বিকলাঙ্গ পুঁজিবাদ ও সৌরজগতের বৃহত্তম শপিংমল

অপ্রিয় এর ছবি
লিখেছেন অপ্রিয় [অতিথি] (তারিখ: সোম, ১৬/০৩/২০০৯ - ১২:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ধরুন জনাব ‘ক’ একজন প্রতাপশালী দুই নম্বর ব্যবসায়ী। ভুমি দস্যুতা অথবা স্পিরিট চোরাচালানী করে আজ তার এত টাকা যে তিনি নিজেই তার হিসাব রাখেন না। টাকা অনেক দেখেছেন তিনি, অনেক ভোগ করেছেন। কিন্তু বয়স বাড়ছে, এখন তার নাম কামানো দরকার, এমন কিছু করা দরকার যাতে এশিয়ায়, এমনকি সারা বিশ্বে তার নাম ছড়িয়ে যায়। কি করা যায়? সেরকম কোন কিছু করতে গেলে তো ঢের মেধা দরকার বা অঢ়েল পয়সা পানিতে ফেলতে হয়। বুদ্ধি একটা আছে, এশিয়া বা এমনকি সৌরজগতের বৃহত্তম শপিংমল তৈরী করা। এতে সাপও মরলো লাঠীও ভাংলোনা, কি মজা। ধরুন তাই তিনি তৈরী করলেন, সৌরজগতের বৃহত্তম ৯৯৯ তলা শপিং মল। তাও এই সৌরজগতের সর্বসরু রাস্তাবিশিষ্ঠ, সর্বঘিঞ্জি বস্তিসম্পন্ন, দুষিত বায়ুর হাঁপানী আর শ্বাসকষ্টে ভোগা, পয়ঃঅবরুদ্ধ যেন কোষ্ঠকাঠ্যন্যে জীর্ণ, জলাবদ্ধ যেন মুত্রনালীতে বর্জ্য আটকানো বিকলাঙ্গ ঢাকা নামের শহরে। তাঁর এই ৯৯৯ তলা ভবনে তিনি এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গ, চোর ডাকাত চাকর নফররা মিলে সারাদিন হিসাব নিকাশ কষেন কি করে কর ফাঁকি দিয়ে, বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে, সরকারী কর্মচারী কর্মকর্তাদের কাত করে, কোট কাচারীকে কচু দেখিয়ে আরও বিস্তর মালপানি কামানো যায়।

আর আমরা হাভাতে হতচ্ছাড়া আম জনতা যারা জীবনেতো কোনকিছু দেখিই নি, দুনিয়ার হাবভাব দেখে অনুধাবনেও অক্ষম যে শরীরের একটি অঙ্গ অনানুপাতিক ভাবে বড় হয়ে গেলে তা ধনাত্মক অর্থে ‘বৃহত্তম’ হয় না – তা বিকৃত অর্থে ‘বৃহত্তম’ হয়। আর এই ‘বৃহত্তম’ হবার জন্য যে ‘প্রাণশক্তির’ সরবরাহ লাগে তা দেশে বিদেশে সারাদিন অমানুষিক খেটে যারা দু পয়সা উদ্বৃত্ত্ব রাখতে পারেন তাদের প্রিয়জনদের বেহুদা খরচ থেকেই আসে। কিন্তু ঐ ‘বৃহত্তম’ শুনেই আমাদের আদিখ্যেতা আর ভালবাসার নধর বয়ে যায়, আমরা ওগুলো আমাদের ভাবি। কখনোই ভাবি না যে এই ৯৯৯ তলা ভবনগুলোই বিশাল বড় এক ফানেলের মত ধনীকে আরও ধনী এবং গরীবকে আরও গরীব করায় দিনরাত কাজ করে চলেছে। সস্তা বিলাসদ্রব্যের ঘোরে ক্রেতাকে ফেলে একমাত্র বেচাকেনাকেই সর্ব্বোত্তম পেশা প্রমাণ করে এক দোকানদারী সংস্কৃতির অসীম বিস্তৃতি ঘটিয়ে চলেছে।

কিন্তু এই ৯৯৯ তলা ভবনে আগুন লাগলো একদিন, প্রশ্ন উঠলো সরকারের আগুন বিভাগের কাছে ৯৯৯ তলা উঁচু আগুন মই নেই কেন?

