলছিলেন---

সেদিন ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপু চলে গেলে তোমার খারাপ লাগবে?’
ছেলে নিঃশব্দে কাঁধ ঝাঁকায়, সে জানে না। হয়তো সত্যিই জানে না। তার জীবন এরকম চলে যাওয়ার ঘটনা কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। অবিলম্বে জানবে, জীবন তাকে আরো অনেক অভিজ্ঞানে অভিজ্ঞ করে তুলবে ক্রমশ। এইসব ছোটোবড়ো নানা ধরনের দুঃখ-কষ্ট থেকে কে কবে রেহাই পেয়েছে?

----------
---------

এটা কি জুবায়ের ভাই এর শেষ লেখা সচল এ?

মন খারাপ মন খারাপ মন খারাপ

তাসনীম এর ছবি

এটাই শেষ লেখা।

একটি অপ্রকাশিত লেখা পরে পাওয়া যায়, যেটা ভাবির একাউন্ট থেকে প্রকাশ করা হয় পরে।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

স্যাম এর ছবি

ধন্যবাদ ।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

চুপ করে বসে আছি।

তিথীডোর এর ছবি

Must be the clouds in my eyes......

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অরণ্য এর ছবি

খুব ভাল লাগল। হল জীবন, জীবনের ফিরিয়ে দেয়া..., কত কঠোর বাস্তবাতা। বাবা-মাকে ছেড়ে আমিও চলে এসেছি, একটু ভাল থাকার আশাতে। এমন করে আমাকেও ছাড়তে হবে।

ভাল থাকবেন। শুভ কামনা রইল।

চরম উদাস এর ছবি

যেখানেই আছেন ভালো থাকুন জুবায়ের ভাই। কাজ শেষ হলে ছুটি নিয়ে ঠিকঠিক একদিন চলে আসবো আপনার ওখানে আড্ডা মারতে।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

জুবায়ের ভাই, কখনো দেখা হয়নি...আপনি বেঁচে থাকতে সচলায়তনের খোঁজও পাইনি...কিন্তু কোথায় যেন আপনাকে খুব চেনা মনে হয়...যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন এই প্রার্থনা করি ।

জানি আপনার ছেলে মেয়ে, ওদের মায়ের কাছে এই প্রশ্ন তীরের মত বাজে রাত্রি দিন...

সময়গুলি কোথায় গেলো?

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

অতিথি লেখক এর ছবি

রবীন্দ্রনাথ বলেছেন,

মরণসাগরপারে তোমরা অমর,
তোমাদের স্মরি।
নিখিলে রচিয়া গেলে আপনারই ঘর,
তোমাদের স্মরি।

ঠাকুরের কথা নিয়ে জুবায়ের ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলি -

মরণসাগরপারে তুমি যে অমর,
তোমারে স্মরি।

দেবা ভাই
-----------------------------------------
'দেবা ভাই' এর ব্লগ

তানিম এহসান এর ছবি

ব্লগ বিষয়টা বুঝতে পারার আগেই মনে হয় ব্লগার হয়ে গিয়েছিলাম। ব্লগ কি অসামান্য একটি বিষয়, কতকিছু ধরে রাখে, ভাবায়, মনে করায়, কিছুই হারায়না। এই লেখাটা পড়ে কেন যেন চোখ ভিজে গেলো।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মুহম্মদ জুবায়েরের সেদিনের সেই অনুভূতির মধ্য দিয়ে আমিও পার করছি বর্তমান সময়।
সচলায়তনে আমার উপস্থিতির আগেই এখান থেকে আপনার অন্তর্ধান। জেনেছি, 'সচল'কে সচল করতে আপনার অবদান অনেক। আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা, আমার জন্য 'সচল'কে সহজ করে দেবার জন্য। আপনি যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন।

অমি_বন্যা এর ছবি

চোখ ভিজে গেল কখন টের পাইনি।

আপনি যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।

ধুসর জলছবি এর ছবি

মন খারাপ Must be the clouds in my eyes.... মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।