একটি ফতোয়া কেতাবের জন্মকাহিনী

অপ্রিয় এর ছবি
লিখেছেন অপ্রিয় [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/০৯/২০০৮ - ১১:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাড়ার মসজিদে এসেছেন নতুন ইমাম। দূরদেশ থেকে পাশ দেওয়া বিরাট হুঁজুর। ছোট মাদ্রাসা, মেঝো মাদ্রাসা, বড় মাদ্রাসা সবগুলোতেই প্রথম হওয়া হুঁজুরের জ্ঞানের কোন সীমা নাই। খুৎবা বা ওয়াজের সময় ধনী গরীব, উজির নাজির সবাই স্তব্ধ হয়ে শুনতে থাকে। একটি বিষয়েই শুধু হুঁজুরের কোন প্রত্যক্ষ জ্ঞান নাই, তা হলো মেয়েমানুষ। কিতাব খুৎবা থেকে পেয়েছেন, হুঁজুর-আলেমদের থেকে জেনেছেন ইহজগতের মেয়েমানুষ নাসারা, নষ্ট জাত, পুরুষকে প্রলুব্ধ করে, তার মাথা খায়। তাদেরকে পায়ের নীচে রাখতে না পারলে রক্ষা নাই। তাই ইমাম সাহেবও তার প্রতিটি খুৎবা বা ওয়াজে নিয়মিত নষ্ট জাত থেকে পুরূষকে সাবধান করেন।

ইমাম সাহেব ভেবেছিলেন মেয়েমানুষ ছাড়াই এ ক্ষুদ্র জীবন কাটিয়ে দিবেন, তারপরেতো ন্যাংটা হুর-পরী আর সারাবান তহুরা নিশ্চিত। কিন্তূ যৌবন কাল, দিনে-রাতে এখন যখন তখন খালি মেয়েমানুষের কথা মনে হয়। যতই মেয়েমানুষের কথা মনে হয়, ততই ইমাম সাহেবের খুৎবা বা ওয়াজে মেয়েমানুষের দুর্নীতির খতীয়ান বাড়তে থাকে। উপায়ান্তর না দেখে ইমাম সাহেব পশ্চিম দেশে তার ওস্তাদ বড়-হুজুরের কাছে ছুটে যান। সব শুনে বড়-হুজুর বলেন, সুবাহানআল্লাহ্, তোমার সাদীর ওয়াক্ত হয়েছে। সন্ত্রস্ত ইমাম ফিরে আসেন, সাগরেদদের ফতোয়া দেন সৎ ও উন্নতমানের জেনানা খুঁজে তাঁর বিবাহের প্রস্তাব দিতে। দিন যায়, মাস যায় কিন্তু কোন ভদ্র নারীই নারীবিদ্বেষী ঐ ইমামকে শাদী করতে রাজি হয় না। শেষমেশ এক সাগরেদ খবর আনে যে উত্তরপাড়ার অবসরপ্রাপ্তা এক দুষ্ট বেহায়া অবসরপ্রাপ্ত বেশ্যা শুধু রাজি। বিপন্ন ইমাম বললেন, মন্দ কি, কলেমা আর তওবায় সব পাক্, সবই পবিত্র, করো ঠিক ঠাক। প্রথম রাতেই ইমাম বুঝলেন মেয়েমানুষ কি চিজ, নষ্টামি ছ্যাবলামি গাল মন্দ খিস্তি খেউড়ে ওষ্ঠাগত তার প্রান।

কিন্তু এর মাঝেও গর্বে তার বুক ফুলে উঠে তার, কিতাব খুৎবা, হুঁজুর সাহাবাগণ, আলেম মৌলভীগন কত সঠিক শিক্ষাই না তাকে দিয়েছেন, কত আগেই না তিনি বুঝেছেন এই জগতের মেয়েমানুষেরা কত না নষ্ট জাত! মনে মনে ঠিক করলেন মেয়েমানুষকে উন্নত করতে নতুন একখানি ফতোয়ার কেতাব লিখবেন।


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

এ থেকেই বোধকরি ম'লানা সা'বদের লাল-কিতাবের জন্ম।

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

এই জগতের মেয়েমানুষেরা কত না নষ্ট জাত! মনে মনে ঠিক করলেন মেয়েমানুষকে উন্নত করতে নতুন একখানি ফতোয়ার কেতাব লিখবেন।

বড়ই কঠিন লেখা হইছে
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

কনফুসিয়াস এর ছবি

মাঝপথে থেমে গেলেন নাকি?
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

তানবীরা এর ছবি

অপ্রিয় হলেও এটাই সত্যিই হয়তো।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।