এখন কথা হলো মাথাপিছু কর হিসাব করলে সৌরজগতের সবচেয়ে গরীব সরকার তার সামান্য বরাদ্দ থেকে মাত্র একটি সৌরজগতের বৃহত্তম ৯৯৯ তলা উঁচু আগুন মই কিনবে? না কি ৯৯৯ টি একতলা উচু মই কিনবে যাতে আরও বেশী করে বস্তির আর গ্রামের ঘরগুলোর আগুন নিভানো যায় এবং এর সাথে সৌরজগতের বৃহত্তম শপিংমল তৈরীকারকদের বাধ্য করবে ভবন নির্মানের খরচের সাথে সৌরজগতের বৃহত্তম ৯৯৯ তলা আগুন মই কেনার জন্য মোটা অংকের আগুন কর পরিশোধ করতে।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খাল কেটে বসে আছি কুমিরের অপেক্ষায়...

শামীম এর ছবি

ব্যাটে-বলে, টাইমিংটাও ভাল হয়েছে ... ... চলুক
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নদী এর ছবি

আসুন বাংলাদেশ বেচে দিয়ে অনেক শপিংমল বানাই।
কারণ আমরা আমাদের শিল্পদ্রব্য(!) বেচার জন্য জায়গা খুঁজে পাচ্ছিনা ।
শিল্প মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে শপিংমন্ত্রণালয় করি। যারা এখনও কষ্ট করে শপিং করার জন্য দেশে বিদেশে ঘুরতে বের হন তাদের কষ্ট কমাই।

নদী

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

এদেশের সরকার গরীব, জনগন গরীব, ফায়ারব্রিগেডও গরীব। আমাদের ফায়ারব্রিগেড বস্তি থেকে শুরু করে চারতলা পর্যন্ত স্বচ্ছন্দে আগুন নেভাতে পারে।

গত দুই দশকে কারো কারো পুঁজির পর্বত এত বড় হয়েছে তাকে মাপার উঁচু মই যেমন নেই সরকারের রাজস্ব বিভাগের, সেই পুঁজিতে আগুন লাগলে নেভানোর উপায়ও জানা নেই দরিদ্র ফায়ার ব্রিগেডের।

রোলস রয়েস বাংলাদেশে গাড়ী বেচে না, কারন এখানে তাদের মেকানিক নেই। বাংলাদেশে কেউ রোলস রয়েস চালাতে পারে না। কিন্তু সুউচ্চ ভবন তৈরী করতে সেরকম বাধা নেই, তাই আমরা মিশরের পিরামিড তূল্য ফিউচার পার্ক তৈরীতেও সংকোচ বোধ করি না।

কীর্তিনাশা এর ছবি

কিছু বলার নেই, কেবল থাম্বস আপ চলুক
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

শরীরের একটি অঙ্গ অনানুপাতিক ভাবে বড় হয়ে গেলে তা ধনাত্মক অর্থে ‘বৃহত্তম’ হয় না – তা বিকৃত অর্থে ‘বৃহত্তম’ হয়।

এটা হলো আসল কথা। তবে আমরা এসব আসল কথা মানি না। সারাবিশ্ব যখন শরীরের চর্বি কমায়, আমরা তখন গরু মোটাতাজাকরন ট্যাবলেট খাই। উৎপাদন যা-ই করি, ভোগের ব্যাপারে ষোলআনা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সচল জাহিদ এর ছবি

লেখকের ক্রোধের কারন সহজেই অনুধাবনযোগ্য এবং বাংলাদেশের সমসাময়িক ঘটনের প্রেক্ষাপটে যুক্তিসম্মতও বটে। কিন্তু একটি জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে, ঢাকা শহরে এখন বহুতল ভবনের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাচ্ছে, অনেক গার্মেন্টস ভবন, সরকারী বেসরকারী ভবনের উচ্চতা কিন্তু 'সৌরজগতের বৃহত্তম শপিং মল' এর কাছাকাছি। যেহেতু বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ এবং বহুতল ভবনের জন্য অগ্নিনির্বাপক সারঞ্জামের জন্য অধিক অর্থ প্রয়োজন সুতরাং, একটি বিকল্প প্রস্তাব হতে পারে এরকম যে একটি বিশেষ উচ্চতার অধিক ভবনের ক্ষেত্রে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপন ব্যাবস্থার পাশাপাশি, সরকারকে অতিরিক্ত কর দিতে হবে যা ব্যায় করা হবে ঐসব ভবনের অগ্নিনির্বাপনের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে। তাহলে আর ৯৯৯ তলা ভবনের জন্য সাধারন জনগনের করের টাকা খরচ হবেনা।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অপ্রিয় এর ছবি

