নকৃড় বাবৃর ফকড়া জীবন ০১/০৩

কর্ণজয় এর ছবি
লিখেছেন কর্ণজয় (তারিখ: শনি, ১৬/০৬/২০০৭ - ৫:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চন্দ্রাবতী দেবীর ছিল রাগপ্রধান মেজাজ। তা সত্ত্বেও যখন তার চতুবর্গীয় (মদ্য- মাংসাদি চারটি বিষয়ে সিদ্ধকর্ম) স্বামী এপাড়া ওপাড়ায় নিমকি লুসিদের সাথে গোপন সিন্ডিকেটের সিটিং সাটিয়ে গ্লাক্সো বেবী সেজে দাম্পত্য জীবনের সাড়ে তেইশটি বছর দিব্যি কাটিয়ে দিতে পারলেন তখন ভদ্রলোকের ইয়ার বন্ধুরা মানতে বাধ্য হলেন ভদ্রমহিলার মনটি বেজায় সরলা। কিন্তু দাম্পত্য মানেই সাড়ে তেইশটি বছর নয়। কত অনাগতকাল জুড়েই তাকে জানরুমে (দাম্পত্যের বেডরুম) হাজির হতে হবে সে কথা ভাবলেই নকুড় বাবুর জিহ্বায় চুক চুক ধ্বনি বের হয়ে আসতো। প্রতিদিন তার ঐ এক ভয়। বাড়ি ফেরার মূহূর্তটাকে সবচাইতে কঠিন মনে হত। সাড়ে তেইশ বছর ধরে হররোজ তিনি ঐ মূহূর্তটাকে দেখে আসছেন কিন্তু এর ভয় তিনি এখনও কাটাতে পারলেন না। এতদিনে কতকিছু তো সয়ে যায়। বুক চেরা দীর্ঘশ্বাসে তিনি পাংচার হয়ে যান। তিনি এতদিনেও ব্যাপারটায় ধাতস্থ হয়ে উঠতে পারেন নি। প্রায়শই মনের ঘোরে তিনি ভাবেন আর সহ্য করবেন না , একটা জুৎসই আপার কাট মেরে ... এই ক্যা রে .. এই রাত বিরেতে ভাবনার দরজাটায় খিল এটে নকুল বাবু আবার গ্লাক্সো বয় এর কৌটোয় সুড় সুড় করে ঢুকে যান।

পরদিন অফিস থেকে ফেরার পথে নকুড়বাবুর বাল্যবন্ধু পাচুবাবুর সঙ্গে দেখা। পানে মত্ত হয়ে তিনি বেশ মৌতাতে চলেছেন। না না ... পানাহার নয় নিপাট ভেসজ পান। এমনিতে সাধু পুরুষ হিসেবে তার খ্যাতি চৌদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
কলিকালে কেন যে জন্ম নিয়েছেন তার গুহ্য রহস্য ভেদ করতে জেমস বন্ড নাকি একবার বেশ তোড়জোড় শুরু করেছিল কিন্তু তার পরে কি হলো ফেমিং সাহেব কিছুতেই সেই ব্যাপারে রা টাও করেন নি। নকুড় বাবুর স্ত্রী স্বর্গধামে যাত্রা করেছেন তিনবছর হলো তারপর থেকেই তার বাংলা বাইন্ডিং এর দোকান খুলে কালের মাছি গোনা (বাঙালী সজ্জন হলে বউপাড়ার সেরেস্তাদারী করা ছাড়া আছে কি)। পাচুবাবুকে দেখে নকুড়বাবুর মনটা একটু ইলিবিলি কেটে যায়। তিনি মনে মনে বেশ ইনটু সিনটু মেজাজে উজালা চাকুমের স্বপ্ন দেখছিলেন পাচু বাবুকে দেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদযোগের মতো গেজিয়ে ফেলতে হলো। টিপে টিপে দু চারটি বাক্য বিনিময় করেই ট্যান হয়ে বেরিয়ে যাবার ফন্দিটা পাকাতে না পাকাতেই পাচু বাবুর মুখের দু চারটি শব্দ কানে ঢুকতেই ট্যাংকি গরম হয়ে গেল
আজ নাকি কোথায় এক ধর্মসভা হবে সেখানে স্বর্গধামে যাবার সহজ উপায় নিয়ে স্বামী তারেকাশ্বর বয়ান
করবেন।
আমি স্বর্গধামেই যাচ্ছি -
নকুড় বাবু কথা দুটো ফুটিয়েই হন হন করে হাটা শুরু করলেন।


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

জমবে মনে হইতাছে হাসি কয়বারে দেবেন?

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

কর্ণজয় এর ছবি

3 bare dari

সবুজ বাঘ এর ছবি

হ, দ্যান। রস পাইলাম ভালো। আদিরসের দুর্গন্ধো পাইতাছি। এট্টু বেশি বেশি চেনি মাইরেন।

উৎস এর ছবি

আপনি কি সামহ্য়্যারে লিখতেন?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

চোরাবালি
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সুজন চৌধুরী এর ছবি

ভালো ...........শেষ কইরো
___________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

যূথচারী এর ছবি

রেটিং দেয়াটা একটু ঝামেলা মনে হয়, ভালো লেগেছে। তবে একটু ওপাড়ের ভাষা মনে হচ্ছে! দাদার বাড়ি কি কুষ্টিয়া-খুলনা ওইদিকে?
______________________________________________
চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

পরের কিস্তি কৈ?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ঝরাপাতা এর ছবি

তাড়াতাড়ি নামান পরের পর্ব।
_______________________________________
পোড়াতে পোড়াতে ছাই, ওড়াতে ওড়াতে চলে যাই . . .


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।