....অতিরিক্ত কর দিতে হবে যা ব্যায় করা হবে ঐসব ভবনের অগ্নিনির্বাপনের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে।

ব্যাপারটা শুধু কর ও আর্থিক নয়, ভবনের মালিক/ম্যানেজমেন্টের ভবনের ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবার মানষিকতাটা খুব জরুরী।

+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল

+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল

ami এর ছবি

"একটি বিকল্প প্রস্তাব হতে পারে এরকম যে একটি বিশেষ উচ্চতার অধিক ভবনের ক্ষেত্রে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপন ব্যাবস্থার পাশাপাশি, সরকারকে অতিরিক্ত কর দিতে হবে যা ব্যায় করা হবে ঐসব ভবনের অগ্নিনির্বাপনের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে"

এটার কি মিন করে না business discourage করা হবে?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কিন্তু সরকারের নিজেরই তো একাধিক ৯৯৯ তলা ভবন আছে। আপনার কেন মনে হলো শুধু বসুন্ধরাকে আগুনের হাত থেকে রক্ষা করতেই সরকারের মই লাগবে? এই শহরে এখন অনেক উঁচুতলা বিল্ডিং... বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক বা এলজিআরডিতে আগুন লাগলে?

এনটিভি ভবনে যখন আগুন লাগলো সেটা নিভাইতেও ব্যর্থ হইছিলো। এই নগরে এখন প্রচুর পরিমান ১৪+ তলা ভবন। এটা সময়ের দাবীতেই। কিচ্ছু করার নাই। ফায়ার সার্ভিসরে গত এক দশকে কোনো উন্নতি নাই, একটা নগর বাড়লে সাথে দমকলরেও উন্নত করতে হয় ।

ভুমি দস্যুতা অথবা স্পিরিট চোরাচালানী লোকটা নিয়া মাথা ব্যথা নাই। কিন্তু সরকার যখন এই ভবন বানানোর অনুমতি দিছে, সরকারের সেইটা বহন করার সামর্থ আছে কতটুকু তা সরকারকেই বিবেচনা করতে হবে।

হাভাতে বাঙ্গালী আমরা শপিং মলে যাবোই। কোন শপিং মল কোন চোট্টায় বানাইছে তা বিবেচনা করার দায় আমাদের না। কিন্তু এই নগরের শপিং মলে যাওয়ার অধিকার এবং নিরাপত্তা আমি সরকারের কাছেই দাবী করতে চাই।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অপ্রিয় এর ছবি

এই নগরের শপিং মলে যাওয়ার অধিকার এবং নিরাপত্তা আমি সরকারের কাছেই দাবী করতে চাই

সে দাবী তো আমারও। কিন্তু ব্যাপারটা এত সহজ নয়। যারা বিল্ডিং টেকনোলজী সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর রাখেন তারা জানেন হাই রাইজ একটি কমপ্লেক্স সিস্টেম, এর আগুনকালীন পরিস্থিতি খুবই আনপ্রিডিকটেবল। আগুন নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রাথমিক এবং সমন্বিত প্রচষ্টো সর্বাগ্রে প্রয়োজন। বাইরে থেকে ল্যাডার খুব কমই সফল হয় বিভিন্ন কারনে। আগুনের প্রাথমিক নিয়ন্ত্রন অতি জরুরী, তারপর চলে যৌথ অভ্যন্তরীন ফাইট।

ঢাকা শহরের বহুতল ভবনের মালিক/ম্যানেজমেন্ট/ব্যবহারকারীদের বুঝতে হবে দেয়ার ইজ নো ম্যাজিক ইন হাইরাইজ ফায়ার কন্ট্রোল। নিজস্ব ডিটেকশন/ফাইটিং যন্ত্রপাতি, ভবনের নিজস্ব প্রশিক্ষিত ফায়ার ফাইটার এবং নিয়মিত অনুশীলনই তাদের একমাত্র রক্ষা করতে পারে। ফায়ার ডিপার্টমেন্ট সবসময়ই সেকেন্ডোরী ফোর্স যারা ১ থকে ২ ঘন্টার আগে সাধারণত পুর্ণশক্তিতে কাজ শুরু করতে পারে না এবং তারা জাদু জানে না।

সারা পৃথিবীতে বেশীরভাগ হাইরাইজ ফায়ারে যখন ফায়ার সার্ভিসকে পুর্ণশক্তি প্রয়োগ পর্য়ন্ত যেতে হয়েছে, তখনই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক।

পড়ে দেখুন:

Fire fighting expert Vincent Dunn writes: (http://www.workingfire.net/misc4.htm)

There is a deadly trend in high-rise fires. In the 1970s, New York City experienced a two-floor fire in a high
rise; in the 1980s, Los Angeles had a five-floor fire in a high-rise; and in the 1990s, Philadelphia suffered a
nine-floor high-rise fire. What can we expect in the next decade? All three of these fires had one thing in
common: They all occurred beyond the reach of fire department ladders. Outside aerial master streams could not be used. The New York fire, at I New York Plaza, was on the 33rd and 34th floors; the Los Angeles First Interstate Bank fire burned out the 12th to 16th floors; and the Philadelphia One Meridian Plaza fire burned the 22nd to 30th floors to a crisp. These high-rise fires killed three building employees and three firefighters.

The fires were fought using an interior attack. Aerial master streams were not an option available.
At a low-rise building fire, after 30 or 40 minutes of fast and furious firefighting, the fire usually is
extinguished. If it is not, firefighters may be withdrawn to safer outside positions and the fire is fought
using an outside attack. Not so at a high-rise building fire. Here,if the fire is not controlled within the
first 30 to 40 minutes, the next two or three hours of firefighting are also spent inside the burning building.
It took six hours to extinguish two floors of fire in New York in 1970, eight hours to extinguish the Los
Angeles five-floor high-rise fire, and more than 16 hours to extinguish-with nine sprinkler heads on the 30th
floor-the Philadelphia nine-floor fire. That's roughly two hours of firefighting per floor. Will the next great high-rise fire require the fire department to operate with
interior hand lines for two or three days?

The best-kept secret in America's fire service is that firefighters cannot extinguish a fire in a 20- or
30-thousand-square-foot open floor area in a high-rise building.

এই যদি হয় নিউ ইয়র্ক এবং লস এঞ্জেলিসের অবস্থা, আপনি কাকে দোষ দিচ্ছেন? কি চাচ্ছেন? তাদের চেয়েও ভাল ফায়ার ডিপার্টমেন্ট চাচ্ছেন? আমাদের আরও গোঁড়ায় সমস্যা রয়ে গেছে।

এনটিভি ভবনে যখন আগুন লাগলো সেটা নিভাইতেও ব্যর্থ হইছিলো।

একটি প্রশ্ন, এখন কি এনটিভি নিয়মিত ফায়ার ড্রিল করে?

+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল

+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল

কাকন [অতিথি] এর ছবি

প্রথমেই বলে নেই আমি আপনার সাথে প্রায় একমত।
এমন একটা বিশাল বিল্ডিং এ আগুন নেভানর সয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকাটা বাধ্যতামুলক। এবং সরকার সুপারভাইজ করবে কোন ফাকি যাতে দিতে না পারে বিল্ডিং কতৃপক্ষ ।
সরকার যদি তার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে থাকে তাহলে ত্রুটিপুর্ন আগুন নেভানর সয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকল কেন?

হিমু এর ছবি

স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ঠিক ত্রুটিপূর্ণ ছিলো না, পত্রিকায় যা পড়লাম তা থেকে মনে হয়েছে, নিষ্ক্রিয় ছিলো। আন্ডারগ্রাউন্ড রিজারভয়ার খালি ছিলো, ফায়ার লিফট বন্ধ ছিলো। এগুলিও কি রোজ রোজ সরকার গিয়ে তদারকি করবে?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- নজু ভাইয়ের কথা কোট করেই বলি, সময়ের দাবীতেই হাইরাইজ দালান হচ্ছে, এখানে আসলে কিছুই করার নাই। কিন্তু বলার আছে। "যে সময়ের" সাথে চলতে গিয়ে আমাদের দেশে হাইরাইজ দালান গুলো হচ্ছে "সে সময়ের" অন্যান্য হাইরাইজ দালানের ফায়ার ফাইটিং ব্যাপার স্যাপার গুলো দেখলে তব্দা খেয়ে থাকতে হয়। যার ছিঁটেফোঁটাও আমাদের দেশের সময়ের দাবী মেনে তৈরী হওয়া হাইরাইজ দালানগুলোতে দেয়া যায় না।

ধরে নেই বসুন্ধরায় বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুনের সৃষ্টি। এখন এই ব্যাপারটা সময়ের প্রয়োজনে হাইরাইজ দালান তৈরী করা অন্য দেশগুলো কীভাবে দেখে! প্রথমতঃ প্রথমে যখন দালান তৈরী হয় সেখানে কী মাল-মশলা ব্যবহার করা হবে সেগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়। কোন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত 'কিছুই হবে না' সেটা নির্ধারণ করা হয়। এবং দালান তৈরীর পর একটা নির্দিষ্ট ইন্টারভালে সেগুলো চেক করা হয় মাসিক-ত্রৈমাসিক-ষান্মাসিক ভিত্তিতে। এখন প্রশ্ন হলো বসুন্ধরা তৈরী হওয়ার পর ঠিক কয়বার তার বৈদ্যুতিক ব্যাপারস্যাপর গুলো 'চেক' করা হয়েছে?

ধরে নিলাম এর পরেও নানান ফাঁক গলে আগুন ধরেই গেলো সময়ের প্রয়োজনে তৈরী হওয়া সেই দালানগুলোতে। দালানের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্টগুলো কতোটা সুইফট আর এফেক্টিভ কাজ শুরু করে এটা একটা বিষয়। যতোদূর জানি যারা সময়ের প্রয়োজনে এইসব দালান বানায় তাদের ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্টগুলো কিংবা নিজস্ব ফায়ার ফাইটারেরা সরকারী ফায়ার সার্ভিস কখন এসে নানান পদের মই-চঙ্গ দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনবে, সেই অপেক্ষায় থাকে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের আগমন ঘটে বাংলা সিনেমার পুলিশের মতোন। মানে আসার আগেই কম্ম সাবাড়! এখানে ফোকাস পয়েন্ট হলো, সময়ের প্রয়োজনে তৈরী হওয়া বসুন্ধরা দালানের ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্ট বা তাদের নিজস্ব ফায়ার ফাইটাররা কেনো ফায়ার সার্ভিসের কেরামতির জন্য অপেক্ষা করে ছিলো? তারা কেনো সময়ের দাবী মেটাতে পারলো না! সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপানো যাবে পরে, আগে এই প্রশ্নটার উত্তর বের করা হোক!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

মোক্ষম দৃষ্টিকোণ, অভিনন্দন।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সৌরভ এর ছবি

ভালো লাগসে লেখাটা।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

এনকিদু এর ছবি

চলুক


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

হিমু এর ছবি

আমাদের হিসাবে একটু ভুল আছে। জামিলুর রেজা চৌধুরীর একটা সাক্ষাৎকার পড়লাম। সেখানে তিনি বলেছেন, ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী দমকল শুধু লো-রাইজ বিল্ডিঙের [দশতালা পর্যন্ত] আগুন নেভাতে সহায়তা করবে। এরচে উঁচু হলে ফায়ার ফাইটিঙের দায় বিল্ডিং কর্তৃপক্ষের। দমকল তাদের সহায়তা করবে।

বসুন্ধরার আগুন নিয়ে দমকলকে চোখ গরম করার কোন এখতিয়ারই নেই কারো।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এই বিষয়টা জানতামই না। এখন তাহলে ধরতে হয় দালানের মালিক পক্ষকে...



অজ্ঞাতবাস

ধুসর গোধূলি এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।